নিউইয়র্ক ০৭:২৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১০ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

আলোচনায় হাতি আর গাদা’র রেস

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০১:০১:১৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩০ অক্টোবর ২০২০
  • / ১৫০ বার পঠিত

সালাহউদ্দিন আহমেদ: যুক্তরাষ্ট্রের আসন্ন নির্বাচনের আর মাত্র কয়েক দিন বাকী। আগামী ৩ নভেম্বর মঙ্গলবার বহুল প্রত্যাশিত ও আলোচিত নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। সকল প্রস্তুতিই সম্পন্ন। ক্ষণ গণনার পাশাপাশি চলছে আগাম ভোট। শনিবার থেকে নিউইয়র্কে আগাম ভোট গ্রহণ শুরু হয়েছে। দেশটির অন্যান্য অঙ্গরাজ্যেও চলছে আগাম ভোট। বিভিন্ন সূত্রে পাওয়া তথ্যে এবারই প্রথম রেকর্ড সংখ্যক ভোটার আগাম ভোট দিচ্ছেন। ইতিমধ্যেই ৭ কোটিরও বেশী মানুষ আগাম ভোট দিয়েছেন বলে জানা গেছে। মহামারী করোনা ভাইরাস সহ অভ্যন্তরীণ নানা ইস্যুকে কেন্দ্র করেই আগাম ভোটের আমেরিকানদের আগ্রহ বেড়েছে বলে বিশেষজ্ঞ মহল অভিমত ব্যক্ত করেছেন। বৃহস্পতিবারও বৃষ্টিমুখর দিনে নিউইয়র্কে বিপুল সংখ্যক মানুষ লাইনে দাঁড়িয়ে বিভিন্ন কেন্দ্রে গিয়ে আগাম ভোট দিয়েছেন। অপরদিকে ইতিহাসে এবারই সবচেয়ে ব্যয়বহুল আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হতে যাচ্ছে জানিয়েছে গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর রেসপন্স পলিটিক্স। সংস্থাটি বলে এবারের নির্বাচনে ব্যয় হচ্ছে প্রায় ১৪ বিলিয়ন ডলার। যা বাংলাদেশী মুদ্রায় এক লাখ ২০ হাজার কোটি টাকা।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ঘিরে ‘ট্রাম্প-বাইডেন’ তথা ‘হাতি আর গাধা’র রেস নিয়ে আমেরিকানদের মধ্যে এখন চলছে আলোচনা, সমালোচনা, বিশ্লেষন। পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচন ঘিরে ভিনদেশের নজরের বিষয় বিশেষ করে রাশিয়া, চীন ও ভারত ঘিরে ট্রাম্প-বাইডেন কে কি বলেছেন তা নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়াও লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ভারত নিয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের এক বক্তব্য ঘিরে ভারতীয়-আমেরিকানদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দিয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। রাশিয়া-চীন নিয়ে ট্রাম্পের বক্তব্যও আলোচিত-সমালোচিত হচ্ছে সচেতন মহলে। অপরদিকে সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এর মধ্যে সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার প্রতিচ্ছবি-ই লক্ষ্য করছেন অনেকে। পাশাপাশি জো বাইডেনের রানিং মেট কমলা হারিসও অলোচনায় আসছেন। প্রশ্ন উঠছে এখনো কি আমেরিকানকরা একজন নারীকে প্রেসিডেন্ট পদে দেখতে আগ্রহী!। আরো প্রশ্ন উঠেছে যে কারনে পপুলার ভোটের পাশপাশি ইলেকট্রোলার ভোট পদ্ধতি তা কি আমেরিকার গণতন্ত্রকে সুপ্রতিষ্ঠিত করছে নাকি জনমনে