নিউইয়র্ক ০৫:৩৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

গাজায় বর্বর হত্যাকাণ্ড বন্ধের আহ্বান লিভারপুল তারকা সালাহ

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০৫:২৮:০৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৩
  • / ৫৭ বার পঠিত

লিভারপুলের মিসরীয় ফুটবল তারকা মোহামেদ সালাহ। ছবি: এক্স (সাবেক টুইটার)।

ক্রীড়া ডেস্ক : গাজায় ইসরায়েলের বর্বর হত্যাকাণ্ড বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন লিভারপুলের মিসরীয় ফুটবল তারকা মোহামেদ সালাহ। অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার মানুষ ভয়াবহ বিপর্যয়ের মধ্যে আছে জানিয়ে অবিলম্বে সেখানে মানবিক সহায়তাসামগ্রী পৌঁছানোর পথ সুগম করার ওপর জোর দিয়েছেন তিনি।

ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাসের মধ্যকার যুদ্ধ গড়িয়েছে ১৩তম দিনে। এই কদিনে গাজায় ইসরায়েলি হামলায় অন্তত সাড়ে ৩ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে আরও অন্তত ১২ হাজার। গাজায় মানবিক বিপর্যয় নিয়ে এত দিন কোনো কথা না বলায় সমালোচিত হচ্ছিলেন আরব বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় ক্রীড়াবিদ মোহামেদ সালাহ। সামাজিক প্ল্যাটফর্মে তাকে ‘আনফলো’ অর্থাৎ, আর অনুসরণ না করার হিড়িকও পড়েছিল।

গাজার হাসপাতালে বোমা হামলায় প্রায় ৫০০ বেসামরিক মানুষ নিহত হওয়ার পর অবশেষে গত বুধবার মুখ খুলেছেন মিসর জাতীয় ফুটবল দলের অধিনায়ক। ইনস্টাগ্রামে একই ভিডিও পোস্ট করে তিনি বলেছেন, ‘এ রকম সময়ে কথা বলা সহজ নয়। গাজায় প্রচণ্ড পরিমাণে সহিংসতা, বর্বরতা ও হৃদয়বিদারক ঘটনা ঘটছে। সম্প্রতি এই সহিংসতা বেড়ে যাওয়ার সাক্ষী হওয়াটা অসহনীয়। সবার জীবনই পবিত্র। সবার জীবনই রক্ষা করতে হবে। পরিবারগুলো ছিন্নভিন্ন হয়ে যাচ্ছে। এই ধ্বংসযজ্ঞ বন্ধ করতে হবে।’

লিভারপুলের হয়ে চ্যাম্পিয়নস লিগ ও ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ জয় করা এই তারকা ফরোয়ার্ড তাঁর ভিডিও বার্তায় আরও বলেন, ‘এখন স্পষ্ট হয়েছে যে, গাজায় অবিলম্বে মানবিক সাহায্য পৌঁছানোর অনুমতি দিতে হবে। সেখানকার মানুষ ভয়ংকর অবস্থার মধ্যে আছে। গত রাতে হাসপাতালের দৃশ্যগুলো ছিল ভয়াবহ। গাজার জনগণের এই মুহূর্তে জরুরি ভিত্তিতে খাদ্য, পানি ও চিকিৎসাসামগ্রী প্রয়োজন।’

সালাহ আরও বলেন, ‘নিরীহ মানুষদের প্রাণ রক্ষায় একত্রিত হওয়ার জন্য আমি বিশ্ব নেতৃবৃন্দের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। মানবতা অবশ্যই জয়ী হবে।’

