নিউইয়র্ক ০৭:৪৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৩ ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

যুদ্ধবিরতি সত্ত্বেও যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলে অস্ত্র সরবারহ কেন অব্যাহত রেখেছে?

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ১১:১৩:০০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ এপ্রিল ২০২৪
  • / ২৭ বার পঠিত

জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে অবিলম্বে ফিলিস্তিনের গাজায় যুদ্ধবিরতি, জিম্মিদের মুক্তি এবং খাদ্য সহায়তা বিতরণের দাবি প্রস্তাবগুলো সোমবার পাস হয়েছে, যদিও এসব প্রস্তাবে বার বার ভেটো দিয়ে আসছিল যুক্তরাষ্ট্র। এ বিষয়ে দীর্ঘদিন নীরব থেকে, শেষ পর্যন্ত বাইডেন প্রশাসন জাতিসংঘের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব মেনে নিয়েছিল, কিন্তু সেটিও মাত্র স্থায়ী হয়েছিল চার দিন।

এরমধ্যে শুক্রবার ওয়াশিংটন পোস্ট এক রিপোর্ট প্রকাশ করে যাতে বলা হয়েছে, সর্বশেষ চালানে ইসরায়েলকে বিলিয়ন ডলার মূল্যের বোমা এবং বিমান দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্র-ইসরায়েল এই ‘বাণিজ্যনীতির’ সাথে পরিচিত একটি সূত্র জানায়, বেশ কিছুদিন আগেই বাইডেন প্রশাসন ইসরায়েলের জন্য ১৮০০ এমকে-৮৪ ৯০৭ কেজি বোমা তৈরির অনুমোদন দিয়েছিল যা একটি অ্যাপার্টমেন্ট ব্লককে ধ্বংস করে দিতে পারে এবং ১১-মিটার গভীরে গিয়ে আঘাত হানতেও সক্ষম।

ওয়াশিংটন পোস্ট আরো জানায়, এই বিধ্বংসী অস্ত্রটিই ইসরায়েলি বিমান বাহিনীকে দেওয়া হয়েছে যা অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত ফিলিস্তিনে ৩৩,০০০ মৃত্যুর কারণ। আমেরিকা থেকে ইসরায়েলে বছরে প্রায় ৪ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র পাইপলাইন সম্পূর্ণ নিরবচ্ছিন্ন প্রবাহে চলছে খবরটি আসার পরেই একদল সমালোচক ক্ষিপ্ত প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করে।

বর্তমানে বাইডেন প্রশাসনের নীতিটাই এমন হয়ে গেছে যে ফিলিস্তিনের গাজায় যুদ্ধবিরতি এবং খাদ্য সহায়তা সরবরাহের পাশাপাশি ইসরায়েলের ‘আত্মরক্ষার’ জন্য অস্ত্রও প্রদান করা অব্যাহত রেখেছে। সমালোচকরা বাইডেনের এই নীতিকে যুদ্ধ এবং মানবিক সংকট উভয়কেই উস্কে দিচ্ছে।

ইহুদি আমেরিকান শান্তি কর্মী রাই আবিলিয়াহ বলেন, এই নীতি অনেকটা কাটা আঙুলের উপর ব্যান্ড-এইড লাগানোর মত, কিন্তু এদিকে আপনি তাদের বুকে ছুরি চালিয়েই যাচ্ছেন। গাজায় ভয়ংকর দুর্ভিক্ষ শুরু হওয়ার সাথে সাথে, বাইডেন প্রশাসনের কর্মকর্তারা প্রায় প্রতিদিনই প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হচ্ছে – ইসরায়েলকে সমর্থন দেওয়ার পেছনে কি এত কারণ থাকতে পারে!

