বিশ্বের রাজধানীখ্যাত নিউইয়র্ক সিটি অ্যান্ড স্টেট পরিচালিত ‘এশিয়ান প্রভাবশালী-১০০’ তালিকায় স্থান পেয়েছেন তিন বাংলাদেশী। তারা হলেন বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত প্রথম নিউইয়র্ক সিটি কাউন্সিল সদস্য শাহানা হানিফ, অ্যালায়েন্স অব সাউথ এশিয়ান-আমেরিকা লেবার এ্যাসাল’র ন্যাশনাল প্রেসিডেন্ট মাফ মিসবাহউদ্দিন এবং দে সি ব্লু এনওয়াই’র প্রেসিডেন্ট তানবির চৌধুরী। নিউইইয়র্ক স্টেটে বিভিন্ন ক্ষেত্রে কর্মরত প্রভাবশালী ১০০ এশিয়ানকে নিয়ে এই তালিকা করা হয়ে থাকে।

উল্লেখ্য, ‘সিটি অ্যান্ড স্টেট নিউইয়র্ক’ নামক একটি সংস্থা সম্প্রতি ‘দ্য ২০২৪ পাওয়ার অব ডাইভার্সিটি : এশিয়ান ১০০’ তালিকাটি প্রকাশ করেছে। রাজনীতি, সমাজ, সম্প্রদায় তথা বহুজাতিক সমাজের সামগ্রিক কল্যাণে নিবেদিতদের ওপর গভীর পর্যবেক্ষণ এবং গবেষণার ভিত্তিতে শত প্রভাবশালীর এ তালিকায় এশিয়ান-আমেরিকান লিডার হিসেবে বিশেষ স্থানে রাখা হয়েছে কংগ্রেসওম্যান গ্রেস মেং এবং নিউইয়র্ক স্টেট অ্যাসেম্বলিওম্যান জেনিফার রাজকুমারকে।

আরও উল্লেখ্য, নিউইয়র্ক সিটিতে ৮ শতাধিক ভাষা-ভাষীর মানুষের মধ্যে নবম বৃহত্তম হচ্ছে বাংলা ভাষা তথা বাঙালীরা। ধারণা করা হচ্ছে সংখ্যাগতভাবে ৩ লাখের অধিক বাংলা ভাষীর বাস নিউইয়র্ক সিটিতে।

সিটি কাউন্সিলের প্রগ্রেসিভ ককাসের কো চেয়ার এবং কাউন্সিলের ইতিহাসে প্রথম মুসলমান নারী শাহানা হানিফ আছেন তালিকার ১৭ নম্বরে। তিনি নিউইয়র্ক সিটির বাংলাদেশী অধ্যুষিত ব্রুকলীনে বসবাসকারী চট্টগ্রাম সমিতি ইউএসএ’র সাবেক সভাপতি এবং যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ নেতা মোহাম্মদ হানিফের কন্যা। শাহানার জন্ম ও বেড়ে ওঠা নিউইয়র্কে। তবুও প্রাঞ্জল ভাষায় তিনি বাংলা উচ্চারণ ও কথা বলে গোটা কমিউনিটিতে বিশেষ অবস্থানে অধিষ্ঠিত হয়েছেন। অভিবাসী সমাজের অধিকার ও মর্যাদার প্রশ্নে আপসহীন শাহানা ডেমোক্র্যাটিক পার্টির তৃণমূলের সংগঠকদেরও অন্যতম হিসেবে আবির্ভূত। আন্দোলনে-সংগ্রামে গ্রেফতারও হয়েছেন।

তালিকায় বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত অপরজন মাফ মিসবাহউদ্দিনের স্থান ৩৪ নম্বরে। তিনি অ্যাসালের সভাপতি হিসাবে বিভিন্ন রাজনৈতিক কার্যক্রমের নেতৃত্ব দেন এবং বিভিন্ন নির্বাচনে প্রার্থীদের এনডোর্স করেন। নিউইয়র্ক সিটিতে সবচেয়ে বড় শ্রমিক ইউনিয়নের (ডিস্ট্রিক্ট কাউন্সিল ৩৭) ট্রেজারার এবং ২০০০ সাল থেকে এই সিটির অ্যাকাউন্ট্যান্ট, স্ট্যাটিসটিক্স অ্যান্ড এ্যাকচুয়ারিজ ইউনিয়নের (লোকাল ১৪০৭) প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত। নোয়াখালীর সন্তান মাফ মিসবাহ উদ্দিনের নেতৃত্বে আমেরিকায় গড়ে ওঠা ‘এলায়েন্স অব সাউথ এশিয়ান লেবার-অ্যাসাল’ সাম্প্রতিক বছরগুলোতে যুক্তরাষ্ট্র কংগ্রেস, স্টেট সিনেট, স্টেট অ্যাসেম্বলী, সিটি কাউন্সিলে বাংলাদেশী তথা দক্ষিণ এশিয়ান প্রার্থীদের বিজয়ে অপরিসীম ভূমিকার পাশাপাশি প্রবাসী বাংলাদেশীদের মূলধারায় সম্পৃক্ত করতে উজ্জল দৃষ্টান্ত রেখে চলেছেন।

উল্লেখিত তালিকায় আছেন সবচেয়ে কম বয়সী বাংলাদেশী-আমেরিকান তানভির চৌধুরী। তানবির জেনারেশন জি’র পলিটিক্যাল অ্যাক্টিভিস্ট ১০০ জনের তালিকায় ৯৭ নম্বরে রয়েছেন। গত জানুয়ারীতে অনুষ্ঠিত বিশেষ নির্বাচনে টম সোয়াজির ক্যাম্পেইনে কাজ করে পরিচিতি পান। সিটির ব্রঙ্কসের বাসিন্দা তানভির লেখাপড়ার পাশাপাশি ডেমোক্র্যাটিক পার্টির সাথে জড়িত হয়ে ইতিমধ্যেই মূলধারা ও প্রশাসনে অনেকের দৃষ্টি কাড়তে সক্ষম হয়েছেন। তার নেতৃত্বে কাজ করছে ‘দ্য সী ব্লু নিউইয়র্ক’ নামক একটি সংগঠন। এটি মূলত অভিবাসী সমাজ ও নতুন প্রজন্মের ভোটারকে আমেরিকান রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ততায় কাজ করছে।