বিভেদ সৃষ্টি করছে? সর্বশেষ বৃহস্পতিবার সুইং ষ্টেট হিসেবে পরিচিত ফ্লোরিডায় পৃথক পৃথক নির্বাচনী সমাবেশে ট্রাম্প-বাইডেন অর্থাৎ ‘হাতি-গাধা’ করোনাভাইরাস ইস্যু আবার সমালোচনামুখর হয়ে উঠেন। এক নির্বাচনী সভায় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তার স্বভাব-সুলভ ভাষা আর ভঙ্গিতে তাঁর প্রতিদ্ব›িদ্ব জো বাইডেন-কে আমেরিকান ইতিহাসে সবচেয়ে ‘অযোগ্য প্রেসিডেন্ট প্রার্থী’ হিসেবে উল্লেখ করার পাশাপাশি ইউএস সিনেটর বার্নি সেন্ডার্স-কে বাইডেনের চেয়ে যোগ্য প্রার্থী হিসেবে তুলে ধরেন। তিনি বলেন, গত চার বছরে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি শক্তিশালী হয়েছে। অপরদিকে জো বাইডেন তার নির্বাচনী সমাবেশে করোনাভাইরাসে বিপুল সংখ্যক মানুষের মৃত্যুর জন্য প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে দায়ী করে বলেন, তিনি জনগণের জীবন নিয়ে খেলায় ব্যস্ত। বাইডেন বলেন, ট্রাম্পের অবহেলার কারণে যুক্তরাষ্ট্রে ২ লাখ ৩০ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। বাইডেন বলেন, ট্রাম্প আমেরিকানদের বিভক্ত করছেন। আর আমি ঐক্যবদ্ধ আমেরিকা চাই।
এদিকে এবারের নির্বাচনে সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সরাসরি প্রচারণায় অংশ নেয় এবং প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে ‘ক্ষ্যাপাটে চাচা’ বা ‘ক্রেজি আংকেল’ আখ্যায়িত কার বিষয় সহ সাম্প্রতিক ‘বø্যাক মেটার্স লাইফ’ আন্দোলন, ‘হোয়াইট সুপ্রিমেসী’, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি, প্রভৃতি বিষয় সচেতন মহলে আলোচিত-সমালোচিত হচ্ছে।
বিশ্লেষকদের অভিমত, যুক্তরাষ্ট্রের সার্বিক পরিস্থিতিতে অরাজনীতিক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প-কে নিয়ে ক্ষমতাসীন রিপাবলিকান শিবির অনেকটা কোনঢাসা। অনেক ক্ষেত্রেই দলকে পাশ কটিয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তার নিজের মতো করে অর্থাৎ ‘ট্রাম্প স্টাইল’ মতেই চলছেন, কথা-বার্তা বলছেন, দেশ পরিচালনা করছেন। বিগত নির্বাচনে ট্রাম্পের বিজয় রাজনীতির বাইরে থেকে ব্যবসায়ী হিসেবে রিপাবলিকান টিকিটে ট্রাম্পের বিজয়-কে অনেকেই আমেরিকান রাজনীতিতে ‘মিরাকল’ ঘটনা হিসেবেই দেখছেন। অপরদিকে ডেমেক্র্যাটিক শিবিরে এবারের নির্বাচনে জয় নিশ্চিত এমন ভাবই পরিলক্ষিত হচ্ছে।
অপরদিকে এবারের নির্বাচন ঘিরে বাংলাদেশী-আমেরিকানদের মাঝে ডেমোক্র্যাটদের পতাকার পাশাপাশি রিপাবলিকান পতাকা উড়ছে জোরেসোরে। এর আগে বাংলাদেশী-আমেরিকান ডেমোক্র্যাটদের একচেটিয়া প্রভাব দেখা গেলেও এবারই প্রথম রিপাবলিকান বাংলাদেশী সংগঠন গড়ে উঠেছে। বাংলাদেশী-আমেরিকানদের ডেমোক্র্যাটদের বিভিন্ন সংগঠনের পাশাপাশি গড়ে উঠেছে বাংলাদেশী আমেরিকান রিপাবলিকান এলায়েন্স ইউএসএ, বাংলাদেশী-আমেরিকান রিপাবলিকান ককাস প্রভৃতি সংগঠন। ফলে প্রবাসী বাংলাদেশীরাও জোরেসোরে এবারের নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিচ্ছেন।

