নিউইয়র্ক ১২:৪৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

ইসলামবিদ্বেষ নিয়ে বাইডেনের বিবৃতির প্রতিক্রিয়ায় যা বললো অধিকার গোষ্ঠী

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০৬:২৯:৫৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৭ মার্চ ২০২৪
  • / ৪৫ বার পঠিত

প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। ছবি: রয়টার্স

গাজা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ইসলামবিদ্বেষের পুনরুত্থান নিয়ে নিন্দা জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। শুক্রবার (১৫ মার্চ) ইসলামবিদ্বেষের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের আন্তর্জাতিক দিবস উপলক্ষ্যে একটি বিবৃতিতে এই নিন্দা জানিয়েছিলেন তিনি। তবে বাইডেনের এমন মন্তব্য প্রত্যাখ্যান করেছে একটি মুসলিম অ্যাডভোকেসি গ্রুপ। নিন্দার পরিবর্তে বাইডেনকে যুক্তরাষ্ট্রের নীতি পরিবর্তনের আহ্বান জানিয়েছে তারা। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এই খবর জানিয়েছে।

২০২২ সালে ১৫ মার্চকে ইসলামবিদ্বেষের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য আন্তর্জাতিক দিবস হিসেবে পালন করার ঘোষণা দেয় যুক্তরাষ্ট্র। কেননা, ২০১৯ সালের এই দিনে নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চের একটি মসজিদে জুম্মার নামাজের সময় বন্দুকধারীর হামলায় ৫১ জন নিহত হন। ইসলামবিদ্বেষের জেরে ওই হামলা চালানো হয়েছিল।

নীতি পরিবর্তন যে কারণে গুরুত্বপূর্ণ

মানবাধিকার অ্যাডভোকেটরা যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য দেশে ইসলামবিদ্বেষ, ফিলিস্তিনবিরোধী পক্ষপাত এবং ইহুদিবিদ্বেষ বৃদ্ধি পাওয়ার কথা উল্লেখ করেছেন। দেশটিতে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলোর মধ্যে অক্টোবরে ইলিনয়ে ৬ বছর বয়সী ফিলিস্তিনি-আমেরিকান শিশু ওয়াদেয়া আল-ফাইউমের ওপর মারাত্মক ছুরি হামলা, নভেম্বরে ভার্মন্টে ফিলিস্তিনি বংশোদ্ভূত তিন শিক্ষার্থীর ওপর গুলি চালানো এবং ফেব্রুয়ারিতে টেক্সাসে ফিলিস্তিনি-আমেরিকান এক ব্যক্তিকে ছুরিকাঘাতের ঘটনাগুলো আশঙ্কাজন ছিল।

যুক্তরাষ্ট্রে ছুরি হামলায় নিহত ফিলিস্তিনি-আমেরিকান শিশু ওয়াদেয়া আল-ফাইউমের প্রার্থনা অনুষ্ঠানে শোকার্তরা। ছবি: রয়র্টার্স

কাউন্সিল অন আমেরিকান-ইসলামিক রিলেশনস অ্যাডভোকেসি গ্রুপ জানিয়েছে, ২০২৩ সালের শেষ তিন মাসে তিন হাজার ৫৭৮টি অভিযোগ পেয়েছে গোষ্ঠীটি। এই সংখ্যা এক বছরের আগের একই সময়ে তুলনায় মুসলিমবিদ্বেষ সম্পর্কিত ঘটনার অভিযোগ চেয়ে ১৭৮ শতাংশ বেশি।

বিবৃতিতে দেওয়া বাইডেনের মূল উদ্ধৃতি

‘আমরা স্বীকার করছি, শুধু ধর্মীয় বিশ্বাসের কারণেই বিশ্বব্যাপী মুসলমানরা প্রায়শই সহিংসতা এবং ঘৃণার সম্মুখীন হচ্ছেন। গাজায় ধ্বংসাত্মক যুদ্ধের পরিপ্রেক্ষিতে ঘৃণ্যমূলকভাবে ইসলামবিদ্বেষের পুনরুত্থান ঘটেছে।’

‘আমাদের দেশে ইসলামবিদ্বেষের কোনও জায়গা নেই। তবুও যুক্তরাষ্ট্রের মুসলমানরা দৈনন্দিন জীবনে প্রায়ই ভিত্তিহীন ভয়ভীতি, চরম বৈষম্য, হয়রানি এবং সহিংসতা সহ্য করে থাকেন।’

