নিউইয়র্ক ১১:২৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

বিপুল অঙ্কের অর্থ মেরে দিয়েছেন এক কর্মী, বন্ধ হলো যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদপত্র

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০৫:৫১:৪৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ জানুয়ারী ২০২৪
  • / ১২৭ বার পঠিত

এক কর্মীর অনিয়মের কারণে চাকরি হারালেন সব সংবাদকর্মী। ছবি : সংগৃহীত

হককথা ডেস্ক : সাবেক কর্মীর অর্থ আত্মসাতের কারণে ৪০ বছর পর বন্ধ হয়ে গেছে যুক্তরাষ্ট্রের অরিগন অঙ্গরাজ্যের একটি সাপ্তাহিক পত্রিকা। আর্থিক সংকটের কারণে পত্রিকার সব কর্মী ছাঁটাই করতে বাধ্য হয়েছে বলে স্বীকার করেছেন এর সম্পাদক।

বড়দিনের এক সপ্তাহ আগে অরিগনের ইউজিন উইকলি নামের একটি সাপ্তাহিক পত্রিকা এর খরচের খাতায় বেশ বড় আকারের গরমিল খুঁজে পায় বলে জানান পত্রিকাটির সম্পাদক কামিলা মরটেনসেন। তাঁরা জানতে পারেন, পত্রিকাটির আর্থিক ব্যবস্থাপনার সঙ্গে যুক্ত এক সাবেক কর্মী পত্রিকার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে অন্তত ২০২২ সাল থেকে ৯০ হাজার ডলার আত্মসাৎ করেছেন।

এ ছাড়া কয়েক মাস থেকে ছাপাখানার বিলসহ অন্তত ১ লাখ ডলারের বিল বকেয়া ছিল বলে জানান কামিলা। পত্রিকাটির কর্মীদের বেতন থেকে একাংশ তাঁদের অবসর অ্যাকাউন্টে যাওয়ার কথা। কিন্তু কামিলাসহ বেশ কয়েকজনের অ্যাকাউন্টে তা কখনো জমাই হয়নি।

যখন প্রতিষ্ঠানটি বুঝতে পারে পত্রিকার কর্মীদের আগামী মাসের ব্য়য়বহন করা সম্ভব হবে না, তখন তাঁরা ১০ জন কর্মীই ছাঁটাই করে এবং ছাপা সংস্করণ বন্ধ করে দেন। ১৯৮২ সালে প্রতিষ্ঠিত সাপ্তাহিক পত্রিকাটি ইউজিন শহরে বিনা মূল্যে বিলি করার জন্য প্রতি সপ্তাহে ৩০ হাজার কপি করে ছাপা হতো। ইউজিন শহরটি অরিগন অঙ্গরাজ্যের দ্বিতীয় সর্ববৃহৎ শহর। এখানেই অরিগন বিশ্ববিদ্যালয় অবস্থিত।

কামিলা বলেন, ‘বড়দিনের তিন দিন আগে একটি পরিবারের উপার্জনের পথ বন্ধ করে দেওয়া পুরোপুরি খারাপ একটি সিদ্ধান্ত। এমন কিছু হতে পারে তা আমার ধারণাতেই ছিল না।’ সন্দেহভাজন কর্মী চার বছর ধরে পত্রিকাটির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। এ ঘটনার পরপরই তাঁকে বরখাস্ত করা হয় বলে জানান কামিলা।

তিনি আরও বলেন, ‘ইউজিনের পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ এ নিয়ে তদন্ত করছে। প্রকৃতপক্ষে কী ঘটেছিল তা জানতে পত্রিকার মালিক ফরেনসিক হিসাবরক্ষক নিযুক্ত করেছেন।’

পত্রিকাটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন অরিগন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতার অধ্যাপক ব্রেন্ট ওয়ালথ। তিনি বলেন, ইউজিনে সংবাদ সরবরাহে ক্রমবর্ধমান শূন্যতা পূরণে পত্রিকাটির ব্যাপক ভূমিকা ছিল। তিনি এ পত্রিকাটিকে ‘স্বাধীন পর্যবেক্ষক’ এবং ইউজিনবাসীদের জন্য ‘সহানুভূতিশীল কণ্ঠস্বর’ বলে উল্লেখ করেছেন।

পত্রিকাটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতায় পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের অভিজ্ঞতা অর্জন ও কর্মজীবন শুরুর ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছে বলে উল্লেখ করেন ব্রেন্ট।

যুক্তরাষ্ট্রের নর্থ ওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটির গবেষকদের তথ্য মতে, ২০২৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি সপ্তাহে গড়ে ২ দশমিক ৫টি পত্রিকা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। ২০০টির মতো কাউন্টিতে কোনো ধরনের স্থানীয় পত্রিকা নেই। যুক্তরাষ্ট্রের অর্ধেকেরও বেশি কাউন্টিতে কোনো ধরনের স্থানীয় সংবাদ সূত্র নেই আর কোনোটিতে কোনোরকম একটি সাপ্তাহিক পত্রিকা টিকে আছে।

