‘স্নাতক নন, এমন ভোটারদের মাঝে জনপ্রিয়তা হারিয়েছেন বাইডেন’
- প্রকাশের সময় : ১২:৩৯:৩৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২ জুন ২০২৪
- / ১১৫ বার পঠিত
কলেজ ডিগ্রি নেই বা স্নাতক পাস করেনি এমন যুক্তরাষ্ট্রের ভোটারদের মধ্যে জনপ্রিয়তা হারিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। ভোটারদের এই বৃহৎ গোষ্ঠীর মধ্যে কৃষ্ণাঙ্গ, হিস্পানিক বা স্প্যানিশভাষী নারী, তরুণ ভোটার এবং শহরতলির নারীরা রয়েছেন। ফলে ২০২০ সালের তুলনায় রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে তার নির্বাচনি লড়াই আরও কঠিন হয়ে পড়েছে। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স/ইপসোস-এ সমীক্ষায় এসব তথ্য ওঠে এসেছে। শনিবার (১ জুন) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থাটি।
চার বছর মেয়াদী ডিগ্রি অর্জন করেনি এমন ভোটারদের বাইডেন প্রতি সমর্থন ২০২০ সালের প্রচারাভিযানের পয়েন্টের তুলনায় ১০ শতাংশ কম। ২০২০ এবং ২০২৪ সালে রয়টার্স/ইপসোস-এর সমীক্ষাগুলোতে প্রায় ২৪ হাজার নিবন্ধিত ভোটারের প্রতিক্রিয়া বিশ্লেষণে এই তথ্য জানা গেছে। ২০২০ সালে পাঁচজন আমেরিকান ভোটারের মধ্যে তিনজনেরই কলেজ ডিগ্রি ছিল না। জাতীয় মতামত জরিপ দেখা গেছে, মার্কিন এই প্রেসিডেন্ট প্রতি তাদের সমর্থন কমতে থাকায় বাইডেন এবং ট্রাম্পের মধ্যে একটি কঠিন প্রতিযোগিতা হতে যাচ্ছে।
বৃহস্পতিবার এক পর্ন তারকাকে ঘুষ দেওয়া বিষয়ক ফৌজদারি মামলায় নিউইয়র্কের একটি জুরি ট্রাম্পকে দোষী সাব্যস্ত করার আগে এই সমীক্ষা করা হয়েছিল। তবে শুক্রবার রয়টার্স/ইপসোস এর করা আরেকটি পৃথক জরিপে দেখা গেছে, সেই রায়ের পর রিপাবলিকান নিবন্ধিত প্রতি দশজন ভোটারের মধ্যে একজনের ট্রাম্পকে ভোট দেওয়ার সম্ভাবনা কমে গেছে। আগ্রহ হারিয়ে ফেলা ভোটারে এই সংখ্যাটি নির্বাচনি প্রতিযোগিতায় প্রভাব ফেলতে পারে। সেই জরিপে বাইডেনকে ২ শতাংশ পয়েন্টে এগিয়ে থাকেতে দেখা গেছে। তবে জরিপে তার এই পয়েন্ট ২০২২ সালের একই সময়ের করা জরিপের পয়েন্টের চেয়ে অনেক কম। তখন পয়েন্টে ৬ শতাংশে এগিয়ে ছিলেন বাইডেন।
বিশ্লেষণে দেখা গেছে, বাইডেনের অবশিষ্ট ভোটারদের হয় কলেজ ডিগ্রি আছে অথবা তাদের পরিবারের বার্ষিক আয় বছরে এক লাখ ডলারের বেশি। ২০২৪ সালের মার্চ থেকে মে পর্যন্ত রয়টার্স/ইপসোস পোলে ৮ হাজার এবং ২০২০ সালের একই সময়ের মধ্যে ১৬ হাজারেরও বেশি নিবন্ধিত ভোটারের প্রতিক্রিয়া বিশ্লেষণ করেছে রয়টার্স। বিশ্লেষণে দেখা গেছে, বাইডেনের প্রতি অসন্তুষ্ট হলেও সেসব ভোটাররা ব্যাপকভাবে ট্রাম্পের দিকে ঝুঁকছেন না। এর পরিবর্তে তাদের অনেকেই পছন্দের প্রার্থী বাছাই করা নিয়ে হতাশায় ভুগছেন। এমনকি ৫ নভেম্বরে অনুষ্ঠেয় নির্বাচনে তারা কী করবেন তা এক প্রকার অনিশ্চিত বলেই মনে হচ্ছে।
নিউ ইয়র্কের এলবার বাসিন্দা ৬৭ বছর বয়সী মেরি জো ম্যাককনেল। ২০১৬ সালে সালে ট্রাম্প এবং ২০২০ সালে বাইডেনকে সমর্থন করেছিলেন তিনি। তবে এখন উভয়পক্ষকে নিয়েই হতাশ। ম্যাককনেল বলেছেন, ‘আমরা যে চ্যালেঞ্জগুলোর মুখোমুখি হচ্ছি তা মোকাবেলা করতে সক্ষম বলে আমার মনে হবে এমন প্রার্থী তারা দিচ্ছে না।’
ম্যাককনেল এবং তার স্বামী সামাজিক নিরাপত্তা সুবিধার উপর নির্ভরশীল। একটি দুই বছরে মেয়াদী কলেজ ডিগ্রি অর্জন করেছেন ম্যাককনেল। বর্তমানে তিনি একটি ক্যানারি এবং একটি লবণের খনিতে কাজ করেছেন। জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যাওয়ায় অতিরিক্ত অর্থ উপার্জনের জন্য অবসরে দুটি পার্ট-টাইম চাকরি নিয়েছিলেন তিনি। ম্যাককনেল বলেছিলেন, নভেম্বরে ভোট দেওয়ার পরিকল্পনা করছেন তিনি। তবে কাকে ভোট দিবেন এখনও তা মনস্থির করেননি।
রয়টার্সের এই বিশ্লেষণের প্রতিক্রিয়ায় বাইডেনের প্রচারণা বিভাগ বলেছে, জাতীয় সমীক্ষাগুলো নির্বাচনি দৌঁড়ের একটি অসম্পূর্ণ চিত্র প্রকাশ করে। কেননা, এই প্রতিযোগিতায় অঙ্গরাজ্যগুলোর বাইরের ভোটাররা নির্বাচনি প্রচারের বার্তাগুলো জানতে পারছেন না। বাইডেনের প্রচারণার এক পোলস্টার ম্যাট ব্যারেটো বলেছেন, ‘আমরা প্রতিযোগিতামূলক অঙ্গরাজ্যগুলোর দিকে গভীর মনোযোগ দিয়েছি এবং সেসব স্থানে প্রচার, ভোটারদের সঙ্গে যোগাযোগ এবং প্রচারের ইভেন্টের আয়োজন করছি।’এসময় তিনি আরও বলেন, ‘প্রায়ই জাতীয় সমীক্ষাগুলোতে যেকোনও প্রচারণার অগ্রগতি অস্পষ্ট থাকে।’