নিউইয়র্ক ১০:০৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ২৯ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

‘নতুন মধ্যপ্রাচ্য’ গঠনে প্রস্তুত বিনিয়োগকারীরা, তবে উদ্বেগের নাম ‘ট্রাম্প’!

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ১২:২৫:০৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • / ৩৮ বার পঠিত

মধ্যপ্রাচ্যের ঐতিহাসিক পট পরিবর্তনের ফলে আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীরা আবারও এই অঞ্চলের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠছেন। দীর্ঘদিনের অস্থিরতার পর অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের সম্ভাবনায় উজ্জীবিত হচ্ছেন তারা। তবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের গাজা দখলের প্রস্তাব নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে এবং এটি স্থিতিশীলতার ওপর প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। যদিও ইসরাইল-হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি, সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের ক্ষমতাচ্যুতি, ইরানের দুর্বলতা এবং লেবাননে নতুন সরকার গঠন গোটা অঞ্চলের পুনর্গঠনের আশা বাড়িয়ে দিয়েছে। রোববার ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক বিশেষ প্রতিবেদনে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।

মিশর, লেবানন ও ইসরাইলে বিনিয়োগের প্রবাহ : 
প্রতিবেদন অনুযায়ী, পিরামেডের দেশ মিশর মধ্যপ্রাচ্যের সবচেয়ে জনবহুল দেশ এবং হামাস-ইসরাইল ও হিজবুল্লাহর মধ্যে শান্তি আলোচনার মূল মধ্যস্থতাকারী। দেশটি চার বছর পর প্রথমবারের মতো ডলার ভিত্তিক ঋণ বিক্রিতে সফল হয়েছে। অথচ কিছুদিন আগেও দেশটি অর্থনৈতিক সংকটের সম্মুখীন ছিল। এদিকে চলমান পরিস্থিতিতে ইসরাইলি বন্ডের চাহিদা আবারও বাড়ছে। একই সঙ্গে লেবাননের বন্ডও উর্ধ্বমুখী, যা দেশটির সংকট মোকাবিলার প্রত্যাশাকে বাড়িয়ে তুলেছে। এ প্রসঙ্গে এফআইএম পার্টনার্সের অভিজ্ঞ বাজার বিশ্লেষক চার্লি রবার্টসন বলেন, ‘গত কয়েক মাসে মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতি নতুন এক গতিশীলতার দিকে গেছে’। তবে ট্রাম্পের গাজা পরিকল্পনা নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি করতে পারে বলে সতর্ক করেন তিনি।

ট্রাম্পের পরিকল্পনা ও আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া : 
ট্রাম্পের ‘গাজাকে পরিষ্কার করা’ এবং উপত্যকাটিকে ‘মধ্যপ্রাচ্যের রিভেইরা’ বা বিলাসবহুল নগরী বানানোর আহ্বান আন্তর্জাতিক ব্যাপক নিন্দার মুখে পড়েছে। মিশর তো ট্রাম্পের পরিকল্পনাকে রীতিমত ‘গুরুতর হুমকি’ হিসেবে দেখছে এবং ২৭ ফেব্রুয়ারি জরুরি আরব সম্মেলনের ডাক দিয়েছে। রোববার এক ঘোষণায় প্রসিডেন্ট সিসি প্রশাসন জানিয়েছে, ২৭ ফেব্রুয়ারি একটি জরুরি আরব সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে, যেখানে ফিলিস্তিনিদের জন্য ‘গুরুত্বপূর্ণ’ বিষয়গুলোর ওপর আলোচনা করা হবে। এদিকে ক্রেডিট রেটিং সংস্থা এস অ্যান্ড পি গ্লোবাল বলেছে, যদি গাজাসহ মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধবিরতি স্থায়ী হয়, তাহলে ইসরাইলের ক্রেডিট রেটিং কমানোর হুমকি প্রত্যাহার করা হতে পারে।

ইসরাইলের বাজার ও বিনিয়োগকারীদের প্রতিক্রিয়া : 
এদিকে গাজা যুদ্ধবিরতির পর যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তি বাজারে সাম্প্রতিক পতনের সঙ্গে সঙ্গে ইসরাইলের শেয়ারবাজারও মুখ থুবড়ে পড়েছে। যদিও ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পরের ১৮ মাসে ইসরাইলের বাজার বিশ্বের অন্যতম সেরা পারফর্ম করেছে। সম্প্রতি যুদ্ধবিরতির পর থেকে সেই বাজারেই মন্দাভাব দেখা গেছে। এ প্রসঙ্গে লিডার ক্যাপিটাল মার্কেটসের গবেষণা প্রধান সাবিনা লেভি বলেন, ‘২০২৪ সালে আমরা দেখতে পেয়েছি যে, বিনিয়োগকারীরা যুদ্ধের চেয়ে অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক অস্থিরতাকেই বেশি ভয় পাচ্ছেন’।

