নিউইয়র্ক ০৯:০৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৩ ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

যুক্তরাষ্ট্রে নির্বাচন-পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ : সেনাবাহিনীকে কাজে লাগানো হবে?

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০৩:১৫:০৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ১১ নভেম্বর ২০২০
  • / ৩৭ বার পঠিত

হককথা ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্রে নির্বাচনের ফলাফল মানা না মানা নিয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এবং ডেমেক্র্যাটিক পার্টির প্রার্থী জো বাইডেন শিবিরের মধ্যে আইনি লড়াই শুরু হয়েছে। এই লড়াই শেষ পর্যন্ত ফেডারেল সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত গড়াবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত পপুলার ভোট ও ইলেকটোরাল ভোটে বাইডেন সুস্পষ্ট ব্যবধানে এগিয়ে থাকলেও সুপ্রিম কোর্টে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প জয় পেতে পারেন এমন আশংকাও রয়েছে। কারণ সেখানে ৯ বিচারপতির মধ্যে ছয়জনই রক্ষণশীল এবং রিপাবলিকানপন্থি। এই বাস্তবতায় গোটা দেশের পরিস্থিতি সহিংস হয়ে উঠতে পারে। সেক্ষেত্রে সেনাবাহিনী এবং ন্যাশনাল গার্ড হতে পারে সহিংসতা নিয়ন্ত্রণের অন্যতম প্রধান উপায়। এর আগে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এবং বাইডেনও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনীকে কাজে লাগানোর কথা বলেছিলেন।
সেনা মোতায়েন নিয়ে আশংকা বাড়ছে যে কারণে
গত সোমবার (৯ নভেম্বর) এক টুইটার বার্তায় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প জানিয়েছেন, তিনি প্রতিরক্ষামন্ত্রী মার্ক এসপারকে সরিয়ে দিয়েছেন। তার স্থলে ভারপ্রাপ্ত প্রতিরক্ষামন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করবেন ন্যাশনাল কাউন্টার টেরোরিজম সেন্টারের পরিচালক ক্রিস্টোফার মিলার। ট্রাম্প বলেন, ‘আমি খুবই আনন্দিত যে সর্বজন শ্রদ্ধেয় ক্রিস্টোফার মিলার সিনেটে সর্বসম্মতিক্রমে অনুমোদন পেয়েছিলেন এবং তিনিই ভারপ্রাপ্ত প্রতিরক্ষামন্ত্রী হচ্ছেন।’ ক্ষমতা হস্তান্তরের স্বাভাবিক নিয়ম অনুযায়ীই ট্রাম্প ২০ জানুয়ারি পর্যন্ত প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করবেন। এই সময়ের মধ্যে নতুন প্রতিরক্ষামন্ত্রীকে সিনেট অনুমোদন দেবে না বলে ধারণা করা হচ্ছে। মার্ক এসপারকে এমন এক সময়ে সরিয়ে দেওয়া হলো যখন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফলাফল মেনে নেয়া নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। জো বাইডেন ৩০৬টি ইলেকটোরাল ভোটে জয় পেলেও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সেটি মানতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন এবং আইনি লড়াই চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। বাইডেন শিবিরও জানিয়েছে, ট্রাম্পকে হার মানাতে তারাও আইনি লড়াই চালাবেন।
সেনা মোতায়েন নিয়েই ট্রাম্প-এসপার মতবিরোধ
জানা গেছে, গত জুনেই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে মতবিরোধে জড়িয়েছিলেন মার্ক এসপার। গত ৩ জুন এসপারকে চাকরিচ্যুত করার আশংকার কথা শোনা গিয়েছিল। কারণ ঐ সময় শ্বেতাঙ্গ পুলিশ কর্তৃক কৃষ্ণাঙ্গ জর্জ ফ্লয়েড হত্যাক্লাকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা বর্ণবাদবিরোধী বিক্ষোভ দমনে ১ জুন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ১৮০৭ সালের ‘ইনসারেকশন অ্যাক্ট’ (বিদ্রোহ দমন আইন) অনুযায়ী ওয়াশিংটনসহ বিভিন্ন শহরে সেনা মোতায়েন করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু প্রতিরক্ষামন্ত্রী এসপার এর বিরোধিতা করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, এখনো দেশে এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়নি যে সেনাবাহিনীকে মাঠে নামাতে হবে। তখন ট্রাম্প এসপারকে নিয়ে সাংবাদিকদের কাছে উপহাসও করেছিলেন।
সূত্র জানায়, মার্ক এসপার সেনাবাহিনীকে রাজনীতিতে জড়াতে চাননি। গত ৪ নভেম্বর মিলিটারি টাইমসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারেও ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে তার মতবিরোধের আভাস পাওয়া যায়।
