আসেফ বারী ও শাহ নেওয়াজের নেতৃত্বে যোগ দিলেন নিউইয়র্কের লায়ন্সগণ
বর্ণাঢ্য আয়োজনে ফ্লোরিডায় লায়ন্স ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন অনুষ্ঠিত

- প্রকাশের সময় : ১১:৫৯:৫২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ জুলাই ২০২৫
- / ৮ বার পঠিত
বিশেষ প্রতিনিধি: উৎসবমুখর পরিবেশ আর বর্ণাঢ্য আয়োজনে যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা রাজ্যের অরল্যান্ডো শহরের ‘অরল্যান্ডো কনভেনশন সেন্টার’-এ অনুষ্ঠিত হলো ১০৭তম লায়ন্স ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন-২০২৫। গত ১২-১৭ জুলাই ছয় দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত এবারের কনভেনশনে বাংলাদেশ সহ বিশ্বের ১৯৫টি দেশের প্রায় ২০ হাজার প্রতিনিধি যোগ দেন। নিউইয়র্কের লায়ন ডিস্ট্রিক্ট ২০ আর২’-এর নব নির্বাচিত গভর্নর লায়ন আসেফ বারী টুটুল ও দ্বিতীয় ভাইস গভর্নর লায়ন শাহ নেওয়াজের নেতৃত্বে নিউইয়র্কের বাংলাদেশী লায়ন্স ক্লাবের বিপুল সংখ্যক লায়ন এই কনভেনশনে অংশ নেন। ফলে কনভেনশটি সেবামূলক সংগঠনগুলোর মধ্যে অন্যতম বৃহৎ মিলনমেলায় পরিণত হয়। এছাড়াও হাজার হাজার লায়নের উপস্থিতির ফলে ফ্লোরিডার অরল্যান্ডো শহর লায়ন্সদের শহরে পরিনত হয়। কনভেনশনের অনুষ্ঠানমালার মধ্যে মধ্যে মূল আকর্ষণ ছিলো বর্ণাঢ্য র্যালী। এছাড়াও ছিলো শুভেচ্ছা বিনিময়, বিষয়ভিত্তিক সেমিনার, নতুন নেতৃত্ব নির্বাচন প্রভৃতি।
কনভেনশনে লায়ন আসেফ বারী টুটুল ও লায়ন শাহ নেওয়াজের নিউইয়র্কের উল্লেখযোগ্য লায়নদের মধ্যে ছিলেন আবিদ হাবীব, রানো নেওয়াজ, মুনমুন হাসিনা বারী, শাহ শহীদুল হক, আহসান হাবীব, নুরুল আজীম, হাসান জিলানী, মশিউর রহমান, বেলাল আহমেদ, বদরুদ্দোজা সাগর, অনিক রাজ, আদিব বারী প্রমুখ।
এইবারের কনভেনশনটি বিশেষত ২০২৫-২০২৬ মেয়াদের নবনির্বাচিত লায়ন্স গভর্নরদের জন্য ছিলো অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। ১৩ জুলাই, রোববার রাতে প্রায় ৭৪০ জন নতুন গভর্নরের জন্য এক বর্ণাঢ্য ‘সেলিব্রেশন’ এর আয়োজন করা হয়। এই বিশেষ অনুষ্ঠানে অংগ্রহণকারী সকল গভর্নরকে লায়ন্স ইন্টারন্যাশনাল থেকে একই রঙের শার্ট প্রদান করা হয়, যা সংগঠনটির ঐক্যের প্রতীক বহন করে। কনভেনশন সেন্টারে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত প্রায় ৭৪০ জন নতুন গভর্নর একত্রিত হন। যোগ দেন তাদের পরিবার এবং সহকর্মীরাও। এতে অন্যান্য গভর্নরদের সাথে নিউইয়র্কের লায়ন ডিস্ট্রিক্ট ২০ আর২’-এর নব নির্বাচিত গভর্নর হিসেবে লায়ন আসেফ বারী টুটুলও তার পরিবার নিয়ে অংশগ্রহণ করেন। মনোজ্ঞ সঙ্গীত পরিবেশনা, সুস্বাদু খাবার এবং বৈচিত্রপূর্ণ আয়োজনের মাধ্যমে এই সেলিব্রেশনটি এক অবিস্মরণীয় অভিজ্ঞতা হিসেবে চিহ্নিত হয় লায়নদের মাঝে। এটি কেবল একটি সামাজিক আয়োজন ছিল না, বরং নতুন নেতৃত্বকে স্বাগত জানানোর এবং তাদের মধ্যে পারস্পরিক সৌহার্দ্য স্থাপনের এক চমৎকার সুযোগ তৈরি করেছে।
