নিউইয়র্ক ০২:৫৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

হিলারী-ট্রাম্পরা এত টাকা কোথায় পাচ্ছেন ?

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ১২:৫২:৩১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২১ মার্চ ২০১৬
  • / ৭০৫ বার পঠিত

ঢাকা: নির্বাচন মানেই অর্থের শ্রাদ্ধ। আর যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচন হলে তো কথাই নেই। ভোটারদের মন জয়ে নানাভাবে সেখানে নির্বাচনী প্রচার চলে। এতে কোটি কোটি ডলার ব্যয় হয়। আসন্ন ইউএস প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অংশ নিতে প্রধান দুটি রাজনৈতিক দল ডেমোক্রেটিক ও রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী বাছাই চলছে। দুই দলের মনোনয়নপ্রত্যাশীরা এখন বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে চলমান প্রাইমারিতে অংশ নিচ্ছেন। নিজ নিজ প্রচারণায় অর্থ ব্যয়ে কার্পণ্য নেই তাঁদের। এই কাঁড়ি কাঁড়ি ডলার আসছে কোত্থেকে? তা একঝলক দেখে নেওয়া যাক।
Hilary_AFPহিলারী ক্লিনটন: ডেমোক্রেটিক দলের মনোনয়নপ্রত্যাশী হিলারী ক্লিনটন তাঁর প্রচারে ব্যয় করছেন ১৩ কোটি ৪৪ লাখ ৩ হাজার ৬৩৭ ডলার। তাঁর এই বিপুল ব্যয় নিয়ে অনেক প্রশ্ন উঠেছে। একই দলের অপর মনোনয়ন প্রত্যাশী বার্নি স্যান্ডার্স প্রশ্ন তুলেছেন, এত অর্থ কোথায় পেলেন হিলারী? আইনজীবী, বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান ও ব্যাংকগুলো হিলারীর নির্বাচনী প্রচারে অর্থায়ন করে। এ ক্ষেত্রে ওয়াল স্ট্রিটের একটা বড় ভূমিকা রয়েছে। তাই স্যান্ডার্স বরাবরই যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিতে ওয়াল স্ট্রিটের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি নির্বাচনী প্রচারে কোটি কোটি টাকার ছড়াছড়ির অবসান চান।
আইনজীবী ও আইনবিষয়ক প্রতিষ্ঠানগুলো হিলারীর নির্বাচনী প্রচারে ১ কোটি ১০ লাখ ডলার অর্থায়ন করেছে। এর মধ্যে ১০ লাখের বেশি ডলার এসেছে ব্যক্তি খাত থেকে। যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ সাতটি আইনি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ব্যক্তিরা এই অর্থায়ন করেছেন। এ ছাড়া বাণিজ্যিক ব্যাংক ও বিনিয়োগকারী শিল্পপ্রতিষ্ঠান তাঁর নির্বাচনী প্রচারে ৪০ লাখ ডলার অর্থায়ন করেছে। এ ছাড়া বিভিন্ন বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান ছায়া ব্যাংক হিসেবে হিলারির নির্বাচনী প্রচারে অর্থায়ন করেছে। এ ধরনের প্রতিষ্ঠানগুলো ‘ছায়া ব্যাংক’ হিসেবে সম্ভবত কেবলমাত্র হিলারীকেই অর্থায়ন করেছে। এ কারণেই হিলারী এই প্রতিষ্ঠানগুলোকে গুরুত্ব দিয়ে থাকেন। তিনি এমনও বলেছেন, দেশের অর্থনৈতিক সংকটের হাল ধরবে এই ব্যাংকগুলোই।
