যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন-২০২০ : ভোটে জিততে মরিয়া ট্রাম্প

- প্রকাশের সময় : ০৪:২৭:০০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৯ জুলাই ২০২০
- / ৫৪ বার পঠিত
হককথা ডেস্ক: আর ঠিক ৯৯ দিন বাকি। আগামী ৩ নভেম্বর অনুষ্ঠেয় প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্প কি আবার জয়ী হতে পারবেন? নাকি হোয়াইট হাউসে তার দ্বিতীয় ইনিংস হাতছাড়া হয়ে যাবে? করোনা সংকট ও অর্থনীতির ওপর সেই সংকটের মারাত্মক প্রভাবের মাঝে কার্যত সব জনমত জরিপে ট্রাম্প তার প্রতিদ্ব›দ্বী, সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের থেকে বেশ পিছিয়ে রয়েছেন। তবে ভোটারদের মতিগতি বুঝতে এমন জরিপ যে নির্ভরযোগ্য নয়, চার বছর আগের নির্বাচনে তা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল। ডেমোক্রেট পার্টির হিলারি ক্লিনটন আপাতদৃষ্টিতে এগিয়ে থেকেও নির্বাচনে ট্রাম্পের কাছে হেরে যান। সংবাদসূত্র: ডিডাবিøউ নিউজ, এএফপি, রয়টার্স, পলিটিকো।
ভোটারদের মন জয় করতে গত ২৬ জুলাই রোববার থেকে ট্রাম্প প্রচার শুরু করেন। তার মতে, ‘নীরব সংখ্যাগরিষ্ঠ’ ভোটাররাই তাকে ক্ষমতায় ফিরিয়ে আনবে। জনমত জরিপে খারাপ ফল সত্তে¡ও দমে যাওয়ার পাত্র নন ট্রাম্প। এক টুইট বার্তায় তিনি দাবি করেন, অনেকের মতে তার প্রচারে যে উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখা যাচ্ছে, তা যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে অনেক প্রচার অভিযানের সময়ে দেখা যায়নি। এমনকি তার মতে, ২০১৬ সালে তার নিজের প্রচারকেও ম্স্নান করে দিচ্ছে ২০২০ সালের অভিযান।
এতকাল প্রতিপক্ষ বাইডেনের ভাবমূর্তি খর্ব করতে যথেষ্ট আক্রমণাত্মক ছিলেন না, এমন অভিযোগ খন্ডন করতে ট্রাম্প রোববার তীব্র ভাষায় সেই ঘাটতি পুষিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন। তিনি বলেন, ‘বাইডেনের প্রচারে কোনো উৎসাহ-উদ্দীপনা নেই। ‘নীরব সংখ্যাগরিষ্ঠ’ ভোটাররা ৩ নভেম্বর কথা বলবেন। ভুয়া জরিপ ও ভুয়া খবর র্যাডিকাল বাম শক্তিকে বাঁচাতে পারবে না।’
এদিকে জো বাইডেনও হাত গুটিয়ে বসে নেই। করোনা সংকটের কারণে জনসম্মুখে তেমন উপস্থিত থাকতে না পারলেও তিনি নেপথ্যে যথেষ্ট সক্রিয় রয়েছেন। বাইডেনের দাবি, তিনি ‘যুক্তরাষ্ট্রের আত্মা’র জন্য লড়াই করছেন। তিনি ভোটারদের উদ্দেশে ট্রাম্পের ক্ষমতা একটি কার্যকালেই সীমিত রাখার ডাক দিয়েছেন। বাইডেন এক টুইট বার্তায় লেখেন, ‘আর ১০০ দিন পর আমাদের দেশকে নতুন পথে চালিত করার সুযোগ আসছে। যে পথে আমরা আমাদের উচ্চতম আদর্শ পূরণ করতে পারি এবং সব মানুষ সাফল্যের ন্যায্য সুযোগ পায়।’
২০২০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের চরিত্র করোনা সংকটের কারণে আমূল বদলে গেছে। ভিড়ে ঠাসা জনসভার ঝুঁকি এড়াতে বাইডেন শুরু থেকেই ডিজিটাল মাধ্যমকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন। ট্রাম্প করোনাভাইরাসের পরোয়া না করে বেশ কয়েকটি জনসভা আয়োজন করলেও বর্তমানে পিছিয়ে এসেছেন। সংক্রমণ ছড়ানো থেকে শুরু করে যথেষ্ট ভিড় না হওয়ায় জনসভাগুলোকে ঘিরে অনেক বিতর্ক হয়েছে। আতঙ্কিত হয়ে ট্রাম্প নিজের প্রচার অভিযানের দায়িত্বপ্রাপ্ত ম্যানেজারকে সরিয়ে দেন। ডাকযোগে ব্যালট সম্পর্কে তার সংশয় ও বারবার সতর্কবার্তার ফলেও ট্রাম্পের মনে আতঙ্ক ফুটিয়ে তুলছে বলে অনেক পর্যবেক্ষক মনে করছেন। তার ওপর যেসব রাজ্যে তিনি ২০১৬ সালে জয়লাভ করেছিলেন, তার মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি রাজ্যে তিনি পিছিয়ে পড়েছেন। তাই মরিয়া হয়ে ডিজিটাল প্রচারে মনোযোগ দিচ্ছেন ট্রাম্পও।
নির্বাচনী মাঠে ভ্যাকসিনের প্রতিশ্রæতি ট্রাম্পের
অপরদিকে, নির্বাচনে টানা দ্বিতীয়বারের মতো বিজয়ী হতে মার্কিনিদের এবার দ্রæত করোনার ভ্যাকসিন তৈরির প্রতিশ্রæতি দিচ্ছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ২০২০ সালের যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফল সারা বিশ্বের ওপরই প্রভাব ফেলতে যাচ্ছে। আসন্ন এ নির্বাচনে জয়ের জন্য ভোটের মাঠে করোনার ভ্যাকসিনকে তুরুপের তাস হিসেবে ব্যবহার করতে চান ট্রাম্প। খবর পলিটিকোর।
সে লক্ষ্যেই নির্বাচনের আগেই করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন চাইছেন ট্রাম্প। বিশ্লেষকরা বলছেন, নির্বাচনের আগে যদি করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়া যায়, তবে ট্রাম্প সরকারের ওপর ভোটারদের আস্থা বাড়বে। আর তাই করোনার ভ্যাকসিনে ভর করে ভোটারদের মন গলানোর সেই সুযোগটিই কাজে লাগাতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন ট্রাম্প।
এরই মধ্যে তিনি গবেষণার পর্যায়ে থাকা করোনা ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা ও নিরাপত্তা পরীক্ষায় আরও অর্থ ঢেলেছেন। এ জন্য গবেষণার পর্যায়ে থাকা করোনা ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা ও নিরাপত্তা পরীক্ষায় মার্কিন বায়োটেক কোম্পানি মডার্নাকে আরও ৪৭২ মিলিয়ন ডলার দিয়েছেন তিনি।
মর্ডানা জানিয়েছে, তাদের তৈরি ভ্যাকসিনের তৃতীয় ধাপের ট্রায়ালের মাত্র একদিন আগেই যুক্তরাষ্ট্রের ‘বায়োমেডিকেল অ্যাডভান্সড রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অথরিটি’ বা বারডা এই বিপুল পরিমাণ অর্থ দিচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রে অন্তত ৩০ হাজার মানুষের ওপর করোনার ভ্যাকসিনের ট্রায়ালে এই অর্থ সহায়ক ভূমিকা রাখবে বলে জানিয়েছে মর্ডানা। (দৈনিক যায়যায়দিন)