নিউইয়র্ক ০৭:৩৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ০৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ২১ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

জালিয়াতি করে রাতারাতি বিলিয়নিয়ার, এলিজাবেথের ১১ বছরের জেল

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০৫:০৪:৩০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২০ নভেম্বর ২০২২
  • / ৩৪ বার পঠিত

স্বাস্থ্য প্রযুক্তি বিষয়ক প্রতিষ্ঠান থেরানোসের প্রতিষ্ঠাতা এলিজাবেথ হোমসকে প্রতারণায় দায়ে ১১ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার একটি আদালত। সিলিকন ভ্যালির এই তারকা দাবি করেছিলেন, তাঁর প্রতিষ্ঠানে যে প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়, তা দিয়ে মাত্র কয়েক ফোঁটা রক্তের মাধ্যমে রোগ নির্ণয় করা সম্ভব।

স্থানীয় সময় শুক্রবার (১৮ নভেম্বর) রায় ঘোষণার সময় ৩৮ বছর বয়সী অন্তঃসত্ত্বা হোমস অশ্রুসিক্ত নয়নে আদালতকে বলেন, যাঁরা প্রতারিত হয়েছেন, তাঁদের জন্য তিনি ‘গভীর সমবেদনা’ অনুভব করছেন।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি আজ শনিবার এক প্রতিবেদনে বলেছে, তিন মাস ধরে চলা বিচারকাজের পর জানুয়ারিতেই তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছিল। হোমস এই কারাদণ্ডের বিরুদ্ধে আপিল করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

এলিজাবেথ হোমসকে বলা হতো ‘পরবর্তী স্টিভ জবস’। তিনি এক সময় বিশ্বের সর্বকনিষ্ঠ ধনকুবের ছিলেন। হোমস ১৯ বছর বয়সে স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটি থেকে পড়াশোনা ছেড়ে দিয়ে থেরানোস চালু করেন। প্রতিষ্ঠানটি রোগ নির্ণয়ের ক্ষেত্রে বিরাট বিপ্লব আনতে পারে বলে দাবি করার পরে কোম্পানির শেয়ারের দাম দ্রুত বেড়ে যায়। কিন্তু হোমস যে প্রযুক্তির কথা বলেছিলেন তা ছিল ভুয়া। পরবর্তীতে মামলায় জর্জরিত প্রতিষ্ঠানটি ২০১৮ সালের মধ্যে বিলুপ্ত হয়ে যায়।

ক্যালিফোর্নিয়ার সান হোসে আদালতের প্রসিকিউটরেরা বলেছেন, এলিজাবেথ হোমস জেনে বুঝে চিকিৎসক ও রোগীদের থেরানোসের প্রযুক্তি ও যন্ত্র সম্পর্কে বিভ্রান্ত করেছেন। হোমস দাবি করেছিলেন, তাঁর প্রতিষ্ঠানটি কয়েক ফোঁটা রক্ত পরীক্ষা করে ক্যানসার, ডায়াবেটিস এবং অন্যান্য রোগ শনাক্ত করতে পারে।

বিচারকেরা আরও বলেছেন, হোমস তাঁর প্রতিষ্ঠানের বিনিয়োগকারীদের কাছে প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে ব্যাপক অতিরঞ্জিত কথা বলেছেন।

বিচারকেরা শেষ পর্যন্ত এলিজাবেথ হোমসকে চারটি প্রতারণার জন্য দোষী সাব্যস্ত করেছেন। এ জন্য তাঁরা সর্বোচ্চ ২০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন। তবে তাঁরা তাঁকে অন্য চারটি অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করেননি এবং আরও তিনটি অভিযোগর রায় এখনো দেননি।

বিচারক এডওয়ার্ড ডেভিলা শুক্রবার তাঁর কারাদণ্ডের রায় পড়ার আগে হোমস আদালতে একটি বক্তৃতা পড়েন। সে সময় তিনি অশ্রুসিক্ত নয়নে বিনিয়োগকারী এবং রোগীদের কাছে ক্ষমা চান। হোমস বলেন, ‘আমি আমার ব্যর্থতার জন্য মানসিকভাবে খুবই বিপর্যস্ত। আমি তাঁদের জন্য গভীর বেদনা অনুভব করছি, কারণ তাঁদের বিপর্যয়ের জন্য আমার ব্যর্থতাই দায়ী।’

এলিজাবেথ হোমস গাঢ় রঙের ব্লাউজ এবং কালো স্কার্ট পরে আদালতে হাজির হয়েছিলেন। রায় ঘোষণার পর তিনি তাঁর বাবা, মা ও সঙ্গীকে আলিঙ্গন করেন।

বিচারক হোমসকে একজন সম্ভাবনাময় উদ্যোক্তা হিসেবে উল্লেখ করেন এবং তাঁকে বলেন, ‘ব্যর্থতা স্বাভাবিক। কিন্তু জালিয়াতির মাধ্যমে ব্যর্থ হওয়া ঠিক নয়।’

