নিউইয়র্ক ০৩:২৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ০৭ জুলাই ২০২৫, ২৩ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

ক্যাপিটলে সবাইকে মৃত্যুর মুখে ফেলেছিলেন ট্রাম্প

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০১:০৪:২৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২১
  • / ৪৫ বার পঠিত

হককথা ডেস্ক: ইউএস কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সিনেটে বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিশংসন শুনানিতে ডেমোক্র্যাটরা বলেছেন, গত ৬ জানুয়ারী ক্যাপিটল হিলে হামলার মাধ্যমে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সবাইকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়েছিলেন। বুধবার (১০ ফেব্রæয়ারী) ট্রাম্পের দ্বিতীয় অভিশংসনের বিচারে তার সমর্থকদের ক্যাপিটল ভবনে হামলার নতুন কিছু নাটকীয় ভিডিও সিনেটরদের দেখানো হয়েছে। এদিকে টুইটার কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আবার প্রেসিডেন্ট হলেও ট্রাম্প টুইটারে ফিরতে পারবেন না। অন্যদিকে ট্রাম্পের অভিশংসনের বিচারে ভারতীয় উপমহাদেশের সাবেক ব্রিটিশ গভর্নর ওয়ারেন হেস্টিংসের নাম এসেছে। খবর বিবিসি ও সিএনএন’র।
ক্যাপিটল হিলে হামলার দিনে কংগ্রেসম্যানদের আত্মরক্ষার চেষ্টা। ফাইল ছবি
ট্রাম্পের নিজের বক্তব্য এবং টুইটকে তার বিরুদ্ধেই ব্যবহার করে ডেমোক্র্যাটরা বিচার প্রক্রিয়া চালাচ্ছে যাতে তারা অভিযোগ তুলেছে যে, হামলার দিন এবং এর আগে তিনি নিজেই প্রধান উসকানিদাতা হিসেবে কাজ করেছেন। বিচারের সময় আবেগঘন বিবৃতিতে অভিশংসনের দায়িত্বে থাকা কর্মীরা সহিংস ঘটনার খুঁটিনাটি তুলে ধরেন। প্রতিনিধি স্টেইসি প্ল্যাসকেট সাক্ষ্য-প্রমাণ উপস্থাপনের সময় অভিযোগ তোলেন যে, সাবেক প্রেসিডেন্ট সহিংসতায় ইচ্ছাকৃতভাবে উসকানি দিয়েছিলেন এবং জ্যেষ্ঠ সদস্যদের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করেছিলেন যাদের মধ্যে তার নিজের ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সও রয়েছেন।
ক্যাপিটলে নির্বাচনের ফল অনুমোদন দেওয়ার সময় ওই হামলায় এক পুলিশ কর্মকর্তাসহ পাঁচ জন মারা যায়। চলতি সপ্তাহের শেষে ট্রাম্পের আইনজীবী তার পক্ষে বিচারে যুক্তি তুলে ধরবেন। তবে এরই মধ্যে তিনি দাবি করেছেন যে, তার বিরুদ্ধে বিচার রাজনৈতিকভাবে প্রভাবিত এবং অসাংবিধানিক। ১০০ আসনের সিনেটে ট্রাম্পকে অভিযুক্ত করতে হলে দুই-তৃতীয়াংশ ভোট দরকার। তবে এখনো পর্যন্ত সিনেটের বেশির ভাগ রিপাবলিকান সদস্য ট্রাম্পের প্রতি অনুগত থাকার কারণে তিনি রেহাই পেয়ে যাবেন। অভিযোগ প্রমাণিত হলে তিনি পরবর্তীকালে আর নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না।
বুধবার যা হলো:
