ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে আলোচনা নিয়ন্ত্রণের তাস রাশিয়ার হাতে: ট্রাম্প

- প্রকাশের সময় : ০১:৪৬:০০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২১ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
- / ৯৭ বার পঠিত
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ইউক্রেন যুদ্ধের শান্তি আলোচনা নিয়ন্ত্রণের তাস রাশিয়ার হাতে। কারণ, তারা অনেক এলাকা দখল করেছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, তিনি বিশ্বাস করেন মস্কো যুদ্ধের অবসান চায়। ট্রাম্প বিশ্বাস করলেও এই যুদ্ধ শুরুই করেছিল রাশিয়া। ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে রাশিয়ার সেনাবাহিনী ইউক্রেনে আগ্রাসন শুরু করে। রাশিয়া প্রথম দিকে এই আগ্রাসনকে ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ হিসেবে দাবি করলেও পরে পুতিন নিজেও স্বীকার করেন এটি আসলে একটি যুদ্ধই। স্থানীয় সময় বুধবার ফ্লোরিডায় সৌদি আরব সমর্থিত এক বিনিয়োগ সম্মেলনে ভাষণ দেওয়ার পর তিনি বিবিসির মুখোমুখি হন। সে সময় তিনি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে ‘অনির্বাচিত একনায়ক’ বলে অভিহিত করেন।
এর আগে জেলেনস্কি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ‘মস্কো পরিচালিত ভ্রান্ত তথ্য (প্রোপাগান্ডা) পরিবেষ্টিত বাস্তবতায় বসবাস করছেন।’ কিন্তু এই মন্তব্য ভালোভাবে নেননি ডোনাল্ড ট্রাম্প। এর জবাবে নিজের রাষ্ট্রীয় পরিবহন বিমান এয়ারফোর্স ওয়ানে বসে ট্রাম্প বলেন, ‘আমি মনে করি, রাশিয়ানরা যুদ্ধের অবসান চায়। আমি সত্যিই তা বিশ্বাস করি। আমি মনে করি, তাদের কিছুটা কার্ড হাতে আছে, কারণ তারা অনেক এলাকা দখল করেছে।’ এ সময় ট্রাম্পকে জিজ্ঞাসা করা হয়, রাশিয়া শান্তি চায়—এটি তিনি বিশ্বাস করেন কি না? জবাবে ট্রাম্প বলেন, ‘আমি (বিশ্বাস) করি।’ এর আগে ফ্লোরিডায় ভাষণ দেওয়ার সময় ট্রাম্প বলেন, ‘সে (জেলেনস্কি) নির্বাচন করতে অস্বীকার করছে। প্রকৃত ইউক্রেনীয় জনমতের জরিপে সে তলানির দিকে রয়েছে। যখন প্রতিটি শহর ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে, তখন জনপ্রিয় হওয়া কীভাবে সম্ভব?’
প্রসঙ্গত, ইউক্রেনের সংবিধান অনুসারে, জেলেনস্কির পাঁচ বছরের মেয়াদ ২০২৪ সালের মে মাসে শেষ হওয়ার কথা। তবে রাশিয়ার আগ্রাসনের কারণে দেশটি ২০২২ সাল থেকে সামরিক আইনের অধীনে রয়েছে, ফলে নির্বাচন স্থগিত রাখা হয়েছে। ট্রাম্প দাবি করেছেন, জেলেনস্কির জনপ্রিয়তা মাত্র ৪ শতাংশ। তবে বিবিসি ভেরিফাই জানিয়েছে, সাম্প্রতিক জনমত জরিপে দেখা গেছে, ৫৭ শতাংশ ইউক্রেনীয় এখনো প্রেসিডেন্টের প্রতি আস্থা রাখেন। ট্রাম্পের ‘একনায়ক’ মন্তব্যের কড়া সমালোচনা করেছেন ইউরোপীয় নেতারা। জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস বলেছেন, ‘প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির গণতান্ত্রিক বৈধতাকে অস্বীকার করা সম্পূর্ণ ভুল এবং বিপজ্জনক।’ যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ার স্টারমারও জেলেনস্কির প্রতি সমর্থন জানিয়ে তাঁকে ফোন করেন।
এর আগে, মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের ও রুশ কর্মকর্তারা ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর প্রথমবারের মতো উচ্চপর্যায়ের বৈঠক করেন। তবে সেই বৈঠকে ইউক্রেনকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। এ নিয়ে ট্রাম্প ইউক্রেনকেই দোষারোপ করে বলেন, ‘তোমাদের কখনোই এটি শুরু করা উচিত ছিল না। তোমরা একটি সমঝোতায় পৌঁছাতে পারতে।’
এর প্রতিক্রিয়ায়, জেলেনস্কি বলেন, রাশিয়া মঙ্গলবারের ‘কুখ্যাত বৈঠকে’ মিথ্যা বলেছে। তিনি বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একজন নেতা হিসেবে আমার প্রতি যথেষ্ট শ্রদ্ধাশীল…তবে তিনি ভ্রান্ত তথ্য-পরিবেষ্টিত বাস্তবতায় বসবাস করছেন।’