এদিকে নতুন দায়িত্ব পাওয়া ক্রিস্টোফার মিলার এর আগে প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগনের ডেপুটি অ্যাসিসট্যান্ট সেক্রেটারি অব ডিফেন্স ফর স্পেশাল অপারেশন অ্যান্ড কমব্যাটিং টেরোরিজম-এর দায়িত্ব পালন করেছিলেন। এখন তিনি পেন্টাগনেরই দায়িত্ব পেলেন। সব মিলিয়ে আর ৭০ দিন বাকি আছে ট্রাম্পের মেয়াদের। এই সময়ে মিলার কী ধরনের ভূমিকা পালন করেন তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।
ক্ষুব্ধ প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকারও
এসপারের বরখাস্তের ঘটনাকে খুবই বিরক্তিকর উল্লেখ করে কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি বলেছেন, এই পদক্ষেপ সম্ভাব্য বিশৃংখল পরিস্থিতিরই ইঙ্গিত দেয়। তিনি বলেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তার মেয়াদের শেষ সময়ে মার্কিন গণতন্ত্রে এবং বিশ্বে এক অরাজক পরিস্থিতি তৈরি করতে চান। পেলোসি এটাকে ‘প্রতিশোধমূলক কর্মক্লা’ বলেও উল্লেখ করেন। পেলোসি আরো বলেন, এটা খুবই বিপজ্জনক এবং আমরা একটা অনিশ্চিত মুহূর্তের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। আমাদের সামরিক বাহিনী এমন এক ব্যক্তির নেতৃত্বে যাচ্ছে যিনি সিনেট কর্তৃক অনুমোদন পাননি। প্রতিরক্ষা ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাবেক কর্মকর্তা ডেভিড লাপন বলেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প জনগনের কাছে সেনাবাহিনীর ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করেছেন। জেমস ম্যাটিস এবং এসপার সেটি রক্ষার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু পরবর্তী ব্যক্তিটি কী করেন সেটাই দেখার বিষয়।
এর আগে ২০১৮ সালের জুনে প্রতিরক্ষামন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়ান জেমস ম্যাটিস। তার আগে কয়েক মাস প্রতিরক্ষামন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন প্যাট্রিক শানাহান। তিনিও সিনেটের অনুমোদন পাননি। বিভিন্ন ইস্যুতে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে এদের সবার সঙ্গেই ট্রাম্পের মতবিরোধ হয়েছিল।
ইনসারেকশন অ্যাক্টে কী আছে?
‘ইনসারেকশন অ্যাক্ট অব ১৮০৭’ (বিদ্রোহ দমন আইন) অনুযায়ী, দেশে বিশৃংখল পরিস্থিতি, বিক্ষোভ ও সহিংসতা নিয়ন্ত্রণে প্রেসিডেন্ট সেনাবাহিনী এবং ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েন করতে পারেন। তবে গভর্নররা বিরোধিতা করলে প্রেসিডেন্ট সব স্থানে সেনা মোতায়েন করতে পারেন না। গত জুনেও ট্রাম্পের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ডেমোক্র্যাপন্থি গভর্নররা মামলা করার হুমকি দিয়েছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রে বিক্ষোভ ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা রয়েছে। তাই এই আইনের ব্যবহার তেমন হয় না। সর্বশেষ ১৯৯২ সালে এই আইনের ব্যবহার হয়েছে। তখন আফ্রিকান-আমেরিকান রুডনি কিংকে হত্যার পরও পুলিশকে দোষী সাব্যস্ত না করায় ব্যাপক বিক্ষোভ দেখা দিয়েছিল। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে তখন সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছিল। কিন্তু নির্বাচন কেন্দ্রিক সহিংসতাকে নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে কিনা তা জানা যায়নি।
সেনাবাহিনীকে ব্যবহার করবেন বাইডেনও!
গত ১০ জুন সিএনএনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জো বাইডেন বলেন, ‘ভোট নিয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প মিথ্যা তথ্য ছড়াতে পারেন। তার ষড়যন্ত্র তত্ত¡ ছাড়ানোর ইতিহাস রয়েছে। ট্রাম্প পোস্টাল ব্যালট নিয়ে ইতিমধ্যেই নানা বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়াচ্ছেন।’ সিএনএনের সাংবাদিক ট্রেভর নোহা বাইডেনকে প্রশ্ন করেছিলেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যদি নির্বাচনে হারেন এবং হোয়াইট হাউজ ত্যাগ না করেন তাহলে কী হবে? জবাবে বাইডেন বলেছিলেন, তার দৃঢ় বিশ্বাস সেনাবাহিনী ট্রাম্পকে হোয়াইট হাউজ থেকে নিয়ে যাবে। (দৈনিক ইত্তেফাক)

 

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

যুক্তরাষ্ট্রে নির্বাচন-পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ : সেনাবাহিনীকে কাজে লাগানো হবে?

