যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন আজ ৮ ডিসেম্বর মঙ্গলবার : লড়ছেন হিলারি-ট্রামসহ চার প্রার্থী : লড়াই হবে হাড্ডাহাড্ডি

- প্রকাশের সময় : ১১:১০:০১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৮ নভেম্বর ২০১৬
- / ৯২৯ বার পঠিত
নিউইয়র্ক: যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন আজ ৮ ডিসেম্বর মঙ্গলবার। নানা দিক থেকে এবারের নির্বাচন ঐতিহাসিক। এই নির্বাচনে শীর্ষ স্থানীয় দুই দলের অর্থাৎ ক্ষমতাসীন দল ডেমোক্যাটিক পার্টিও মনোনয়নে সাবেক সিনেটর, সাব্কে ফাস্ট লেডী ও সাবেক সেক্রেটারী অব ষ্টেট (পররাষ্ট্রমন্ত্রী) হিলারী রডহ্যাম ক্লিনটন এবং রিপাবলিকান পার্টির মনোনয়নে অরাজনৈতিক ধনকুবের ডেনাল্ড ট্রাম্প প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাদের আরো দুজন প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
এবারের নির্বাচনটি নানা দিক থেকে ঐতিহাসিক হলেও যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে অভিনব, কদর্যও বটে। মুখোমুখি লড়াইয়ে দুই বিপরীত ধারার রাজনীতিবিদ। যাদের কেন্দ্র করে মোটা দাগে দুই ভাগে বিভক্ত য্ক্তুরাষ্ট্র। যা সমকালীন অতীতে কখনো দেখা যায়নি। একদিকে হিলারি ক্লিনটন। ক্যারিয়ার রাজনীতিবিদ, সাবেক ফার্স্টলেডি ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী। অন্যদিকে, ডনাল্ড ট্রাম্প। যার উত্থান আকস্মিক। মূলত ব্যবসায়ী, রিয়েলিটি শো তারকা। কেইবা ভাবতে পেরেছিলেন, ট্রাম্প কোনোদিন হোয়াইট হাউসের এতোটা কাছাকাছি থাকবেন। আড়াইশ’ বছরের ইতিহাসে কোনো নারী সরকার প্রধান নির্বাচিত হতে পারেনি যুক্তরাষ্ট্রে। মাঠ পর্যায়ের অনুসন্ধানে জানা যায়, এবারের নির্বাচনে হিলারি আর ট্রাস্পের মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে।
বহুল আলোচিত এবারের ভোটে ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী হিলারি ক্লিনটনের রানিংমেট হিসেবে রয়েছেন ভার্জিনিয়ার সিনেটর ও সাবেক গভর্নর টিম কেইন। আর রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী ডনাল্ড ট্রাম্প রানিংমেট বানিয়েছেন পেনসিলভানিয়ার গভর্নর মাইক পেন্সকে। এ দু’ প্রার্থীর বাইরে লিবার্টেরিয়ান দলের প্রার্থী হয়েছেন সাবেক গভর্নর গ্যারি জনসন ও গ্রিন পার্টির প্রার্থী জিল স্টেইন। তারা গত নির্বাচনেও প্রার্থী হয়েছিলেন। গতবার ভালো না করলেও, এবারের বিভক্তিপূর্ণ নির্বাচনে তুলনামূলকভাবে কিছু সমর্থন পেয়েছেন এই দু’জন।
প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পাশাপাশি কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদের ৪৩৫ জন সদস্য এবং উচ্চকক্ষ সিনেটের এক-তৃতীয়াংশ সদস্যও নির্বাচিত হচ্ছেন মঙ্গলবার। ভোটাভুটি হচ্ছে স্থানীয় ও রাজ্যভিত্তিক কিছু কর্মকর্তা নির্বাচনেও। ধারণা করা হচ্ছে, প্রতিনিধি পরিষদে নিজেদের দীর্ঘদিনের বড় ব্যবধানের সংখ্যাগরিষ্ঠতা ধরে রাখবে রিপাবলিকানরা। তবে সিনেট নির্বাচনে দু’দলের অবস্থা হাড্ডাহাড্ডি।
আসছে নতুন বছরে অর্থাৎ আগামী ২০ জানুয়ারী জয়ী প্রার্থী শপথ নেবেন। সঙ্গে সঙ্গে তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে যুক্তরাষ্ট্রের ৪৫তম প্রেসিডেন্ট বনে যাবেন।
এদিকে এবারের নির্বাচনে এই প্রথম বাংলাদেশী কমিউনিটি অর্থাৎ বাংলাদেশী-আমেরিকানরা ব্যাপকভাবে অংশ নিচ্ছে। তবে অধিকাংশ বাংলাদেশীরা সমর্থন জানাচ্ছেন হিলারি ক্লিনটনকে। তারা হিলালির পক্ষে ব্যাপকভাবে সভা-সমাবেশ আয়োজন ছাড়াও নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিয়েছেন। সর্বশেষ নির্বাচনের আগের দিন গত সোমবারও তারা অ্যাসাল-এর উদ্যোগে হিলারির পক্ষে ফোন কল সেন্টারের মাধ্যমে ভোট প্রার্থনা করেছেন।
যেভাবে নির্বাচিত হন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট: মোট ভোটের হিসাবে বা সরাসরি জনগণের ভোটে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন না। দেশটির ৫০টি অঙ্গরাজ্য ও রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে জনসংখ্যার অনুপাতে ইলেক্টোরাল ভোট রয়েছে। যেমন, সবচেয়ে বড় অঙ্গরাজ্য ক্যালিফোর্নিয়ায় রয়েছে ৫৫টি ইলেক্টোরাল ভোট। কিন্তু অল্প জনসংখ্যার ওয়াশিংটন ডিসি ও ওয়াওমিং অঙ্গরাজ্যের প্রত্যেকটির রয়েছে ৩টি করে ভোট। এভাবে মোট ৫০টি অঙ্গরাজ্য ও ওয়াশিংটন ডিসি মিলে মোট ইলেক্টোরাল ভোটের সংখ্যা ৫৩৮টি। নির্বাচনে জিততে হলে এগুলোর অর্ধেকের চেয়ে একটি বেশি অর্থাৎ ২৭০টি ভোট জিততে হবে একজন প্রার্থীকে। দৃশ্যত, আমেরিকানরা সরাসরি প্রেসিডেন্টকে নন, বরং প্রত্যেক রাজ্যের নির্ধারিত ইলেকটরদের ভোট দিয়ে থাকেন। রাজ্য কর্মকর্তা বা জ্যেষ্ঠ দলীয় নেতাদেরই সাধারণত ইলেকটর বানানো হয়। তবে তাদের নাম ব্যালটে থাকে না। থাকে প্রেসিডেন্ট প্রার্থীদের নাম। মেইন ও নেব্রাস্কা ব্যতিত বাকি সকল রাজ্যে ‘উইনার টেকস অল’ পদ্ধতি প্রচলিত। অর্থাৎ, যে প্রার্থী রাজ্যের বেশির ভাগ ভোট পাবেন, তার ঘরেই পড়বে রাজ্যটির জন্য নির্ধারিত সকল ইলেক্টোরাল ভোট।