যুক্তরাষ্ট্রে দুই কোটি ৫৭ লাখ বেকার : শ্রম বিভাগে আবেদন জমা পড়া অব্যাহত

- প্রকাশের সময় : ০২:২৬:৩৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৮ মে ২০২০
- / ১০৯ বার পঠিত
এমদাদ চৌধুরী দীপু: যুক্তরাষ্ট্রে নানা খাতে ক্রমেই বৃদ্বি পাচ্ছে লোকসান, বৃদ্বি পাচ্ছে কর্মহীনের সংখ্যা। আরো ৩৭লাখ আমেরিকান বেকারত্ব ভাতার জন্য আবেদন জমা দিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রে এখন কর্মহীনের সংখ্যা দুই কোটি ৫৭ লাখের উপরে। গত দুই মাসে আবেদনের বন্যা বয়ে গেছে শ্রমবিভাগে। কর্মহীনের সংখ্যা আরো কত বাড়বে এ ব্যাপারে বলতে পারছেন না সংশ্লিষ্টরা। যুক্তরাষ্ট্রের এই নাজুক অবস্থাকে তুলনা করা হচ্ছে ১৯৪৮ সালের নাজুক অবস্থার সাথে।
ফক্স নিউজের তথ্যমতে আড়াই কোটি আবেদন শুধু বেসরকারী সেক্টরের বেকারদের সংখ্যা। যুক্তরাষ্ট্রের শ্রম বিভাগ বৃহস্পতিবার (৭ মে) জানিয়েছে, আমেরিকান কর্মজীবীদের উপর করোনাভাইরাস মহামারী দ্বারা আক্রান্তদের কর্মহীনতা অব্যাহত আছে, একই সাথে অর্থনৈতিক নাজুক অবস্থার অবনতি অব্যাহত রয়েছে।
বিগত কয়েক দশকেও যুক্তরাষ্ট্রে এমন মহা মন্ধায় পড়েনি। কর্মহীনতা ঊর্ধ্বমুখী হওয়ার ফলে অর্থনৈতিকভাবে ক্ষমতাশীল দেশ আমেরিকার লোকসান বৃদ্বি অব্যাহত রয়েছে। গত ১৫ মার্চের পর বলা চলে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতির চাকা অচল হয়ে গেছে। প্রতিটি রাজ্য লকডাউন হয়ে আছে। কিছু রাজ্য লকডাউন শিথিল করলেও স্বাভাবিক জীবন যাত্রায় ফিরা সম্ভব হচ্ছেনা।
ফেডারেল রিজার্ভের এক মূখপাত্র জেরাম পাওয়েল বলেছেন যুক্তরাষ্ট্র বৈশ্বিক করোনা মহামারীমূক্ত না হওয়া পর্যন্ত অর্থনীতির ভবিষ্যত নিয়ে কিছুই ভাবা যাচ্ছে না।
এদিকে আনএমপ্লয়মেন্ট আবেদন নিয়ে বিড়ম্বনা এখনো কাটেনি বাংলাদেশী-আমেরিকানসহ আমেরিকানদের। এর কারন হিসেবে সংশিষ্টরা বলছেন শ্রমবিভাগে এত বিপুল আবেদন নিস্পত্তির জন্য পর্যাপ্ত লোকবল নেই, তারা যাদেরকে এই কাজের জন্য নিয়োগ দিচ্ছেন তাদের অনভিজ্ঞতা, অদক্ষতার কারনে অনেক অসঙ্গতি এবং বিশৃংখল ব্যবস্থাপনার খবর প্রতিনিয়ত পাওয়া যাচ্ছে। এর আগে দুই কোটি ২০ লাখ কর্মহীন বেকার ভাতার জন্য আবেদন করেছিলেন। নতুন করে ৩৭লাখ আবেদনের ফলে হিমশিম খাচ্ছে শ্রমবিভাগ।
তবে বৈশ্বিক কর্মহীনতা (করোনা) মহামারী সহায়তা বা পেনডামিক আনএমপ্লয়মেন্ট এসিসটেন্স সংক্ষেপে- পোয়া, এর মাধ্যমে আবেদন নিস্পত্তি হওয়া কর্মহীনরা পাচ্ছেন সপ্তাহে ৬শ ডলার, এটি ফেডারেল থেকে পাচ্ছেন তারা, এটি আনএমপ্লয়মেন্ট আবেদনে সাপ্তাহিক সহায়তার (বেকার ভাতা) চেয়ে আলাদা সহায়তা। ইতিমধ্যে এই অর্থ কেউ পেয়েছেন, কেউ পাননি। আনএম্পøয়মেন্ট আবেদন নিয়ে অনেকের মনে রয়েছে নানা প্রশ্ন এবং কৌতুহল, এছাড়া অনেকে বিষয়টি জটিল মনে করছেন, প্রশ্নের জবাব পাচ্ছেন না কেউ কেউ।
এই বাস্তবতায় এগিয়ে এসেছেন একজন বাংলাদেশী, তিনি বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দিচ্ছেন, সহায়তা করছেন আবেদন ফরম জমা দেয়ার ব্যাপারে। জয়দেব গায়েন নামের এই সমাজকর্মী এ পর্যন্ত ৫শতাধিক মানুষকে সহায়তা করেছেন। গত ২১ মার্চ থেকে তিনি কাজ শুরু করেছেন। এই প্রতিবেদককে এসব তথ্য দিয়ে জয়দেব জানান কারো হতাশ হওয়ার কিছু নেই। তাড়াহুড়ো করে আবেদন জমা না দেয়ার অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, তাড়াহুড়ো করলে ভুল হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তিনি বলেন, আবেদন কখন জমা হয়েছে সেটি বিষয় নয়, যখন থেকে বেকার হয়েছেন সেই সময় থেকে তাকে সহায়তা দেয়া হবে। তিনি বলেন, লোকবলের কারনে প্রত্যাশিত সেবা দিতে পারছেনা শ্রম বিভাগ, তবে পর্যায়ক্রমে সবাই বেকারভাতা, এবং মহামারী সুবিধা পাবেন বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।
আনএমপ্লয়মেন্ট সংক্রান্ত যে কোন প্রয়োজনে ফোন করা যাবে, জয়দেব গায়েন-এর ৩৪৭-৫৩৬-৫১০৭ নাম্বারে।
মুনা হটলাইনঃ এদিকে নর্থ আমেরিকার অন্যতম বাংলাদেশী শীর্ষ সংগঠন মুসলিম উম্মাহ অব নর্থ আমেরিকা (মুনা) আনএমপ্লয়মেন্ট আবেদনকারীদের সহায়তা দেয়ার জন্য একটি হটলাইন খুলেছে।
যার নাম্বার হচ্ছে: ৮৭৭-৬৮৬-২৭৭৪। এছাড়া মুনা’র পক্ষ থেকে করোনায় আক্রান্তদের জন্যআরো নানা সহায়তা রয়েছে।