ডেমোক্র্যাটরা বাইডেনের বর্তমান নীতিকে সমর্থন করুক বা না করুক, ইসরায়েলকে অস্ত্র সরবরাহের ক্ষেত্রে বাইডেন প্রশাসনের পরিবর্তনের সম্ভাবনা খুবই কম, মূলত নীতি এবং রাজনৈতিক উভয় কারণেই। সাবেক সিনিয়র বাইডেন প্রশাসনের কর্মকর্তা বলেন, সে (বাইডেন) এটা (ইসরায়েলকে অস্ত্র সরবারহ বন্ধ ) করতে যাচ্ছে না । তিনি মনেপ্রাণে বিশ্বাস করেন যে ইসরায়েলের আত্মরক্ষা করার অধিকার রয়েছে। জো বাইডেনের ইসরায়েলের প্রতি দায়বদ্ধতা, ইসরায়েলি নেতাদের সাথে কয়েক দশকের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগের কারণে, তার প্রশাসন ইসরায়েল-নীতি পরিবর্তনে বেশ অক্ষমই বলা যায়।

স্টেট ডিপার্টমেন্টের সাবেক কর্মকর্তা অ্যারন ডেভিড মিলার জানান, বাইডেন নিজেকে ইসরায়েলের ‘গল্পের অংশ’ বলে মনে করেন। ইসরায়েল আন্তর্জাতিক মানবিক আইন মেনে চলছে কিনা সে বিষয়ে স্টেট ডিপার্টমেন্ট ৮ মে একটি আনুষ্ঠানিক প্রতিবেদন প্রকাশ করবে বলে জানান স্টেট ডিপার্টমেন্টের এই সাবেক কর্মকর্তা। মিলার বলেন তিনি অবাক হবেন যদি বাইডেন প্রশাসন কোনদিন এমন একটি রায় দেয় যা ইসরায়েলের সম্মতির বাইরে।

ডেভিড মিলার জানান, হামাস ইসরায়েলের সবচেয়ে কম সমস্যা! ইসরায়েলের উপর অস্ত্রের শর্ত রাখলে হিজবুল্লাহ, ইরানি এবং সিরিয়ান ও হুথিদের কাছে, যাদের কাছে ইসরাইলকে ধ্বংস করে দেয়ার শক্তি আছে, তাদের জন্য এটি একটি বার্তা হবে। সূত্র: দ্যা গার্ডিয়ান

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

যুদ্ধবিরতি সত্ত্বেও যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলে অস্ত্র সরবারহ কেন অব্যাহত রেখেছে?

প্রকাশের সময় : ১১:১৩:০০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ এপ্রিল ২০২৪

জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে অবিলম্বে ফিলিস্তিনের গাজায় যুদ্ধবিরতি, জিম্মিদের মুক্তি এবং খাদ্য সহায়তা বিতরণের দাবি প্রস্তাবগুলো সোমবার পাস হয়েছে, যদিও এসব প্রস্তাবে বার বার ভেটো দিয়ে আসছিল যুক্তরাষ্ট্র। এ বিষয়ে দীর্ঘদিন নীরব থেকে, শেষ পর্যন্ত বাইডেন প্রশাসন জাতিসংঘের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব মেনে নিয়েছিল, কিন্তু সেটিও মাত্র স্থায়ী হয়েছিল চার দিন।

এরমধ্যে শুক্রবার ওয়াশিংটন পোস্ট এক রিপোর্ট প্রকাশ করে যাতে বলা হয়েছে, সর্বশেষ চালানে ইসরায়েলকে বিলিয়ন ডলার মূল্যের বোমা এবং বিমান দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্র-ইসরায়েল এই ‘বাণিজ্যনীতির’ সাথে পরিচিত একটি সূত্র জানায়, বেশ কিছুদিন আগেই বাইডেন প্রশাসন ইসরায়েলের জন্য ১৮০০ এমকে-৮৪ ৯০৭ কেজি বোমা তৈরির অনুমোদন দিয়েছিল যা একটি অ্যাপার্টমেন্ট ব্লককে ধ্বংস করে দিতে পারে এবং ১১-মিটার গভীরে গিয়ে আঘাত হানতেও সক্ষম।