বার্নি স্যান্ডার্স: আরেক ডেমোক্র্যাট মনোনয়নপ্রত্যাশী বার্নি স্যান্ডার্স নির্বাচনে ব্যয় করছেন ৯ কোটি ৬৩ লাখ ১১ হাজার ৪২৩ ডলার। তিনি মনোনয়নপ্রত্যাশীদের নির্বাচনী প্রচারে বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানের অর্থায়নের বিরুদ্ধে সোচ্চার। শুধু কথায় নয়, কাজেও তিনি প্রমাণ রেখেছেন। টারিং ফার্মাসিউটিক্যালের সাবেক প্রধান নির্বাহী মার্টিন সাকরেলির অর্থায়নের প্রস্তাব তিনি ফিরিয়ে দিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের সাধারণ জনগণের কাছ থেকে আর্থিক সহায়তা নিয়েছেন স্যান্ডার্স।
স্যান্ডার্সের নির্বাচনী প্রচারে আরও একটি অদ্ভুত দল অর্থায়ন করছে। তা হলো যুক্তরাষ্ট্রের কর্মহীন বা বেকার জনগোষ্ঠী। গত বছর তাঁর নির্বাচনী প্রচারে কর্মহীনেরা ১ কোটি ৪০ লাখ ডলার অর্থায়ন করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্রে সেবিকাদের সংগঠন ন্যাশনাল নার্সেস ইউনাইটেডও স্যান্ডার্সের নির্বাচনী প্রচারে অর্থায়ন করেছে। এই সংগঠনটি দিয়েছে ২০ লাখ ডলারেরও বেশি। এ ছাড়া বিভিন্ন সংগঠন ও সম্পদশালী ব্যক্তিরা তাঁকে অর্থায়ন করেছেন।
টেড ক্রুজ: নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট পদে মনোনয়নপ্রত্যাশী প্রার্থী রিপাবলিকান দলের টেড ক্রুজের ব্যয় ৫ কোটি ৪৬ লাখ ৬১ হাজার ৫০৬ ডলার। টেক্সাসের সিনেটর টেড ক্রুজ তাঁর নিজের এলাকা থেকেই নির্বাচনী প্রচারের বেশির ভাগ অর্থ পেয়েছেন। টেক্সাসবাসী তাঁর নির্বাচনী প্রচারে মোট ব্যয়ের ৪৩ শতাংশ অর্থায়ন করেছে। ওই এলাকার ব্যবসায়ী, তেল-গ্যাসসহ বিভিন্ন শিল্পপ্রতিষ্ঠান তাঁকে অর্থায়ন করেছে।
ক্রুজের নির্বাচনী প্রচারে বড় ধরনের অর্থায়ন করেছেন দুই ভাই ড্যান ও ফ্যারিস। তাঁদের টেক্সাসে জ্বালানির ব্যবসা রয়েছে। টেড ক্রুজের নির্বাচনী প্রচারে এই দুই ভাই ৫৯ হাজার ৫০ ডলার অর্থায়ন করেছেন। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের পলিটিক্যাল অ্যাকশন কমিটি তাঁকে ১ কোটি ৫ লাখ ডলার অর্থায়ন করেছে। এই কমিটি বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রার্থীদের প্রচারে অর্থায়ন করে থাকে। দেশটির ডাক বিভাগ এবং সেখানে কর্মরত বিভিন্ন ব্যক্তিও ক্রুজের নির্বাচনী প্রচারে অর্থায়ন করেছে।
Trump_AFPডোনাল্ড ট্রাম্প: রিপাবলিকান দলের মনোনয়নপ্রত্যাশী ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারে ব্যয় ২ কোটি ৫৫ লাখ ২৬ হাজার ৩১৯ ডলার। ট্রাম্প নিজেই কোটিপতি ব্যবসায়ী। তাই প্রচারে তিনি ছড়াচ্ছেন কোটি কোটি ডলার। ট্রাম্প অন্য কৌশলে প্রথমেই গণমাধ্যমের মনোযোগ কেড়েছেন। অন্যরা যেমন টিভিতে ঢালাওভাবে ব্যয়বহুল বিজ্ঞাপন দিয়ে মনোযোগ কাড়েন, সেভাবে না গিয়ে নির্বাচনী বার্তা পাঠিয়ে গণমাধ্যমের দৃষ্টি কাড়েন তিনি। এতে তহবিল জোগাড়ের বিষয়টি থেমে থাকেনি। আড়াই কোটি ডলার জোগাড় হয়েছে। ছবি: হিলারি ক্লিনটন ও ডোনাল্ড ট্রাম্প-এএফপি

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

About Author Information

হিলারী-ট্রাম্পরা এত টাকা কোথায় পাচ্ছেন ?

