নিউইয়র্ক ০৭:৩০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১০ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

করোনা নিয়েই শুরু হলো ট্রাম্প-বাইডেনের শেষ বিতর্ক

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০১:৪০:৫০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৩ অক্টোবর ২০২০
  • / ৬৪ বার পঠিত

হককথা ডেস্ক: নিউইয়র্কের স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার রাত ৯টায় (বাংলাদেশ সময় শুক্রবার সকাল ৭টা) টেনেসি অঙ্গরাজ্যের নাশভিলের বেলমন্ট ইউনিভার্সিটিতে চূড়ান্ত বিতর্কে মুখোমুখি হলেন রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জো বাইডেন। দেড় ঘন্টার এই বিতর্কের শুরুতেই করোনাভাইরাস নিয়ে বিতর্কে জড়িয়েছেন দুই প্রার্থী। এ প্রসঙ্গে জো বাইডেন বলেছেন, দেশের দুই লাখ মানুষের মৃত্যুর দায়িত্ব যিনি নিতে পারেন না তাঁর দেশের প্রেসিডেন্ট হিসেবে থাকার কোনো অধিকার নেই। মহামারি মোকাবিলার জন্য সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা জানান তিনি। অপরদিকে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প জানান, তিনি আবার লকডাউনের পক্ষে নন। লকডাউন নয়, ভাইরাসকে বন্ধ করতে হবে। করোনাভাইরাসকে নিয়েই আমেরিকানরা বাঁচতে শিখেছে বলে মন্তব্য করেন ট্রাম্প।
বিতর্কমঞ্চের শুরুতে দুই প্রার্থীর কেউ কাউকে বাঁধা দেননি। বিতর্ক ভালোভাবে পরিচালনার জন্য সঞ্চালক এনবিসি টেলিভিশনের সাংবাদিক ক্রিস্টেন ওয়েকারের প্রশংসাও করেন ট্রাম্প। তবে বিভিন্ন ইস্যুতে দুই প্রার্থীর মধ্যে বিতর্ক চলে। বিশেষ করে বিতর্কে কোভিড-১৯ মোকাবিলা, আমেরিকান পরিবার, বর্ণ বিদ্বেষ, জলবায়ু পরিবর্তন, জাতীয় নিরাপত্তা ও নেতৃত্ব প্রভৃতি বিষয় স্থান পায়। প্রত্যেক প্রার্থী নিজের বক্তব্য তুলে ধরার জন্য দুই মিনিট করে সময় পান।

