নিউইয়র্ক ০৯:৩৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ০২ নভেম্বর ২০২৪, ১৮ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

বিশ্বব্যাপী যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থকে ঝুঁকিতে ফেলছে ইসরায়েল

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ১১:২৮:৫৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৩ মার্চ ২০২৪
  • / ২৫ বার পঠিত

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সম্প্রতি দাবি করেন, ৬ অক্টোবরের আগে মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের যে ধরন ছিল, তা আর সে অবস্থায় আর ফিরে যাচ্ছে না। তবে বাস্তবতা হলো, বাইডেন তাঁর মধ্যপ্রাচ্য নীতিতে কোনো পরিবর্তন আনছেন না; বিশেষ করে ইসরায়েলের সঙ্গে ওয়াশিংটনের বিশেষ সম্পর্ক নিয়ে তো নয়ই। ১৯৪৮ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে ইসরায়েলকে অব্যাহতভাবে সমর্থন করে যাওয়া যুক্তরাষ্ট্রের একটি স্বাভাবিক কাজ। ১৯৬২ সালে তৎকালীন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডি এর নাম দিয়েছিলেন ‘বিশেষ সম্পর্ক’। তিনি বলেছিলেন, এ সম্পর্ককে কেবল ব্রিটেনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বিস্তৃত পরিসরের সম্পর্কের সঙ্গে তুলনা করা যেতে পারে।

শনিবার ফরেন পলিসিতে প্রকাশিত প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। ২০১৩ সালে ভাইস প্রেসিডেন্ট থাকাকালে বাইডেন বলেছিলেন, ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক কেবল কোনো দীর্ঘকালীন নৈতিক ভিত্তির বিষয় নয়, এটা কৌশলগত অঙ্গীকার।

বাইডেনের মতে, ইসরায়েল না থাকলে তারা মধ্যপ্রাচ্যে এ রকম আর কাউকে তৈরি করতে পারবেন না। ২০২০ সালে তৎকালীন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সরাসরি বলেন, ‘ইসরায়েলকে রক্ষা না করলে আমরা মধ্যপ্রাচ্যেই থাকব না।’

যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের মধ্যে এ সম্পর্ক অতুলনীয় পরিমাণ ত্রাণ সরবরাহের ওপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে। যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক সহায়তার সবচেয়ে বেশি পায় ইসরায়েল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এ পর্যন্ত তারা ৩০০ বিলিয়ন ডলারের বেশি এ ধরনের সহায়তা পেয়েছে। এর বাইরে ইসরায়েলের সঙ্গে প্রতিবছর কমবেশি ৩ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র ও নিরাপত্তা সুবিধা দিতে চুক্তি করে যুক্তরাষ্ট্র। তবে এ ধরনের নিঃশর্ত সম্পর্কের প্রতিদানে যুক্তরাষ্ট্র কী পেয়েছে, তা পরিষ্কার নয়। বিশ্লেষকরা বলছেন, ইসরায়েলের কারণে বিশ্বব্যাপী যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থ বিপন্ন হয়ে পড়ছে।

যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটর লিন্ডসে গ্রাহাম একদা বলেছিলেন, মধ্যপ্রাচ্যে ‘যুক্তরাষ্ট্রের চোখ ও কান’ হলো ইসরায়েল। দুই দেশ গোয়েন্দা তথ্য শেয়ার করে। কিন্তু গত পাঁচ মাসের বেশি সময় ধরে চলা গাজা যুদ্ধ দুই দেশের সম্পর্কে বেশ কিছু নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। ওয়াশিংটন বলছে, মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েলের কারণে তাদের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। এ যুদ্ধ যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যপ্রাচ্য নীতির ব্যর্থতাকে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে।

