নিউইয়র্ক ০১:৫৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৮ জুলাই ২০২৫, ২৩ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন-২০২৪

যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনী প্রতীক হাতি-গাধা হলো যেভাবে

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ১২:৩৬:৪৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ৪ নভেম্বর ২০২৪
  • / ১৭৯ বার পঠিত

হককথা ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে বহু বছর ধরে প্রধান দুই রাজনৈতিক দল, ডেমোক্র্যাটিক ও রিপাবলিকান পার্টর মধ্যেই প্রতিদ্ব›িদ্বতা হয়ে আসছে। ১৮৫৩ সালের পর থেকে হোয়াইট হাউজে থাকা সব আমেরিকান প্রেসিডেন্টই এই দুই দল থেকে এসেছেন। আর যুক্তরাষ্ট্রের দুই প্রধান এ দলের প্রতীকও প্রায় শত বছরের পুরোনো। প্রেসিডেন্ট নির্বাচন মানেই হাতি ও গাধার মধ্যে প্রতিদ্ব›দ্বী। এবারের নির্বাচনেও এর ব্যতিক্রম হচ্ছে না।
তবে প্রশ্ন হলো, দলীয় প্রতীক হাতি ও গাধাকে কেন বেছে নেওয়া হলো? এমন তো নয় যে, যুক্তরাষ্ট্রে সুন্দর প্রতীকের দারুণ অভাব। দুটি প্রধান দলকে বিদঘুটে হাতি আর গাধাকেই কেন বেছে নিতে হলো? আসল কারণটি হচ্ছে এই দুই প্রতিদ্ব›দ্বী রাজনৈতিক দলের নির্বাচনি প্রতীকশিল্পী একজনই। থমাস ন্যাস্ট নামের এ শিল্পীর নাম মাথা থেকে এসেছে প্রতীক দুটির ধারনা। তবে ব্যালটে থাকে না এসব প্রতীক। সেখানে থাকে শুধু প্রার্থীর নাম।
সিএনএন এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রে ১৮২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অংশ নেন চারজন। ওই নির্বাচনে অ্যান্ড্রু জ্যাকসন নামের একজনকে প্রার্থী করা হয। সবাইকে অবাক করে জ্যাকসন সর্বোচ্চ ভোট পেলেও, অন্য প্রার্থীদের কূটকৌশলের কারণে তিনি প্রেসিডেন্টের দ্বায়িত্ব পাননি। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তার সমর্থকরা নতুন দল গঠন করে, যার নাম ডেমোক্রেটিক পার্টি।
এরপর ক্ষমতাসীন দল ও সমর্থকরা জ্যাকসনকে নিয়ে সংবাদপত্রে হাসি-তামাসা শুরু করে। কিছু পত্রিকা তাকে ‘জ্যাকঅ্যাস’ বলে সম্বোধন করে কার্টুনে গাধার ব্যঙ্গচিত্রের সঙ্গে তুলনা করে। জ্যাকসন নামটি পছন্দ করেন এবং গাধাকে নির্বাচনী প্রতীক হিসেবে ব্যবহার করেন।
তখন কার্টুনশিল্পী থমাস ন্যাস্ট অ্যান্ড্রু জ্যাকসনের মাথায় একটি গাধার (জ্যাকঅ্যাস) শরীরের ওপর বসিয়ে কার্টুন আঁকেন। অবশিষ্ট রাজনৈতিক জীবনে অ্যান্ড্রু জ্যাকসনকে এই গাধার ছায়া বহন করতে হয়। যুক্তরাষ্ট্রে গৃহযুদ্ধের অবসানের পর অন্য ডেমোক্র্যাট নেতাদেরও প্রতীক হয়ে ওঠে গাধা। এই প্রতীক নিয়েই ১৮২৮ সালের নির্বাচনে ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্টকে হারান জ্যাকসন।
উনিশ শতকের মাঝামাঝি সময়ে আব্রাহাম লিংকন এবং দাসপ্রথাবিরোধী হুইগরা মিলে গড়েন নতুন রাজনৈতিক দল রিপাবলিকান পার্টি। ১৮৭৪ সালে থমাস ন্যাস্ট হাতিকে রিপাবলিকানদের প্রতীক হিসেবে উপস্থাপন করেন।
তিনি তার কার্টুনে দেখান, সিংহের চামড়া পিঠে চাপিয়ে একটি গাধা বনের সব প্রাণীকে ভয় দেখাচ্ছে। সিংহের ছদ্মবেশী সেই গাধাকে দেখে সবাই ভয়ে পালাচ্ছে। কেবল স্থির ও অচঞ্চল একটি হাতি ছাড়া।
হাতির এই নির্ভীক বিষয়টাই তুলে ধরেন কার্টুনশিল্পী। থমাস ন্যাস্টের এমন অর্থবহ কার্টুন দারুণ পছন্দ হয় রিপাবলিকানদের। আর হাতি প্রতীকের সেই আইডিয়া লুফে নেন রিপাবলিকানরা। সেই থেকে হাতি হয়ে ওঠে রিপাবলিকান পার্টির নির্বাচনী প্রতীক। (দৈনিক ইত্তেফাক)

