নিউইয়র্ক ০২:০৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

‘ট্রাম্প কেন সব সময় যুক্তরাষ্ট্রকেই দোষ দেন’, নাভালনির মৃত্যুর প্রতিক্রিয়ায় বাইডেন

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০৭:২৪:৪৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২১ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
  • / ১০৪ বার পঠিত

অ্যালেক্সেই নাভালনির মৃত্যুর প্রতিক্রিয়ায় ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমালোচনা করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। ছবি : এএফপি।

হককথা ডেস্ক : ভ্লাদিমির পুতিনের কট্টর সমালোচক ও রাশিয়ার বিরোধী দলীয় নেতা অ্যালেক্সেই নাভালনির মৃত্যুর প্রতিক্রিয়া নিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমালোচনা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, ট্রাম্প কেন সব সময় যুক্তরাষ্ট্রকেই দোষারোপ করেন?

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে খবরটি দিয়েছে। বলা হয়েছে, গত শুক্রবার নাভালনির মৃত্যুর পর সরাসরি এ ঘটনায় পুতিনকে দায়ী করেছেন বাইডেন। ২০২৪ সালের আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান পার্টির মনোনয়নের দৌড়ে থাকা নিকি হ্যালিও একই ধরনের প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন।

তবে গত সোমবারের আগে নাভালনির মৃত্যু প্রসঙ্গে কিছুই বলেননি ট্রাম্প। বেশ কয়েকটি আইনি সমস্যা মোকাবিলা করতে গিয়ে তিনি নিপীড়নের শিকার হয়েছেন বলে উল্লেখ্য করেন। ট্রাম্প আরও বলেন, জাতি হিসেবে পতন ঘটছে যুক্তরাষ্ট্রের।

এ নিয়েই ট্রাম্পের সমালোচনায় মুখর হয়েছেন বাইডেন। তিনি বলেন, ‘প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পসহ অনেক রিপাবলিকানই এই মৃত্যুর জন্য পুতিনকে দোষারোপ করছেন না। এর বদলে নাভালনির মৃত্যুতে ট্রাম্পের উপলব্ধি হয়েছে যে, যুক্তরাষ্ট্র কতটা খারাপ।’

ট্রাম্পের উদ্দেশে বাইডেন আরও বলেন, ‘তিনি বলেছেন, জাতি হিসেবে আমাদের পতন ঘটছে। ট্রাম্প কেন সব সময় যুক্তরাষ্ট্রকেই দোষারোপ করেন? নাভালনির মৃত্যুর জন্য পুতিন দায়ী। ট্রাম্প কেন এই কথাটা বলতে পারছেন না?’

গতকাল মঙ্গলবার ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নাভালনিকে ‘অত্যন্ত সাহসী’ বলে তার প্রশংসা করেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ২০২১ সালে জার্মানি থেকে স্বেচ্ছায় রাশিয়ায় ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন নাভালনি। সে প্রসঙ্গে ট্রাম্প বলেন, ‘দেশের বাইরে থেকে কথা বললেই উনি (নাভালনি) নিরাপদে থাকতে পারতেন। তাকে মেরে ফেলার আশঙ্কা ছিল আর সেটাই হলো।

২০১৭-২০২১ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন পুতিনের প্রশংসা করে সমালোচিত হয়েছিলেন ট্রাম্প। ন্যাটোভুক্ত সহযোগী দেশগুলোকে রাশিয়ার সম্ভাব্য হামলা থেকে যুক্তরাষ্ট্র রক্ষা করতে পারবে না বলেও গত সপ্তাহে মন্তব্য করেন ট্রাম্প।

এই মন্তব্যের প্রতিবাদে এক্সে দেওয়া এক ভিডিওতে বাইডেন বলেন, ‘খারাপ আচরণকে উৎসাহিত করা ছাড়া তার এই কথা কিছুই করবে না। পুতিনের বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান নিতে হবে।’

নাভালনির মৃত্যুতে পশ্চিমা বিশ্ব একযোগে পুতিন প্রশাসনকে দায়ী করলেও এখনো ক্রেমলিনের কাছ থেকে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। মিউনিখে জি-৭ ভুক্ত দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকে অ্যালেক্সেই নাভালনির মৃত্যুতে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন স্পষ্টভাবে এই মৃত্যুর জন্য পুতিনকে দোষারোপ করেছেন। তবে পুতিন এ ব্যাপারে কোনো প্রতিক্রিয়া দেখাননি।

রাজনৈতিক জীবনে নাভালনি পুতিনের কট্টরবিরোধী হিসেবে পরিচিত ছিলেন। বিশেষ করে রাশিয়ার দুর্নীতি ও শাসনব্যবস্থার কড়া সমালোচক ছিলেন তিনি। রাশিয়ায় তিনি কয়েক যুগ ধরেই বিদ্যমান সরকার ও শাসনব্যবস্থার বিরুদ্ধে কথা বলে আসছিলেন। দেশজুড়ে এ নিয়ে তিনি বিভিন্ন সময়ে আন্দোলন চালিয়েছেন।

রাশিয়ার এই নেতাকে ২০২১ সালের শুরুর দিকেই গ্রেপ্তার করা হয় ২০১৪ সালে করা একটি অর্থ আত্মসাৎ মামলায়। দ্রুতই বিচারের মাধ্যমে তাঁকে আড়াই বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। পরে আদালত অবমাননার অভিযোগে তাঁকে আরও ৯ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। ২০২১ সালের আগস্টে চরমপন্থার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে নাভালনিকে আরও ১৯ বছর কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল।

হককথা/নাছরিন

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

‘ট্রাম্প কেন সব সময় যুক্তরাষ্ট্রকেই দোষ দেন’, নাভালনির মৃত্যুর প্রতিক্রিয়ায় বাইডেন

প্রকাশের সময় : ০৭:২৪:৪৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২১ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

হককথা ডেস্ক : ভ্লাদিমির পুতিনের কট্টর সমালোচক ও রাশিয়ার বিরোধী দলীয় নেতা অ্যালেক্সেই নাভালনির মৃত্যুর প্রতিক্রিয়া নিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমালোচনা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, ট্রাম্প কেন সব সময় যুক্তরাষ্ট্রকেই দোষারোপ করেন?