বিচারপ্রক্রিয়ার সাংবিধানিক বৈধতার বিষয়ে মঙ্গলবার (৯ ফেব্রæয়ারী) প্রক্রিয়াগত ভোটের পর সিনেটররা প্রথম দিনের বিচারে বসেন। যেখানে উভয়পক্ষকে ১৬ ঘণ্টা করে সময় দেওয়া হয় নিজেদের পক্ষে প্রমাণ উপস্থাপনের জন্য। প্রধান প্রসিকিউশন ম্যানেজার জেমি রাস্কিন বলেন যে, গত মাসের সহিংসতায় ট্রাম্প কোনো নিরপরাধ দর্শক ছিলেন না, কারণ তিনি এর জন্য তিনি কয়েক মাস ধরে তাদের প্রশংসা করেছেন, উৎসাহ দিয়েছেন এবং তা তৈরি করেছেন।
ম্যানেজাররা ট্রাম্পের সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট এবং ক্লিপ ব্যবহার করে প্রমাণ করার চেষ্টা করেন যে তিনি কীভাবে সপ্তাহের পর সপ্তাহ ধরে বড় ধরনের মিথ্যা প্রচারের চেষ্টা করেছেন যে তার কাছ থেকে নির্বাচনকে ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে। ৬ জানুয়ারীতে তার দেওয়া বক্তব্যের ফুটেজকে আলাদা আলাদা অংশে বিভক্ত করে দেখানো হয়েছে যে তিনি কীভাবে সমর্থকদের উত্তেজিত করেছিলেন যা পরবর্তীকালে তাদের ক্যাপিটলের দিকে ধাবিত করেছিল। ট্রাম্পের সমর্থক ওয়েবসাইটগুলোর স্ক্রিনশট প্রমাণ হিসেবে উপস্থাপিত করা হয়েছে।
সেখানে দেখানো হয়েছে যে তার সমর্থক ঘাঁটিতে থাকা চরমপন্থিরা ট্রাম্পের বক্তব্য থেকে হামলার পূর্বপরিকল্পনা করতে উৎসাহিত করেছে এবং আইনপ্রণেতাদের ওপর সহিংস হওয়ার ইচ্ছার বিষয়ে খোলাখুলিই কথা বলেছে। এর আগে অপ্রকাশিত ফুটেজে দেখা যায় যে, দাঙ্গাকারীরা কীভাবে শরীরে বর্ম পরে সহিংসভাবে ভবনে প্রবেশ করেছিল। সেসময় যারা নির্বাচনের ফল অনুমোদনে কাজ করছিল তাদের খুঁজছিল।
একটি ক্লিপে দেখা যায় যে, এক নিরাপত্তারক্ষী রিপাবলিকান সিনেটর এবং সাবেক প্রেসিডেন্ট প্রার্থী মিট রমনিকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। আরেক ভিডিওতে দেখা যায়, ভাইস প্রেসিডেন্ট পেন্স এবং তার পরিবারের সদস্যদের সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। কারণ নির্বাচনের ফল অনুমোদনে আপত্তি না তোলায় ভিড়ের মধ্যে থাকা অনেকেই তাকে তার ফাঁসি দাবি করছিল। আরেক ভিডিওতে দেখা যায় যে, ন্যান্সি পেলোসির কর্মীদের লুকিয়ে গুঞ্জন করতে শোনা যায়, কারণ দাঙ্গাকারীরা হাউজ স্পিকারের খোঁজে তার অফিসে ঢুকে পরে এবং বলতে থাকে যে, ‘আপনি কোথায়, ন্যান্সি পেলোসি’।
বুধবার (১০ ফেব্রæয়ারী) যে ফুটেজ দেখানো হয় তার মধ্যে কিছু ছিল অস্বস্তিকর। মোবাইলের ফুটেজে দেখা যায়, ট্রাম্পের একজন সমর্থককে গুলি করে হত্যা করা হচ্ছে, কারণ সে প্রতিনিধি পরিষদের লবিতে প্রবেশ করতে চাইছিল। আরেকটি ফুটেজে দেখা যায় দাঙ্গা পুলিশের এক সদস্য ব্যথায় চিৎকার করছেন, কারণ একটি প্রবেশ মুখের কাছে জনতা তার ওপর হামলা চালায়। যারা যুক্তি উপস্থাপন করছিলেন তারা বারবার সিনেটরদের মানসিক অবস্থা এবং তাদের অভিজ্ঞতার বিষয়টির ওপর জোর দিচ্ছিলেন। ঐ সিনেটররা এই বিচারের বিচারক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
পরবর্তীকালে কী হবে?
