নিউইয়র্ক ০৭:২৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৩ ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

এলসালভাদরের ‘অভিনব স্বৈরশাসক’ দ্বিতীয় দফায় বিপুল ভোটে বিজয়ী

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ১১:৫৫:৩৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
  • / ৭৪ বার পঠিত

মধ্য আমেরিকার দেশ এলসালভাদরে টানা দ্বিতীয়বারের মতো প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন নাইব বুকেলে। এ জয়কে দেশটির গ্যাং সংস্কৃতি নির্মূলে তাঁর অবদানের ফল হিসেবেই দেখছেন সমর্থকেরা। গ্য়াং সংস্কৃতির অবসানের কারণে উল্লেখযোগ্যভাবে বদলে গেছে দেশটির নিরাপত্তা পরিস্থিতি।

এলসালভাদরের রাজধানীর ন্যাশনাল প্যালেসের বেলকনিতে দাঁড়িয়ে সমর্থকদের উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে বুকেলে বলেন, নিকট প্রতিদ্বন্দ্বীর সঙ্গে সর্বোচ্চ ভোটের ব্যবধানে এ জয় হয়েছে। ৪২ বছর বয়সী এ প্রেসিডেন্ট বলেন, বিরোধী দলকে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। বুকেলের পুনর্নির্বাচিত হওয়া উদ্‌যাপন করতে রাজধানী সানসালভাদরের সেন্ট্রাল স্কয়ারে জড়ো হয় হাজারো মানুষ। আইনসভায় ৮৪টি আসনের মধ্যে ৬০টিই বুকেলের দল নিউ আইডিয়াস পাবে বলে আশা করা হচ্ছে।

এলসালভাদরের আধুনিক ইতিহাসে বুকেলেকে প্রায়ই সবচেয়ে ক্ষমতাধর নেতা হিসেবে আখ্যা দেওয়া হয়। নির্বাচিত হয়ে তিনি বলেন, ‘বিশ্বের সবচেয়ে অনিরাপদ দেশ থেকে সবচেয়ে নিরাপদ দেশে পরিণত হয়েছে এলসালভাদর। এখন অপেক্ষা করুন আর দেখুন, আগামী পাঁচ বছরে আমরা কী করি।’

প্রতিবেদন অনুসারে, সদ্য অনুষ্ঠিত নির্বাচনে নিউ আইডিয়াসের বিজয় ইঙ্গিত করছে, বুকেলে দেশটির ইতিহাসে নজিরবিহীন ক্ষমতার অধিকারী হতে যাচ্ছেন। দলটি এবার দেশের সংবিধান ঢেলে সাজাতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

৪২ বছর বয়সী নাইব বুকেলেকে বলা হয় ‘বিশ্বের সবচেয়ে আকাঙ্ক্ষিত স্বৈরশাসক’। অবশ্য এ আখ্যা দিয়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাঁর অনুসারীরা। সাবেক জনসংযোগ কর্মকর্তা বুকেলে এর আগে ২০১৫ সালের মে থেকে ২০১৮ সালের এপ্রিল পর্যন্ত সানসালভাদরের মেয়র ছিলেন।

২০১৯ সালে মূল ধারার রাজনৈতিক দল ফারাবুন্দো মারতি ন্যাশনাল লিবারেশন ফ্রন্ট ও দ্য ন্যাশনালিস্ট রিপাবলিকান অ্যালায়েন্সকে টপকে নিউ আইডিয়াস যখন ক্ষমতায় আসে তখনই আলোচনায় আসেন নাইব বুকেলে। ক্ষমতায় এসে দেশ থেকে গ্যাং সহিংসতার অবসান ও অর্থনৈতিক মন্দা দূর করার প্রতিশ্রুতি দেয় বুকেলের দল।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বেশ সক্রিয় বুকেলে। এক্স প্ল্যাটফর্মে তাঁর প্রায় ৫৯ লাখ ফলোয়ার। সেখানে প্রায়ই তাঁকে বিদেশি নেতা ও সমালোচকদের সঙ্গে বিতর্ক করতে দেখা যায়। ২০১৯ সালে ক্ষমতায় আসার পরই বুকেলে আইনসভায় তাঁর দলের বিশ্বস্ত সদস্যদের বিচার বিভাগে নিযুক্ত করেন এবং সরকারের ওপর নিজের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেন। ২০২২ সালের মার্চে তিনি এলসালভাদরকে ‘ব্যতিক্রম রাষ্ট্র’ ঘোষণা দেন।

