নিউইয়র্ক ০৫:২৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৪ জুন ২০২৫, ৩১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

আইএসের নারী ব্যাটালিয়ন প্রধানকে ২০ বছরের কারাদণ্ড দিলো যুক্তরাষ্ট্র

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০৭:০৬:৫১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২ নভেম্বর ২০২২
  • / ১২৯ বার পঠিত

সিরিয়ায় ইসলামিক স্টেটের (আইএস) হয়ে যুদ্ধ করা এক যুক্তরাষ্ট্রের নারীকে ২০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের একটি আদালত। তিনি আইএসের একটি নারী ব্যাটালিয়নের নেতৃত্বে ছিলেন। মঙ্গলবার এলিসন ফ্লুক-একরেন (৪২) নামের ওই নারী জঙ্গিকে ভার্জিনিয়ার আলেকজান্দ্রিয়া ফেডারেল কোর্ট ওই সাজা দেয়। এ খবর দিয়েছে আরব নিউজ।

খবরে জানানো হয়, খ্রিষ্টান ধর্ম ত্যাগ করে মুসলিম হওয়া এলিসন আদালতের কাছে নিজের অপরাধের কথা স্বীকার করে নিয়েছেন। লিবিয়া, ইরাক ও সিরিয়ায় তিনি নারীদেরকে জঙ্গিবাদের প্রশিক্ষণ দিয়েছেন বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে। তরুণীদের তিনি যুদ্ধের প্রশিক্ষণ দিয়েছেন এবং আইএসের হয়ে যুদ্ধ করতে উৎসাহিত করেছেন। অন্তত তিনটি সন্ত্রাসী সংগঠনের হয়ে কাজ করেছেন বলে জানা গেছে। সব মিলিয়ে আট বছরেরও বেশি সময় ধরে সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তিনি।

মার্কিন এটর্নি রাজ পারেখ বলেন, এলিসন অল্প সময়ের মধ্যেই আইএসের রাণী হয়ে ওঠেন। তিনি তরুণ মেয়েদের ব্রেইনওয়াশ করেছেন যাতে তারা খুনী হয়ে উঠতে পারে। তার বিরুদ্ধে সাক্ষ দিয়েছে তার এক সন্তানও।

মায়ের বিরুদ্ধে নির্যাতনমূলক আচরণের অভিযোগও এনেছে ওই ছেলে। সে আদালতকে বলে, আমার মা একজন একটা ‘মনস্টার’, তার নিজের সন্তানদের জন্য কোনো ভালোবাসাই নেই। তার নিজের কাজের জন্য কোনো দুঃখ নেই। তার হাতে আমার ভাই-বোনদের রক্ত, কষ্ট ও যন্ত্রণা লেগে আছে।
আইএসের ইসলামিক খেলাফতের শীর্ষ পর্যায়ের পদে ছিলেন এলিসন। এমন ঘটনা ছিল একেবারেই বিরল। জন্মের পর তার নাম ছিল এলিসন ব্রুক। তিনি ছাত্র জীবনে ছিলেন প্রতিভাবান। তার প্রথম বিয়ে ভেঙে গেলে তিনি ভলকান একরেনকে বিয়ে করেন। এরপরই ধর্ম ত্যাগ করে মুসলিম হন তিনি। তাদের পাঁচ ছেলে মেয়ে রয়েছে। ২০০৮ সালে এই পরিবারটি মিশরে এবং ২০১১ সালে লিবিয়ায় চলে যায়। আস্তে আস্তে সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে পরিচিত হন এলিসন। প্রথম দিকে তিনি সন্ত্রাসীদের মার্কিন ডকুমেন্টস অনুবাদ করে দিয়ে সাহায্য করতেন। এভাবেই ক্রমশ তিনি উপরে উঠতে শুরু করেন।

২০১২ সালের দিকে এই পরিবারটি ইরাক, তুরস্ক ও সিরিয়ার মধ্যে ঘোরাফেরা শুরু করে। এক পর্যায়ে আইএসের সদস্য হওয়ার পর মসুলে স্থায়ীভাবে বাস করতে থাকে। তার স্বামী ফ্লুক একরেন ছিলেন ইসলামিক স্টেটের স্নাইপার ইউনিটের সদস্য। ২০১৫ সালের দিকে তিনি মারা যান। এরপর এলিসন তার ১৩ বছরের মেয়েকে এক আইএস সদস্যদের সঙ্গে বিয়ে দেন। এলিসন নিজেও এরপর আরও তিনবার বিয়ে করেন। এরমধ্যে তার এক স্বামী ছিলেন ইসলামিক স্টেটের সামরিক নেতা। ২০১৭ সালে তার অধীনেই ছিল রাক্কা।

ওই বছরই আইএসের নারী ব্যাটালিয়নের প্রধান হন এলিসন। এই ব্যাটালিয়নের নাম ছিল খাতিবা নুসায়বাহ। এর অধীনে অন্তত ১০০ নারীকে জঙ্গি প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। একে-৪৭সহ গ্রেনেড হামলার প্রশিক্ষণ নেয় এই মেয়েরা। আত্মঘাতী হামলার প্রশিক্ষণও দিতেন এলিসন।