বৃহস্পতিবারও ডেমোক্র্যাটরা তাদের মামলার বিচারের জন্য যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করে যাবেন। এর পর ট্রাম্পের পক্ষের দল তার সমর্থনে বক্তব্য তুলে ধরবেন। এরইমধ্যে তার আইনজীবী এই যুক্তিতর্ককে বাতিল করে দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, তার (ট্রাম্পের) বিরুদ্ধে আনা এই মামলা অন্যায় এবং তিনি তার সমর্থকদের সহিংসতায় উসকে দেননি বলে দাবি করেছেন। ধারণা করা হচ্ছে, সাপ্তাহিক ছুটির আগ পর্যন্ত যুক্তিতর্ক চলবে যখন সিনেটররা প্রশ্ন করার সুযোগ পাবেন।
তবে তখন অভিশংসন প্রক্রিয়ার দায়িত্বে থাকা ব্যবস্থাপকেরা সাক্ষী হাজির বা সমন জারির আবেদন করে সময় বাড়ানোর প্রস্তাব করবেন সেটা পরিষ্কার নয়। যদিও ট্রাম্প এরই মধ্যে জানিয়েছেন, তিনি স্বেচ্ছায় সাক্ষ্য দেবেন না। দুই পক্ষের আইনপ্রণেতাদেরকেই বিচারের বিষয়টি দ্রæত করার অনুরোধ করা হয়েছে এবং ট্রাম্পকে দোষী সাব্যস্ত করা হবে কি হবে না সে বিষয়ে আগামী সপ্তাহে সিনেটে ভোট হতে পারে। চলতি সপ্তাহের শুরুতে মাত্র ছয় জন রিপাবলিকান বিচার সাংবিধানিক বলে ভোট দিয়েছিলেন যা সংখ্যার দিক থেকে কম। কারণ চূড়ান্ত বিচারে দোষী সাব্যস্ত করতে হলে ১৭ জন রিপাবলিকানদের ডেমোক্র্যাটদের সঙ্গে ভোট দিতে হবে।
বিচারে ওয়ারেন হেস্টিংসের নাম:
মঙ্গলবার সিনেটে শুনানির সময় ট্রাম্পের আইনজীবীরা দাবি করেন যে প্রেসিডেন্টের চেয়ার ছাড়ার পর আর কাউকে ইমপিচ করা যায় না। এই প্রসঙ্গেই ওই বিতর্কের কেন্দ্রে উঠে আসে হেস্টিংসের নাম। সে সময় হাউজে রাস্কিন জানান, আমেরিকান সংবিধানের অনেক ধারণাই ব্রিটেন থেকে ধার করা। এই প্রসঙ্গেই তিনি হেস্টিংসের নাম উল্লেখ করে তিনি জানান, হেস্টিংস ভারতে ব্রিটিশ শাসনের অন্যতম স্থপতি ছিলেন।
কিন্তু ১৭৮৫ সালে পদ থেকে পদত্যাগ করে ব্রিটেনে ফিরে যাওয়ার পরে শাসক থাকাকালীন অপকর্মের অভিযোগে ব্রিটেনে হাউজ অব কমন্সে তার ইমপিচমেন্টের শুনানিও চলে। হেস্টিংসের বিরুদ্ধে আর্থিক তছরূপ, জোরজুলুম করে টাকা আদায় এবং বিচার বিভাগকে ব্যবহার করে মহারাজ নন্দকুমারকে হত্যার অভিযোগ ওঠে। যদিও শেষ পর্যন্ত হাউজ অব লর্ডসে সেই সব অভিযোগ থেকে মুক্তি পান হেস্টিংস। (দৈনিক ইত্তেফাক)

 

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

ক্যাপিটলে সবাইকে মৃত্যুর মুখে ফেলেছিলেন ট্রাম্প

প্রকাশের সময় : ০১:০৪:২৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২১

