নিউইয়র্ক ০৮:২০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ জুলাই ২০২৪, ১১ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

ধর্ম, বর্ণ ও জাতিগোষ্টির কারণে ইমিগ্রেশনে হয়রানী করা যাবেনা

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০৭:০৩:২৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০১৪
  • / ৬৪২ বার পঠিত

নিউইয়র্ক: যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন সীমান্ত বিশেষ করে এয়ার পোর্ট সহ ইমিগ্রেশন চেক পোস্টে জাতি ধর্ম বর্ণের কারণে কেউ যেন বৈষম্যমুলক আচরনের শিকার না হয় সে লক্ষ্যে ওবামা প্রশাসন নতুন দিক নির্দেশনা জারি করেছে। ধর্ম ও বর্ণের কারণে যুক্তরাষ্ট্রের বাসিন্দা হওয়ার পরও যুগ যুগ ধরে হাজারো আমেরিকান ও ভ্রমনার্থী সীমান্ত রক্ষী এবং ইমিগ্রেশন কর্মকর্তাদের হাতে নাজেহাল হচ্ছিলেন বলে ব্যাপক অভিযোগ রয়েছে। বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম বলেছে, যুক্তরাষ্ট্র সরকারের নতুন এই নীতিমালা এটর্নী জেনারেল এরিক হোল্ডার যে কোন সময় ঘোষণা করতে পারেন। তবে পর্যবেক্ষক মহল বলছেন, ওবামা প্রশাসনের দিক নির্দেশনা সত্ত্বেও যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন এয়ারপোর্ট ও সীমান্ত চৌকিতে ইমিগ্রেশন কর্মকর্তারা আগের মতই জাতি ও বর্ণগত কারণে পর্যবেক্ষণ ও জিজ্ঞাসাবাদে কঠোরতা আরোপের সুযোগ পাবে। এদিকে সন্ত্রাসী পর্যবেক্ষণের নামে এফবিআই এখনো বিভিন্ন কমিউনিটিকে তাদের গোয়েন্দা জালে নিয়ে আসতে গোপন নজরদারী এবং স্পাই নিয়োগের কর্মসূচী অব্যাহত রাখতে পারবে। গোয়েন্দা নজরদারীর বিতর্কিত এই কর্মসূচী অব্যাহত রাখার এই সিদ্ধান্তে যুক্তরাষ্ট্রে মুসলিম কমিউনিটিতে ক্ষোভ ও হতাশার সৃষ্টি হয়েছে। ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বরের সন্ত্রাসী আক্রমনের পর থেকেই মুসলিম কমিউনিটি বিভিন্ন এজেন্সী কর্তৃক গোয়েন্দা নজরদারীতে রয়েছে। বিভিন্ন মুসলিম সংগঠন এবং নাগরিক স্বাধীনতার প্রবক্তা সংগঠন সমূহ এটাকে বর্ণ বৈষম্যমূলক কর্মসূচী হিসেবে এর সমালোচনা করে আসছে।
জানা গেছে, নতুন বিধানে নিরাপত্বা রক্ষার দায়িত্বে নিয়োজিত ব্যক্তিরা কারো জাতীয়তা, ধর্ম এবং বর্ণকে বিবেচনায় রেখে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ, এমনকি ক্রিমিনাল ইনভেষ্টিগেশনের সময়ও কারো ধর্ম বা জাতীয়তাকে বিবেচনায় রাখতে সে বিষয়টি সামনে আনতে পারবে না। নতুন নীতিমালায় এমন বিধানও রয়েছে যাতে সীমান্ত থেকে দূরে কারো ইমিগ্রেশন স্ট্যাটাস তদন্তকালেও তার ধর্ম বর্ণের বিষয়টি সামনে নিয়ে প্রশ্ন করার সুযোগ থাকবে না। স্থানীয় পুলিশ বিভাগকে একই নিয়ম মেনে কাজ করতে হবে।