কনভেনশনের তৃতীয় দিন ১৪ জুলাই, সোমবার সকালে অনুষ্ঠিত হয় লায়ন্স কনভেনশনের অন্যতম আকর্ষণীয় কর্মসূচী ‘প্যারেড অফ নেশনস’। বিশ্বের প্রতিটি দেশের এবং লায়ন্স ইন্টারন্যাশনালের প্রতিটি ডিস্ট্রিক্টেও প্রতিনিধিরা তাদের নিজস্ব সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের প্রতীকী পোশাক পরিধান করে এই বর্ণিল শোভাযাত্রায় অংশ নেন। এই প্যারেডে লায়ন্স ইন্টারন্যাশনালের ইনকামিং প্রেসিডেন্ট এ.পি. সিং, প্রাক্তন প্রেসিডেন্টগণ এবং বিশ্বের অন্যান্য শীর্ষস্থানীয় লায়ন্স নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। এই বর্ণিল শোভাযাত্রায় নিউইয়র্কের লায়ন ডিস্ট্রিক্ট ২০ আর২’-এর নব নির্বাচিত গভর্নর লায়ন আসেফ বারী টুটুল ও দ্বিতীয় ভাইস গভর্নর লায়ন শাহ নেওয়াজের নেতৃত্বে নিউইয়র্কের বাংলাদেশী লায়নরা অংশ নেন। এসময় তাদের অনেকেই বাংলাদেশ ও আমেরিকার জাতীয় পতাকা বহন করেন। এছাড়াও প হাজার হাজার লায়ন্স সদস্য নিজ নিজ দেশের পতাকা হাতে, বিভিন্ন রঙের পোশাকে সেজে এই প্যারেডে অংশ নেন, যা বিশ্বজুড়ে লায়ন্সদের একতা ও বৈচিত্রের এক চমৎকার প্রদর্শনী ছিল। এটি শুধু একটি শোভাযাত্রা ছিল না, বরং মানবতার সেবায় নিবেদিত এই বিশাল পরিবারের বিশ্বজনীন বন্ধনের এক জীবন্ত প্রতিচ্ছবি। কনভেনশনে নিউইয়র্কের লায়ন ডিস্ট্রিক্ট ২০ আর২’-এর গভর্ণর হিসেবে আসেফ বারী টুটুলকে বিশেষভাবে সম্মানিত করা হয়।
১৫ জুলাই মঙ্গলবার ছিলো সার্টিফিকেশন এবং ভোটিং। এদিন বেলা ১২টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত চলে নতুন নেতৃত্ব নির্বাচন। এতে ডেলিগেটরা ভোটের মাধ্যমে তাদের নতুন নেতা নির্বাচন করেন।
কনভেনশনে লায়ন্স নেতৃবৃন্দ আশা প্রকাশ করে বলেন, এবারের কনভেনশনে নবীন ও উদ্যমী নেতৃত্বের আগমন লায়ন্স ইন্টারন্যাশনালের ভবিষ্যৎ পথচলায় নতুন গতি আনবে। পাশাপাশি সংগঠনের সেবামূলক কার্যক্রমকে আরও শক্তিশালী করবে এবং নিজ নিজ দেশের কমিউনিটির উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। উল্লেখ্য, লায়ন্স ক্লাব ইন্টারন্যাশনাল সারা বিশ্বে স্বাস্থ্য, শিক্ষা, পরিবেশ এবং যুবকদের ক্ষমতায়নের মতো গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রগুলোতে কাজ করে যাচ্ছে। নবনির্বাচিত গভর্নররা এই লক্ষ্য পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবেন বলে সংশ্লিস্টরা আশাবাদ ব্যক্ত করেন। লায়ন্সদের অভিমত অরল্যান্ডোর এই সম্মেলন কেবল একটি মিলনমেলা নয়, এটি বিশ্বজুড়ে মানবিক সেবার অঙ্গীকারকে পুনরুজ্জীবিত করার একটি গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম। ফলে লায়ন্স ইন্টারন্যাশনাল আগামী দিনগুলোতে আরও বৃহত্তর পরিসরে মানব কল্যাণে অবদান রাখতে সক্ষম হবে।