প্রতিক্রিয়া

কাউন্সিল অন আমেরিকান-ইসলামিক রিলেশনস অ্যাডভোকেসি গ্রুপ বাইডেনের এমন মন্তব্যকে প্রত্যাখ্যান করেছে। গোষ্ঠীটি অভিযোগ করেছেন, গাজায় স্থায়ী যুদ্ধবিরতির আহ্বানকে উপেক্ষা করে এবং ইসরায়েলকে নিঃশর্ত সমর্থন দিয়ে ইসলামবিদ্বেষ ছড়ানোয় ভূমিকা রাখছে হোয়াইট হাউজ।

অ্যাডভোকেসি গ্রুপ বলেছে, ‘হোয়াইট হাউজ আমেরিকাতে একজন ফিলিস্তিনি মুসলিম শিশুর বিরুদ্ধে সহিংসতার ঘটনার নিন্দা করতে পারে না বরং একইসময় তারা গাজায় ফিলিস্তিনি মুসলিম শিশুদের গণহত্যায় পরোক্ষভাবে অংশ নিচ্ছে। এমনকি গাজায় চলমান ধ্বংসযজ্ঞকে ‘বিধ্বংসী’ বলেও অভিহিত করতে পারে না হোয়াইট হাউজ। পাল্টা সেখানে যারা ধ্বংসযজ্ঞ ঘটাচ্ছে তাদের অস্ত্রের যোগান দিচ্ছে।’

পটভূমি

৯/১১ এর পর ৭ অক্টোবর থেকে ইসলামবিদ্বেষের পুনরুত্থানকে কলঙ্কের মুখোমুখি হওয়ার সঙ্গে তুলনা করেছে অধিকার গোষ্ঠীগুলো। ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের প্রতিরোধ গোষ্ঠী হামাস দক্ষিণ ইসরায়েলে হামলা চালিয়েছিল। ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের মতে, ওই হামলায় এক হাজার ২০০ ইসরায়েলি নিহত হন।

ওই হামলার প্রতিক্রিয়ায় ওইদিনই ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় আকাশ ও স্থলপথে পাল্টা হামলা শুরু করে ইসরায়েল। ওইদিনের শুরু করা হামলা টানা ৫ মাসেরও বেশি সময় ধরে চলছে।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, ইসরায়েল নির্বিচার হামলায় এখন পর্যন্ত ৩১ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে অধিকাংশই নারী ও শিশু। খাদ্যের তীব্র সংকটের মধ্যেই অঞ্চলটির প্রায় ২৩ লাখ বাসিন্দাই অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।

হককথা/নাছরিন

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

ইসলামবিদ্বেষ নিয়ে বাইডেনের বিবৃতির প্রতিক্রিয়ায় যা বললো অধিকার গোষ্ঠী

প্রকাশের সময় : ০৬:২৯:৫৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৭ মার্চ ২০২৪

গাজা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ইসলামবিদ্বেষের পুনরুত্থান নিয়ে নিন্দা জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। শুক্রবার (১৫ মার্চ) ইসলামবিদ্বেষের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের আন্তর্জাতিক দিবস উপলক্ষ্যে একটি বিবৃতিতে এই নিন্দা জানিয়েছিলেন তিনি। তবে বাইডেনের এমন মন্তব্য প্রত্যাখ্যান করেছে একটি মুসলিম অ্যাডভোকেসি গ্রুপ। নিন্দার পরিবর্তে বাইডেনকে যুক্তরাষ্ট্রের নীতি পরিবর্তনের আহ্বান জানিয়েছে তারা। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এই খবর জানিয়েছে।

২০২২ সালে ১৫ মার্চকে ইসলামবিদ্বেষের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য আন্তর্জাতিক দিবস হিসেবে পালন করার ঘোষণা দেয় যুক্তরাষ্ট্র। কেননা, ২০১৯ সালের এই দিনে নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চের একটি মসজিদে জুম্মার নামাজের সময় বন্দুকধারীর হামলায় ৫১ জন নিহত হন। ইসলামবিদ্বেষের জেরে ওই হামলা চালানো হয়েছিল।

নীতি পরিবর্তন যে কারণে গুরুত্বপূর্ণ

মানবাধিকার অ্যাডভোকেটরা যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য দেশে ইসলামবিদ্বেষ, ফিলিস্তিনবিরোধী পক্ষপাত এবং ইহুদিবিদ্বেষ বৃদ্ধি পাওয়ার কথা উল্লেখ করেছেন। দেশটিতে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলোর মধ্যে অক্টোবরে ইলিনয়ে ৬ বছর বয়সী ফিলিস্তিনি-আমেরিকান শিশু ওয়াদেয়া আল-ফাইউমের ওপর মারাত্মক ছুরি হামলা, নভেম্বরে ভার্মন্টে ফিলিস্তিনি বংশোদ্ভূত তিন শিক্ষার্থীর ওপর গুলি চালানো এবং ফেব্রুয়ারিতে টেক্সাসে ফিলিস্তিনি-আমেরিকান এক ব্যক্তিকে ছুরিকাঘাতের ঘটনাগুলো আশঙ্কাজন ছিল।

