২০২৩: কেমন ছিল পাকিস্তানে মানবাধিকার
- প্রকাশের সময় : ০৪:০৩:৩১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪
- / ৪৮ বার পঠিত
পাকিস্তানে মানবাধিকার পরিস্থিতির সমালোচনা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। ২০২৩ সালের ঘটনাবলীর প্রেক্ষাপটে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বার্ষিক প্রতিবেদনে বলেছে, ওই বছর পাকিস্তান জুড়ে অপহরণ ও জোরপূর্বক গুমের ঘটনা ঘটেছে। গোয়েন্দা সংস্থা, পুলিশ এবং নিরাপত্তা রক্ষাকারীদের অনেক সদস্য বন্দিদের এমন অবস্থায় রেখেছেন যে, তাদের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করা যায়নি। তাদের অবস্থান কোথায় তাও জানাতে অস্বীকৃতি জানায় তারা। ২০২২ সালের মে মাসে অঘোষিত জোরপূর্বক গুমকে অনুমোদন দেয়ার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারকে ইসলামাবাদ হাইকোর্ট নির্দেশ দেয় সাবেক সেনাপ্রধান ও প্রেসিডেন্ট জেনারেল পারভেজ মোশাররফ, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান, শেহবাজ শরীফ সহ সব পর্যায়ক্রমিক প্রধান নির্বাহীদেরকে নোটিশ পাঠাতে। এই রায়ের পর জোরপূর্বক গুমের ঘটনার সঙ্গে জড়িত বিষয়ে একটি নীতি গ্রহণ করতে আইন ও বিচারমন্ত্রীর নেতৃত্বে সাত সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে কেন্দ্রীয় সরকার। বেলুচিস্তান প্রাদেশিক সরকারের হাতে নিখোঁজ ব্যক্তিদের বিষয়ে তদন্তে ২০২২ সালের আগস্টে একই রকম একটি কমিটি গঠন করা হয়। আগস্টে সরকারের কমিশন অব ইনকুয়ারি অন এনফোর্সড ডিজঅ্যাপেয়ারেন্সেস রিপোর্ট দেয়। তাতে বলা হয়, ২০১১ সাল থেকে কমিশন ৯৯৬৭ জন মানুষ নিখোঁজের তথ্য পেয়েছে। তার মধ্যে ৭৭১৪ জনের বিষয়ে সমাধান হয়েছে।
২২৫৩ জনের মামলা মুলতবি অবস্থায় আছে। লাহোরে চতুর্থ কোর কমান্ডারের বাড়িতে হামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান, পিটিআইয়ের চারজন নেতা, ইমরান খানের বোনসহ ২২ জনের বিরুদ্ধে ২৪শে জুলাই আইনগত প্রক্রিয়া গ্রহণের উদ্যোগ নেয় এটিসি। ৯ই মে দাঙ্গার সময়ে পুলিশের ওপর হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগে ১লা আগস্ট পিটিআই নেতা ফারুক হাবিবের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। সাংবাদিকরা অভিযোগ করেন, টেলিভিশন স্টেশন ও মিডিয়া আউটলেটগুলোতে সম্পাদকীয় নির্দেশনা ইস্যু অব্যাহত রাখে এ বিষয়ক নীতিনির্ধারণী সংস্থা পেমরা। এতে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে সমালোচনা থেকে বিরত থাকতে বলা হয়। ৫ই মার্চ কাতারভিত্তিক আল জাজিরা রিপোর্ট করে যে, লাহোরে বক্তব্য দেয়ার পর সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বক্তব্য প্রচারের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে পেমরা। ওই বক্তব্যে পাকিস্তানের সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল কমর জাভেদ বাজওয়ার কড়া সমালোচনা করেন ইমরান খান। তাকে ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য বাজওয়াকে দায়ী করেন তিনি। নিষেধাজ্ঞার প্রায় দুই ঘণ্টা পর পেমরা ইমরানের বক্তব্য প্রচারের কারণে এআরওয়াই-এর লাইসেন্স সাময়িক স্থগিত করে। ১২ই আগস্ট ইমরান খানের পাকিস্তান তেহরিকে ইনসাফ (পিটিআই) পন্থি ব্যক্তি, সাংবাদিকদের একটি তালিকা করে পেমরা।
এসব ব্যক্তিকে টেলিভিশনে উপস্থিতি নিষিদ্ধ করা হয়। পাকিস্তানে সংবাদ মাধ্যমগুলো সাধারণত নিজেরাই সংবাদ সেন্সর করে। বিশেষ করে সেনাবাহিনী, ধর্মীয় উগ্রপন্থা এবং ব্লাসফেমি আইন লঙ্ঘনের ক্ষেত্রে রিপোর্ট করতে গিয়ে তা বেশি করা হয়। সাংবাদিকরা বলেন, তারা আগে থেকে দেয়া এক ধরনের বর্ণনা অনুসরণ করতে চাপে থাকতে হয়। সঙ্গে আছে মিডিয়ার প্রতি পেমরার সম্পাদকীয় নির্দেশনা। সংঘাতপ্রবণ এলাকায় সফর করতে নিয়মিতভাবে সাংবাদিকদের অনুমতি দেয়া হয় না। তাদেরকে সেনাবাহিনীর দৃষ্টিভঙ্গি থেকে রিপোর্ট করতে হয়। অর্থনৈতিক প্রতিবাদের রিপোর্ট না করতে সাংবাদিকদের উৎসাহিত করা হয়। স্থানীয় ও বিদেশি সাংবাদিকদেরকে সরকারি কর্মকর্তারা হয়রানি এবং ভীতি প্রদর্শন করে। সূত্র : মানবজমিন।