হককথা ডেস্ক: ইউএস কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সিনেটে বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিশংসন শুনানিতে ডেমোক্র্যাটরা বলেছেন, গত ৬ জানুয়ারী ক্যাপিটল হিলে হামলার মাধ্যমে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সবাইকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়েছিলেন। বুধবার (১০ ফেব্রæয়ারী) ট্রাম্পের দ্বিতীয় অভিশংসনের বিচারে তার সমর্থকদের ক্যাপিটল ভবনে হামলার নতুন কিছু নাটকীয় ভিডিও সিনেটরদের দেখানো হয়েছে। এদিকে টুইটার কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আবার প্রেসিডেন্ট হলেও ট্রাম্প টুইটারে ফিরতে পারবেন না। অন্যদিকে ট্রাম্পের অভিশংসনের বিচারে ভারতীয় উপমহাদেশের সাবেক ব্রিটিশ গভর্নর ওয়ারেন হেস্টিংসের নাম এসেছে। খবর বিবিসি ও সিএনএন’র।
ক্যাপিটল হিলে হামলার দিনে কংগ্রেসম্যানদের আত্মরক্ষার চেষ্টা। ফাইল ছবি
ট্রাম্পের নিজের বক্তব্য এবং টুইটকে তার বিরুদ্ধেই ব্যবহার করে ডেমোক্র্যাটরা বিচার প্রক্রিয়া চালাচ্ছে যাতে তারা অভিযোগ তুলেছে যে, হামলার দিন এবং এর আগে তিনি নিজেই প্রধান উসকানিদাতা হিসেবে কাজ করেছেন। বিচারের সময় আবেগঘন বিবৃতিতে অভিশংসনের দায়িত্বে থাকা কর্মীরা সহিংস ঘটনার খুঁটিনাটি তুলে ধরেন। প্রতিনিধি স্টেইসি প্ল্যাসকেট সাক্ষ্য-প্রমাণ উপস্থাপনের সময় অভিযোগ তোলেন যে, সাবেক প্রেসিডেন্ট সহিংসতায় ইচ্ছাকৃতভাবে উসকানি দিয়েছিলেন এবং জ্যেষ্ঠ সদস্যদের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করেছিলেন যাদের মধ্যে তার নিজের ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সও রয়েছেন।
ক্যাপিটলে নির্বাচনের ফল অনুমোদন দেওয়ার সময় ওই হামলায় এক পুলিশ কর্মকর্তাসহ পাঁচ জন মারা যায়। চলতি সপ্তাহের শেষে ট্রাম্পের আইনজীবী তার পক্ষে বিচারে যুক্তি তুলে ধরবেন। তবে এরই মধ্যে তিনি দাবি করেছেন যে, তার বিরুদ্ধে বিচার রাজনৈতিকভাবে প্রভাবিত এবং অসাংবিধানিক। ১০০ আসনের সিনেটে ট্রাম্পকে অভিযুক্ত করতে হলে দুই-তৃতীয়াংশ ভোট দরকার। তবে এখনো পর্যন্ত সিনেটের বেশির ভাগ রিপাবলিকান সদস্য ট্রাম্পের প্রতি অনুগত থাকার কারণে তিনি রেহাই পেয়ে যাবেন। অভিযোগ প্রমাণিত হলে তিনি পরবর্তীকালে আর নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না।
বুধবার যা হলো:
বিচারপ্রক্রিয়ার সাংবিধানিক বৈধতার বিষয়ে মঙ্গলবার (৯ ফেব্রæয়ারী) প্রক্রিয়াগত ভোটের পর সিনেটররা প্রথম দিনের বিচারে বসেন। যেখানে উভয়পক্ষকে ১৬ ঘণ্টা করে সময় দেওয়া হয় নিজেদের পক্ষে প্রমাণ উপস্থাপনের জন্য। প্রধান প্রসিকিউশন ম্যানেজার জেমি রাস্কিন বলেন যে, গত মাসের সহিংসতায় ট্রাম্প কোনো নিরপরাধ দর্শক ছিলেন না, কারণ তিনি এর জন্য তিনি কয়েক মাস ধরে তাদের প্রশংসা করেছেন, উৎসাহ দিয়েছেন এবং তা তৈরি করেছেন।