যুক্তরাষ্ট্রে ছুরি হামলায় নিহত ফিলিস্তিনি-আমেরিকান শিশু ওয়াদেয়া আল-ফাইউমের প্রার্থনা অনুষ্ঠানে শোকার্তরা। ছবি: রয়র্টার্স

কাউন্সিল অন আমেরিকান-ইসলামিক রিলেশনস অ্যাডভোকেসি গ্রুপ জানিয়েছে, ২০২৩ সালের শেষ তিন মাসে তিন হাজার ৫৭৮টি অভিযোগ পেয়েছে গোষ্ঠীটি। এই সংখ্যা এক বছরের আগের একই সময়ে তুলনায় মুসলিমবিদ্বেষ সম্পর্কিত ঘটনার অভিযোগ চেয়ে ১৭৮ শতাংশ বেশি।

বিবৃতিতে দেওয়া বাইডেনের মূল উদ্ধৃতি

‘আমরা স্বীকার করছি, শুধু ধর্মীয় বিশ্বাসের কারণেই বিশ্বব্যাপী মুসলমানরা প্রায়শই সহিংসতা এবং ঘৃণার সম্মুখীন হচ্ছেন। গাজায় ধ্বংসাত্মক যুদ্ধের পরিপ্রেক্ষিতে ঘৃণ্যমূলকভাবে ইসলামবিদ্বেষের পুনরুত্থান ঘটেছে।’

‘আমাদের দেশে ইসলামবিদ্বেষের কোনও জায়গা নেই। তবুও যুক্তরাষ্ট্রের মুসলমানরা দৈনন্দিন জীবনে প্রায়ই ভিত্তিহীন ভয়ভীতি, চরম বৈষম্য, হয়রানি এবং সহিংসতা সহ্য করে থাকেন।’

প্রতিক্রিয়া

কাউন্সিল অন আমেরিকান-ইসলামিক রিলেশনস অ্যাডভোকেসি গ্রুপ বাইডেনের এমন মন্তব্যকে প্রত্যাখ্যান করেছে। গোষ্ঠীটি অভিযোগ করেছেন, গাজায় স্থায়ী যুদ্ধবিরতির আহ্বানকে উপেক্ষা করে এবং ইসরায়েলকে নিঃশর্ত সমর্থন দিয়ে ইসলামবিদ্বেষ ছড়ানোয় ভূমিকা রাখছে হোয়াইট হাউজ।

অ্যাডভোকেসি গ্রুপ বলেছে, ‘হোয়াইট হাউজ আমেরিকাতে একজন ফিলিস্তিনি মুসলিম শিশুর বিরুদ্ধে সহিংসতার ঘটনার নিন্দা করতে পারে না বরং একইসময় তারা গাজায় ফিলিস্তিনি মুসলিম শিশুদের গণহত্যায় পরোক্ষভাবে অংশ নিচ্ছে। এমনকি গাজায় চলমান ধ্বংসযজ্ঞকে ‘বিধ্বংসী’ বলেও অভিহিত করতে পারে না হোয়াইট হাউজ। পাল্টা সেখানে যারা ধ্বংসযজ্ঞ ঘটাচ্ছে তাদের অস্ত্রের যোগান দিচ্ছে।’

পটভূমি

৯/১১ এর পর ৭ অক্টোবর থেকে ইসলামবিদ্বেষের পুনরুত্থানকে কলঙ্কের মুখোমুখি হওয়ার সঙ্গে তুলনা করেছে অধিকার গোষ্ঠীগুলো। ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের প্রতিরোধ গোষ্ঠী হামাস দক্ষিণ ইসরায়েলে হামলা চালিয়েছিল। ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের মতে, ওই হামলায় এক হাজার ২০০ ইসরায়েলি নিহত হন।

ওই হামলার প্রতিক্রিয়ায় ওইদিনই ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় আকাশ ও স্থলপথে পাল্টা হামলা শুরু করে ইসরায়েল। ওইদিনের শুরু করা হামলা টানা ৫ মাসেরও বেশি সময় ধরে চলছে।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, ইসরায়েল নির্বিচার হামলায় এখন পর্যন্ত ৩১ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে অধিকাংশই নারী ও শিশু। খাদ্যের তীব্র সংকটের মধ্যেই অঞ্চলটির প্রায় ২৩ লাখ বাসিন্দাই অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।

হককথা/নাছরিন