নিউইয়র্ক ১০:১৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

এক হাতে বোমা অন্য হাতে খাবার দিচ্ছেন বাইডেন

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০৬:১৮:৩০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১০ মার্চ ২০২৪
  • / ৪২ বার পঠিত

গাজার আকাশ থেকে আজকাল একই সঙ্গে আমেরিকার বোমা এবং আমেরিকার খাদ্য সহায়তার প্যাকেট পড়ে। একই সঙ্গে মৃত্যু এবং জীবন বাঁচাতে খাদ্য সরবরাহ করে ভারসাম্যহীন মধ্যপ্রাচ্য যুদ্ধে ভারসাম্য খুঁজে বেড়াচ্ছেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।

বিমান থেকে বাইডেনের খাদ্য সহায়তা অনুমোদনের সিদ্ধান্ত এবং গাজায় অতি প্রয়োজনীয় মানবিক সহায়তা প্রদানের জন্য একটি অস্থায়ী ভাসমান বন্দর নির্মাণ তাঁর নীতির ভারসাম্যহীনতাকেই তুলে ধরেছে। কারণ, তিনি হামাসের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের সামরিক অভিযানের জন্য নিঃশর্তে অস্ত্র সরবরাহ করে চলেছেন।

গাজা আগ্রাসনে বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র যুদ্ধের উভয় দিকেই নিজেকে খুঁজে পাচ্ছে। ইসরায়েলিদের অস্ত্র সরবরাহ করে এবং সেই অস্ত্রে আহতদের সেবা দেওয়ার চেষ্টা করে দেশটি। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু গাজার বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষার জন্য আরও কিছু করার জন্য বাইডেনের অনুরোধকে অস্বীকার করেছেন। এতে বাইডেন ক্রমশ হতাশ হয়ে পড়েছেন এবং গত সপ্তাহে তাঁর স্টেট অব দ্য ইউনিয়ন ভাষণে এবং পরে সেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তবে তিনি যুদ্ধের প্রভাব কমানোর জন্য অস্ত্র সরবরাহ কমানোর বিরোধিতা করছেন।

ক্যালিফোর্নিয়ার ডেমোক্র্যাট কংগ্রেসম্যান রো খান্না বাইডেনের বক্তৃতার পরদিন এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘আপনি একই সময়ে খাদ্য এবং খাদ্য ট্রাকগুলোতে বোমা ফেলার জন্য ইসরায়েলকে সহায়তা এবং অস্ত্র দেওয়ার নীতি রাখতে পারেন না। এর মধ্যে অন্তর্নিহিত দ্বন্দ্ব রয়েছে।’

আমেরিকার নেতৃত্বে নতুন করে চালু করা আকাশ ও সমুদ্রে মানবিক সহায়তার প্রচারণা শুরু হয় স্থলপথে গাজায় পর্যাপ্ত সরবরাহ দিতে ব্যর্থ হওয়ার পর। এখন পর্যন্ত আমেরিকার কর্মকর্তারা এই ধরনের পদ্ধতিকে বাস্তবসম্মত নয় বলে মত দিয়েছেন। তারা বলেছেন, এ ধরনের পদক্ষেপ নিলেও তা স্থলপথের মতো একই মাত্রায় সহায়তা সরবরাহ করতে সক্ষম হবে না এবং বিভিন্ন উপায়ে জটিলতা তৈরি করবে।

বিমান থেকে খাদ্য সহায়তা যে আসলেই বিপজ্জনক, তা সর্বশেষ শুক্রবার স্পষ্ট হয়ে গেছে। সাহায্য প্যাকেজ পড়ে অন্তত পাঁচজন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। স্থলভাগে স্থিতিশীল বিতরণ ব্যবস্থা ছাড়া এ ধরনের কার্যক্রম বিশৃঙ্খলা ও বিপজ্জনক পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে।

গত মাসে গাজায় ত্রাণ নেওয়ার সময় ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী গুলি চালালে ১১২ জন নিহত হন।
সমালোচকরা বলেছেন, এ ধরনের সরবরাহ ব্যবস্থা খুব সামান্যই প্রয়োজন পূরণ করে এবং তা যুদ্ধের ব্যাপারে বাইডেনের পদ্ধতির নৈতিক দ্বন্দ্বকেই তুলে ধরে।

ওয়াশিংটনের আরব সেন্টারের প্যালেস্টাইন-ইসরায়েল প্রোগ্রামের প্রধান ইউসুফ মুনায়ার বলেন, ‘এটার কোনো মানে হয় না। এটি অগ্নিসংযোগকারীকে জ্বালানি দেওয়ার সময় এক কাপ পানির সঙ্গে পাঁচ-অ্যালার্ম আগুন দেখানোর মতো। প্রশাসন একটি রাজনৈতিক সমস্যা মোকাবিলা করার চেষ্টা করছে। ভোটারদের ক্ষোভ প্রশমিত করার লক্ষ্যে এই কৃত্রিম ব্যবস্থার মাধ্যমে ভয়ংকর যুদ্ধকে সমর্থন করা হচ্ছে।

আমেরিকা এক হাতে অস্ত্র দিচ্ছে, অন্যদিকে সেই অস্ত্রে ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্য দেওয়ার চেষ্টা করছে বলে গণপরিসরে উত্থাপিত সমালোচনার জবাব দিতে রাজি হননি বাইডেন প্রশাসনের কর্মকর্তারা। সূত্র : সমকাল