ম্যানেজাররা ট্রাম্পের সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট এবং ক্লিপ ব্যবহার করে প্রমাণ করার চেষ্টা করেন যে তিনি কীভাবে সপ্তাহের পর সপ্তাহ ধরে বড় ধরনের মিথ্যা প্রচারের চেষ্টা করেছেন যে তার কাছ থেকে নির্বাচনকে ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে। ৬ জানুয়ারীতে তার দেওয়া বক্তব্যের ফুটেজকে আলাদা আলাদা অংশে বিভক্ত করে দেখানো হয়েছে যে তিনি কীভাবে সমর্থকদের উত্তেজিত করেছিলেন যা পরবর্তীকালে তাদের ক্যাপিটলের দিকে ধাবিত করেছিল। ট্রাম্পের সমর্থক ওয়েবসাইটগুলোর স্ক্রিনশট প্রমাণ হিসেবে উপস্থাপিত করা হয়েছে।
সেখানে দেখানো হয়েছে যে তার সমর্থক ঘাঁটিতে থাকা চরমপন্থিরা ট্রাম্পের বক্তব্য থেকে হামলার পূর্বপরিকল্পনা করতে উৎসাহিত করেছে এবং আইনপ্রণেতাদের ওপর সহিংস হওয়ার ইচ্ছার বিষয়ে খোলাখুলিই কথা বলেছে। এর আগে অপ্রকাশিত ফুটেজে দেখা যায় যে, দাঙ্গাকারীরা কীভাবে শরীরে বর্ম পরে সহিংসভাবে ভবনে প্রবেশ করেছিল। সেসময় যারা নির্বাচনের ফল অনুমোদনে কাজ করছিল তাদের খুঁজছিল।
একটি ক্লিপে দেখা যায় যে, এক নিরাপত্তারক্ষী রিপাবলিকান সিনেটর এবং সাবেক প্রেসিডেন্ট প্রার্থী মিট রমনিকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। আরেক ভিডিওতে দেখা যায়, ভাইস প্রেসিডেন্ট পেন্স এবং তার পরিবারের সদস্যদের সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। কারণ নির্বাচনের ফল অনুমোদনে আপত্তি না তোলায় ভিড়ের মধ্যে থাকা অনেকেই তাকে তার ফাঁসি দাবি করছিল। আরেক ভিডিওতে দেখা যায় যে, ন্যান্সি পেলোসির কর্মীদের লুকিয়ে গুঞ্জন করতে শোনা যায়, কারণ দাঙ্গাকারীরা হাউজ স্পিকারের খোঁজে তার অফিসে ঢুকে পরে এবং বলতে থাকে যে, ‘আপনি কোথায়, ন্যান্সি পেলোসি’।
বুধবার (১০ ফেব্রæয়ারী) যে ফুটেজ দেখানো হয় তার মধ্যে কিছু ছিল অস্বস্তিকর। মোবাইলের ফুটেজে দেখা যায়, ট্রাম্পের একজন সমর্থককে গুলি করে হত্যা করা হচ্ছে, কারণ সে প্রতিনিধি পরিষদের লবিতে প্রবেশ করতে চাইছিল। আরেকটি ফুটেজে দেখা যায় দাঙ্গা পুলিশের এক সদস্য ব্যথায় চিৎকার করছেন, কারণ একটি প্রবেশ মুখের কাছে জনতা তার ওপর হামলা চালায়। যারা যুক্তি উপস্থাপন করছিলেন তারা বারবার সিনেটরদের মানসিক অবস্থা এবং তাদের অভিজ্ঞতার বিষয়টির ওপর জোর দিচ্ছিলেন। ঐ সিনেটররা এই বিচারের বিচারক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
পরবর্তীকালে কী হবে?