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন-২০২৪

যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনী প্রতীক হাতি-গাধা হলো যেভাবে

প্রকাশের সময় : ১২:৩৬:৪৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ৪ নভেম্বর ২০২৪

হককথা ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে বহু বছর ধরে প্রধান দুই রাজনৈতিক দল, ডেমোক্র্যাটিক ও রিপাবলিকান পার্টর মধ্যেই প্রতিদ্ব›িদ্বতা হয়ে আসছে। ১৮৫৩ সালের পর থেকে হোয়াইট হাউজে থাকা সব আমেরিকান প্রেসিডেন্টই এই দুই দল থেকে এসেছেন। আর যুক্তরাষ্ট্রের দুই প্রধান এ দলের প্রতীকও প্রায় শত বছরের পুরোনো। প্রেসিডেন্ট নির্বাচন মানেই হাতি ও গাধার মধ্যে প্রতিদ্ব›দ্বী। এবারের নির্বাচনেও এর ব্যতিক্রম হচ্ছে না।
তবে প্রশ্ন হলো, দলীয় প্রতীক হাতি ও গাধাকে কেন বেছে নেওয়া হলো? এমন তো নয় যে, যুক্তরাষ্ট্রে সুন্দর প্রতীকের দারুণ অভাব। দুটি প্রধান দলকে বিদঘুটে হাতি আর গাধাকেই কেন বেছে নিতে হলো? আসল কারণটি হচ্ছে এই দুই প্রতিদ্ব›দ্বী রাজনৈতিক দলের নির্বাচনি প্রতীকশিল্পী একজনই। থমাস ন্যাস্ট নামের এ শিল্পীর নাম মাথা থেকে এসেছে প্রতীক দুটির ধারনা। তবে ব্যালটে থাকে না এসব প্রতীক। সেখানে থাকে শুধু প্রার্থীর নাম।
সিএনএন এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রে ১৮২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অংশ নেন চারজন। ওই নির্বাচনে অ্যান্ড্রু জ্যাকসন নামের একজনকে প্রার্থী করা হয। সবাইকে অবাক করে জ্যাকসন সর্বোচ্চ ভোট পেলেও, অন্য প্রার্থীদের কূটকৌশলের কারণে তিনি প্রেসিডেন্টের দ্বায়িত্ব পাননি। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তার সমর্থকরা নতুন দল গঠন করে, যার নাম ডেমোক্রেটিক পার্টি।
এরপর ক্ষমতাসীন দল ও সমর্থকরা জ্যাকসনকে নিয়ে সংবাদপত্রে হাসি-তামাসা শুরু করে। কিছু পত্রিকা তাকে ‘জ্যাকঅ্যাস’ বলে সম্বোধন করে কার্টুনে গাধার ব্যঙ্গচিত্রের সঙ্গে তুলনা করে। জ্যাকসন নামটি পছন্দ করেন এবং গাধাকে নির্বাচনী প্রতীক হিসেবে ব্যবহার করেন।
তখন কার্টুনশিল্পী থমাস ন্যাস্ট অ্যান্ড্রু জ্যাকসনের মাথায় একটি গাধার (জ্যাকঅ্যাস) শরীরের ওপর বসিয়ে কার্টুন আঁকেন। অবশিষ্ট রাজনৈতিক জীবনে অ্যান্ড্রু জ্যাকসনকে এই গাধার ছায়া বহন করতে হয়। যুক্তরাষ্ট্রে গৃহযুদ্ধের অবসানের পর অন্য ডেমোক্র্যাট নেতাদেরও প্রতীক হয়ে ওঠে গাধা। এই প্রতীক নিয়েই ১৮২৮ সালের নির্বাচনে ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্টকে হারান জ্যাকসন।
উনিশ শতকের মাঝামাঝি সময়ে আব্রাহাম লিংকন এবং দাসপ্রথাবিরোধী হুইগরা মিলে গড়েন নতুন রাজনৈতিক দল রিপাবলিকান পার্টি। ১৮৭৪ সালে থমাস ন্যাস্ট হাতিকে রিপাবলিকানদের প্রতীক হিসেবে উপস্থাপন করেন।
তিনি তার কার্টুনে দেখান, সিংহের চামড়া পিঠে চাপিয়ে একটি গাধা বনের সব প্রাণীকে ভয় দেখাচ্ছে। সিংহের ছদ্মবেশী সেই গাধাকে দেখে সবাই ভয়ে পালাচ্ছে। কেবল স্থির ও অচঞ্চল একটি হাতি ছাড়া।
হাতির এই নির্ভীক বিষয়টাই তুলে ধরেন কার্টুনশিল্পী। থমাস ন্যাস্টের এমন অর্থবহ কার্টুন দারুণ পছন্দ হয় রিপাবলিকানদের। আর হাতি প্রতীকের সেই আইডিয়া লুফে নেন রিপাবলিকানরা। সেই থেকে হাতি হয়ে ওঠে রিপাবলিকান পার্টির নির্বাচনী প্রতীক। (দৈনিক ইত্তেফাক)