প্রকাশের সময় : ০৩:১৫:০৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ১১ নভেম্বর ২০২০

হককথা ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্রে নির্বাচনের ফলাফল মানা না মানা নিয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এবং ডেমেক্র্যাটিক পার্টির প্রার্থী জো বাইডেন শিবিরের মধ্যে আইনি লড়াই শুরু হয়েছে। এই লড়াই শেষ পর্যন্ত ফেডারেল সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত গড়াবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত পপুলার ভোট ও ইলেকটোরাল ভোটে বাইডেন সুস্পষ্ট ব্যবধানে এগিয়ে থাকলেও সুপ্রিম কোর্টে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প জয় পেতে পারেন এমন আশংকাও রয়েছে। কারণ সেখানে ৯ বিচারপতির মধ্যে ছয়জনই রক্ষণশীল এবং রিপাবলিকানপন্থি। এই বাস্তবতায় গোটা দেশের পরিস্থিতি সহিংস হয়ে উঠতে পারে। সেক্ষেত্রে সেনাবাহিনী এবং ন্যাশনাল গার্ড হতে পারে সহিংসতা নিয়ন্ত্রণের অন্যতম প্রধান উপায়। এর আগে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এবং বাইডেনও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনীকে কাজে লাগানোর কথা বলেছিলেন।
সেনা মোতায়েন নিয়ে আশংকা বাড়ছে যে কারণে
গত সোমবার (৯ নভেম্বর) এক টুইটার বার্তায় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প জানিয়েছেন, তিনি প্রতিরক্ষামন্ত্রী মার্ক এসপারকে সরিয়ে দিয়েছেন। তার স্থলে ভারপ্রাপ্ত প্রতিরক্ষামন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করবেন ন্যাশনাল কাউন্টার টেরোরিজম সেন্টারের পরিচালক ক্রিস্টোফার মিলার। ট্রাম্প বলেন, ‘আমি খুবই আনন্দিত যে সর্বজন শ্রদ্ধেয় ক্রিস্টোফার মিলার সিনেটে সর্বসম্মতিক্রমে অনুমোদন পেয়েছিলেন এবং তিনিই ভারপ্রাপ্ত প্রতিরক্ষামন্ত্রী হচ্ছেন।’ ক্ষমতা হস্তান্তরের স্বাভাবিক নিয়ম অনুযায়ীই ট্রাম্প ২০ জানুয়ারি পর্যন্ত প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করবেন। এই সময়ের মধ্যে নতুন প্রতিরক্ষামন্ত্রীকে সিনেট অনুমোদন দেবে না বলে ধারণা করা হচ্ছে। মার্ক এসপারকে এমন এক সময়ে সরিয়ে দেওয়া হলো যখন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফলাফল মেনে নেয়া নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। জো বাইডেন ৩০৬টি ইলেকটোরাল ভোটে জয় পেলেও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সেটি মানতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন এবং আইনি লড়াই চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। বাইডেন শিবিরও জানিয়েছে, ট্রাম্পকে হার মানাতে তারাও আইনি লড়াই চালাবেন।
সেনা মোতায়েন নিয়েই ট্রাম্প-এসপার মতবিরোধ
জানা গেছে, গত জুনেই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে মতবিরোধে জড়িয়েছিলেন মার্ক এসপার। গত ৩ জুন এসপারকে চাকরিচ্যুত করার আশংকার কথা শোনা গিয়েছিল। কারণ ঐ সময় শ্বেতাঙ্গ পুলিশ কর্তৃক কৃষ্ণাঙ্গ জর্জ ফ্লয়েড হত্যাক্লাকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা বর্ণবাদবিরোধী বিক্ষোভ দমনে ১ জুন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ১৮০৭ সালের ‘ইনসারেকশন অ্যাক্ট’ (বিদ্রোহ দমন আইন) অনুযায়ী ওয়াশিংটনসহ বিভিন্ন শহরে সেনা মোতায়েন করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু প্রতিরক্ষামন্ত্রী এসপার এর বিরোধিতা করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, এখনো দেশে এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়নি যে সেনাবাহিনীকে মাঠে নামাতে হবে। তখন ট্রাম্প এসপারকে নিয়ে সাংবাদিকদের কাছে উপহাসও করেছিলেন।
সূত্র জানায়, মার্ক এসপার সেনাবাহিনীকে রাজনীতিতে জড়াতে চাননি। গত ৪ নভেম্বর মিলিটারি টাইমসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারেও ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে তার মতবিরোধের আভাস পাওয়া যায়।