প্রকাশের সময় : ১২:৫২:৩১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২১ মার্চ ২০১৬

ঢাকা: নির্বাচন মানেই অর্থের শ্রাদ্ধ। আর যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচন হলে তো কথাই নেই। ভোটারদের মন জয়ে নানাভাবে সেখানে নির্বাচনী প্রচার চলে। এতে কোটি কোটি ডলার ব্যয় হয়। আসন্ন ইউএস প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অংশ নিতে প্রধান দুটি রাজনৈতিক দল ডেমোক্রেটিক ও রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী বাছাই চলছে। দুই দলের মনোনয়নপ্রত্যাশীরা এখন বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে চলমান প্রাইমারিতে অংশ নিচ্ছেন। নিজ নিজ প্রচারণায় অর্থ ব্যয়ে কার্পণ্য নেই তাঁদের। এই কাঁড়ি কাঁড়ি ডলার আসছে কোত্থেকে? তা একঝলক দেখে নেওয়া যাক।
Hilary_AFPহিলারী ক্লিনটন: ডেমোক্রেটিক দলের মনোনয়নপ্রত্যাশী হিলারী ক্লিনটন তাঁর প্রচারে ব্যয় করছেন ১৩ কোটি ৪৪ লাখ ৩ হাজার ৬৩৭ ডলার। তাঁর এই বিপুল ব্যয় নিয়ে অনেক প্রশ্ন উঠেছে। একই দলের অপর মনোনয়ন প্রত্যাশী বার্নি স্যান্ডার্স প্রশ্ন তুলেছেন, এত অর্থ কোথায় পেলেন হিলারী? আইনজীবী, বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান ও ব্যাংকগুলো হিলারীর নির্বাচনী প্রচারে অর্থায়ন করে। এ ক্ষেত্রে ওয়াল স্ট্রিটের একটা বড় ভূমিকা রয়েছে। তাই স্যান্ডার্স বরাবরই যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিতে ওয়াল স্ট্রিটের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি নির্বাচনী প্রচারে কোটি কোটি টাকার ছড়াছড়ির অবসান চান।
আইনজীবী ও আইনবিষয়ক প্রতিষ্ঠানগুলো হিলারীর নির্বাচনী প্রচারে ১ কোটি ১০ লাখ ডলার অর্থায়ন করেছে। এর মধ্যে ১০ লাখের বেশি ডলার এসেছে ব্যক্তি খাত থেকে। যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ সাতটি আইনি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ব্যক্তিরা এই অর্থায়ন করেছেন। এ ছাড়া বাণিজ্যিক ব্যাংক ও বিনিয়োগকারী শিল্পপ্রতিষ্ঠান তাঁর নির্বাচনী প্রচারে ৪০ লাখ ডলার অর্থায়ন করেছে। এ ছাড়া বিভিন্ন বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান ছায়া ব্যাংক হিসেবে হিলারির নির্বাচনী প্রচারে অর্থায়ন করেছে। এ ধরনের প্রতিষ্ঠানগুলো ‘ছায়া ব্যাংক’ হিসেবে সম্ভবত কেবলমাত্র হিলারীকেই অর্থায়ন করেছে। এ কারণেই হিলারী এই প্রতিষ্ঠানগুলোকে গুরুত্ব দিয়ে থাকেন। তিনি এমনও বলেছেন, দেশের অর্থনৈতিক সংকটের হাল ধরবে এই ব্যাংকগুলোই।