হককথা/নাছরিন

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

বিপুল অঙ্কের অর্থ মেরে দিয়েছেন এক কর্মী, বন্ধ হলো যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদপত্র

প্রকাশের সময় : ০৫:৫১:৪৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ জানুয়ারী ২০২৪

হককথা ডেস্ক : সাবেক কর্মীর অর্থ আত্মসাতের কারণে ৪০ বছর পর বন্ধ হয়ে গেছে যুক্তরাষ্ট্রের অরিগন অঙ্গরাজ্যের একটি সাপ্তাহিক পত্রিকা। আর্থিক সংকটের কারণে পত্রিকার সব কর্মী ছাঁটাই করতে বাধ্য হয়েছে বলে স্বীকার করেছেন এর সম্পাদক।

বড়দিনের এক সপ্তাহ আগে অরিগনের ইউজিন উইকলি নামের একটি সাপ্তাহিক পত্রিকা এর খরচের খাতায় বেশ বড় আকারের গরমিল খুঁজে পায় বলে জানান পত্রিকাটির সম্পাদক কামিলা মরটেনসেন। তাঁরা জানতে পারেন, পত্রিকাটির আর্থিক ব্যবস্থাপনার সঙ্গে যুক্ত এক সাবেক কর্মী পত্রিকার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে অন্তত ২০২২ সাল থেকে ৯০ হাজার ডলার আত্মসাৎ করেছেন।

এ ছাড়া কয়েক মাস থেকে ছাপাখানার বিলসহ অন্তত ১ লাখ ডলারের বিল বকেয়া ছিল বলে জানান কামিলা। পত্রিকাটির কর্মীদের বেতন থেকে একাংশ তাঁদের অবসর অ্যাকাউন্টে যাওয়ার কথা। কিন্তু কামিলাসহ বেশ কয়েকজনের অ্যাকাউন্টে তা কখনো জমাই হয়নি।

যখন প্রতিষ্ঠানটি বুঝতে পারে পত্রিকার কর্মীদের আগামী মাসের ব্য়য়বহন করা সম্ভব হবে না, তখন তাঁরা ১০ জন কর্মীই ছাঁটাই করে এবং ছাপা সংস্করণ বন্ধ করে দেন। ১৯৮২ সালে প্রতিষ্ঠিত সাপ্তাহিক পত্রিকাটি ইউজিন শহরে বিনা মূল্যে বিলি করার জন্য প্রতি সপ্তাহে ৩০ হাজার কপি করে ছাপা হতো। ইউজিন শহরটি অরিগন অঙ্গরাজ্যের দ্বিতীয় সর্ববৃহৎ শহর। এখানেই অরিগন বিশ্ববিদ্যালয় অবস্থিত।

কামিলা বলেন, ‘বড়দিনের তিন দিন আগে একটি পরিবারের উপার্জনের পথ বন্ধ করে দেওয়া পুরোপুরি খারাপ একটি সিদ্ধান্ত। এমন কিছু হতে পারে তা আমার ধারণাতেই ছিল না।’ সন্দেহভাজন কর্মী চার বছর ধরে পত্রিকাটির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। এ ঘটনার পরপরই তাঁকে বরখাস্ত করা হয় বলে জানান কামিলা।

তিনি আরও বলেন, ‘ইউজিনের পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ এ নিয়ে তদন্ত করছে। প্রকৃতপক্ষে কী ঘটেছিল তা জানতে পত্রিকার মালিক ফরেনসিক হিসাবরক্ষক নিযুক্ত করেছেন।’

পত্রিকাটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন অরিগন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতার অধ্যাপক ব্রেন্ট ওয়ালথ। তিনি বলেন, ইউজিনে সংবাদ সরবরাহে ক্রমবর্ধমান শূন্যতা পূরণে পত্রিকাটির ব্যাপক ভূমিকা ছিল। তিনি এ পত্রিকাটিকে ‘স্বাধীন পর্যবেক্ষক’ এবং ইউজিনবাসীদের জন্য ‘সহানুভূতিশীল কণ্ঠস্বর’ বলে উল্লেখ করেছেন।

পত্রিকাটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতায় পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের অভিজ্ঞতা অর্জন ও কর্মজীবন শুরুর ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছে বলে উল্লেখ করেন ব্রেন্ট।

যুক্তরাষ্ট্রের নর্থ ওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটির গবেষকদের তথ্য মতে, ২০২৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি সপ্তাহে গড়ে ২ দশমিক ৫টি পত্রিকা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। ২০০টির মতো কাউন্টিতে কোনো ধরনের স্থানীয় পত্রিকা নেই। যুক্তরাষ্ট্রের অর্ধেকেরও বেশি কাউন্টিতে কোনো ধরনের স্থানীয় সংবাদ সূত্র নেই আর কোনোটিতে কোনোরকম একটি সাপ্তাহিক পত্রিকা টিকে আছে।

হককথা/নাছরিন