হককথা ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্রে ২০২০ সালে গাড়ি দুর্ঘটনার চেয়েও আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে শিশু ও কিশোর-কিশোরীদের হত্যার ঘটনা বেশি ঘটেছে বলে এক গবেষণায় উঠে এসেছে।
এতে বলা হয়, সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) থেকে পাওয়া তথ্যানুসারে, ২০২০ সালে চার হাজার ৩৫৭ জন যুক্তরাষ্ট্রের তরুণ আগ্নেয়াস্ত্র সংশ্লিষ্ট ঘটনায় নিহত হয়েছে। এদের মধ্যে প্রায় ১০ শতাংশই শিশু।
এই গবেষণা প্রতিবেদনটি গত বুধবার (২০ এপ্রিল) নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল মেডিসিনে প্রকাশিত হয়েছে। গবেষণা অনুসারে, যুক্তরাষ্ট্রে ১ থেকে ১৯ বছর বয়সীদের মধ্যে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করে হত্যাকাণ্ডের ঘটনা বেড়েছে ৩৩ দশমিক ৪ শতাংশ।
দেশটিতে ২০১৯ সালের তুলনায় ২০২০ সালে সামগ্রিকভাবে আগ্নেয়াস্ত্র সংক্রান্ত মৃত্যু ১৩.৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০২০ সালে যুক্তরাষ্ট্রে আগ্নেয়াস্ত্র সংক্রান্ত রেকর্ড ৪৫ হাজার ২২২টি মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।
গবেষণায় দেখা গেছে, ২০২০ সালে করোনাভাইরাস মহামারি শুরু পর আগ্নেয়াস্ত্র সংক্রান্ত সহিংসতার ঘটনা বেড়েছে।
২০২০ সালের হিসাবে যুক্তরাষ্ট্রের জনসংখ্যা ৩২ কোটি ৯৫ লাখ। আর বর্তমানে দেশটির বেসামরিক নাগরিকদের হাতে ৩৯ কোটির বেশি আগ্নেয়াস্ত্র আছে।
বিগত বছরগুলোতে, যুক্তরাষ্ট্রের তরুণদের মধ্যে মৃত্যুর প্রধান কারণ ছিল গাড়ি দুর্ঘটনা আর আগ্নেয়াস্ত্র সংক্রান্ত সহিংসতায় মৃত্যু দ্বিতীয় স্থানে ছিল। তবে গাড়ি দুর্ঘটনায় মৃত্যু সময়ের সাথে সাথে কমেছে এবং ২০২০ সালে ১৯ বছরের কম বয়সী প্রায় তিন হাজার ৯০০ জন তরুণ গাড়ি দুর্ঘটনায় মারা গেছে।
২০১৯ সালের তুলনায় ২০২০ সালে অতিরিক্ত মাত্রায় (ওভারডোজ) মাদক নেওয়া ও বিষক্রিয়ার মৃত্যুর ঘটনা বেড়েছে ৮৩.৬ শতাংশ এবং তরুণদের মৃত্যুর তৃতীয় প্রধান কারণ। এপ্রিলের শুরুতে প্রকাশিত একটি পৃথক গবেষণায় দেখা গেছে ২০২০ সালে ৯৫৪ জন তরুণের মৃত্যু হয়েছে মাদকের ওভারডোজের কারণে, ২০১৯ সালে এই সংখ্যা ছিল ৪৯২ ছিল।
দেশটিতে আগ্নেয়াস্ত্র সংশ্লিষ্ট প্রাণহানির ঘটনাগুলোর মধ্যে আত্মহত্যাও উল্লেখযোগ্য। গবেষণায় উল্লেখ করা হয়েছে, নরহত্যা যুক্তরাষ্ট্রের তরুণদের অসামঞ্জস্যপূর্ণভাবে প্রভাবিত করে। একই সময়ে দেশটিতে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারের মাধ্যমে আত্মহত্যার হার বেড়েছে ১ দশমিক ১ শতাংশ।
এছাড়া, শিশু ও কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারের মাধ্যমে সার্বিক প্রাণহানির ঘটনার (আত্মহত্যা, হত্যা, অনিচ্ছাকৃত ও অনির্ধারিত) হার ২৯ দশমিক ৫ শতাংশ বেড়েছে।
গবেষণাপত্রটিতে বলা হয়েছে, আমরা প্রতিরোধযোগ্য মৃত্যু থেকে আমাদের যুবকদের রক্ষা করতে বার বার ব্যর্থ হচ্ছি। -বিবিসি
হককথা/এমউএ