মিশর ও লেবাননের ভবিষ্যৎ : 
ইউরোপের বৃহত্তম সম্পদ ব্যবস্থাপক আমুন্ডি-এর উদীয়মান বাজার প্রধান ইয়ারলান সিজদিকভ বলেছেন, তার প্রতিষ্ঠান যুদ্ধবিরতির পর মিশরের বন্ড কিনেছিল। তবে ট্রাম্পের পরিকল্পনা- যেখানে মিশর ও জর্ডানকে ২০ লাখ ফিলিস্তিনি শরণার্থী নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে- তাদের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করে দিয়েছে।

সিজদিকভ ব্যাখ্যা করেন, ‘এ অবস্থায় ট্রাম্প যদি মিশরের ওপর অর্থনৈতিক চাপ প্রয়োগ করেন, তাহলে বাজারে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে’। এদিকে লোহিত সাগরে চলাচলকারী ইসরাইলি ও পশ্চিমা জাহাজগুলোর ওপর ইয়েমেনের হুথি গোষ্ঠীর হামলা কমানোর বিষয়টাও বেশ গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, এর আগে হামলার ভয়ে শিপিং সংস্থাগুলো বিকল্প পথ বেছে নিয়েছিল। যার ফলে গত বছর সুয়েজ খালের রাজস্ব আয় ৭ বিলিয়ন ডলার কমে যায়। যা সুয়েজ কর্তৃপক্ষের মোট আয়ের ৬০ শতাংশ। যদিও এখন হামলা কমে যাওয়ায় বিষয়টি অনেকটাই স্বাভবিক রূপে ফিরে এসেছে। তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, মিশর যদি দ্বিপাক্ষিক ও আইএমএফের সহায়তা হারায়, তাহলে বাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।

তুরস্কের সামনে বড় সুযোগ : 
এদিকে ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক দূত স্টিভ উইটকফ বলেছেন, গাজা পুনর্নির্মাণে ১০-১৫ বছর লেগে যেতে পারে। বিশ্বব্যাংকের মতে, লেবাননের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ৮.৫ বিলিয়ন ডলার, যা দেশটির মোট জিডিপির ৩৫ শতাংশ। এমন প্রতিস্থিতিতে অনেক বিনিয়োগকারী আশা করছেন যে, সিরিয়া, লেবানন এবং গাজার মতো যুদ্ধবিধ্বস্ত অঞ্চলের পুনর্গঠন তুরস্কের বৃহৎ নির্মাণ সংস্থাগুলোর জন্য একটি বড় সুযোগ হতে পারে।

লেবাননের পরিবর্তন ও সম্ভাবনা : 
এদিকে লেবাননের প্রশাসনে গত সেপ্টেম্বর থেকে হিজবুল্লাহর প্রভাব কমে গেছে। এর পর থেকেই মূলত দেশটির বন্ডের দাম দ্বিগুণ হয়েছে। লেবাননের নতুন প্রেসিডেন্ট মিশেল আউন তার প্রথম রাষ্ট্রীয় সফরে সৌদি আরব যাচ্ছেন। যা দেশটির জন্য গুরুত্বপূর্ণ সমর্থন জোগাতে পারে। বিনিয়োগকারীরা মনে করছেন, সৌদি আরব লেবাননকে ইরানের প্রভাব থেকে দূরে রাখতে চায়। এএক্সএ ইনভেস্টমেন্ট ম্যানেজার্স-এর প্রধান ম্যাগডা ব্রানেট বলেন, ‘যদি লেবাননের ঋণ পুনর্গঠনে অগ্রগতি হয়, তাহলে ২০২৫ সালের জন্য এটি অনেক বড় খবর হতে পারে’। তবে তিনি সতর্ক করে দিয়ে বলেন, ‘এটি সহজ হবে না। কারণ ৪৫ বিলিয়ন ডলার ঋণ পুনর্গঠনের প্রক্রিয়া এবং স্থানীয় জনগণের অর্থের ওপর সরকারের নিয়ন্ত্রণের মতো বিষয়গুলোও বিদ্যমান’।

মোদ্দাকথা হলো- বিনিয়োগকারীরা নতুন মধ্যপ্রাচ্যকে ইতিবাচকভাবে দেখলেও ট্রাম্পের গাজা পরিকল্পনা এবং আঞ্চলিক অস্থিরতা এখনো উদ্বেগের কারণ হিসেবে বিরাজমান। যদি সব পক্ষের মধ্যে অস্ত্রবিরতি দীর্ঘস্থায়ী হয়, তাহলেই সেটি হয়ে উঠতে পারে এ অঞ্চলের আর্থিক বাজারের জন্য দারুণ এক ইতিবাচক বিষয়। সূত্র : যুগান্তর

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

‘নতুন মধ্যপ্রাচ্য’ গঠনে প্রস্তুত বিনিয়োগকারীরা, তবে উদ্বেগের নাম ‘ট্রাম্প’!