ওয়াশিংটন পোস্ট আরো জানায়, এই বিধ্বংসী অস্ত্রটিই ইসরায়েলি বিমান বাহিনীকে দেওয়া হয়েছে যা অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত ফিলিস্তিনে ৩৩,০০০ মৃত্যুর কারণ। আমেরিকা থেকে ইসরায়েলে বছরে প্রায় ৪ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র পাইপলাইন সম্পূর্ণ নিরবচ্ছিন্ন প্রবাহে চলছে খবরটি আসার পরেই একদল সমালোচক ক্ষিপ্ত প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করে।

বর্তমানে বাইডেন প্রশাসনের নীতিটাই এমন হয়ে গেছে যে ফিলিস্তিনের গাজায় যুদ্ধবিরতি এবং খাদ্য সহায়তা সরবরাহের পাশাপাশি ইসরায়েলের ‘আত্মরক্ষার’ জন্য অস্ত্রও প্রদান করা অব্যাহত রেখেছে। সমালোচকরা বাইডেনের এই নীতিকে যুদ্ধ এবং মানবিক সংকট উভয়কেই উস্কে দিচ্ছে।

ইহুদি আমেরিকান শান্তি কর্মী রাই আবিলিয়াহ বলেন, এই নীতি অনেকটা কাটা আঙুলের উপর ব্যান্ড-এইড লাগানোর মত, কিন্তু এদিকে আপনি তাদের বুকে ছুরি চালিয়েই যাচ্ছেন। গাজায় ভয়ংকর দুর্ভিক্ষ শুরু হওয়ার সাথে সাথে, বাইডেন প্রশাসনের কর্মকর্তারা প্রায় প্রতিদিনই প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হচ্ছে – ইসরায়েলকে সমর্থন দেওয়ার পেছনে কি এত কারণ থাকতে পারে!

ডেমোক্র্যাটরা বাইডেনের বর্তমান নীতিকে সমর্থন করুক বা না করুক, ইসরায়েলকে অস্ত্র সরবরাহের ক্ষেত্রে বাইডেন প্রশাসনের পরিবর্তনের সম্ভাবনা খুবই কম, মূলত নীতি এবং রাজনৈতিক উভয় কারণেই। সাবেক সিনিয়র বাইডেন প্রশাসনের কর্মকর্তা বলেন, সে (বাইডেন) এটা (ইসরায়েলকে অস্ত্র সরবারহ বন্ধ ) করতে যাচ্ছে না । তিনি মনেপ্রাণে বিশ্বাস করেন যে ইসরায়েলের আত্মরক্ষা করার অধিকার রয়েছে। জো বাইডেনের ইসরায়েলের প্রতি দায়বদ্ধতা, ইসরায়েলি নেতাদের সাথে কয়েক দশকের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগের কারণে, তার প্রশাসন ইসরায়েল-নীতি পরিবর্তনে বেশ অক্ষমই বলা যায়।

স্টেট ডিপার্টমেন্টের সাবেক কর্মকর্তা অ্যারন ডেভিড মিলার জানান, বাইডেন নিজেকে ইসরায়েলের ‘গল্পের অংশ’ বলে মনে করেন। ইসরায়েল আন্তর্জাতিক মানবিক আইন মেনে চলছে কিনা সে বিষয়ে স্টেট ডিপার্টমেন্ট ৮ মে একটি আনুষ্ঠানিক প্রতিবেদন প্রকাশ করবে বলে জানান স্টেট ডিপার্টমেন্টের এই সাবেক কর্মকর্তা। মিলার বলেন তিনি অবাক হবেন যদি বাইডেন প্রশাসন কোনদিন এমন একটি রায় দেয় যা ইসরায়েলের সম্মতির বাইরে।

ডেভিড মিলার জানান, হামাস ইসরায়েলের সবচেয়ে কম সমস্যা! ইসরায়েলের উপর অস্ত্রের শর্ত রাখলে হিজবুল্লাহ, ইরানি এবং সিরিয়ান ও হুথিদের কাছে, যাদের কাছে ইসরাইলকে ধ্বংস করে দেয়ার শক্তি আছে, তাদের জন্য এটি একটি বার্তা হবে। সূত্র: দ্যা গার্ডিয়ান