‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ বলা ইউএসএআইডির ৪০ লাখ ডলার তহবিল নিয়েছিলেন ইলন মাস্ক
- প্রকাশের সময় : ১০:২৪:০৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
- / ৪৭ বার পঠিত
বিশ্বের শীর্ষ ধনকুবের ইলন মাস্ক যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক সহায়তা সংস্থা ইউএসএআইডিকে ‘অপরাধী’ বলে অভিহিত করেছেন এবং এটি বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন। কিন্তু তিনি নিজেও সংস্থাটির তহবিল নিয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের সরকারের তথ্য অনুসারে, চার বছরে সংস্থাটি মাস্কের ইন্টারনেট কোম্পানি স্টারলিংককে ১০ লাখ ডলার দিয়েছে। এর আগে, ইউক্রেনে স্টারলিংকের স্যাটেলাইট ইন্টারনেট সেবা দেওয়ার জন্যও ইলন মাস্কের কোম্পানিতে ৩০ লাখ ডলার দিয়েছিল ইউএসএআইডি।
যুক্তরাষ্ট্রের সাময়িকী ফোর্বসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের সরকারের ফেডারেল চুক্তির রেকর্ড অনুযায়ী, গত চার বছরে যুক্তরাষ্ট্রের সরকারের মানবিক ও উন্নয়ন সংস্থা ইউএসএআইডি স্পেসএক্সের স্টারলিংক টার্মিনালের জন্য প্রায় ১০ লাখ ডলার ব্যয় করেছে। মূলত জিম্বাবুয়ে ও দক্ষিণ আফ্রিকায় স্যাটেলাইট ইন্টারনেট ব্যবস্থা সরবরাহের জন্য এই অর্থ দেওয়া হয়েছিল। দক্ষিণ আফ্রিকাই মাস্কের জন্মস্থান।
স্টারলিংকের সঙ্গে ইউএসএআইডির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশীদারত্ব ছিল ২০২২ সালে। সে বছর সংস্থাটি ইউক্রেনে ৫ হাজার স্টারলিংক টার্মিনাল পাঠানোর জন্য প্রায় ৩০ লাখ ডলার দিয়েছিল। যুদ্ধ শুরুর পরপরই এসব টার্মিনাল বিনা মূল্যে সরবরাহ করা হয়। গত বছরের নভেম্বরে মাস্ক তাঁর এক্স প্ল্যাটফর্মে লিখেছিলেন, ‘ইউক্রেন রাশিয়ার দখলে চলে যায়নি, এর একটি বড় কারণ স্টারলিংকের সহায়তা।’
তবে সেই মাস্কই ২৪ ঘণ্টায় মাস্ক বলেছেন, তাঁর ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট এফিশিয়েন্সি বা সরকারি কর্মদক্ষতা বিভাগ (ডিওজিই) ইউএসএআইডি বন্ধ করার অনুমতি পেয়েছে। সপ্তাহান্তে খবর আসে যে, ডিওজিইর কর্মকর্তারা ইউএসএআইডি দপ্তরে ঢুকে বিভিন্ন নথি ও স্পর্শকাতর তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা করেছেন। এরই মধ্যে সংস্থাটির শত শত কর্মীকে বরখাস্ত বা সাময়িক ছুটিতে পাঠানো হয়েছে। সংস্থাটির ওয়েবসাইট বন্ধ করা হয়েছে।
এদিকে, ট্রাম্প আন্তর্জাতিক সহায়তায় বিলিয়ন ডলার অর্থায়ন স্থগিত করেছেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও নিশ্চিত করেছেন যে, তিনি ইউএসএআইডির নতুন অন্তর্বর্তী প্রধান এবং সংস্থাটির অনেক কার্যক্রম সরকারের অন্যান্য বিভাগে একীভূত করা হবে। তবে এই পরিবর্তনের ফলে চলমান ইউএসএআইডি চুক্তিগুলোর ভবিষ্যৎ কী হবে, তা এখনো স্পষ্ট নয়। স্পেসএক্স এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি। ইউক্রেনের ডিজিটাল ট্রান্সফরমেশন মন্ত্রণালয়ও এই বিষয়ে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। যদিও যুদ্ধক্ষেত্রে ইউক্রেনের যোগাযোগ ব্যবস্থাকে এগিয়ে নিতে স্টারলিংক বিনা মূল্যে সরবরাহ করার জন্য স্পেসএক্সের প্রশংসা করা হয়েছিল, তবে সংস্থাটির ভূমিকা বিতর্কিতও ছিল। প্রতিবেদনে জানা যায়, ২০২২ সালে ইউক্রেন যখন কৃষ্ণ সাগরে অবস্থিত রুশ নৌবহরে হামলার পরিকল্পনা করছিল, তখন মাস্ক স্টারলিংকের ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ করে দেন।
যুক্তরাষ্ট্রের আইনপ্রণেতারা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন যে, রাশিয়া অবৈধভাবে স্টারলিংক টার্মিনাল সংগ্রহ করেছে। তবে মাস্ক এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন এবং বলেছেন, কোনো টার্মিনাল মস্কোতে বিক্রি করা হয়নি। ইউএসএআইডি ২০২২ সালে স্পেসএক্সের সঙ্গে অংশীদারত্ব ঘোষণা করে। এর ছয় মাস পর, সংস্থাটি উচ্চ খরচ দেখিয়ে ইউক্রেনে স্টারলিংকের পরিষেবা বন্ধ করার হুমকি দেয়। তবে পরে তারা সে সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে।
এর আগে, ইলন মাস্ক ইলন মাস্ক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে শেয়ার করা পৃথক তিনটি টুইটে বলেছেন, ‘আপনারা জানেন কী, ইউএসএআইডি আপনাদের ট্যাক্সের টাকায় জৈব অস্ত্র গবেষণায় অর্থায়ন করেছে। এর মধ্যে কোভিড-১৯ এর মতো জীবাণুও অন্তর্ভুক্ত, যার কারণে কয়েক কোটি মানুষ মারা গেছেন।’ আরেক টুইটে তিনি বলেন, ‘ইউএসএআইডি তাদের প্রোপাগান্ডা প্রচারের জন্য গণমাধ্যমগুলোকে বিপুল পরিমাণ টাকা দিয়েছে।’ আলাদা এক টুইটে তিনি ঘোষণা করেন যে, যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা ইউএসএআইডির ‘মরে যাওয়া উচিত’। সূত্র : আজকের পত্রিকা।