বিতর্কে ডোনাল্ড ট্রাম্প ও জো বাইডেন উভয়ই ছিলেন অনেকটাই সংযত। তাঁরা একে অন্যকে কথা বলার সুযোগ দিয়েছেন। একে অন্যের সঙ্গে সম্মানের সুরে কথা বলেছেন। এমনকি একে অন্যকে আক্রমণের সুরটিও ছিল শান্ত। বিবিসির খবর বলছে, বোঝা গেছে, মাইক বন্ধ করে দেওয়ার নতুন নিয়ম কাজে লেগেছে। সিএনএনের খবর বলছে, প্রথম বিতর্কের তুলনায় ট্রাম্প সংযত আচরণ করেছেন। তবে নাটকীয় কিছু দেখাতে পারেননি। রিপাবলিকান সমর্থকেরা চূড়ান্ত বিতর্কে ট্রাম্প নাটকীয় কিছু দেখাবেন বলে প্রত্যাশা করেছিলেন। সব মিলিয়ে বিশ্লেষকরা বলছেন, এই বিতর্কে ট্রাম্প-বাইডেন দু’জনই জিতেছেন।
জাতীয় নিরাপত্তা নিয়ে দ্বিতীয় প্রশ্নের উত্তরে বাইডেন বলেছেন, ‘আমাদের দেশের রাজনীতিকে প্রভাবিত করার চেষ্টা যে দেশই করবে তাদের মূল্য দিতে হবে। এটা আমেরিকার সার্বভৌমত্বের প্রশ্ন।
জবাবে ডোনাল্ড ট্রাম্প রাশিয়া থেকে জো বাইডেন সুবিধা নিয়েছেন বলে অভিযোগ করেন। তিনি দাবি করেন, রাশিয়াসহ অন্য সব দেশের ওপর তিনি যথেষ্ট কঠোর। অপরদিকে চীনে ট্রাম্পের ব্যবসা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বাইডেন। ট্রাম্পের কর পরিশোধ না করার সমালোচনা করেন বাইডেন। জবাবে ট্রাম্প বলেছেন, তিনি লাখ লাখ ডলার কর আগেই পরিশোধ করেছেন। আগের অবস্থানে অনড় থেকে ট্রাম্প বলেন, তিনি আইআরএস অডিট করার পর ট্যাক্স রিটার্ন প্রকাশ করবেন। তবে তা কবে করবেন তা জানাননি।
ইউক্রেনে বাইডেনের ছেলের ব্যবসা নিয়ে অভিযোগ ছুড়ে দেন ট্রাম্প। বাইডেন বলেন, এ বিতর্ক ট্রাম্প বা তাঁর পরিবারের নয়। এ বিতর্ক আমেরিকার জনগণের স্বার্থ নিয়ে। জবাবে ট্রাম্প বলেন, উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জুং উনের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক যথেষ্ট ভালো। এ নিয়ে সমালোচনা করেন বাইডেন।
জো বাইডেন ওবামা কেয়ারকে শক্তিশালী করে ওষুধের মূল্য কমানো ও জনগণের স্বাস্থ্যসেবা সুলভ করার পরিকল্পনার কথা বলেন। ট্রাম্প জানান, তিনি আইন করে ওবামা কেয়ারের বিতর্কিত বিষয় বাতিল করতে পেরেছেন। ওবামা কেয়ার বাতিল করে আরেকটি ভালো স্বাস্থ্যসেবা আইন চালু করার পরিকল্পনার কথা জানান ট্রাম্প।
উল্লেখ্য, আগামী ৩ নভেম্বর মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনের আগে বৃহস্পতিবারের বিতর্ক ছিলো ট্রাম্প-বাইডেনের শেষ ও চূড়ান্ত বিতর্ক। আর এই বিতর্ক ঘিরে নিউইয়র্কে সন্ধ্যার পর থেকেই লোকজনকে টিভির সামনে বসে থাকতে দেখা যায়। গত ২৯ সেপ্টেম্বর ট্রাম্প ও বাইডেনের প্রথম বিতর্ক অনুষ্ঠিত হয়। এই বিতর্কে কথা বলার সময় বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। এমন পরিস্থিতির জন্য প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে দায়ী করা হয়েছে। বিতর্কটিকে যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে লজ্জাজনক প্রেসিডেনশিয়াল বিতর্ক বলে আমেরিকান সংবাদমাধ্যমে উল্লেখ করা হয়েছে। অপরদিকে ট্রাম্পের করোনা সংক্রমণের কারণে দ্বিতীয় বিতর্ক ভার্চ্যুয়াল করার প্রস্তাব দিয়েছিল বিতর্ক কমিশন। ট্রাম্প তাতে বেঁকে বসেন। ফলে দ্বিতীয় বিতর্কটি বাতিল হয়ে যায়।

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

করোনা নিয়েই শুরু হলো ট্রাম্প-বাইডেনের শেষ বিতর্ক

প্রকাশের সময় : ০১:৪০:৫০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৩ অক্টোবর ২০২০

হককথা ডেস্ক: নিউইয়র্কের স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার রাত ৯টায় (বাংলাদেশ সময় শুক্রবার সকাল ৭টা) টেনেসি অঙ্গরাজ্যের নাশভিলের বেলমন্ট ইউনিভার্সিটিতে চূড়ান্ত বিতর্কে মুখোমুখি হলেন রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জো বাইডেন। দেড় ঘন্টার এই বিতর্কের শুরুতেই করোনাভাইরাস নিয়ে বিতর্কে জড়িয়েছেন দুই প্রার্থী। এ প্রসঙ্গে জো বাইডেন বলেছেন, দেশের দুই লাখ মানুষের মৃত্যুর দায়িত্ব যিনি নিতে পারেন না তাঁর দেশের প্রেসিডেন্ট হিসেবে থাকার কোনো অধিকার নেই। মহামারি মোকাবিলার জন্য সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা জানান তিনি। অপরদিকে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প জানান, তিনি আবার লকডাউনের পক্ষে নন। লকডাউন নয়, ভাইরাসকে বন্ধ করতে হবে। করোনাভাইরাসকে নিয়েই আমেরিকানরা বাঁচতে শিখেছে বলে মন্তব্য করেন ট্রাম্প।
বিতর্কমঞ্চের শুরুতে দুই প্রার্থীর কেউ কাউকে বাঁধা দেননি। বিতর্ক ভালোভাবে পরিচালনার জন্য সঞ্চালক এনবিসি টেলিভিশনের সাংবাদিক ক্রিস্টেন ওয়েকারের প্রশংসাও করেন ট্রাম্প। তবে বিভিন্ন ইস্যুতে দুই প্রার্থীর মধ্যে বিতর্ক চলে। বিশেষ করে বিতর্কে কোভিড-১৯ মোকাবিলা, আমেরিকান পরিবার, বর্ণ বিদ্বেষ, জলবায়ু পরিবর্তন, জাতীয় নিরাপত্তা ও নেতৃত্ব প্রভৃতি বিষয় স্থান পায়। প্রত্যেক প্রার্থী নিজের বক্তব্য তুলে ধরার জন্য দুই মিনিট করে সময় পান।