এদিকে, বিধ্বস্ত গাজা উপত্যকায় মানবিক সংকট কমাতে ত্রাণসামগ্রী পৌঁছানোর জন্য মিসরকে রাজি করিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তিনি জানান, মিসর ও গাজা সীমান্তের রাফাহ ক্রসিং খুলে দিতে রাজি হয়েছে মিসর। শুক্রবারের মধ্যেই এই ক্রসিং দিয়ে ত্রাণসামগ্রীবাহী ট্রাকগুলো গাজায় প্রবেশ শুরু করবে বলে আশা প্রকাশ করেন বাইডেন। ফিলিস্তিনি বেসামরিকদের সহায়তার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের তহবিল থেকে ১০ কোটি ডলার বরাদ্দ করা হবে বলেও জানান তিনি।

উত্তর সিনাইয়ের রেড ক্রিসেন্টের প্রধান খালিদ জায়েদ জানিয়েছেন, ইসরায়েলের হামলায় রাফাহ ক্রসিং ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। রাস্তা মেরামতের পরেই এই সাহায্য পৌঁছানো হবে। দুই শতাধিক ট্রাক এবং প্রায় ৩ হাজার টন ত্রাণসামগ্রী রাফাহ ক্রসিংয়ের কাছে অবস্থান করছে।

মিসরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সামেহ শউকরি আল-আরাবিয়া টিভিকে বলেছেন, জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে ত্রাণসামগ্রী সরবরাহ করা হবে। বিদেশি ও দ্বৈত নাগরিকদের চলে যেতে দেওয়া হবে কি না, তা জানতে চাইলে তিনি বলেন, রাফাহ ক্রসিং মেরামত ও স্বাভাবিক হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।

উল্লেখ্য, ৩৬৫ বর্গকিলোমিটার আয়তনের ভূখণ্ড গাজায় বসবাস করে প্রায় ২৩ লাখ ফিলিস্তিনি। এই ভূখণ্ডের মোট জনসংখ্যার এক-তৃতীয়াংশই জাতিসংঘ ও বিভিন্ন দাতা দেশ ও সংস্থার সহায়তার ওপর সরাসরি নির্ভরশীল। ইসরায়েল ছাড়া গাজার সঙ্গে সীমান্ত রয়েছে কেবল মিসরের। রাফাহ ক্রসিং নামের সেই সীমান্তপথ দিয়েই গাজা ভূখণ্ডে ত্রাণ ও সহায়তাসামগ্রী পাঠানো হয় । সূত্র : আজকের পত্রিকা

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

গাজায় বর্বর হত্যাকাণ্ড বন্ধের আহ্বান লিভারপুল তারকা সালাহ

প্রকাশের সময় : ০৫:২৮:০৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৩

ক্রীড়া ডেস্ক : গাজায় ইসরায়েলের বর্বর হত্যাকাণ্ড বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন লিভারপুলের মিসরীয় ফুটবল তারকা মোহামেদ সালাহ। অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার মানুষ ভয়াবহ বিপর্যয়ের মধ্যে আছে জানিয়ে অবিলম্বে সেখানে মানবিক সহায়তাসামগ্রী পৌঁছানোর পথ সুগম করার ওপর জোর দিয়েছেন তিনি।

ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাসের মধ্যকার যুদ্ধ গড়িয়েছে ১৩তম দিনে। এই কদিনে গাজায় ইসরায়েলি হামলায় অন্তত সাড়ে ৩ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে আরও অন্তত ১২ হাজার। গাজায় মানবিক বিপর্যয় নিয়ে এত দিন কোনো কথা না বলায় সমালোচিত হচ্ছিলেন আরব বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় ক্রীড়াবিদ মোহামেদ সালাহ। সামাজিক প্ল্যাটফর্মে তাকে ‘আনফলো’ অর্থাৎ, আর অনুসরণ না করার হিড়িকও পড়েছিল।