প্রকাশের সময় : ১২:২৫:০৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

মধ্যপ্রাচ্যের ঐতিহাসিক পট পরিবর্তনের ফলে আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীরা আবারও এই অঞ্চলের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠছেন। দীর্ঘদিনের অস্থিরতার পর অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের সম্ভাবনায় উজ্জীবিত হচ্ছেন তারা। তবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের গাজা দখলের প্রস্তাব নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে এবং এটি স্থিতিশীলতার ওপর প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। যদিও ইসরাইল-হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি, সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের ক্ষমতাচ্যুতি, ইরানের দুর্বলতা এবং লেবাননে নতুন সরকার গঠন গোটা অঞ্চলের পুনর্গঠনের আশা বাড়িয়ে দিয়েছে। রোববার ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক বিশেষ প্রতিবেদনে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।

মিশর, লেবানন ও ইসরাইলে বিনিয়োগের প্রবাহ : 
প্রতিবেদন অনুযায়ী, পিরামেডের দেশ মিশর মধ্যপ্রাচ্যের সবচেয়ে জনবহুল দেশ এবং হামাস-ইসরাইল ও হিজবুল্লাহর মধ্যে শান্তি আলোচনার মূল মধ্যস্থতাকারী। দেশটি চার বছর পর প্রথমবারের মতো ডলার ভিত্তিক ঋণ বিক্রিতে সফল হয়েছে। অথচ কিছুদিন আগেও দেশটি অর্থনৈতিক সংকটের সম্মুখীন ছিল। এদিকে চলমান পরিস্থিতিতে ইসরাইলি বন্ডের চাহিদা আবারও বাড়ছে। একই সঙ্গে লেবাননের বন্ডও উর্ধ্বমুখী, যা দেশটির সংকট মোকাবিলার প্রত্যাশাকে বাড়িয়ে তুলেছে। এ প্রসঙ্গে এফআইএম পার্টনার্সের অভিজ্ঞ বাজার বিশ্লেষক চার্লি রবার্টসন বলেন, ‘গত কয়েক মাসে মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতি নতুন এক গতিশীলতার দিকে গেছে’। তবে ট্রাম্পের গাজা পরিকল্পনা নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি করতে পারে বলে সতর্ক করেন তিনি।

ট্রাম্পের পরিকল্পনা ও আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া : 
ট্রাম্পের ‘গাজাকে পরিষ্কার করা’ এবং উপত্যকাটিকে ‘মধ্যপ্রাচ্যের রিভেইরা’ বা বিলাসবহুল নগরী বানানোর আহ্বান আন্তর্জাতিক ব্যাপক নিন্দার মুখে পড়েছে। মিশর তো ট্রাম্পের পরিকল্পনাকে রীতিমত ‘গুরুতর হুমকি’ হিসেবে দেখছে এবং ২৭ ফেব্রুয়ারি জরুরি আরব সম্মেলনের ডাক দিয়েছে। রোববার এক ঘোষণায় প্রসিডেন্ট সিসি প্রশাসন জানিয়েছে, ২৭ ফেব্রুয়ারি একটি জরুরি আরব সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে, যেখানে ফিলিস্তিনিদের জন্য ‘গুরুত্বপূর্ণ’ বিষয়গুলোর ওপর আলোচনা করা হবে। এদিকে ক্রেডিট রেটিং সংস্থা এস অ্যান্ড পি গ্লোবাল বলেছে, যদি গাজাসহ মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধবিরতি স্থায়ী হয়, তাহলে ইসরাইলের ক্রেডিট রেটিং কমানোর হুমকি প্রত্যাহার করা হতে পারে।

ইসরাইলের বাজার ও বিনিয়োগকারীদের প্রতিক্রিয়া : 
এদিকে গাজা যুদ্ধবিরতির পর যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তি বাজারে সাম্প্রতিক পতনের সঙ্গে সঙ্গে ইসরাইলের শেয়ারবাজারও মুখ থুবড়ে পড়েছে। যদিও ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পরের ১৮ মাসে ইসরাইলের বাজার বিশ্বের অন্যতম সেরা পারফর্ম করেছে। সম্প্রতি যুদ্ধবিরতির পর থেকে সেই বাজারেই মন্দাভাব দেখা গেছে। এ প্রসঙ্গে লিডার ক্যাপিটাল মার্কেটসের গবেষণা প্রধান সাবিনা লেভি বলেন, ‘২০২৪ সালে আমরা দেখতে পেয়েছি যে, বিনিয়োগকারীরা যুদ্ধের চেয়ে অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক অস্থিরতাকেই বেশি ভয় পাচ্ছেন’।