বিতর্কে ডোনাল্ড ট্রাম্প ও জো বাইডেন উভয়ই ছিলেন অনেকটাই সংযত। তাঁরা একে অন্যকে কথা বলার সুযোগ দিয়েছেন। একে অন্যের সঙ্গে সম্মানের সুরে কথা বলেছেন। এমনকি একে অন্যকে আক্রমণের সুরটিও ছিল শান্ত। বিবিসির খবর বলছে, বোঝা গেছে, মাইক বন্ধ করে দেওয়ার নতুন নিয়ম কাজে লেগেছে। সিএনএনের খবর বলছে, প্রথম বিতর্কের তুলনায় ট্রাম্প সংযত আচরণ করেছেন। তবে নাটকীয় কিছু দেখাতে পারেননি। রিপাবলিকান সমর্থকেরা চূড়ান্ত বিতর্কে ট্রাম্প নাটকীয় কিছু দেখাবেন বলে প্রত্যাশা করেছিলেন। সব মিলিয়ে বিশ্লেষকরা বলছেন, এই বিতর্কে ট্রাম্প-বাইডেন দু’জনই জিতেছেন।
জাতীয় নিরাপত্তা নিয়ে দ্বিতীয় প্রশ্নের উত্তরে বাইডেন বলেছেন, ‘আমাদের দেশের রাজনীতিকে প্রভাবিত করার চেষ্টা যে দেশই করবে তাদের মূল্য দিতে হবে। এটা আমেরিকার সার্বভৌমত্বের প্রশ্ন।
জবাবে ডোনাল্ড ট্রাম্প রাশিয়া থেকে জো বাইডেন সুবিধা নিয়েছেন বলে অভিযোগ করেন। তিনি দাবি করেন, রাশিয়াসহ অন্য সব দেশের ওপর তিনি যথেষ্ট কঠোর। অপরদিকে চীনে ট্রাম্পের ব্যবসা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বাইডেন। ট্রাম্পের কর পরিশোধ না করার সমালোচনা করেন বাইডেন। জবাবে ট্রাম্প বলেছেন, তিনি লাখ লাখ ডলার কর আগেই পরিশোধ করেছেন। আগের অবস্থানে অনড় থেকে ট্রাম্প বলেন, তিনি আইআরএস অডিট করার পর ট্যাক্স রিটার্ন প্রকাশ করবেন। তবে তা কবে করবেন তা জানাননি।
ইউক্রেনে বাইডেনের ছেলের ব্যবসা নিয়ে অভিযোগ ছুড়ে দেন ট্রাম্প। বাইডেন বলেন, এ বিতর্ক ট্রাম্প বা তাঁর পরিবারের নয়। এ বিতর্ক আমেরিকার জনগণের স্বার্থ নিয়ে। জবাবে ট্রাম্প বলেন, উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জুং উনের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক যথেষ্ট ভালো। এ নিয়ে সমালোচনা করেন বাইডেন।
জো বাইডেন ওবামা কেয়ারকে শক্তিশালী করে ওষুধের মূল্য কমানো ও জনগণের স্বাস্থ্যসেবা সুলভ করার পরিকল্পনার কথা বলেন। ট্রাম্প জানান, তিনি আইন করে ওবামা কেয়ারের বিতর্কিত বিষয় বাতিল করতে পেরেছেন। ওবামা কেয়ার বাতিল করে আরেকটি ভালো স্বাস্থ্যসেবা আইন চালু করার পরিকল্পনার কথা জানান ট্রাম্প।
উল্লেখ্য, আগামী ৩ নভেম্বর মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনের আগে বৃহস্পতিবারের বিতর্ক ছিলো ট্রাম্প-বাইডেনের শেষ ও চূড়ান্ত বিতর্ক। আর এই বিতর্ক ঘিরে নিউইয়র্কে সন্ধ্যার পর থেকেই লোকজনকে টিভির সামনে বসে থাকতে দেখা যায়। গত ২৯ সেপ্টেম্বর ট্রাম্প ও বাইডেনের প্রথম বিতর্ক অনুষ্ঠিত হয়। এই বিতর্কে কথা বলার সময় বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। এমন পরিস্থিতির জন্য প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে দায়ী করা হয়েছে। বিতর্কটিকে যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে লজ্জাজনক প্রেসিডেনশিয়াল বিতর্ক বলে আমেরিকান সংবাদমাধ্যমে উল্লেখ করা হয়েছে। অপরদিকে ট্রাম্পের করোনা সংক্রমণের কারণে দ্বিতীয় বিতর্ক ভার্চ্যুয়াল করার প্রস্তাব দিয়েছিল বিতর্ক কমিশন। ট্রাম্প তাতে বেঁকে বসেন। ফলে দ্বিতীয় বিতর্কটি বাতিল হয়ে যায়।