‘ক্লাস খুব কঠিন’, শিক্ষার্থীদের অভিযোগে চাকরি গেল নিউইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাপকের
- প্রকাশের সময় : ১০:২৪:৩১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৭ অক্টোবর ২০২২
- / ৪০ বার পঠিত
হককথা ডেস্ক : বয়স তাঁর ৮৪ বছর। যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন সুনামের সঙ্গে পড়াচ্ছেন। জনপ্রিয় একটি পাঠ্যপুস্তকের লেখক। শিক্ষকতার জন্য পুরস্কারও পেয়েছেন। শিক্ষার্থীদের অভিযোগের ভিত্তিতে সেই অধ্যাপককে বরখাস্ত করলো বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদন থেকে জানা যাচ্ছে, শিক্ষার্থীদের অভিযোগ ছিল, ওই অধ্যাপকের ক্লাস তাঁদের কাছে খুব কঠিন লাগে। এই কোর্সে খুব খারাপ স্কোর পেয়েছেন তাঁরা। শিক্ষার্থীরা এই অধ্যাপককে সরানোর জন্য গণস্বাক্ষর সংগ্রহ করে কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দেন।
অধ্যাপকের নাম মেটল্যান্ড জোনস। ৩৫০ জন শিক্ষার্থীকে জৈব রসায়ন পড়ান তিনি। কিন্তু একপ্রকার হঠাৎ করেই বিজ্ঞান অনুষদের ডিনের কাছ থেকে একটি বার্তা পান তিনি। সেখানে তাঁর সঙ্গে চুক্তির অবসান ঘটানোর কথা বলা হয়। সেমিস্টার শুরু হওয়ার ঠিক আগে এমন বার্তা পান তিনি।
রসায়ন বিভাগের স্নাতক অধ্যয়নের পরিচালক মার্ক এ. ওয়াল্টার্স অধ্যাপক ড. জোনসকে একটি ই-মেইলে বলেন, এই পদক্ষেপটি শিক্ষার্থীদের এবং যারা টিউশন বিল দেন তাঁদের প্রতি একটি মৃদু কিন্তু দৃঢ় হাত বাড়িয়ে দেওয়ার সামিল। বাবা-মায়েরাও এটি চাচ্ছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তারাও শিক্ষার্থীদের তাঁদের খারাপ গ্রেড পর্যালোচনা করার প্রস্তাব দিয়ে শান্ত করার চেষ্টা করেছেন।
শিক্ষার্থীদের পিটিশনে বলা হয়েছে, ‘আমরা আপনাকে এটা বোঝার জন্য অনুরোধ করছি যে, এত বেশি শিক্ষার্থীর অনুপস্থিতি এবং কম গ্রেড পাওয়া একটি ক্লাস শিক্ষার্থীদের শেখা এবং সুস্থতাকে অগ্রাধিকার দিতে ব্যর্থ হয়েছে। এটি রসায়ন বিভাগের পাশাপাশি সামগ্রিকভাবে প্রতিষ্ঠানের ওপর খারাপ প্রভাব ফেলছে।’
অবশ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের এই পদক্ষেপ নিয়ে ভেতরে-বাইরে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। খোদ রসায়নের অধ্যাপক পরমজিৎ অরোরা বলেছেন, ‘ডিনেরা স্পষ্টতই দিন দিন নিচে নামছেন। তাঁরা এমন সুখী শিক্ষার্থী চান যারা বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে সব ভালো ভালো কথা বলবেন, যাতে আরও বেশি লোক এখানে (ভর্তির) আবেদন করেন। সেই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রে খবরের শিরোনামে থাকে।’ অধ্যাপক পরমজিৎ অরোরা দীর্ঘদিন ড. জোনসের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করেছেন।
অধ্যাপক মেটল্যান্ড জোনস কয়েক দশক ধরে জৈব রসায়ন পড়ান। ১৯৭৩ থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত প্রিন্সটনে পড়িয়েছেন। এরপর নিউইয়র্ক ইউনিভার্সিটিতে বার্ষিক চুক্তিতে যোগ দেন। অধ্যাপক জোনস শিগগিরই অবসর নেওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন। নিউইয়র্ক টাইমসকে তিনি বলেছেন, ‘আর চাকরি ফিরে চাই না। আমি শুধু নিশ্চিত করতে চাই যে, এটি অন্য কারো সঙ্গে যেন না ঘটে।’
এদিকে অনেকে বলছেন, মহামারিতে পড়াশোনা থেকে দীর্ঘ বিচ্ছিন্নতার কারণে অনেক শিক্ষার্থীকেই তালে ফিরতে বেশ বেগ পেতে হচ্ছে। সেই দায় কেন অধ্যাপককে নিতে হবে? একজন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীর নিজের ভালোমন্দ বোঝার সক্ষমতা থাকা উচিৎ বলেও মত দিয়েছেন অনেকে।
হককথা/এমউএ