অট্টালিকার ভারে ডুবে যেতে পারে নিউইয়র্ক সিটি

- প্রকাশের সময় : ০১:২৫:০৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ মে ২০২৩
- / ১১১ বার পঠিত
হককথা ডেস্ক : একদিকে বৈশ্বিক নগরায়ণের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে গড়ে উঠছে গগনচুম্বী ইমারত, অন্যদিকে জলবায়ু পরিবর্তনে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির সঙ্গে বাড়ছে প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঝুঁকি; সামগ্রিক এই প্রভাবে আক্ষরিক অর্থেই ডুবতে বসছে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহর। নতুন এক গবেষণার বরাতে জানা গেছে, নিউইয়র্ক জুড়ে যে কয়েক লাখ ইমারত গড়ে উঠেছে, সেগুলোর ওজনে দেবে যাচ্ছে শহরটির উপরিতল। এই প্রক্রিয়া ৮৫ লাখ মানুষের শহর নিউ ইয়র্ককে ফেলে দিচ্ছে ঝুঁকির মুখে। কারণ শহরের চারপাশ ঘিরে বৈশ্বিক হারের তুলনায় দ্বিগুণ গতিতে বাড়ছে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা। ২০৫০ সাল নাগাদ এই উচ্চতা আট থেকে ৩০ ইঞ্চি পর্যন্ত বাড়তে পারে। বিজ্ঞানীদের আশঙ্কা, মানবসৃষ্ট জলবায়ু সংকটের কারণে ঘনঘন অতিবৃষ্টি, নরইস্টার (শক্তিশালী সাইক্লোন) ও হারিকেনের মতো দুর্যোগ আসবে আটলান্টিক মহাসাগরসংলগ্ন নিউ ইয়র্কে।
গবেষণা দলের প্রধান লেখক ইউএস জিওলজিক্যাল সার্ভের ভূপদার্থবিদ টম পারসনস বলেন, সমুদ্র থেকে আমরা দূরে সরে যাচ্ছি। কিন্তু নিউইয়র্কের স্যান্ডি ও ইডায় কয়েকটি বড় হারিকেনের ঘটনা ঘটেছিল, যার প্রভাবে তখন প্রচুর বৃষ্টিতে শহর প্লাবিত হয়। নগরায়ণের কিছু প্রভাবেও শহরে পানি প্রবেশ করেছিল। নতুন ঐ গবেষণা প্রতিবেদনটি ছাপা হয়েছে আর্থ ফিউচার জার্নালে। উপকূল, হ্রদ ও নদী তীরবর্তী এলাকায় বহুতল ভবন কীভাবে ভবিষ্যৎ বন্যার ঝুঁকি তৈরি করেত পারে এবং সম্ভাব্য ক্ষতিকর প্রভাব মোকাবিলায় কী পদক্ষেপ নেওয়া উচিত, সেটি তুলে ধরাই ছিল এই গবেষণার লক্ষ্য। এজন্য গবেষকরা নিউইয়র্ক শহরের ভবনের সংখ্যা এবং সেগুলোর ওজন পরিমাপ করেন। তাদের হিসাবে, নিউইয়র্কের পাঁচটি প্রশাসনিক এলাকা জুড়ে ১০ লাখ ৮৪ হাজার ৯৫৪টি ভবন রয়েছে, যেগুলোর ওজন প্রায় ১ দশমিক ৬৮ ট্রিলিয়ন পাউন্ড (৭৬২ বিলিয়ন কেজি), যা সম্পূর্ণ যাত্রী বোঝাই ১৯ লাখ বোয়িং ৭৪৭-৪০০ উড়োজাহাজের ওজনের সমান। এরপর গবেষণা দলটি ‘সিমুলেশন মডেল’ ব্যবহার করে মাটিতে বিশাল এই ওজনের প্রভাবগুলো জানার চেষ্টা করেন।
আরোও পড়ুন । কিংবদন্তী যুক্তরাষ্ট্রের পপ গায়িকা টিনা টার্নার মারা গেছেন
টম পারসনস বলেন, বিশ্লেষণে দেখা যায় শহরটি বছরে গড়ে এক থেকে দুই মিলিমিটার নিচু হয়ে যাচ্ছে। কিছু কিছু এলাকায় এই মাত্রা আরো বেশি। সেখানে বছরে প্রায় সাড়ে চার মিলিমিটার পর্যন্তও দেবে যাচ্ছে। তবে সব জায়গায় এই নিচু হয়ে যাওয়ার বিষয়টি কেবল ভবনগুলোর ওজনের কারণে নয়। ভূপদার্থবিদ টম পারসনস জানান, কিছু ক্ষেত্রে খুব নরম মাটি ও কৃত্রিমভাবে ভরাট করা হয়েছে এমন জায়গায় ভবন তৈরি করা হয়েছে। আরো কিছু ক্ষেত্রে বিষয়টি ব্যাখ্যা করাও কঠিন। কারণ এর পেছনে অনেকগুলো বিষয় রয়েছে, যেমন—শেষ বরফ যুগের পরে হিমবাহ গলে যাওয়া ও ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলনের মতো বিষয়গুলো জড়িত। এ গবেষণা বলছে, ম্যানহাটন, ব্রুকলিন ও কুইনসের মতো এলাকার কিছু জায়গায় ভূপৃষ্ঠ দেবে যাওয়ার মাত্রা গড় হারের চেয়েও বেশি। সূত্র : দৈনিক ইত্তেফাক
বেলী/হককথা