এটর্নী জেনারেল এরিক হোল্ডারের বরাত দিয়ে দ্য নিউইয়র্ক টাইমস পত্রিকা বলেছে, এরিক হোল্ডার আইন শৃংখলা বাহিনীকে এমন কাজ থেকে বিরত রাখার পক্ষে জোর অভিমত দিয়েছেন। তবে এটর্নী জেনারেল এরিক হোল্ডারের এই নীতির বিরোধীতা করেছে এফবিআই ও ইমিগ্রেশন কর্মকর্তারা। তারা বলেছেন, সীমান্তে চেক করার সময় ধর্ম, বর্ণ ও জাতীয়তাকে সামনে রেখেই জিজ্ঞাসাবাদ করতে হবে। অন্যথায় কে আসল, কে নকল এটা অনুধাবন দূরুহ হবে। ইমিগ্রেশন কর্মকর্তারা বলেছেন, আমাদের তদন্ত বা সাক্ষাতকারের সময় জাতীয়তাকে সামনে না নিয়ে আমাদের পক্ষে কারো বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া সম্ভব হবে না। কারণ এর উপর নির্ভর করেই কাউকে ভিসা দেয়া বা যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের যে যোগ্য কিনা সেটা আমরা বিবেচনা করে থাকি।
যুক্তরাষ্ট্র ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ সীমান্ত থেকে ১০০ মাইল পর্যন্ত যে কাউকে চেক পোস্টের মতই ইমিগ্রেশন স্ট্যাটাস নিয়ে প্রশ্ন করার অধিকার রাখে। যার প্রমাণ হচ্ছে নিউইয়র্কের আপস্টেট বা কানাডা বর্ডারের কাছে বাফেলো এরিয়াতে প্রায়ই ফেডারেল এজেন্টরা ট্রেন বা বাসে চড়ে তল্লাসী শুরু করে। তারা প্যাসেঞ্জারদের ইমিগ্রেশন স্ট্যাটাস জানতে চায়। কেউ বৈধভাবে বসবাসের কাগজপত্র দেখাতে না পারলে তাৎক্ষনিকভাবে গ্রেফতার করে নিয়ে যাওয়ার ঘঠনা ঘটছে অহরহ।
অবশ্য ইলিনয় থেকে নির্বাচিত যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী সিনেটর রিচার্ড জে ডারবিন বলেছেন, সীমান্ত রক্ষীদের এই অধিকার বা ক্ষমতা দেয়ার অর্থ হচ্ছে বর্ণ বৈষম্যগত লাইসেন্সকে তাদের হাতে তুলে দেয়া।
নতুন বিধান চালুর আগে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল সরকার বিভিন্ন সীমান্তে এজেন্টরা নতুন বিধানকে কিভাবে কার্যকর করছে তা সরাসরি পর্যবেক্ষন করবে বলে জানা গেছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কতিপয় এজেন্ট বলেছেন, নতুন বিধান কার্যকর করার আগে আরো ট্রেনিং প্রয়োজন রয়েছে। এছাড়া আইনটি সঠিকভাবে বাস্তবায়ন হচ্ছে কিনা সেটাও খতিয়ে দেখা উচিৎ।
এটর্নী জেনারেল এরিক হোল্ডার তার জীবনের বিভিন্ন ঘটনা প্রসঙ্গে বলেন, আমি কলেজ জীবনে এমনকি ফেডারেল প্রসিকিউটরের দায়িত্ব পালনকালেও বিভিন্ন সময় বর্নের কারণে অহেতুক নাজেহালের শিকার হয়েছি। ফেডারেল বিভিন্ন এজেন্সী এরিক হোল্ডারের সাথে একমত পোষন করলেও তারা বলেছে, বর্ন ও জাতিগত বিষয়টি তদন্তের স্বার্থেই প্রয়োজন হবে। যে সোমালিয়াতে সন্ত্রাসী গ্রুপ রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে তাদের নেটওয়ার্ক আছে কিনা, সেটা দেখার জন্য অবশ্যই দেখতে হবে সোমালীয় জনগোষ্ঠির বসবাস কোথায়। (বাংলা পত্রিকা)