নতুন আইনে দেশটির পুলিশ ও সামরিক বাহিনীকে বিভিন্ন গ্যাংয়ের বিরুদ্ধে লড়তে কঠোর ক্ষমতা প্রয়োগের অধিকার দেওয়া হয়। প্রেসিডেন্ট বুকেলের অনুরোধে আইনসভা ৩০ দিনের জরুরি অবস্থা জারি করে এবং নাগরিক অধিকার স্থগিত করে অভিযোগ ছাড়াই গ্রেপ্তারের অনুমতি দেয়। এই পদক্ষেপের অংশ হিসেবে দেশটিতে ৭৫ হাজারেরও বেশি মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়।

দেশব্যাপী ব্যাপক গ্রেপ্তার এবং সামরিক ও বেসামরিক বাহিনীকে বিশেষ ক্ষমতা দেওয়ার কারণে মধ্য আমেরিকার দেশটিতে গুম-হত্যা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যায়। ৬৩ লাখ জনসংখ্যার দেশটির নিরাপত্তার চিত্র আমূল বদলে যায়।

গ্যাং সহিংসতার বিরুদ্ধে উল্লেখযোগ্য সফলতা অর্জনের পর দ্বিতীয় দফায় বুকেলের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হতে যাচ্ছে এলসালভাদরের অর্থনীতি পুনরুদ্ধার করা। তাঁর প্রথম দফার আমলে এলসালভাদরের অর্থনীতির প্রবৃদ্ধিতে সবচেয়ে ধীর গতি ছিল। যেখানে দেশটির চার ভাগের এক ভাগ মানুষই দারিদ্র্যসীমায় বসবাস করে। সূত্র : আজকের পত্রিকা।

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

এলসালভাদরের ‘অভিনব স্বৈরশাসক’ দ্বিতীয় দফায় বিপুল ভোটে বিজয়ী

প্রকাশের সময় : ১১:৫৫:৩৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

মধ্য আমেরিকার দেশ এলসালভাদরে টানা দ্বিতীয়বারের মতো প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন নাইব বুকেলে। এ জয়কে দেশটির গ্যাং সংস্কৃতি নির্মূলে তাঁর অবদানের ফল হিসেবেই দেখছেন সমর্থকেরা। গ্য়াং সংস্কৃতির অবসানের কারণে উল্লেখযোগ্যভাবে বদলে গেছে দেশটির নিরাপত্তা পরিস্থিতি।

এলসালভাদরের রাজধানীর ন্যাশনাল প্যালেসের বেলকনিতে দাঁড়িয়ে সমর্থকদের উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে বুকেলে বলেন, নিকট প্রতিদ্বন্দ্বীর সঙ্গে সর্বোচ্চ ভোটের ব্যবধানে এ জয় হয়েছে। ৪২ বছর বয়সী এ প্রেসিডেন্ট বলেন, বিরোধী দলকে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। বুকেলের পুনর্নির্বাচিত হওয়া উদ্‌যাপন করতে রাজধানী সানসালভাদরের সেন্ট্রাল স্কয়ারে জড়ো হয় হাজারো মানুষ। আইনসভায় ৮৪টি আসনের মধ্যে ৬০টিই বুকেলের দল নিউ আইডিয়াস পাবে বলে আশা করা হচ্ছে।

এলসালভাদরের আধুনিক ইতিহাসে বুকেলেকে প্রায়ই সবচেয়ে ক্ষমতাধর নেতা হিসেবে আখ্যা দেওয়া হয়। নির্বাচিত হয়ে তিনি বলেন, ‘বিশ্বের সবচেয়ে অনিরাপদ দেশ থেকে সবচেয়ে নিরাপদ দেশে পরিণত হয়েছে এলসালভাদর। এখন অপেক্ষা করুন আর দেখুন, আগামী পাঁচ বছরে আমরা কী করি।’