বৃহস্পতিবারও ডেমোক্র্যাটরা তাদের মামলার বিচারের জন্য যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করে যাবেন। এর পর ট্রাম্পের পক্ষের দল তার সমর্থনে বক্তব্য তুলে ধরবেন। এরইমধ্যে তার আইনজীবী এই যুক্তিতর্ককে বাতিল করে দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, তার (ট্রাম্পের) বিরুদ্ধে আনা এই মামলা অন্যায় এবং তিনি তার সমর্থকদের সহিংসতায় উসকে দেননি বলে দাবি করেছেন। ধারণা করা হচ্ছে, সাপ্তাহিক ছুটির আগ পর্যন্ত যুক্তিতর্ক চলবে যখন সিনেটররা প্রশ্ন করার সুযোগ পাবেন।
তবে তখন অভিশংসন প্রক্রিয়ার দায়িত্বে থাকা ব্যবস্থাপকেরা সাক্ষী হাজির বা সমন জারির আবেদন করে সময় বাড়ানোর প্রস্তাব করবেন সেটা পরিষ্কার নয়। যদিও ট্রাম্প এরই মধ্যে জানিয়েছেন, তিনি স্বেচ্ছায় সাক্ষ্য দেবেন না। দুই পক্ষের আইনপ্রণেতাদেরকেই বিচারের বিষয়টি দ্রæত করার অনুরোধ করা হয়েছে এবং ট্রাম্পকে দোষী সাব্যস্ত করা হবে কি হবে না সে বিষয়ে আগামী সপ্তাহে সিনেটে ভোট হতে পারে। চলতি সপ্তাহের শুরুতে মাত্র ছয় জন রিপাবলিকান বিচার সাংবিধানিক বলে ভোট দিয়েছিলেন যা সংখ্যার দিক থেকে কম। কারণ চূড়ান্ত বিচারে দোষী সাব্যস্ত করতে হলে ১৭ জন রিপাবলিকানদের ডেমোক্র্যাটদের সঙ্গে ভোট দিতে হবে।
বিচারে ওয়ারেন হেস্টিংসের নাম:
মঙ্গলবার সিনেটে শুনানির সময় ট্রাম্পের আইনজীবীরা দাবি করেন যে প্রেসিডেন্টের চেয়ার ছাড়ার পর আর কাউকে ইমপিচ করা যায় না। এই প্রসঙ্গেই ওই বিতর্কের কেন্দ্রে উঠে আসে হেস্টিংসের নাম। সে সময় হাউজে রাস্কিন জানান, আমেরিকান সংবিধানের অনেক ধারণাই ব্রিটেন থেকে ধার করা। এই প্রসঙ্গেই তিনি হেস্টিংসের নাম উল্লেখ করে তিনি জানান, হেস্টিংস ভারতে ব্রিটিশ শাসনের অন্যতম স্থপতি ছিলেন।
কিন্তু ১৭৮৫ সালে পদ থেকে পদত্যাগ করে ব্রিটেনে ফিরে যাওয়ার পরে শাসক থাকাকালীন অপকর্মের অভিযোগে ব্রিটেনে হাউজ অব কমন্সে তার ইমপিচমেন্টের শুনানিও চলে। হেস্টিংসের বিরুদ্ধে আর্থিক তছরূপ, জোরজুলুম করে টাকা আদায় এবং বিচার বিভাগকে ব্যবহার করে মহারাজ নন্দকুমারকে হত্যার অভিযোগ ওঠে। যদিও শেষ পর্যন্ত হাউজ অব লর্ডসে সেই সব অভিযোগ থেকে মুক্তি পান হেস্টিংস। (দৈনিক ইত্তেফাক)