এদিকে এএফপি জানায়, গাজায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা কাউন্সিলে নতুন একটি খসড়া প্রস্তাব উত্থাপন করার কথা ছিল। তবে তা সোমবার পর্যন্ত পিছিয়েছে। শুক্রবার একটি প্রস্তাব তোলে যুক্তরাষ্ট্র। এতে ভেটো দেয় রাশিয়া ও চীন। নতুন প্রস্তাবটি তুলতে পারে ফ্রান্স।

ইসরায়েলের বোমা হামলায় মিসর সীমান্তবর্তী গাজার রাফা এলাকায় পাঁচ শিশুসহ কয়েকজন নিহত হয়েছেন। বার্তা সংস্থা আনাদোলু জানায়, এরই মধ্যে গাজায় মৃতের সংখ্যা ৩২ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। আহত হয়েছেন ৭৪ হাজারের বেশি। হতাহতের এ সংখ্যার বাইরেও কয়েক হাজার মানুষ বিভিন্ন ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়ে আছেন। তাদের প্রায় সবাই মারা গেছেন বলেই ধারণা করা হয়। গাজার ৮৫ শতাংশ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী পশ্চিম তীর থেকে আরও ১৫ ফিলিস্তিনিকে গ্রেপ্তার করেছে। পশ্চিম তীরের হেবরন, রামাল্লা, বেথেলহেম, তুবাস, নাবলুস ও জেরুজালেমে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

দ্য গার্ডিয়ান জানায়, হামাসের হাতে আটক অন্তত ৮১ জন ইসরায়েলি জিম্মির প্রায় ৬০০ স্বজন জো বাইডেনের কাছে চিঠি পাঠিয়েছেন। চিঠিতে তারা জিম্মি উদ্ধারে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর প্রচেষ্টায় হতাশা প্রকাশ করে তাঁর ওপর চাপ প্রয়োগের জন্য বাইডেনকে অনুরোধ জানান।

গাজা সীমান্ত সফরে গুতেরেস
জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের শনিবার গাজা সীমান্ত এলাকা সফর করার কথা। সফরকালে গুতেরেস আবারও যুদ্ধবিরতি আহ্বান জানাবেন বলে মনে করা হচ্ছে।

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

বিশ্বব্যাপী যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থকে ঝুঁকিতে ফেলছে ইসরায়েল

প্রকাশের সময় : ১১:২৮:৫৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৩ মার্চ ২০২৪

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সম্প্রতি দাবি করেন, ৬ অক্টোবরের আগে মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের যে ধরন ছিল, তা আর সে অবস্থায় আর ফিরে যাচ্ছে না। তবে বাস্তবতা হলো, বাইডেন তাঁর মধ্যপ্রাচ্য নীতিতে কোনো পরিবর্তন আনছেন না; বিশেষ করে ইসরায়েলের সঙ্গে ওয়াশিংটনের বিশেষ সম্পর্ক নিয়ে তো নয়ই। ১৯৪৮ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে ইসরায়েলকে অব্যাহতভাবে সমর্থন করে যাওয়া যুক্তরাষ্ট্রের একটি স্বাভাবিক কাজ। ১৯৬২ সালে তৎকালীন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডি এর নাম দিয়েছিলেন ‘বিশেষ সম্পর্ক’। তিনি বলেছিলেন, এ সম্পর্ককে কেবল ব্রিটেনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বিস্তৃত পরিসরের সম্পর্কের সঙ্গে তুলনা করা যেতে পারে।

শনিবার ফরেন পলিসিতে প্রকাশিত প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। ২০১৩ সালে ভাইস প্রেসিডেন্ট থাকাকালে বাইডেন বলেছিলেন, ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক কেবল কোনো দীর্ঘকালীন নৈতিক ভিত্তির বিষয় নয়, এটা কৌশলগত অঙ্গীকার।

বাইডেনের মতে, ইসরায়েল না থাকলে তারা মধ্যপ্রাচ্যে এ রকম আর কাউকে তৈরি করতে পারবেন না। ২০২০ সালে তৎকালীন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সরাসরি বলেন, ‘ইসরায়েলকে রক্ষা না করলে আমরা মধ্যপ্রাচ্যেই থাকব না।’

যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের মধ্যে এ সম্পর্ক অতুলনীয় পরিমাণ ত্রাণ সরবরাহের ওপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে। যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক সহায়তার সবচেয়ে বেশি পায় ইসরায়েল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এ পর্যন্ত তারা ৩০০ বিলিয়ন ডলারের বেশি এ ধরনের সহায়তা পেয়েছে। এর বাইরে ইসরায়েলের সঙ্গে প্রতিবছর কমবেশি ৩ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র ও নিরাপত্তা সুবিধা দিতে চুক্তি করে যুক্তরাষ্ট্র। তবে এ ধরনের নিঃশর্ত সম্পর্কের প্রতিদানে যুক্তরাষ্ট্র কী পেয়েছে, তা পরিষ্কার নয়। বিশ্লেষকরা বলছেন, ইসরায়েলের কারণে বিশ্বব্যাপী যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থ বিপন্ন হয়ে পড়ছে।

যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটর লিন্ডসে গ্রাহাম একদা বলেছিলেন, মধ্যপ্রাচ্যে ‘যুক্তরাষ্ট্রের চোখ ও কান’ হলো ইসরায়েল। দুই দেশ গোয়েন্দা তথ্য শেয়ার করে। কিন্তু গত পাঁচ মাসের বেশি সময় ধরে চলা গাজা যুদ্ধ দুই দেশের সম্পর্কে বেশ কিছু নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। ওয়াশিংটন বলছে, মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েলের কারণে তাদের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। এ যুদ্ধ যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যপ্রাচ্য নীতির ব্যর্থতাকে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে।

এদিকে এএফপি জানায়, গাজায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা কাউন্সিলে নতুন একটি খসড়া প্রস্তাব উত্থাপন করার কথা ছিল। তবে তা সোমবার পর্যন্ত পিছিয়েছে। শুক্রবার একটি প্রস্তাব তোলে যুক্তরাষ্ট্র। এতে ভেটো দেয় রাশিয়া ও চীন। নতুন প্রস্তাবটি তুলতে পারে ফ্রান্স।

ইসরায়েলের বোমা হামলায় মিসর সীমান্তবর্তী গাজার রাফা এলাকায় পাঁচ শিশুসহ কয়েকজন নিহত হয়েছেন। বার্তা সংস্থা আনাদোলু জানায়, এরই মধ্যে গাজায় মৃতের সংখ্যা ৩২ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। আহত হয়েছেন ৭৪ হাজারের বেশি। হতাহতের এ সংখ্যার বাইরেও কয়েক হাজার মানুষ বিভিন্ন ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়ে আছেন। তাদের প্রায় সবাই মারা গেছেন বলেই ধারণা করা হয়। গাজার ৮৫ শতাংশ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী পশ্চিম তীর থেকে আরও ১৫ ফিলিস্তিনিকে গ্রেপ্তার করেছে। পশ্চিম তীরের হেবরন, রামাল্লা, বেথেলহেম, তুবাস, নাবলুস ও জেরুজালেমে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

দ্য গার্ডিয়ান জানায়, হামাসের হাতে আটক অন্তত ৮১ জন ইসরায়েলি জিম্মির প্রায় ৬০০ স্বজন জো বাইডেনের কাছে চিঠি পাঠিয়েছেন। চিঠিতে তারা জিম্মি উদ্ধারে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর প্রচেষ্টায় হতাশা প্রকাশ করে তাঁর ওপর চাপ প্রয়োগের জন্য বাইডেনকে অনুরোধ জানান।

গাজা সীমান্ত সফরে গুতেরেস
জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের শনিবার গাজা সীমান্ত এলাকা সফর করার কথা। সফরকালে গুতেরেস আবারও যুদ্ধবিরতি আহ্বান জানাবেন বলে মনে করা হচ্ছে।