Tag :

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

About Author Information

ধর্ম, বর্ণ ও জাতিগোষ্টির কারণে ইমিগ্রেশনে হয়রানী করা যাবেনা

প্রকাশের সময় : ০৭:০৩:২৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০১৪

নিউইয়র্ক: যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন সীমান্ত বিশেষ করে এয়ার পোর্ট সহ ইমিগ্রেশন চেক পোস্টে জাতি ধর্ম বর্ণের কারণে কেউ যেন বৈষম্যমুলক আচরনের শিকার না হয় সে লক্ষ্যে ওবামা প্রশাসন নতুন দিক নির্দেশনা জারি করেছে। ধর্ম ও বর্ণের কারণে যুক্তরাষ্ট্রের বাসিন্দা হওয়ার পরও যুগ যুগ ধরে হাজারো আমেরিকান ও ভ্রমনার্থী সীমান্ত রক্ষী এবং ইমিগ্রেশন কর্মকর্তাদের হাতে নাজেহাল হচ্ছিলেন বলে ব্যাপক অভিযোগ রয়েছে। বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম বলেছে, যুক্তরাষ্ট্র সরকারের নতুন এই নীতিমালা এটর্নী জেনারেল এরিক হোল্ডার যে কোন সময় ঘোষণা করতে পারেন। তবে পর্যবেক্ষক মহল বলছেন, ওবামা প্রশাসনের দিক নির্দেশনা সত্ত্বেও যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন এয়ারপোর্ট ও সীমান্ত চৌকিতে ইমিগ্রেশন কর্মকর্তারা আগের মতই জাতি ও বর্ণগত কারণে পর্যবেক্ষণ ও জিজ্ঞাসাবাদে কঠোরতা আরোপের সুযোগ পাবে। এদিকে সন্ত্রাসী পর্যবেক্ষণের নামে এফবিআই এখনো বিভিন্ন কমিউনিটিকে তাদের গোয়েন্দা জালে নিয়ে আসতে গোপন নজরদারী এবং স্পাই নিয়োগের কর্মসূচী অব্যাহত রাখতে পারবে। গোয়েন্দা নজরদারীর বিতর্কিত এই কর্মসূচী অব্যাহত রাখার এই সিদ্ধান্তে যুক্তরাষ্ট্রে মুসলিম কমিউনিটিতে ক্ষোভ ও হতাশার সৃষ্টি হয়েছে। ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বরের সন্ত্রাসী আক্রমনের পর থেকেই মুসলিম কমিউনিটি বিভিন্ন এজেন্সী কর্তৃক গোয়েন্দা নজরদারীতে রয়েছে। বিভিন্ন মুসলিম সংগঠন এবং নাগরিক স্বাধীনতার প্রবক্তা সংগঠন সমূহ এটাকে বর্ণ বৈষম্যমূলক কর্মসূচী হিসেবে এর সমালোচনা করে আসছে।
জানা গেছে, নতুন বিধানে নিরাপত্বা রক্ষার দায়িত্বে নিয়োজিত ব্যক্তিরা কারো জাতীয়তা, ধর্ম এবং বর্ণকে বিবেচনায় রেখে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ, এমনকি ক্রিমিনাল ইনভেষ্টিগেশনের সময়ও কারো ধর্ম বা জাতীয়তাকে বিবেচনায় রাখতে সে বিষয়টি সামনে আনতে পারবে না। নতুন নীতিমালায় এমন বিধানও রয়েছে যাতে সীমান্ত থেকে দূরে কারো ইমিগ্রেশন স্ট্যাটাস তদন্তকালেও তার ধর্ম বর্ণের বিষয়টি সামনে নিয়ে প্রশ্ন করার সুযোগ থাকবে না। স্থানীয় পুলিশ বিভাগকে একই নিয়ম মেনে কাজ করতে হবে।