Tag :

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

জালিয়াতি করে রাতারাতি বিলিয়নিয়ার, এলিজাবেথের ১১ বছরের জেল

প্রকাশের সময় : ০৫:০৪:৩০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২০ নভেম্বর ২০২২

স্বাস্থ্য প্রযুক্তি বিষয়ক প্রতিষ্ঠান থেরানোসের প্রতিষ্ঠাতা এলিজাবেথ হোমসকে প্রতারণায় দায়ে ১১ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার একটি আদালত। সিলিকন ভ্যালির এই তারকা দাবি করেছিলেন, তাঁর প্রতিষ্ঠানে যে প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়, তা দিয়ে মাত্র কয়েক ফোঁটা রক্তের মাধ্যমে রোগ নির্ণয় করা সম্ভব।

স্থানীয় সময় শুক্রবার (১৮ নভেম্বর) রায় ঘোষণার সময় ৩৮ বছর বয়সী অন্তঃসত্ত্বা হোমস অশ্রুসিক্ত নয়নে আদালতকে বলেন, যাঁরা প্রতারিত হয়েছেন, তাঁদের জন্য তিনি ‘গভীর সমবেদনা’ অনুভব করছেন।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি আজ শনিবার এক প্রতিবেদনে বলেছে, তিন মাস ধরে চলা বিচারকাজের পর জানুয়ারিতেই তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছিল। হোমস এই কারাদণ্ডের বিরুদ্ধে আপিল করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

এলিজাবেথ হোমসকে বলা হতো ‘পরবর্তী স্টিভ জবস’। তিনি এক সময় বিশ্বের সর্বকনিষ্ঠ ধনকুবের ছিলেন। হোমস ১৯ বছর বয়সে স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটি থেকে পড়াশোনা ছেড়ে দিয়ে থেরানোস চালু করেন। প্রতিষ্ঠানটি রোগ নির্ণয়ের ক্ষেত্রে বিরাট বিপ্লব আনতে পারে বলে দাবি করার পরে কোম্পানির শেয়ারের দাম দ্রুত বেড়ে যায়। কিন্তু হোমস যে প্রযুক্তির কথা বলেছিলেন তা ছিল ভুয়া। পরবর্তীতে মামলায় জর্জরিত প্রতিষ্ঠানটি ২০১৮ সালের মধ্যে বিলুপ্ত হয়ে যায়।

ক্যালিফোর্নিয়ার সান হোসে আদালতের প্রসিকিউটরেরা বলেছেন, এলিজাবেথ হোমস জেনে বুঝে চিকিৎসক ও রোগীদের থেরানোসের প্রযুক্তি ও যন্ত্র সম্পর্কে বিভ্রান্ত করেছেন। হোমস দাবি করেছিলেন, তাঁর প্রতিষ্ঠানটি কয়েক ফোঁটা রক্ত পরীক্ষা করে ক্যানসার, ডায়াবেটিস এবং অন্যান্য রোগ শনাক্ত করতে পারে।

বিচারকেরা আরও বলেছেন, হোমস তাঁর প্রতিষ্ঠানের বিনিয়োগকারীদের কাছে প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে ব্যাপক অতিরঞ্জিত কথা বলেছেন।

বিচারকেরা শেষ পর্যন্ত এলিজাবেথ হোমসকে চারটি প্রতারণার জন্য দোষী সাব্যস্ত করেছেন। এ জন্য তাঁরা সর্বোচ্চ ২০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন। তবে তাঁরা তাঁকে অন্য চারটি অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করেননি এবং আরও তিনটি অভিযোগর রায় এখনো দেননি।

বিচারক এডওয়ার্ড ডেভিলা শুক্রবার তাঁর কারাদণ্ডের রায় পড়ার আগে হোমস আদালতে একটি বক্তৃতা পড়েন। সে সময় তিনি অশ্রুসিক্ত নয়নে বিনিয়োগকারী এবং রোগীদের কাছে ক্ষমা চান। হোমস বলেন, ‘আমি আমার ব্যর্থতার জন্য মানসিকভাবে খুবই বিপর্যস্ত। আমি তাঁদের জন্য গভীর বেদনা অনুভব করছি, কারণ তাঁদের বিপর্যয়ের জন্য আমার ব্যর্থতাই দায়ী।’

এলিজাবেথ হোমস গাঢ় রঙের ব্লাউজ এবং কালো স্কার্ট পরে আদালতে হাজির হয়েছিলেন। রায় ঘোষণার পর তিনি তাঁর বাবা, মা ও সঙ্গীকে আলিঙ্গন করেন।

বিচারক হোমসকে একজন সম্ভাবনাময় উদ্যোক্তা হিসেবে উল্লেখ করেন এবং তাঁকে বলেন, ‘ব্যর্থতা স্বাভাবিক। কিন্তু জালিয়াতির মাধ্যমে ব্যর্থ হওয়া ঠিক নয়।’