ট্রাম্পশিবিরের মন জয় করতে ব্যস্ত পশ্চিমা নেতারা
- প্রকাশের সময় : ০৭:৪৬:৩৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
- / ৫৭ বার পঠিত
হককথা ডেস্ক : ন্যাটোর ঐক্য ও ইউক্রেনের জন্য সহায়তা কেন যুক্তরাষ্টের স্বার্থে গুরুত্বপূর্ণ, তার পক্ষে একাধিক যুক্তির মাধ্যমে ট্রাম্প শিবিরের মন জয় করার চেষ্টা করছেন পশ্চিমা নেতারা। তাঁদের মতে, চীনের আধিপত্য রুখতেও এমন সংহতির প্রয়োজন।
যুক্তরাষ্টের আর্থিক সহায়তা ছাড়া ইউক্রেনের পক্ষে যে রাশিয়ার হামলা মোকাবেলা করা সহজ নয়, তা সম্প্রতি স্পষ্ট হয়ে গেছে। বিশেষ করে গোলাবারুদ কমে যাওয়ায় ইউক্রেনের সেনাবাহিনী প্রয়োজনমতো হামলার জবাব দিতে পারছে না।
যুক্তরাষ্টের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বৈদেশিক সহায়তা বিলের অংশ হিসেবে ইউক্রেনের জন্য ৬০০ কোটি ডলার মঞ্জুর করতে চান। কিন্তু রিপাবলিকান দলের ট্রাম্পপন্থী সংসদ সদস্যদের কারণে নিম্নকক্ষে সেই প্রস্তাব এখনো অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। সেই বিলম্বের খেসারত দিতে হচ্ছে ইউক্রেনকে।
মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনে যোগ দিতে এসে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কি মরিয়া হয়ে আরো সহায়তার আবেদন জানিয়েছেন।
সেখানে উপস্থিত যুক্তরাষ্টের প্রতিনিধিদলও ইউক্রেনের প্রতি সহানুভূতি দেখিয়েছে। জার্মানি, ফ্রান্সসহ ইউরোপের অন্যান্য দেশ আরো সহায়তার অঙ্গীকার করেছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও যুক্তরাষ্ট্রের মোটা অঙ্কের সহায়তার বিকল্প পাওয়া যায়নি। এমনকি ইউরোপ এখনো নিজস্ব অঙ্গীকার পুরোপুরি পালন করতে পারেনি।
বাইডেন শনিবার জেলেনস্কিকে বলেন, সংসদের নিম্নকক্ষের অনুমোদন সম্পর্কে তিনি যথেষ্ট আশাবাদী। তাঁর মতে, যুক্তরাষ্টের সহায়তার অভাবে ইউক্রেন রাশিয়ার কাছে আরো জমি হারাক, সেটা একেবারেই হতে দেওয়া চলে না। জেলেনস্কি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের সহায়তার প্রশংসা করে কংগ্রেসের ইতিবাচক সিদ্ধান্তের আশা প্রকাশ করেন।
অন্যদিকে বাইডেনের আমলেই ইউক্রেনের জন্য সহায়তায় এমন বিঘ্ন ঘটলে ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হলে কী ঘটবে, সে বিষয়ে ইউরোপ ও ন্যাটোর শীর্ষ নেতারা গভীর দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। সামরিক জোট ন্যাটো সম্পর্কে ট্রাম্পের সাম্প্রতিক মন্তব্য তাদের দেশের নিজস্ব প্রতিরক্ষা কাঠামোর ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত করে তুলেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের দুই রাজনৈতিক দল এবং ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে পরিস্থিতির গুরুত্ব স্পষ্ট করার চেষ্টা করছেন তাঁরা।
এ ছাড়া ট্রাম্পের দাবি মেনে প্রতিরক্ষা খাতে ইউরোপের নিজস্ব ব্যয় বাড়ানোর দৃষ্টান্ত উল্লেখ করেছেন তাঁরা। চলতি বছরে ন্যাটোর ৩১টি সদস্যের মধ্যে ১৮টি দেশই জিডিপির কমপক্ষে দুই শতাংশ ব্যয় করবে বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে। সেই সঙ্গে ট্রাম্পের পররাষ্ট্র নীতির অন্যতম প্রধান বিষয় চীনের বাড়বাড়ন্ত রুখতে দুর্বল ইউরোপ যে মার্কিন স্বার্থের ক্ষতি করবে, সেই যুক্তিও তুলে ধরা হচ্ছে।
গত মাসে ন্যাটোর মহাসচিব জেনস স্টলটেনবার্গ যুক্তরাষ্ট্র সফরে গিয়ে ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ থিংকট্যাংক হিসেবে পরিচিত হেরিটেজ ফাউন্ডেশনে এক ভাষণ দেন। মিউনিখে তিনি মনে করিয়ে দেন, যুক্তরাষ্টের আর্থিক সহায়তার অর্থ যুক্তরাষ্ট্র থেকে অস্ত্র কিনতেও ব্যয় করা হবে।
মোটকথা কেন যুক্তরাষ্ট্রের নিজস্ব স্বার্থেই ন্যাটো তথা ইউরোপের সঙ্গে সে দেশের গভীর বন্ধন গুরুত্বপূর্ণ, ট্রাম্প শিবিরের কাছে বারবার সেই যুক্তি তুলে ধরার চেষ্টা চলছে। চীনকে কেন্দ্র করে দুশ্চিন্তা সামনে রেখে ন্যাটো মহাসচিব বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের জিডিপি বিশ্বের প্রায় ২৫ শতাংশের সমান। ন্যাটোর সঙ্গে সম্মিলিত অর্থনৈতিক ক্ষমতা ৫০ শতাংশ জিডিপি। বিশ্বের সামরিক ক্ষমতার ৫০ শতাংশও ন্যাটোর ঝুলিতে। অর্থাৎ স্টলটেনবার্গের মতে, সেই ঐক্য বজায় থাকলে তবেই সবাই নিরাপদ থাকবে। সূত্র : কালের কণ্ঠ
হককথা/নাছরিন