যুক্তরাষ্ট্রের ভেটোয় বাতিল হলো গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব
- প্রকাশের সময় : ০৪:৩১:৩৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২২ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
- / ১২০ বার পঠিত
হককথা ডেস্ক : ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে ভেটো দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে ওই খসড়া প্রস্তাবের ওপর ভোটাভুটি হয়। ওয়াশিংটনের দাবি, এই প্রস্তাব গাজায় যুদ্ধ বন্ধের আলোচনাকে ঝুঁকিতে ফেলবে।
তবে যুক্তরাষ্ট্রের এই পদক্ষেপের নিন্দা জানিয়েছে অনেকেই। যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে হোয়াইট হাউজ ভেটো দেওয়ায় দুঃখপ্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের মিত্ররাও। নিরাপত্তা পরিষদের ১৫ সদস্য দেশের মধ্যে ১৩টিই আলজেরিয়ার উত্থাপিত এই খসড়া প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছে। ভেটো দিয়েছে কেবল যুক্তরাষ্ট্র। আরেক স্থায়ী সদস্য যুক্তরাজ্য ভোটদানে বিরত ছিল।
নিরাপত্তা পরিষদে স্থায়ী সদস্য পাঁচটি। এর মধ্যে রাশিয়া, ফ্রান্স ও চীন প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছে। এককভাবে কোনো প্রস্তাবে ভেটো প্রয়োগ করে তা বাতিলের ক্ষমতা রয়েছে স্থায়ী সদস্য দেশগুলোর। অর্থাৎ, যুদ্ধবিরতির লক্ষ্যে নতুন খসড়া প্রস্তাবে যুক্তরাষ্ট্রের ভেটোর অর্থ হলো প্রস্তাবটি আর গৃহীত হবে না।
অবশ্য ওয়াশিংটনের খসড়া প্রস্তাবে ‘যত তাড়াতাড়ি সম্ভব’ একটি অস্থায়ী যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানানো হয়েছে। সেখানে ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তি ও গাজায় ত্রাণ পৌঁছানোর বাধাগুলো তুলে নেওয়ার কথা রয়েছে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের এই প্রস্তাবে নিরাপত্তা পরিষদ ভোট দেবে কি না তা এখনো স্পষ্ট নয়।
আলজেরিয়ার যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে যুক্তরাষ্ট্র ভেটো দেওয়ার পর জাতিসংঘে উত্তর আফ্রিকা দেশগুলোর প্রতিনিধি বলেছেন, এটি ফিলিস্তিনিদের কাছে একটি শক্তিশালী বার্তা পাঠাবে এবং এই সাক্ষ্য দেবে, দুর্ভাগ্যবশত নিরাপত্তা পরিষদ আবারও ব্যর্থ হয়েছে। অমর বেন্দজামার কথায়, নিজের বিবেককে জিজ্ঞেস করুন, ইতিহাস আপনাকে কীভাবে বিচার করবে।
জাতিসংঘে ফিলিস্তিনের প্রতিনিধি রিয়াদ মনসুর বলেছেন, যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে যুক্তরাষ্ট্রের ভেটো ছিল বেপরোয়া ও বিপজ্জনক। ইসরায়েল এবং যুক্তরাষ্ট্রের মিত্ররাও এর সমালোচনা করেছেন। ফ্রান্সের প্রতিনিধি নিকোলাস ডি. রিভেরি গাজার এমন দুদর্শাগ্রস্ত পরিস্থিতিতে প্রস্তাবটি পাস না হওয়ায় দুঃখপ্রকাশ করেছেন।
তবে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, আমরা লক্ষ্য অর্জন না হওয়া পর্যন্ত যুদ্ধ চালিয়ে যেতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমাদের ওপর এমন কোনো চাপ নেই যা আমাদের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করাতে পারে। ইসরায়েল নিরাপত্তা পরিষদের যেকোনো প্রস্তাব মেনে চলতে বাধ্য। কারণ এগুলো আইনত বাধ্যতামূলক। এটিই সাধারণ পরিষদ থেকে নিরাপত্তা পরিষদের মূল পার্থক্যের জায়গা।
গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে আচমকা হামলা চালায় ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস ও এর সহযোগীরা। এসময় প্রায় ১ হাজার ২০০ জন নিহত হন। জিম্মি করা হয় অন্তত ২৪০ জনকে। এরপর থেকেই অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় বর্বরোচিত হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। এতে এরই মধ্যে ২৯ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। সূত্র : বিবিসি বাংলা
হককথা/নাছরিন