মারা গেলেন ৭০ বছর ‘লোহার ফুসফুসে’ বেঁচে থাকা পল
- প্রকাশের সময় : ০৬:৩৪:০৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৪ মার্চ ২০২৪
- / ৭৮ বার পঠিত
মাত্র ছয় বছর বয়সে পোলিও ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন পল অ্যালেকজান্ডার। পরে ৭০ বছর লোহার ফুসফুস নিয়ে বেঁচে ছিলেন তিনি। শেষপর্যন্ত আটাত্তর বছর বয়সে প্রয়াত হলেন ‘পোলিও পল’ পরিচিত এই ব্যক্তি।
পল আলেকজান্ডার গত ৭০ বছর ধরে প্রায় ৭ ফুট লম্বা একটি লোহার খাঁচায়, বিজ্ঞানের ভাষায় নাম ‘লোহার ফুসফুস’ এর ভিতরে কাটিয়েছেন। এটা কোনও সিনেমার গপ্প নয়, জীবনের নরক যন্ত্রণাভোগের এক জলজ্যান্ত দৃষ্টান্ত। ‘লোহার ফুসফুসে’ সর্বোচ্চ দিন বেঁচে থাকার জন্য পলের নাম রয়েছে গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসেও। খবর রয়টার্সের
১৯৫২ সালে যুক্তরাষ্ট্রে ভয়াবহ পোলিও রোগ দেখা দেয়। তাতে আক্রান্ত হয় হাজার হাজার শিশু। সে সময়ই এই রোগে আক্রান্ত হন পল। তখন তার বয়স ৬ বছর। পোলিওতে তিনি শুধুমাত্র পঙ্গু হন তাই নয়, পলের ফুসফুসটিও বিকল হয়ে যায়। তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা তার বাঁচার আশা ছেড়ে দেন।
কিন্তু এক চিকিৎসক আশার আলো জাগিয়ে অস্ত্রোপচার করেন পলের। সেখানে তার শ্বাসনালীতে একটি ফুটো করে মেশিনের মাধ্যমে কৃত্রিম পদ্ধতিতে পাম্প করে অক্সিজেন ঢোকানো হয়। সেই সময় এই মেশিনের নাম ছিল আয়রন লাং বা ‘লোহার ফুসফুস’। তারপর থেকেই এই মেশিনের ভিতরে পল কাটিয়ে দেন ৭০টি বছর। কিন্তু, হেরে যাননি।
৬০০ পাউন্ড ওজনের ‘লোহার ফুসফুস’ এর ভেতরে থেকেই তিনি আইন পাশ করেন এবং বইও লেখেন। পলের নিজস্ব পেজ গোফান্ডমিতে মঙ্গলবার তার মৃত্যুর খবর প্রকাশ হয়।
পলের এই জীবনযুদ্ধের কথা বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে মৃত্যু পর্যন্ত বিভিন্ন জায়গা থেকে চিকিৎসা খরচ আসতে থাকে নিয়মিত। পলের ভাই ফিলিপ বলেছেন, যারা ওর জন্য নিয়মিত অর্থ পাঠিয়েছেন, তাদের প্রতি আমি এবং আমাদের পরিবার কৃতজ্ঞ। তাদের দানেই ও এতদিন বেঁচে ছিল।
লোহার ফুসফুসে ব্যাঙের শ্বাসগ্রহণ প্রক্রিয়ার সঙ্গে তুলনা করা যেতে পারে। যেখানে গলার মাংসপেশির দ্বারা বাতাস শ্বাসনালীতে ঢোকে। তাতে রোগী একবারে মুখ ভর্তি বাতাস নিতে পারেন এবং তা ফুসফুসে পৌঁছে যায়। অস্ত্রোপচার করার পর এই পদ্ধতিতেই বেঁচেছিলেন পল।
হককথা/নাছরিন