নিউইয়র্ক ০১:৪৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ২২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১০ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

ট্রাম্পের কূটনৈতিক চালে অস্তিত্ব রক্ষার ডামাডোলে পড়বে ইউরোপের দেশগুলো!

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০২:০২:৫০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • / ৩৮ বার পঠিত

যুদ্ধ বন্ধের আলোচনায় ট্রাম্প রাশিয়াকে যেভাবে প্রাধান্য দিচ্ছেন, তাতে ইউক্রেনের পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে ইউরোপও। বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, ট্রাম্পের কূটনৈতিক চালে অস্তিত্ব রক্ষার ডামাডোলে পড়বে ইউরোপের দেশগুলো। যদিও যুক্তরাষ্ট্রের গণমাধ্যম বলছে, ইউরোপকে ছাড়াই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প, রাশিয়ার সাথে যুদ্ধবিরতির আলোচনা শুরু করবেন, এটি আগে থেকেই জানতো কিয়েভ। ফলে ইউরোপের স্বার্থ রক্ষার ভার পরোক্ষভাবে হলেও ইউক্রেনকেই নিতে হবে।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে একের পর এক ধাক্কা খাচ্ছে ইউক্রেন। যুদ্ধবিরতির আলোচনায় কিয়েভকে সম্পূর্ণ অগ্রাহ্য করার পর গেল মঙ্গলবার ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে আরও মারাত্মক অভিযোগ তোলেন ট্রাম্প। দাবি করেন, রাশিয়ার সাথে ইউক্রেন নিজেই স্বপ্রণোদিতভাবে সংঘাতে জড়িয়েছে। যুদ্ধকে দীর্ঘায়িত করা এবং এতে হতাহতদের দায়ভার ইউক্রেনকেই নিতে হবে বলেও মন্তব্য করেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট।

ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) প্রথমবারের মতো সরাসরি বৈঠক করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ও রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী। যুদ্ধবিরতির আলোচনার এক পর্যায়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নকে অন্তর্ভুক্ত করা কিংবা প্রয়োজনে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির সঙ্গে পুতির বৈঠক, মস্কো-ওয়াশিংটন সংলাপের পর এ ধরণের ইতিবাচক খবর সামনে আসলেও বিশ্লেষকরা বলছেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কাছে এগুলো কোনো গুরুত্ব বহন করে না। যেকোনো মূল্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর করেই ছানেড়বেন তিনি। যদিও সিএনএনের বিশ্লেষণ বলেছে, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ বন্ধে ট্রাম্প প্রশাসনের এই তাড়াহুড়োর খেসারত দিতে হবে খোদ ইউক্রেনকেই। আর অস্তিত্ব সংকটের পাশাপাশি ইউরোপের দেশগুলোর ভাবনার কারণ হতে পারে আঞ্চলিক নিরাপত্তা।

এদিকে সিএনএনের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, সাবেক যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার মতো বর্তমান প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নজরও নোবেল শান্তি পুরস্কারের দিকে। বিশেষজ্ঞদের অনেকেই মনে করেন, এ কারণে ক্ষমতা গ্রহণের এক মাস যেতে না যেতেই সর্বশক্তি নিয়ে তিনি ঝাঁপিয়ে পড়েছেন মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপে যুদ্ধবিরতি কার্যকর করতে। যদিও যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্লেষকদের দাবি, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের গতিবিধি নিয়ে স্পষ্ট ধারণা থাকায় ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি আগেভাগেই ট্রাম্প প্রশাসনের সাথে সম্পর্কোন্নয়নের চেষ্টা করে যাচ্ছেন। টিআরটি ওয়ার্ল্ডের প্রতিবেদন বলছে, কূটনীতির এই খেলায় এখনও পিছিয়ে আছে ইউরোপের কর্তাব্যক্তিরা। তবে ইউরোপের হয়ে এই লড়াইটিও লড়তে হবে ইউক্রেনকেই। পাশাপাশি যুদ্ধ বন্ধের যে তোড়জোড় দেখা যাচ্ছে, আগামী কয়েক সপ্তাহে তা ভিন্নদিকে মোড় নিতে পারে বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

ইউসিসিএ’র পরিচালক আন্দ্রেইজ ডোব্রিয়ানস্কি বলেন, ‘ইউরোপের রাজনৈতিক ও সামরিক শক্তি হিসেবে ইউক্রেনকেই আত্মপ্রকাশ করতে হবে। রাশিয়ার সম্মুখ যুদ্ধের অভিজ্ঞতার বিচারে ইউরোপের বাকি দেশগুলোর তুলনায় ইউক্রেনই এগিয়ে আছে। খেয়াল করলে দেখবেন, ইউরোপের দেশগুলোর দুশ্চিন্তার মূল কারণ ইউক্রেনের মিত্ররা যদি পিছিয়ে আসে, তখন রাশিয়ার পদক্ষেপ কী হবে।’ অধ্যাপক ও সাবেক যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত ডনাল্ড জেনসেন বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও’র বক্তব্য খেয়াল করলে দেখবেন উনি নিজেও বলছেন এটা যুদ্ধবিরতির আলোচনা শুরুর প্রথম ধাপ। আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে এর গতিবিধি বদলে যেতে পারে।’

যদিও সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, চলমান এই আলোচনার সবশেষ অগ্রগতি নির্ভর করছে ট্রাম্প-পুতিন বৈঠকের ওপর। বৈঠকের বিষয়ে অনেক আগেই ইতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছে ক্রেমলিন। তবে যুদ্ধবিরতির আলোচনায় ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্টের কোনো অংশগ্রহণ থাকবে কী না বা সমঝোতার কোন পর্যায়ে এসে যোগ দেবেন ইউরোপের নেতারা- সে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। সূত্র : এখন টিভি।

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

ট্রাম্পের কূটনৈতিক চালে অস্তিত্ব রক্ষার ডামাডোলে পড়বে ইউরোপের দেশগুলো!