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

আলোচনায় হাতি আর গাদা’র রেস

প্রকাশের সময় : ০১:০১:১৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩০ অক্টোবর ২০২০

সালাহউদ্দিন আহমেদ: যুক্তরাষ্ট্রের আসন্ন নির্বাচনের আর মাত্র কয়েক দিন বাকী। আগামী ৩ নভেম্বর মঙ্গলবার বহুল প্রত্যাশিত ও আলোচিত নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। সকল প্রস্তুতিই সম্পন্ন। ক্ষণ গণনার পাশাপাশি চলছে আগাম ভোট। শনিবার থেকে নিউইয়র্কে আগাম ভোট গ্রহণ শুরু হয়েছে। দেশটির অন্যান্য অঙ্গরাজ্যেও চলছে আগাম ভোট। বিভিন্ন সূত্রে পাওয়া তথ্যে এবারই প্রথম রেকর্ড সংখ্যক ভোটার আগাম ভোট দিচ্ছেন। ইতিমধ্যেই ৭ কোটিরও বেশী মানুষ আগাম ভোট দিয়েছেন বলে জানা গেছে। মহামারী করোনা ভাইরাস সহ অভ্যন্তরীণ নানা ইস্যুকে কেন্দ্র করেই আগাম ভোটের আমেরিকানদের আগ্রহ বেড়েছে বলে বিশেষজ্ঞ মহল অভিমত ব্যক্ত করেছেন। বৃহস্পতিবারও বৃষ্টিমুখর দিনে নিউইয়র্কে বিপুল সংখ্যক মানুষ লাইনে দাঁড়িয়ে বিভিন্ন কেন্দ্রে গিয়ে আগাম ভোট দিয়েছেন। অপরদিকে ইতিহাসে এবারই সবচেয়ে ব্যয়বহুল আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হতে যাচ্ছে জানিয়েছে গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর রেসপন্স পলিটিক্স। সংস্থাটি বলে এবারের নির্বাচনে ব্যয় হচ্ছে প্রায় ১৪ বিলিয়ন ডলার। যা বাংলাদেশী মুদ্রায় এক লাখ ২০ হাজার কোটি টাকা।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ঘিরে ‘ট্রাম্প-বাইডেন’ তথা ‘হাতি আর গাধা’র রেস নিয়ে আমেরিকানদের মধ্যে এখন চলছে আলোচনা, সমালোচনা, বিশ্লেষন। পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচন ঘিরে ভিনদেশের নজরের বিষয় বিশেষ করে রাশিয়া, চীন ও ভারত ঘিরে ট্রাম্প-বাইডেন কে কি বলেছেন তা নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়াও লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ভারত নিয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের এক বক্তব্য ঘিরে ভারতীয়-আমেরিকানদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দিয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। রাশিয়া-চীন নিয়ে ট্রাম্পের বক্তব্যও আলোচিত-সমালোচিত হচ্ছে সচেতন মহলে। অপরদিকে সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এর মধ্যে সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার প্রতিচ্ছবি-ই লক্ষ্য করছেন অনেকে। পাশাপাশি জো বাইডেনের রানিং মেট কমলা হারিসও অলোচনায় আসছেন। প্রশ্ন উঠছে এখনো কি আমেরিকানকরা একজন নারীকে প্রেসিডেন্ট পদে দেখতে আগ্রহী!। আরো প্রশ্ন উঠেছে যে কারনে পপুলার ভোটের পাশপাশি ইলেকট্রোলার ভোট পদ্ধতি তা কি আমেরিকার গণতন্ত্রকে সুপ্রতিষ্ঠিত করছে নাকি জনমনে বিভেদ সৃষ্টি করছে? সর্বশেষ বৃহস্পতিবার সুইং ষ্টেট হিসেবে পরিচিত