প্রতিবেদন অনুসারে, সদ্য অনুষ্ঠিত নির্বাচনে নিউ আইডিয়াসের বিজয় ইঙ্গিত করছে, বুকেলে দেশটির ইতিহাসে নজিরবিহীন ক্ষমতার অধিকারী হতে যাচ্ছেন। দলটি এবার দেশের সংবিধান ঢেলে সাজাতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

৪২ বছর বয়সী নাইব বুকেলেকে বলা হয় ‘বিশ্বের সবচেয়ে আকাঙ্ক্ষিত স্বৈরশাসক’। অবশ্য এ আখ্যা দিয়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাঁর অনুসারীরা। সাবেক জনসংযোগ কর্মকর্তা বুকেলে এর আগে ২০১৫ সালের মে থেকে ২০১৮ সালের এপ্রিল পর্যন্ত সানসালভাদরের মেয়র ছিলেন।

২০১৯ সালে মূল ধারার রাজনৈতিক দল ফারাবুন্দো মারতি ন্যাশনাল লিবারেশন ফ্রন্ট ও দ্য ন্যাশনালিস্ট রিপাবলিকান অ্যালায়েন্সকে টপকে নিউ আইডিয়াস যখন ক্ষমতায় আসে তখনই আলোচনায় আসেন নাইব বুকেলে। ক্ষমতায় এসে দেশ থেকে গ্যাং সহিংসতার অবসান ও অর্থনৈতিক মন্দা দূর করার প্রতিশ্রুতি দেয় বুকেলের দল।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বেশ সক্রিয় বুকেলে। এক্স প্ল্যাটফর্মে তাঁর প্রায় ৫৯ লাখ ফলোয়ার। সেখানে প্রায়ই তাঁকে বিদেশি নেতা ও সমালোচকদের সঙ্গে বিতর্ক করতে দেখা যায়। ২০১৯ সালে ক্ষমতায় আসার পরই বুকেলে আইনসভায় তাঁর দলের বিশ্বস্ত সদস্যদের বিচার বিভাগে নিযুক্ত করেন এবং সরকারের ওপর নিজের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেন। ২০২২ সালের মার্চে তিনি এলসালভাদরকে ‘ব্যতিক্রম রাষ্ট্র’ ঘোষণা দেন।

নতুন আইনে দেশটির পুলিশ ও সামরিক বাহিনীকে বিভিন্ন গ্যাংয়ের বিরুদ্ধে লড়তে কঠোর ক্ষমতা প্রয়োগের অধিকার দেওয়া হয়। প্রেসিডেন্ট বুকেলের অনুরোধে আইনসভা ৩০ দিনের জরুরি অবস্থা জারি করে এবং নাগরিক অধিকার স্থগিত করে অভিযোগ ছাড়াই গ্রেপ্তারের অনুমতি দেয়। এই পদক্ষেপের অংশ হিসেবে দেশটিতে ৭৫ হাজারেরও বেশি মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়।

দেশব্যাপী ব্যাপক গ্রেপ্তার এবং সামরিক ও বেসামরিক বাহিনীকে বিশেষ ক্ষমতা দেওয়ার কারণে মধ্য আমেরিকার দেশটিতে গুম-হত্যা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যায়। ৬৩ লাখ জনসংখ্যার দেশটির নিরাপত্তার চিত্র আমূল বদলে যায়।

গ্যাং সহিংসতার বিরুদ্ধে উল্লেখযোগ্য সফলতা অর্জনের পর দ্বিতীয় দফায় বুকেলের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হতে যাচ্ছে এলসালভাদরের অর্থনীতি পুনরুদ্ধার করা। তাঁর প্রথম দফার আমলে এলসালভাদরের অর্থনীতির প্রবৃদ্ধিতে সবচেয়ে ধীর গতি ছিল। যেখানে দেশটির চার ভাগের এক ভাগ মানুষই দারিদ্র্যসীমায় বসবাস করে। সূত্র : আজকের পত্রিকা।