প্রকাশের সময় : ০২:০২:৫০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

যুদ্ধ বন্ধের আলোচনায় ট্রাম্প রাশিয়াকে যেভাবে প্রাধান্য দিচ্ছেন, তাতে ইউক্রেনের পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে ইউরোপও। বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, ট্রাম্পের কূটনৈতিক চালে অস্তিত্ব রক্ষার ডামাডোলে পড়বে ইউরোপের দেশগুলো। যদিও যুক্তরাষ্ট্রের গণমাধ্যম বলছে, ইউরোপকে ছাড়াই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প, রাশিয়ার সাথে যুদ্ধবিরতির আলোচনা শুরু করবেন, এটি আগে থেকেই জানতো কিয়েভ। ফলে ইউরোপের স্বার্থ রক্ষার ভার পরোক্ষভাবে হলেও ইউক্রেনকেই নিতে হবে।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে একের পর এক ধাক্কা খাচ্ছে ইউক্রেন। যুদ্ধবিরতির আলোচনায় কিয়েভকে সম্পূর্ণ অগ্রাহ্য করার পর গেল মঙ্গলবার ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে আরও মারাত্মক অভিযোগ তোলেন ট্রাম্প। দাবি করেন, রাশিয়ার সাথে ইউক্রেন নিজেই স্বপ্রণোদিতভাবে সংঘাতে জড়িয়েছে। যুদ্ধকে দীর্ঘায়িত করা এবং এতে হতাহতদের দায়ভার ইউক্রেনকেই নিতে হবে বলেও মন্তব্য করেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট।

ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) প্রথমবারের মতো সরাসরি বৈঠক করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ও রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী। যুদ্ধবিরতির আলোচনার এক পর্যায়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নকে অন্তর্ভুক্ত করা কিংবা প্রয়োজনে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির সঙ্গে পুতির বৈঠক, মস্কো-ওয়াশিংটন সংলাপের পর এ ধরণের ইতিবাচক খবর সামনে আসলেও বিশ্লেষকরা বলছেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কাছে এগুলো কোনো গুরুত্ব বহন করে না। যেকোনো মূল্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর করেই ছানেড়বেন তিনি। যদিও সিএনএনের বিশ্লেষণ বলেছে, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ বন্ধে ট্রাম্প প্রশাসনের এই তাড়াহুড়োর খেসারত দিতে হবে খোদ ইউক্রেনকেই। আর অস্তিত্ব সংকটের পাশাপাশি ইউরোপের দেশগুলোর ভাবনার কারণ হতে পারে আঞ্চলিক নিরাপত্তা।

এদিকে সিএনএনের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, সাবেক যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার মতো বর্তমান প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নজরও নোবেল শান্তি পুরস্কারের দিকে। বিশেষজ্ঞদের অনেকেই মনে করেন, এ কারণে ক্ষমতা গ্রহণের এক মাস যেতে না যেতেই সর্বশক্তি নিয়ে তিনি ঝাঁপিয়ে পড়েছেন মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপে যুদ্ধবিরতি কার্যকর করতে। যদিও যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্লেষকদের দাবি, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের গতিবিধি নিয়ে স্পষ্ট ধারণা থাকায় ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি আগেভাগেই ট্রাম্প প্রশাসনের সাথে সম্পর্কোন্নয়নের চেষ্টা করে যাচ্ছেন। টিআরটি ওয়ার্ল্ডের প্রতিবেদন বলছে, কূটনীতির এই খেলায় এখনও পিছিয়ে আছে ইউরোপের কর্তাব্যক্তিরা। তবে ইউরোপের হয়ে এই লড়াইটিও লড়তে হবে ইউক্রেনকেই। পাশাপাশি যুদ্ধ বন্ধের যে তোড়জোড় দেখা যাচ্ছে, আগামী কয়েক সপ্তাহে তা ভিন্নদিকে মোড় নিতে পারে বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

ইউসিসিএ’র পরিচালক আন্দ্রেইজ ডোব্রিয়ানস্কি বলেন, ‘ইউরোপের রাজনৈতিক ও সামরিক শক্তি হিসেবে ইউক্রেনকেই আত্মপ্রকাশ করতে হবে। রাশিয়ার সম্মুখ যুদ্ধের অভিজ্ঞতার বিচারে ইউরোপের বাকি দেশগুলোর তুলনায় ইউক্রেনই এগিয়ে আছে। খেয়াল করলে দেখবেন, ইউরোপের দেশগুলোর দুশ্চিন্তার মূল কারণ ইউক্রেনের মিত্ররা যদি পিছিয়ে আসে, তখন রাশিয়ার পদক্ষেপ কী হবে।’ অধ্যাপক ও সাবেক যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত ডনাল্ড জেনসেন বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও’র বক্তব্য খেয়াল করলে দেখবেন উনি নিজেও বলছেন এটা যুদ্ধবিরতির আলোচনা শুরুর প্রথম ধাপ। আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে এর গতিবিধি বদলে যেতে পারে।’

যদিও সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, চলমান এই আলোচনার সবশেষ অগ্রগতি নির্ভর করছে ট্রাম্প-পুতিন বৈঠকের ওপর। বৈঠকের বিষয়ে অনেক আগেই ইতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছে ক্রেমলিন। তবে যুদ্ধবিরতির আলোচনায় ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্টের কোনো অংশগ্রহণ থাকবে কী না বা সমঝোতার কোন পর্যায়ে এসে যোগ দেবেন ইউরোপের নেতারা- সে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। সূত্র : এখন টিভি।