এটর্নী জেনারেল এরিক হোল্ডারের বরাত দিয়ে দ্য নিউইয়র্ক টাইমস পত্রিকা বলেছে, এরিক হোল্ডার আইন শৃংখলা বাহিনীকে এমন কাজ থেকে বিরত রাখার পক্ষে জোর অভিমত দিয়েছেন। তবে এটর্নী জেনারেল এরিক হোল্ডারের এই নীতির বিরোধীতা করেছে এফবিআই ও ইমিগ্রেশন কর্মকর্তারা। তারা বলেছেন, সীমান্তে চেক করার সময় ধর্ম, বর্ণ ও জাতীয়তাকে সামনে রেখেই জিজ্ঞাসাবাদ করতে হবে। অন্যথায় কে আসল, কে নকল এটা অনুধাবন দূরুহ হবে। ইমিগ্রেশন কর্মকর্তারা বলেছেন, আমাদের তদন্ত বা সাক্ষাতকারের সময় জাতীয়তাকে সামনে না নিয়ে আমাদের পক্ষে কারো বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া সম্ভব হবে না। কারণ এর উপর নির্ভর করেই কাউকে ভিসা দেয়া বা যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের যে যোগ্য কিনা সেটা আমরা বিবেচনা করে থাকি।
যুক্তরাষ্ট্র ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ সীমান্ত থেকে ১০০ মাইল পর্যন্ত যে কাউকে চেক পোস্টের মতই ইমিগ্রেশন স্ট্যাটাস নিয়ে প্রশ্ন করার অধিকার রাখে। যার প্রমাণ হচ্ছে নিউইয়র্কের আপস্টেট বা কানাডা বর্ডারের কাছে বাফেলো এরিয়াতে প্রায়ই ফেডারেল এজেন্টরা ট্রেন বা বাসে চড়ে তল্লাসী শুরু করে। তারা প্যাসেঞ্জারদের ইমিগ্রেশন স্ট্যাটাস জানতে চায়। কেউ বৈধভাবে বসবাসের কাগজপত্র দেখাতে না পারলে তাৎক্ষনিকভাবে গ্রেফতার করে নিয়ে যাওয়ার ঘঠনা ঘটছে অহরহ।
অবশ্য ইলিনয় থেকে নির্বাচিত যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী সিনেটর রিচার্ড জে ডারবিন বলেছেন, সীমান্ত রক্ষীদের এই অধিকার বা ক্ষমতা দেয়ার অর্থ হচ্ছে বর্ণ বৈষম্যগত লাইসেন্সকে তাদের হাতে তুলে দেয়া।
নতুন বিধান চালুর আগে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল সরকার বিভিন্ন সীমান্তে এজেন্টরা নতুন বিধানকে কিভাবে কার্যকর করছে তা সরাসরি পর্যবেক্ষন করবে বলে জানা গেছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কতিপয় এজেন্ট বলেছেন, নতুন বিধান কার্যকর করার আগে আরো ট্রেনিং প্রয়োজন রয়েছে। এছাড়া আইনটি সঠিকভাবে বাস্তবায়ন হচ্ছে কিনা সেটাও খতিয়ে দেখা উচিৎ।
এটর্নী জেনারেল এরিক হোল্ডার তার জীবনের বিভিন্ন ঘটনা প্রসঙ্গে বলেন, আমি কলেজ জীবনে এমনকি ফেডারেল প্রসিকিউটরের দায়িত্ব পালনকালেও বিভিন্ন সময় বর্নের কারণে অহেতুক নাজেহালের শিকার হয়েছি। ফেডারেল বিভিন্ন এজেন্সী এরিক হোল্ডারের সাথে একমত পোষন করলেও তারা বলেছে, বর্ন ও জাতিগত বিষয়টি তদন্তের স্বার্থেই প্রয়োজন হবে। যে সোমালিয়াতে সন্ত্রাসী গ্রুপ রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে তাদের নেটওয়ার্ক আছে কিনা, সেটা দেখার জন্য অবশ্যই দেখতে হবে সোমালীয় জনগোষ্ঠির বসবাস কোথায়। (বাংলা পত্রিকা)