মুখোমুখি দুই সুপারপাওয়ার। মুখোমুখি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। ইন্দোনেশিয়ার বালি’তে জি২০ শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে দুই নেতা সেখানে গিয়েছেন। এই সম্মেলন শুরুর আগের দিন সোমবার তারা প্রথম মুখোমুখি বৈঠক করলেন। তার আগে হাতে হাত রাখলেন। সঙ্গে সঙ্গে বিশ্বমিডিয়ার ক্যামেরার আলো ঝলসে দিল। এক ফ্রেমে বন্দি হলেন সুপারপাওয়ার যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের দুই নেতা। এ ঘটনা এমন এক সময়ে ঘটলো যখন যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে সম্পর্কে চরম তিক্ততা চলছে। সাবেক প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের সময় থেকে শুরু হয়ে এই তিক্ততা, বিরোধিতা চরম এক অবস্থায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে তারা যখন হাতে হাত রাখলেন, তখন বিশ্লেষকরা আশাবাদী।
তারা মনে করেন এবার হয়তো সংঘাতময় অবস্থা কেটে যাবে। এমনিতেই জো বাইডেন যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে ‘সংঘাত’কে এড়িয়ে যাওয়ার গুরুত্ব নিয়ে কথা বলেছেন। তাদের আলোচনায় শীর্ষ এজেন্ডা হতে পারে তাইওয়ান। দ্বীপরাষ্ট্র তাইওয়ানকে নিজেদের ভূখণ্ড বলে দাবি করে চীন। কিন্তু তাইওয়ান তা মানে না। তারা নিজেদেরকে সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে দাবি করে। দেশটিকে চীনের মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে যুক্ত করতে চীন প্রয়োজনে শক্তি প্রয়োগের হুমকি দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র জানিয়ে দিয়েছে তাইওয়ান আক্রান্ত হলে পাশে থাকবে তারা। এ জন্য ওই অঞ্চলে ও এর আশপাশে যুক্তরাষ্ট্র তার শক্তি বৃদ্ধি করেছে। বৈঠকের আগে বাইডেন বলেছেন, দুই নেতা তাইওয়ান ইস্যুতে রেড লাইন বা প্রত্যেকের জন্য সীমারেখা নির্ধারণ করবে।
জি২০ শীর্ষ সম্মেলন শুরু হচ্ছে মঙ্গলবার। এর ফাঁকে সোমবার মুখোমুখি বৈঠক করেন বাইডেন-শি। কিন্তু এই এক বৈঠকেই সম্পর্কের ক্ষেত্রে যে বরফ জমে পাথরের মতো অবস্থা হয়ে গেছে, তা কতটা গলবে- তা সময়ই বলে দেবে। দুই দেশের মধ্যে বিরোধ কমপক্ষে এক দশক আগে থেকে। চীন ক্ষতিকর বাণিজ্য চর্চা করছে বলে ওয়াশিংটনের অভিযোগ। তারা পরিষ্কার করে বলেছে, চীন এমন সব ইলেকট্রনিক সরঞ্জাম তৈরি করে, যা দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের গোপন তথ্য চুরি করা সম্ভব। দুই নেতার বৈঠকে শি জিনপিংয়ের প্রশাসন চীনের উদীয়মান প্রযুক্তি খাতে যুক্তরাষ্ট্রের কঠোর বিধিনিষেধের বিষয় উত্থাপন করতে পারেন। এসব ইস্যুতে যদি প্রতিবন্ধকতা উঠে যায়, তাহলে পর্যবেক্ষকদের কাছে তা হবে এক স্মৃতিবিজড়িত বিস্ময়কর ঘটনা।