এদিকে নতুন দায়িত্ব পাওয়া ক্রিস্টোফার মিলার এর আগে প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগনের ডেপুটি অ্যাসিসট্যান্ট সেক্রেটারি অব ডিফেন্স ফর স্পেশাল অপারেশন অ্যান্ড কমব্যাটিং টেরোরিজম-এর দায়িত্ব পালন করেছিলেন। এখন তিনি পেন্টাগনেরই দায়িত্ব পেলেন। সব মিলিয়ে আর ৭০ দিন বাকি আছে ট্রাম্পের মেয়াদের। এই সময়ে মিলার কী ধরনের ভূমিকা পালন করেন তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।
ক্ষুব্ধ প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকারও
এসপারের বরখাস্তের ঘটনাকে খুবই বিরক্তিকর উল্লেখ করে কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি বলেছেন, এই পদক্ষেপ সম্ভাব্য বিশৃংখল পরিস্থিতিরই ইঙ্গিত দেয়। তিনি বলেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তার মেয়াদের শেষ সময়ে মার্কিন গণতন্ত্রে এবং বিশ্বে এক অরাজক পরিস্থিতি তৈরি করতে চান। পেলোসি এটাকে ‘প্রতিশোধমূলক কর্মক্লা’ বলেও উল্লেখ করেন। পেলোসি আরো বলেন, এটা খুবই বিপজ্জনক এবং আমরা একটা অনিশ্চিত মুহূর্তের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। আমাদের সামরিক বাহিনী এমন এক ব্যক্তির নেতৃত্বে যাচ্ছে যিনি সিনেট কর্তৃক অনুমোদন পাননি। প্রতিরক্ষা ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাবেক কর্মকর্তা ডেভিড লাপন বলেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প জনগনের কাছে সেনাবাহিনীর ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করেছেন। জেমস ম্যাটিস এবং এসপার সেটি রক্ষার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু পরবর্তী ব্যক্তিটি কী করেন সেটাই দেখার বিষয়।
এর আগে ২০১৮ সালের জুনে প্রতিরক্ষামন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়ান জেমস ম্যাটিস। তার আগে কয়েক মাস প্রতিরক্ষামন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন প্যাট্রিক শানাহান। তিনিও সিনেটের অনুমোদন পাননি। বিভিন্ন ইস্যুতে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে এদের সবার সঙ্গেই ট্রাম্পের মতবিরোধ হয়েছিল।
ইনসারেকশন অ্যাক্টে কী আছে?
‘ইনসারেকশন অ্যাক্ট অব ১৮০৭’ (বিদ্রোহ দমন আইন) অনুযায়ী, দেশে বিশৃংখল পরিস্থিতি, বিক্ষোভ ও সহিংসতা নিয়ন্ত্রণে প্রেসিডেন্ট সেনাবাহিনী এবং ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েন করতে পারেন। তবে গভর্নররা বিরোধিতা করলে প্রেসিডেন্ট সব স্থানে সেনা মোতায়েন করতে পারেন না। গত জুনেও ট্রাম্পের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ডেমোক্র্যাপন্থি গভর্নররা মামলা করার হুমকি দিয়েছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রে বিক্ষোভ ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা রয়েছে। তাই এই আইনের ব্যবহার তেমন হয় না। সর্বশেষ ১৯৯২ সালে এই আইনের ব্যবহার হয়েছে। তখন আফ্রিকান-আমেরিকান রুডনি কিংকে হত্যার পরও পুলিশকে দোষী সাব্যস্ত না করায় ব্যাপক বিক্ষোভ দেখা দিয়েছিল। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে তখন সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছিল। কিন্তু নির্বাচন কেন্দ্রিক সহিংসতাকে নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে কিনা তা জানা যায়নি।
সেনাবাহিনীকে ব্যবহার করবেন বাইডেনও!
গত ১০ জুন সিএনএনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জো বাইডেন বলেন, ‘ভোট নিয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প মিথ্যা তথ্য ছড়াতে পারেন। তার ষড়যন্ত্র তত্ত¡ ছাড়ানোর ইতিহাস রয়েছে। ট্রাম্প পোস্টাল ব্যালট নিয়ে ইতিমধ্যেই নানা বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়াচ্ছেন।’ সিএনএনের সাংবাদিক ট্রেভর নোহা বাইডেনকে প্রশ্ন করেছিলেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যদি নির্বাচনে হারেন এবং হোয়াইট হাউজ ত্যাগ না করেন তাহলে কী হবে? জবাবে বাইডেন বলেছিলেন, তার দৃঢ় বিশ্বাস সেনাবাহিনী ট্রাম্পকে হোয়াইট হাউজ থেকে নিয়ে যাবে। (দৈনিক ইত্তেফাক)