ফ্লোরিডায় পৃথক পৃথক নির্বাচনী সমাবেশে ট্রাম্প-বাইডেন অর্থাৎ ‘হাতি-গাধা’ করোনাভাইরাস ইস্যু আবার সমালোচনামুখর হয়ে উঠেন। এক নির্বাচনী সভায় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তার স্বভাব-সুলভ ভাষা আর ভঙ্গিতে তাঁর প্রতিদ্ব›িদ্ব জো বাইডেন-কে আমেরিকান ইতিহাসে সবচেয়ে ‘অযোগ্য প্রেসিডেন্ট প্রার্থী’ হিসেবে উল্লেখ করার পাশাপাশি ইউএস সিনেটর বার্নি সেন্ডার্স-কে বাইডেনের চেয়ে যোগ্য প্রার্থী হিসেবে তুলে ধরেন। তিনি বলেন, গত চার বছরে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি শক্তিশালী হয়েছে। অপরদিকে জো বাইডেন তার নির্বাচনী সমাবেশে করোনাভাইরাসে বিপুল সংখ্যক মানুষের মৃত্যুর জন্য প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে দায়ী করে বলেন, তিনি জনগণের জীবন নিয়ে খেলায় ব্যস্ত। বাইডেন বলেন, ট্রাম্পের অবহেলার কারণে যুক্তরাষ্ট্রে ২ লাখ ৩০ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। বাইডেন বলেন, ট্রাম্প আমেরিকানদের বিভক্ত করছেন। আর আমি ঐক্যবদ্ধ আমেরিকা চাই।
এদিকে এবারের নির্বাচনে সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সরাসরি প্রচারণায় অংশ নেয় এবং প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে ‘ক্ষ্যাপাটে চাচা’ বা ‘ক্রেজি আংকেল’ আখ্যায়িত কার বিষয় সহ সাম্প্রতিক ‘বø্যাক মেটার্স লাইফ’ আন্দোলন, ‘হোয়াইট সুপ্রিমেসী’, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি, প্রভৃতি বিষয় সচেতন মহলে আলোচিত-সমালোচিত হচ্ছে।
বিশ্লেষকদের অভিমত, যুক্তরাষ্ট্রের সার্বিক পরিস্থিতিতে অরাজনীতিক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প-কে নিয়ে ক্ষমতাসীন রিপাবলিকান শিবির অনেকটা কোনঢাসা। অনেক ক্ষেত্রেই দলকে পাশ কটিয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তার নিজের মতো করে অর্থাৎ ‘ট্রাম্প স্টাইল’ মতেই চলছেন, কথা-বার্তা বলছেন, দেশ পরিচালনা করছেন। বিগত নির্বাচনে ট্রাম্পের বিজয় রাজনীতির বাইরে থেকে ব্যবসায়ী হিসেবে রিপাবলিকান টিকিটে ট্রাম্পের বিজয়-কে অনেকেই আমেরিকান রাজনীতিতে ‘মিরাকল’ ঘটনা হিসেবেই দেখছেন। অপরদিকে ডেমেক্র্যাটিক শিবিরে এবারের নির্বাচনে জয় নিশ্চিত এমন ভাবই পরিলক্ষিত হচ্ছে।
অপরদিকে এবারের নির্বাচন ঘিরে বাংলাদেশী-আমেরিকানদের মাঝে ডেমোক্র্যাটদের পতাকার পাশাপাশি রিপাবলিকান পতাকা উড়ছে জোরেসোরে। এর আগে বাংলাদেশী-আমেরিকান ডেমোক্র্যাটদের একচেটিয়া প্রভাব দেখা গেলেও এবারই প্রথম রিপাবলিকান বাংলাদেশী সংগঠন গড়ে উঠেছে। বাংলাদেশী-আমেরিকানদের ডেমোক্র্যাটদের বিভিন্ন সংগঠনের পাশাপাশি গড়ে উঠেছে বাংলাদেশী আমেরিকান রিপাবলিকান এলায়েন্স ইউএসএ, বাংলাদেশী-আমেরিকান রিপাবলিকান ককাস প্রভৃতি সংগঠন। ফলে প্রবাসী বাংলাদেশীরাও জোরেসোরে এবারের নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিচ্ছেন।