বাইডেনের ইসরাইল নীতিতে তরুণ ভোটারদের ক্ষোভ বাড়ছে

- প্রকাশের সময় : ০৭:২১:৫৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৩
- / ১২৪ বার পঠিত
হককথা ডেস্ক : ২০২৪ সালের যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন স্মরণকালের সবচেয়ে বেশি মেরুকরণের রাজনৈতিক প্রতিযোগিতার একটি হতে যাচ্ছে। কিন্তু গাজায় যুদ্ধের জেরে ইসরাইলের প্রতি তার অকুণ্ঠ সমর্থন বাইডেনের মূল সমর্থক হিসেবে ভাবা তরুণ ভোটারদের সাথে তার জোরালো দ্বন্দ্ব তৈরি করছে।
আবদুল ওসমানু (২২) নিশ্চিত নন যে তিনি আবার জো বাইডেনের পক্ষে ভোট দিতে পারবেন। তিনি বলেন, এই দ্বিধাগুলির বেশিরভাগই ইসরাইলের প্রতি বাইডেন প্রশাসনের সমর্থনের কারণে। যুক্তরাষ্ট্রের মদদেই ইসরাইলি বাহিনী গাজায় বোমাবর্ষণ অব্যাহত রেখেছে বলে তিনি মনে করেন।
২০২১ সালে স্থানীয় টাউন কাউন্সিলে নির্বাচিত ওসমানু বলেন, ‘একজন শান্তিপ্রিয়, মুসলিম ও কালো মানুষ হিসেবে, ফিলিস্তিনিদের দমন-পীড়ন দেখতে ভয়ানক। এটা আমার জন্য কঠিন হবে, আমার বিবেকে, এমন একজন রাষ্ট্রপতিকে ভোট দিতে যে বিভিন্ন উপায়ে এমন দমন-পীড়নে মদদ ও সহায়তা করে।’
কানেকটিকাটের এই তরুণ ভোটার বিবিসিকে বলেন, তিনি ২০২৪ সালে তৃতীয় কোনো প্রার্থীকে ভোট দেবেন নাকি রাষ্ট্রপতির ব্যালট ফাঁকা রাখবেন, তা ভাবছেন। তবে সিদ্ধান্ত নেওয়াটা একটু কঠিন, কারণ তিনি এবং অন্যান্য অনেক তরুণ ভোটাররা ডোনাল্ড ট্রাম্পকে আবারও নির্বাচিত হতে দেখতে চান না।
ওসমানুর মতো তরুণ ডেমোক্র্যাট ভোটারদের একটি ক্রমবর্ধমান সংখ্যক ইসরাইলকে সমর্থন ও গাজায় সংঘাতের ইস্যুতে প্রেসিডেন্ট বাইডেনের সাথে সম্পর্কচ্ছেদ করছেন বলে মনে হচ্ছে। এটি ডেমোক্র্যাটদের জন্য উদ্বেগের কারণ, কারণ বাইডেনের ইসরাইল নীতির বিরুদ্ধে তরুণদের এ বিরোধিতা তার সমর্থনের একটি মূল স্তম্ভকে নাড়িয়ে দিতে পারে যা এ প্রবীণ রাজনীতিবিদকে ২০২০ সালে নির্বাচনী বৈতরণী পার হতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলো।
সম্প্রতি পরিচালিত এক জরিপ বলছে, ১৮ থেকে ৩৪ বছর বয়সী ভোটারদের মধ্যে ৭০ শতাংশই ফিলিস্তিনের যুদ্ধ নিয়ে বাইডেনের পদক্ষেপকে সমর্থন করেন না।
ইসরাইলি সেনাদের তাণ্ডবে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকা। নির্বিচারে বোমা হামলায় মাটির সঙ্গে মিশে গেছে উত্তরাঞ্চলের বেশিরভাগ ভবন। সেনা অভিযানে প্রাণ হারিয়েছেন হাজার হাজার নিরীহ ফিলিস্তিনি। সাধারণ ফিলিস্তিনিদের ওপর বর্বর হামলার প্রতিবাদে ফুঁসে উঠেছে বিশ্বের অনেক দেশ, চলছে বিক্ষোভ। তবুও যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো একতরফা নগ্ন সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে ইসরাইলকে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, যুদ্ধে বেসামরিক ফিলিস্তিনিদের হতাহতের চিত্র দেখে তরুণ ডেমোক্র্যাট এবং সংখ্যালঘু ভোটারদের মধ্যে অসন্তোষ বাড়ছে, যা ২০২৪ সালের নির্বাচনে ডেমোক্র্যাটিক ভোটবাক্সের ক্ষতি করতে পারে।
ইসরাইলকে সমর্থন দেয়ায় অভ্যন্তরীণ এবং বিদেশি চাপের মুখে পড়েছেন জো বাইডেন। এমনকি তার নিজ দল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির মধ্যে দেখা দেয়া বিভক্তির বিষয়টিও আগেই সামনে এসেছে। ৫০০ জনেরও বেশি বাইডেন সমর্থক প্রচার কর্মীকে গাজার পক্ষে কথা বলতে দেখা গেছে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, সাময়িক যুদ্ধবিরতির পর ইসরাইল আবারও আগের মতো হামলা শুরু করলে এবং হতাহতের সংখ্যা বাড়তে থাকলে আগামী যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বাইডেনের পুনরায় নির্বাচিত হওয়ার স্বপ্নপূরণকে জটিল করে তুলবে।
হককথা/নাছরিন