হককথা ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্রের কলোরাডোতে একটি জন্মদিনের অনুষ্ঠানে গুলিতে ছয়জন নিহত হয়েছে। তাদের হত্যার পর বন্দুকধারী নিজেই নিজেকে গুলি করে আত্মহত্যা করেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। স্থানীয় সময় রোববার (৯ মে) দুপুরে কলোরাডোর স্প্রিংস শহরে এক জন্মদিনের পার্টিতে এ হত্যাকান্ড ঘটে। কলোরাডোর স্প্রিং পুলিশ জরুরি কল পাওয়ার পর একটি বাড়ি থেকে ছয়জনের লাশ উদ্ধার করে। এ ছাড়া সেখানে একজন পুরুষ গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত পড়ে ছিলেন। তাকে উদ্ধার করে পুলিশ স্থানীয় একটি হাসপাতালে নেয়ার পর তিনিও মারা যান।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ বলছে, একটি পরিবার তাদের হোম পার্কের বাড়িতে জন্মদিনের পার্টি চলাকালে অভিযুক্ত ব্যক্তি গাড়ি চালিয়ে ঘটনাস্থলে এসে লোকজনের ওপর গুলি চালানো শুরু করেন। এক বিবৃতিতে পুলিশ জানায়, সন্দেহভাজন বন্দুকধারী ওই পরিবারের এক নারীর বয়ফ্রেন্ড। তিনি স্বাভাবিকভাবেই হেঁটে বাড়ির ভেতর প্রবেশ করে গুলি চালিয়ে তার গার্লফ্রেন্ডসহ ছয়জনকে হত্যা করে। পরে নিজেও নিজের গুলিতে মারা যান। ‘আমরা এর কারণ অনুসন্ধানে কাজ করে যাচ্ছি।’
পুলিশ জানিয়েছে, স্থানীয় সময় দুপুর ১২টা ১৮ মিনিটে ক্যান্টারবুরি মোবাইল হোম পার্ক থেকে একটি ফোনকল পায়। ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পুলিশ ছয়জন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির মরদেহসহ গুরুতর আহতাবস্থায় একজনকে দেখতে পান। আহত ব্যক্তিকে স্থানীয় হাসপাতালে পাঠানো হলে, সেখানে তার মৃত্যু হয়।’
এই হত্যাকান্ডকে ‘হিতাহিত জ্ঞানহীন সহিংসতা’ উল্লেখ করে কলোরাডো স্প্রিংসের মেয়র জন সুদারস বলেন, প্রাণহানির ঘটনায় আমরা শোকাহত। সেই সঙ্গে যারা আহত হয়েছেন এবং যারা স্বজন হারিয়েছেন, তাদের জন্য আন্তরিকভাবে প্রার্থনা করছি।
এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়, হামলার ঘটনায় কোনো শিশু আহত হয়নি। পরিবারের অন্য সদস্যরা এখন শিশুদের দেখভাল করছে। নিহতদের পরিচয় জনসম্মুখে প্রকাশ করেনি পুলিশ। হামলাকারীর পরিচয় এখনও প্রকাশ করা হয়নি। এ ব্যাপারে তদন্ত চলছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। নিহতরা সবাই প্রাপ্তবয়স্ক। তবে ঘটনাস্থলে শিশুও ছিল।
কলোরাডো স্প্রিং পুলিশের প্রধান ভিন্স নিস্কি বলেন, ‘বন্দুক হামলার ঘটনার তদন্তের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হামলার যে বর্ণনা দিয়েছেন তা খুবই ভয়ংকর। ‘আমরা প্রত্যাশা করি, আমাদের কমিউনিটিতে এমন ঘটনা আর ঘটবে না।’
কলোরাডো স্প্রিংয়ের মেয়র জন সোথারস এমন সহিংসতাকে নির্বোধের কাজ উল্লেখ করে নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন।
স্থানীয় হোম পার্কের এক বাসিন্দা জানান, তারা মধ্যরাতে গুলির শব্দে ঘুম থেকে উঠেছেন। এতো পরিমাণ গুলি হচ্ছিল যে, তিনি সেটাকে বজ্রপাত ভেবেছিলেন।
উল্লেখ্য, এর আগে চলতি বছরের মার্চে কলোরাডোর বোল্ডার শহরে একটি মুদি দোকানের ভেতরে গুলিবর্ষণের ঘটনায় ১০ জন নিহত হয়েছিলেন। সন্দেহভাজন বন্দুকধারীকে পরে আটক করা হয়েছিল। অভিযুক্ত বর্তমানে হত্যা মামলায় বিচারাধীন।
আরো উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্র এমন বন্দুক হামলা প্রায়ই ঘটতে দেখা গেছে। গত মাসে দেশটির প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বন্দুক সহিংসতাকে মহামারি হিসেবে উল্লেখ করেছেন। এ বিষয়টি যুক্তরাষ্ট্রের জন্য ‘আন্তর্জাতিকভাবে বিব্রতকর’ বলেও বর্ণনা করেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের গান ভায়োলেন্স আর্কাইভের তথ্যমতে, গত বছর দেশটিতে আত্মহত্যা ও বন্দুক হামলায় ৪৩ হাজার মানুষ নিহত হয়েছে। সূত্র: বিবিসি, এনডিটিভি ও কলোরাডো সান।