মিশর ও লেবাননের ভবিষ্যৎ : 
ইউরোপের বৃহত্তম সম্পদ ব্যবস্থাপক আমুন্ডি-এর উদীয়মান বাজার প্রধান ইয়ারলান সিজদিকভ বলেছেন, তার প্রতিষ্ঠান যুদ্ধবিরতির পর মিশরের বন্ড কিনেছিল। তবে ট্রাম্পের পরিকল্পনা- যেখানে মিশর ও জর্ডানকে ২০ লাখ ফিলিস্তিনি শরণার্থী নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে- তাদের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করে দিয়েছে।

সিজদিকভ ব্যাখ্যা করেন, ‘এ অবস্থায় ট্রাম্প যদি মিশরের ওপর অর্থনৈতিক চাপ প্রয়োগ করেন, তাহলে বাজারে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে’। এদিকে লোহিত সাগরে চলাচলকারী ইসরাইলি ও পশ্চিমা জাহাজগুলোর ওপর ইয়েমেনের হুথি গোষ্ঠীর হামলা কমানোর বিষয়টাও বেশ গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, এর আগে হামলার ভয়ে শিপিং সংস্থাগুলো বিকল্প পথ বেছে নিয়েছিল। যার ফলে গত বছর সুয়েজ খালের রাজস্ব আয় ৭ বিলিয়ন ডলার কমে যায়। যা সুয়েজ কর্তৃপক্ষের মোট আয়ের ৬০ শতাংশ। যদিও এখন হামলা কমে যাওয়ায় বিষয়টি অনেকটাই স্বাভবিক রূপে ফিরে এসেছে। তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, মিশর যদি দ্বিপাক্ষিক ও আইএমএফের সহায়তা হারায়, তাহলে বাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।

তুরস্কের সামনে বড় সুযোগ : 
এদিকে ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক দূত স্টিভ উইটকফ বলেছেন, গাজা পুনর্নির্মাণে ১০-১৫ বছর লেগে যেতে পারে। বিশ্বব্যাংকের মতে, লেবাননের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ৮.৫ বিলিয়ন ডলার, যা দেশটির মোট জিডিপির ৩৫ শতাংশ। এমন প্রতিস্থিতিতে অনেক বিনিয়োগকারী আশা করছেন যে, সিরিয়া, লেবানন এবং গাজার মতো যুদ্ধবিধ্বস্ত অঞ্চলের পুনর্গঠন তুরস্কের বৃহৎ নির্মাণ সংস্থাগুলোর জন্য একটি বড় সুযোগ হতে পারে।

লেবাননের পরিবর্তন ও সম্ভাবনা : 
এদিকে লেবাননের প্রশাসনে গত সেপ্টেম্বর থেকে হিজবুল্লাহর প্রভাব কমে গেছে। এর পর থেকেই মূলত দেশটির বন্ডের দাম দ্বিগুণ হয়েছে। লেবাননের নতুন প্রেসিডেন্ট মিশেল আউন তার প্রথম রাষ্ট্রীয় সফরে সৌদি আরব যাচ্ছেন। যা দেশটির জন্য গুরুত্বপূর্ণ সমর্থন জোগাতে পারে। বিনিয়োগকারীরা মনে করছেন, সৌদি আরব লেবাননকে ইরানের প্রভাব থেকে দূরে রাখতে চায়। এএক্সএ ইনভেস্টমেন্ট ম্যানেজার্স-এর প্রধান ম্যাগডা ব্রানেট বলেন, ‘যদি লেবাননের ঋণ পুনর্গঠনে অগ্রগতি হয়, তাহলে ২০২৫ সালের জন্য এটি অনেক বড় খবর হতে পারে’। তবে তিনি সতর্ক করে দিয়ে বলেন, ‘এটি সহজ হবে না। কারণ ৪৫ বিলিয়ন ডলার ঋণ পুনর্গঠনের প্রক্রিয়া এবং স্থানীয় জনগণের অর্থের ওপর সরকারের নিয়ন্ত্রণের মতো বিষয়গুলোও বিদ্যমান’।

মোদ্দাকথা হলো- বিনিয়োগকারীরা নতুন মধ্যপ্রাচ্যকে ইতিবাচকভাবে দেখলেও ট্রাম্পের গাজা পরিকল্পনা এবং আঞ্চলিক অস্থিরতা এখনো উদ্বেগের কারণ হিসেবে বিরাজমান। যদি সব পক্ষের মধ্যে অস্ত্রবিরতি দীর্ঘস্থায়ী হয়, তাহলেই সেটি হয়ে উঠতে পারে এ অঞ্চলের আর্থিক বাজারের জন্য দারুণ এক ইতিবাচক বিষয়। সূত্র : যুগান্তর