লস অ্যাঞ্জেলেসে অভিবাসী ধরপাকড়ের আগেই গোমর ফাঁস

- প্রকাশের সময় : ০৫:৫৯:১৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
- / ৫১ বার পঠিত
যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন ও শুল্ক প্রয়োগ (আইসিই)-এর মেমো (স্মারকলিপি) যিনি ফাঁস করেছেন তাকে দ্রুত খুঁজে বের করে শাস্তির আওতায় আনা হবে বলে উল্লেখ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাটর্নি জেনারেল পাম বন্ডি। মেমো ফাঁসকারী ব্যক্তি জানিয়েছেন যে আইসিই এজেন্টরা এই মাসের শেষে লস অ্যাঞ্জেলেসে একটি ‘বড় পরিসরের অভিযান’ চালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন। নিউ অরলিন্স সুপারডোমের বাইরে সুপার বোল ৫৯ থেকে কথা বলতে গিয়ে বন্ডি স্পষ্ট করেছেন যে, অ্যাটর্নি জেনারেলের দপ্তর এ ধরনের তথ্য ফাঁসকে কোনোভাবেই সহ্য করবে না।
তিনি বলেন, যদি কেউ কোনো কিছু ফাঁস করেন, তারা বোঝে না যে এটি আমাদের আইন প্রয়োগকারী পুরুষ ও নারীদের জীবন ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দেয়। আর যদি আপনি এটি ফাঁস করে থাকেন আমরা খুঁজে বের করব আপনি কে এবং আমরা আপনাকে আইনের আওতায় আনব। তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের মিশন’ সম্পন্ন করতে এই মেমো ফাঁসকারীরা ডোনাল্ড ট্রাম্পের ব্যাপক নির্বাসন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা বাধা হতে পারবে না। প্রেসিডেন্টের ‘আমেরিকাকে আবার নিরাপদ করা’ মিশনকে থামাতে পারবে না। আপনি যদি আইন না মানেন তাহলে বিচার বিভাগ আপনাকে বিচারের আওতায় আনবে। ২০ জানুয়ারি ট্রাম্প দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে বড় আকারের অভিবাসন অভিযান পরিচালনার নির্দেশ দিয়েছেন। তবে আসন্ন এই অভিযান প্রথমবারের মতো লস অ্যাঞ্জেলেসে আঘাত হানবে।
একজন ফেডারেল আইন প্রয়োগকারী কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এফবিআই এবং ড্রাগ এনফোর্সমেন্ট অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (ডিইএ) লস অ্যাঞ্জেলেস অফিস থেকে এজেন্টদের সহায়তার জন্য ডাকা হয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা লস অ্যাঞ্জেলেস টাইমসকে বলেন, তাদের আরও জনবলের প্রয়োজন। প্রতিশোধের ভয়ে তিনি তার পরিচয় প্রকাশ করেননি।
এই কর্মকর্তা আরও বলেন, ট্রাম্পের নতুন প্রশাসনের ‘অরাজক’ পদ্ধতির কারণে অভিযানের সময়সূচি পরিবর্তন হতে পারে। তিনি আরও বলেন, ডেমোক্র্যাট নেতৃত্বাধীন শহরের কিছু সংস্থার প্রতিরোধের কারণে পরিকল্পনায় বিলম্ব হতে পারে। শুধু কিছু তথ্য প্রকাশ পাচ্ছে মানে এই নয় যে এটি প্রশাসনের পরিকল্পনা, কারণ তারা জানে কিছু এজেন্ট প্রতিরোধ গড়ে তুলবে। একজন সাবেক কর্মকর্তা লস অ্যাঞ্জেলেস টাইমসকে নিশ্চিত করেছেন যে আসন্ন আইসিই’র অভিযানের খবর সত্য। সম্প্রতি আইসিই-এর হাজার হাজার অফিসার সান ডিয়েগো সীমান্ত ক্রসিং-এ মোতায়েন করা হয়েছে। কারণ তারা ১ লাখ অভিবাসীকে মেক্সিকো এবং মধ্য আমেরিকায় ফেরত পাঠানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে যা সাম্প্রতিক সময়ের সবচেয়ে বড় অভিবাসন অভিযান হতে চলেছে।
মারিন সেনারা এলাকায় নেমেছে সীমান্ত রক্ষা করতে, কারণ প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প অবৈধ অভিবাসনের বিরুদ্ধে তার কঠোর অবস্থান আরও বাড়িয়েছেন। এই সপ্তাহে প্রায় ১,৫০০ সক্রিয় সেনা প্রায় ২,০০০ মাইল দীর্ঘ সীমান্তে মোতায়েন করা হয়েছে যার মধ্যে ক্যালিফোর্নিয়ার ক্যাম্প পেন্ডলটন থেকে ৫০০ জন মেরিন রয়েছে। তারা এখন ডিএইচএস ট্রাক এবং সিবিপি -এর এক মাইল দীর্ঘ লাইন দ্বারা যোগদান করেছে।একজন হোয়াইট হাউস গোয়েন্দা সূত্র জানিয়েছে, ক্যাম্প পেন্ডলটনের সামনে এখন ডিএইচএস ট্রাক এবং সিবিপি এর এক মাইল দীর্ঘ লাইন রয়েছে যা সাম্প্রতিক ইতিহাসের সবচেয়ে বড় অবৈধ অভিবাসী আটক অভিযান চালানোর জন্য প্রস্তুত।
এই সপ্তাহে পশ্চিম উপকূলে অভিযান চলবে, পরের সপ্তাহে পূর্ব উপকূলে। ক্যালিফোর্নিয়ায় পরিস্থিতি ক্রমেই উত্তপ্ত হতে যাচ্ছে। তাদের ১ লাখের লক্যমাত্রা পূরণ করতে হবে অর্থাৎ ব্যাপক গ্রেপ্তারই প্রশাসনের লক্ষ্য। সূত্রটি আরও জানায়, তারা ১ লাখ অভিবাসীকে মেক্সিকো, কলম্বিয়া, এল সালভাদর এবং গুয়াতেমালায় ফেরত পাঠাবে। সীমান্ত প্রধান টম হোমান বলেছেন, আইসিই ইতোমধ্যে ‘অভূতপূর্ব’ সংখ্যক গ্রেপ্তার চালালেও তিনি অভিবাসন নির্বাসনের গতি নিয়ে সন্তুষ্ট নন এবং বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের আরও বেশি অভিবাসী প্রত্যাবাসন প্রয়োজন। তিনি ফক্স নিউজের জেসি ওয়াটার্সকে বলেন, এটি একটি দুর্দান্ত শুরু ছিল। প্রথম সপ্তাহটি নজিরবিহীন ছিল। ট্রাম্পের নতুন নীতির কারণে অবৈধ সীমান্ত অতিক্রমের হার ১০ হাজার থেকে নেমে ৬০০-এর নিচে এসেছে।
হোমান বলেন, এটি দুর্দান্ত, এটি ভালো, কিন্তু আমরা এখানেই থামতে পারছি না। আমাদের আরও বেশি বহিষ্কার দরকার। অনেক বেশি বহিষ্কার, আর এটাই আমাদের লক্ষ্য। এই মন্তব্য আসে মাত্র কয়েকদিন পরে, যখন তিনি বলেছিলেন যে দৈনিক নির্বাসন ও গ্রেপ্তারের সংখ্যা ‘ক্রমাগত বৃদ্ধি’ পাবে কারণ প্রশাসন অবৈধ অভিবাসন দমন করার প্রচেষ্টা আরও জোরদার করতে চায়। সূত্র : দেশ রূপান্তর।