বার্নি স্যান্ডার্স: আরেক ডেমোক্র্যাট মনোনয়নপ্রত্যাশী বার্নি স্যান্ডার্স নির্বাচনে ব্যয় করছেন ৯ কোটি ৬৩ লাখ ১১ হাজার ৪২৩ ডলার। তিনি মনোনয়নপ্রত্যাশীদের নির্বাচনী প্রচারে বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানের অর্থায়নের বিরুদ্ধে সোচ্চার। শুধু কথায় নয়, কাজেও তিনি প্রমাণ রেখেছেন। টারিং ফার্মাসিউটিক্যালের সাবেক প্রধান নির্বাহী মার্টিন সাকরেলির অর্থায়নের প্রস্তাব তিনি ফিরিয়ে দিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের সাধারণ জনগণের কাছ থেকে আর্থিক সহায়তা নিয়েছেন স্যান্ডার্স।
স্যান্ডার্সের নির্বাচনী প্রচারে আরও একটি অদ্ভুত দল অর্থায়ন করছে। তা হলো যুক্তরাষ্ট্রের কর্মহীন বা বেকার জনগোষ্ঠী। গত বছর তাঁর নির্বাচনী প্রচারে কর্মহীনেরা ১ কোটি ৪০ লাখ ডলার অর্থায়ন করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্রে সেবিকাদের সংগঠন ন্যাশনাল নার্সেস ইউনাইটেডও স্যান্ডার্সের নির্বাচনী প্রচারে অর্থায়ন করেছে। এই সংগঠনটি দিয়েছে ২০ লাখ ডলারেরও বেশি। এ ছাড়া বিভিন্ন সংগঠন ও সম্পদশালী ব্যক্তিরা তাঁকে অর্থায়ন করেছেন।
টেড ক্রুজ: নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট পদে মনোনয়নপ্রত্যাশী প্রার্থী রিপাবলিকান দলের টেড ক্রুজের ব্যয় ৫ কোটি ৪৬ লাখ ৬১ হাজার ৫০৬ ডলার। টেক্সাসের সিনেটর টেড ক্রুজ তাঁর নিজের এলাকা থেকেই নির্বাচনী প্রচারের বেশির ভাগ অর্থ পেয়েছেন। টেক্সাসবাসী তাঁর নির্বাচনী প্রচারে মোট ব্যয়ের ৪৩ শতাংশ অর্থায়ন করেছে। ওই এলাকার ব্যবসায়ী, তেল-গ্যাসসহ বিভিন্ন শিল্পপ্রতিষ্ঠান তাঁকে অর্থায়ন করেছে।
ক্রুজের নির্বাচনী প্রচারে বড় ধরনের অর্থায়ন করেছেন দুই ভাই ড্যান ও ফ্যারিস। তাঁদের টেক্সাসে জ্বালানির ব্যবসা রয়েছে। টেড ক্রুজের নির্বাচনী প্রচারে এই দুই ভাই ৫৯ হাজার ৫০ ডলার অর্থায়ন করেছেন। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের পলিটিক্যাল অ্যাকশন কমিটি তাঁকে ১ কোটি ৫ লাখ ডলার অর্থায়ন করেছে। এই কমিটি বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রার্থীদের প্রচারে অর্থায়ন করে থাকে। দেশটির ডাক বিভাগ এবং সেখানে কর্মরত বিভিন্ন ব্যক্তিও ক্রুজের নির্বাচনী প্রচারে অর্থায়ন করেছে।
Trump_AFPডোনাল্ড ট্রাম্প: রিপাবলিকান দলের মনোনয়নপ্রত্যাশী ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারে ব্যয় ২ কোটি ৫৫ লাখ ২৬ হাজার ৩১৯ ডলার। ট্রাম্প নিজেই কোটিপতি ব্যবসায়ী। তাই প্রচারে তিনি ছড়াচ্ছেন কোটি কোটি ডলার। ট্রাম্প অন্য কৌশলে প্রথমেই গণমাধ্যমের মনোযোগ কেড়েছেন। অন্যরা যেমন টিভিতে ঢালাওভাবে ব্যয়বহুল বিজ্ঞাপন দিয়ে মনোযোগ কাড়েন, সেভাবে না গিয়ে নির্বাচনী বার্তা পাঠিয়ে গণমাধ্যমের দৃষ্টি কাড়েন তিনি। এতে তহবিল জোগাড়ের বিষয়টি থেমে থাকেনি। আড়াই কোটি ডলার জোগাড় হয়েছে। ছবি: হিলারি ক্লিনটন ও ডোনাল্ড ট্রাম্প-এএফপি