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে খবরটি দিয়েছে। বলা হয়েছে, গত শুক্রবার নাভালনির মৃত্যুর পর সরাসরি এ ঘটনায় পুতিনকে দায়ী করেছেন বাইডেন। ২০২৪ সালের আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান পার্টির মনোনয়নের দৌড়ে থাকা নিকি হ্যালিও একই ধরনের প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন।

তবে গত সোমবারের আগে নাভালনির মৃত্যু প্রসঙ্গে কিছুই বলেননি ট্রাম্প। বেশ কয়েকটি আইনি সমস্যা মোকাবিলা করতে গিয়ে তিনি নিপীড়নের শিকার হয়েছেন বলে উল্লেখ্য করেন। ট্রাম্প আরও বলেন, জাতি হিসেবে পতন ঘটছে যুক্তরাষ্ট্রের।

এ নিয়েই ট্রাম্পের সমালোচনায় মুখর হয়েছেন বাইডেন। তিনি বলেন, ‘প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পসহ অনেক রিপাবলিকানই এই মৃত্যুর জন্য পুতিনকে দোষারোপ করছেন না। এর বদলে নাভালনির মৃত্যুতে ট্রাম্পের উপলব্ধি হয়েছে যে, যুক্তরাষ্ট্র কতটা খারাপ।’

ট্রাম্পের উদ্দেশে বাইডেন আরও বলেন, ‘তিনি বলেছেন, জাতি হিসেবে আমাদের পতন ঘটছে। ট্রাম্প কেন সব সময় যুক্তরাষ্ট্রকেই দোষারোপ করেন? নাভালনির মৃত্যুর জন্য পুতিন দায়ী। ট্রাম্প কেন এই কথাটা বলতে পারছেন না?’

গতকাল মঙ্গলবার ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নাভালনিকে ‘অত্যন্ত সাহসী’ বলে তার প্রশংসা করেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ২০২১ সালে জার্মানি থেকে স্বেচ্ছায় রাশিয়ায় ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন নাভালনি। সে প্রসঙ্গে ট্রাম্প বলেন, ‘দেশের বাইরে থেকে কথা বললেই উনি (নাভালনি) নিরাপদে থাকতে পারতেন। তাকে মেরে ফেলার আশঙ্কা ছিল আর সেটাই হলো।

২০১৭-২০২১ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন পুতিনের প্রশংসা করে সমালোচিত হয়েছিলেন ট্রাম্প। ন্যাটোভুক্ত সহযোগী দেশগুলোকে রাশিয়ার সম্ভাব্য হামলা থেকে যুক্তরাষ্ট্র রক্ষা করতে পারবে না বলেও গত সপ্তাহে মন্তব্য করেন ট্রাম্প।

এই মন্তব্যের প্রতিবাদে এক্সে দেওয়া এক ভিডিওতে বাইডেন বলেন, ‘খারাপ আচরণকে উৎসাহিত করা ছাড়া তার এই কথা কিছুই করবে না। পুতিনের বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান নিতে হবে।’

নাভালনির মৃত্যুতে পশ্চিমা বিশ্ব একযোগে পুতিন প্রশাসনকে দায়ী করলেও এখনো ক্রেমলিনের কাছ থেকে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। মিউনিখে জি-৭ ভুক্ত দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকে অ্যালেক্সেই নাভালনির মৃত্যুতে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন স্পষ্টভাবে এই মৃত্যুর জন্য পুতিনকে দোষারোপ করেছেন। তবে পুতিন এ ব্যাপারে কোনো প্রতিক্রিয়া দেখাননি।

রাজনৈতিক জীবনে নাভালনি পুতিনের কট্টরবিরোধী হিসেবে পরিচিত ছিলেন। বিশেষ করে রাশিয়ার দুর্নীতি ও শাসনব্যবস্থার কড়া সমালোচক ছিলেন তিনি। রাশিয়ায় তিনি কয়েক যুগ ধরেই বিদ্যমান সরকার ও শাসনব্যবস্থার বিরুদ্ধে কথা বলে আসছিলেন। দেশজুড়ে এ নিয়ে তিনি বিভিন্ন সময়ে আন্দোলন চালিয়েছেন।

রাশিয়ার এই নেতাকে ২০২১ সালের শুরুর দিকেই গ্রেপ্তার করা হয় ২০১৪ সালে করা একটি অর্থ আত্মসাৎ মামলায়। দ্রুতই বিচারের মাধ্যমে তাঁকে আড়াই বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। পরে আদালত অবমাননার অভিযোগে তাঁকে আরও ৯ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। ২০২১ সালের আগস্টে চরমপন্থার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে নাভালনিকে আরও ১৯ বছর কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল।

হককথা/নাছরিন