হককথা/নাছরিন

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

এক হাতে বোমা অন্য হাতে খাবার দিচ্ছেন বাইডেন

প্রকাশের সময় : ০৬:১৮:৩০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১০ মার্চ ২০২৪

গাজার আকাশ থেকে আজকাল একই সঙ্গে আমেরিকার বোমা এবং আমেরিকার খাদ্য সহায়তার প্যাকেট পড়ে। একই সঙ্গে মৃত্যু এবং জীবন বাঁচাতে খাদ্য সরবরাহ করে ভারসাম্যহীন মধ্যপ্রাচ্য যুদ্ধে ভারসাম্য খুঁজে বেড়াচ্ছেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।

বিমান থেকে বাইডেনের খাদ্য সহায়তা অনুমোদনের সিদ্ধান্ত এবং গাজায় অতি প্রয়োজনীয় মানবিক সহায়তা প্রদানের জন্য একটি অস্থায়ী ভাসমান বন্দর নির্মাণ তাঁর নীতির ভারসাম্যহীনতাকেই তুলে ধরেছে। কারণ, তিনি হামাসের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের সামরিক অভিযানের জন্য নিঃশর্তে অস্ত্র সরবরাহ করে চলেছেন।

গাজা আগ্রাসনে বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র যুদ্ধের উভয় দিকেই নিজেকে খুঁজে পাচ্ছে। ইসরায়েলিদের অস্ত্র সরবরাহ করে এবং সেই অস্ত্রে আহতদের সেবা দেওয়ার চেষ্টা করে দেশটি। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু গাজার বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষার জন্য আরও কিছু করার জন্য বাইডেনের অনুরোধকে অস্বীকার করেছেন। এতে বাইডেন ক্রমশ হতাশ হয়ে পড়েছেন এবং গত সপ্তাহে তাঁর স্টেট অব দ্য ইউনিয়ন ভাষণে এবং পরে সেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তবে তিনি যুদ্ধের প্রভাব কমানোর জন্য অস্ত্র সরবরাহ কমানোর বিরোধিতা করছেন।

ক্যালিফোর্নিয়ার ডেমোক্র্যাট কংগ্রেসম্যান রো খান্না বাইডেনের বক্তৃতার পরদিন এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘আপনি একই সময়ে খাদ্য এবং খাদ্য ট্রাকগুলোতে বোমা ফেলার জন্য ইসরায়েলকে সহায়তা এবং অস্ত্র দেওয়ার নীতি রাখতে পারেন না। এর মধ্যে অন্তর্নিহিত দ্বন্দ্ব রয়েছে।’

আমেরিকার নেতৃত্বে নতুন করে চালু করা আকাশ ও সমুদ্রে মানবিক সহায়তার প্রচারণা শুরু হয় স্থলপথে গাজায় পর্যাপ্ত সরবরাহ দিতে ব্যর্থ হওয়ার পর। এখন পর্যন্ত আমেরিকার কর্মকর্তারা এই ধরনের পদ্ধতিকে বাস্তবসম্মত নয় বলে মত দিয়েছেন। তারা বলেছেন, এ ধরনের পদক্ষেপ নিলেও তা স্থলপথের মতো একই মাত্রায় সহায়তা সরবরাহ করতে সক্ষম হবে না এবং বিভিন্ন উপায়ে জটিলতা তৈরি করবে।

বিমান থেকে খাদ্য সহায়তা যে আসলেই বিপজ্জনক, তা সর্বশেষ শুক্রবার স্পষ্ট হয়ে গেছে। সাহায্য প্যাকেজ পড়ে অন্তত পাঁচজন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। স্থলভাগে স্থিতিশীল বিতরণ ব্যবস্থা ছাড়া এ ধরনের কার্যক্রম বিশৃঙ্খলা ও বিপজ্জনক পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে।

গত মাসে গাজায় ত্রাণ নেওয়ার সময় ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী গুলি চালালে ১১২ জন নিহত হন।
সমালোচকরা বলেছেন, এ ধরনের সরবরাহ ব্যবস্থা খুব সামান্যই প্রয়োজন পূরণ করে এবং তা যুদ্ধের ব্যাপারে বাইডেনের পদ্ধতির নৈতিক দ্বন্দ্বকেই তুলে ধরে।

ওয়াশিংটনের আরব সেন্টারের প্যালেস্টাইন-ইসরায়েল প্রোগ্রামের প্রধান ইউসুফ মুনায়ার বলেন, ‘এটার কোনো মানে হয় না। এটি অগ্নিসংযোগকারীকে জ্বালানি দেওয়ার সময় এক কাপ পানির সঙ্গে পাঁচ-অ্যালার্ম আগুন দেখানোর মতো। প্রশাসন একটি রাজনৈতিক সমস্যা মোকাবিলা করার চেষ্টা করছে। ভোটারদের ক্ষোভ প্রশমিত করার লক্ষ্যে এই কৃত্রিম ব্যবস্থার মাধ্যমে ভয়ংকর যুদ্ধকে সমর্থন করা হচ্ছে।

আমেরিকা এক হাতে অস্ত্র দিচ্ছে, অন্যদিকে সেই অস্ত্রে ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্য দেওয়ার চেষ্টা করছে বলে গণপরিসরে উত্থাপিত সমালোচনার জবাব দিতে রাজি হননি বাইডেন প্রশাসনের কর্মকর্তারা। সূত্র : সমকাল

হককথা/নাছরিন