Tag :

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

আইএসের নারী ব্যাটালিয়ন প্রধানকে ২০ বছরের কারাদণ্ড দিলো যুক্তরাষ্ট্র

প্রকাশের সময় : ০৭:০৬:৫১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২ নভেম্বর ২০২২

সিরিয়ায় ইসলামিক স্টেটের (আইএস) হয়ে যুদ্ধ করা এক যুক্তরাষ্ট্রের নারীকে ২০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের একটি আদালত। তিনি আইএসের একটি নারী ব্যাটালিয়নের নেতৃত্বে ছিলেন। মঙ্গলবার এলিসন ফ্লুক-একরেন (৪২) নামের ওই নারী জঙ্গিকে ভার্জিনিয়ার আলেকজান্দ্রিয়া ফেডারেল কোর্ট ওই সাজা দেয়। এ খবর দিয়েছে আরব নিউজ।

খবরে জানানো হয়, খ্রিষ্টান ধর্ম ত্যাগ করে মুসলিম হওয়া এলিসন আদালতের কাছে নিজের অপরাধের কথা স্বীকার করে নিয়েছেন। লিবিয়া, ইরাক ও সিরিয়ায় তিনি নারীদেরকে জঙ্গিবাদের প্রশিক্ষণ দিয়েছেন বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে। তরুণীদের তিনি যুদ্ধের প্রশিক্ষণ দিয়েছেন এবং আইএসের হয়ে যুদ্ধ করতে উৎসাহিত করেছেন। অন্তত তিনটি সন্ত্রাসী সংগঠনের হয়ে কাজ করেছেন বলে জানা গেছে। সব মিলিয়ে আট বছরেরও বেশি সময় ধরে সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তিনি।

মার্কিন এটর্নি রাজ পারেখ বলেন, এলিসন অল্প সময়ের মধ্যেই আইএসের রাণী হয়ে ওঠেন। তিনি তরুণ মেয়েদের ব্রেইনওয়াশ করেছেন যাতে তারা খুনী হয়ে উঠতে পারে। তার বিরুদ্ধে সাক্ষ দিয়েছে তার এক সন্তানও।

মায়ের বিরুদ্ধে নির্যাতনমূলক আচরণের অভিযোগও এনেছে ওই ছেলে। সে আদালতকে বলে, আমার মা একজন একটা ‘মনস্টার’, তার নিজের সন্তানদের জন্য কোনো ভালোবাসাই নেই। তার নিজের কাজের জন্য কোনো দুঃখ নেই। তার হাতে আমার ভাই-বোনদের রক্ত, কষ্ট ও যন্ত্রণা লেগে আছে।
আইএসের ইসলামিক খেলাফতের শীর্ষ পর্যায়ের পদে ছিলেন এলিসন। এমন ঘটনা ছিল একেবারেই বিরল। জন্মের পর তার নাম ছিল এলিসন ব্রুক। তিনি ছাত্র জীবনে ছিলেন প্রতিভাবান। তার প্রথম বিয়ে ভেঙে গেলে তিনি ভলকান একরেনকে বিয়ে করেন। এরপরই ধর্ম ত্যাগ করে মুসলিম হন তিনি। তাদের পাঁচ ছেলে মেয়ে রয়েছে। ২০০৮ সালে এই পরিবারটি মিশরে এবং ২০১১ সালে লিবিয়ায় চলে যায়। আস্তে আস্তে সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে পরিচিত হন এলিসন। প্রথম দিকে তিনি সন্ত্রাসীদের মার্কিন ডকুমেন্টস অনুবাদ করে দিয়ে সাহায্য করতেন। এভাবেই ক্রমশ তিনি উপরে উঠতে শুরু করেন।

২০১২ সালের দিকে এই পরিবারটি ইরাক, তুরস্ক ও সিরিয়ার মধ্যে ঘোরাফেরা শুরু করে। এক পর্যায়ে আইএসের সদস্য হওয়ার পর মসুলে স্থায়ীভাবে বাস করতে থাকে। তার স্বামী ফ্লুক একরেন ছিলেন ইসলামিক স্টেটের স্নাইপার ইউনিটের সদস্য। ২০১৫ সালের দিকে তিনি মারা যান। এরপর এলিসন তার ১৩ বছরের মেয়েকে এক আইএস সদস্যদের সঙ্গে বিয়ে দেন। এলিসন নিজেও এরপর আরও তিনবার বিয়ে করেন। এরমধ্যে তার এক স্বামী ছিলেন ইসলামিক স্টেটের সামরিক নেতা। ২০১৭ সালে তার অধীনেই ছিল রাক্কা।

ওই বছরই আইএসের নারী ব্যাটালিয়নের প্রধান হন এলিসন। এই ব্যাটালিয়নের নাম ছিল খাতিবা নুসায়বাহ। এর অধীনে অন্তত ১০০ নারীকে জঙ্গি প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। একে-৪৭সহ গ্রেনেড হামলার প্রশিক্ষণ নেয় এই মেয়েরা। আত্মঘাতী হামলার প্রশিক্ষণও দিতেন এলিসন।