গাজার হাসপাতালে বোমা হামলায় প্রায় ৫০০ বেসামরিক মানুষ নিহত হওয়ার পর অবশেষে গত বুধবার মুখ খুলেছেন মিসর জাতীয় ফুটবল দলের অধিনায়ক। ইনস্টাগ্রামে একই ভিডিও পোস্ট করে তিনি বলেছেন, ‘এ রকম সময়ে কথা বলা সহজ নয়। গাজায় প্রচণ্ড পরিমাণে সহিংসতা, বর্বরতা ও হৃদয়বিদারক ঘটনা ঘটছে। সম্প্রতি এই সহিংসতা বেড়ে যাওয়ার সাক্ষী হওয়াটা অসহনীয়। সবার জীবনই পবিত্র। সবার জীবনই রক্ষা করতে হবে। পরিবারগুলো ছিন্নভিন্ন হয়ে যাচ্ছে। এই ধ্বংসযজ্ঞ বন্ধ করতে হবে।’

লিভারপুলের হয়ে চ্যাম্পিয়নস লিগ ও ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ জয় করা এই তারকা ফরোয়ার্ড তাঁর ভিডিও বার্তায় আরও বলেন, ‘এখন স্পষ্ট হয়েছে যে, গাজায় অবিলম্বে মানবিক সাহায্য পৌঁছানোর অনুমতি দিতে হবে। সেখানকার মানুষ ভয়ংকর অবস্থার মধ্যে আছে। গত রাতে হাসপাতালের দৃশ্যগুলো ছিল ভয়াবহ। গাজার জনগণের এই মুহূর্তে জরুরি ভিত্তিতে খাদ্য, পানি ও চিকিৎসাসামগ্রী প্রয়োজন।’

সালাহ আরও বলেন, ‘নিরীহ মানুষদের প্রাণ রক্ষায় একত্রিত হওয়ার জন্য আমি বিশ্ব নেতৃবৃন্দের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। মানবতা অবশ্যই জয়ী হবে।’

এদিকে, বিধ্বস্ত গাজা উপত্যকায় মানবিক সংকট কমাতে ত্রাণসামগ্রী পৌঁছানোর জন্য মিসরকে রাজি করিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তিনি জানান, মিসর ও গাজা সীমান্তের রাফাহ ক্রসিং খুলে দিতে রাজি হয়েছে মিসর। শুক্রবারের মধ্যেই এই ক্রসিং দিয়ে ত্রাণসামগ্রীবাহী ট্রাকগুলো গাজায় প্রবেশ শুরু করবে বলে আশা প্রকাশ করেন বাইডেন। ফিলিস্তিনি বেসামরিকদের সহায়তার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের তহবিল থেকে ১০ কোটি ডলার বরাদ্দ করা হবে বলেও জানান তিনি।

উত্তর সিনাইয়ের রেড ক্রিসেন্টের প্রধান খালিদ জায়েদ জানিয়েছেন, ইসরায়েলের হামলায় রাফাহ ক্রসিং ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। রাস্তা মেরামতের পরেই এই সাহায্য পৌঁছানো হবে। দুই শতাধিক ট্রাক এবং প্রায় ৩ হাজার টন ত্রাণসামগ্রী রাফাহ ক্রসিংয়ের কাছে অবস্থান করছে।

মিসরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সামেহ শউকরি আল-আরাবিয়া টিভিকে বলেছেন, জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে ত্রাণসামগ্রী সরবরাহ করা হবে। বিদেশি ও দ্বৈত নাগরিকদের চলে যেতে দেওয়া হবে কি না, তা জানতে চাইলে তিনি বলেন, রাফাহ ক্রসিং মেরামত ও স্বাভাবিক হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।

উল্লেখ্য, ৩৬৫ বর্গকিলোমিটার আয়তনের ভূখণ্ড গাজায় বসবাস করে প্রায় ২৩ লাখ ফিলিস্তিনি। এই ভূখণ্ডের মোট জনসংখ্যার এক-তৃতীয়াংশই জাতিসংঘ ও বিভিন্ন দাতা দেশ ও সংস্থার সহায়তার ওপর সরাসরি নির্ভরশীল। ইসরায়েল ছাড়া গাজার সঙ্গে সীমান্ত রয়েছে কেবল মিসরের। রাফাহ ক্রসিং নামের সেই সীমান্তপথ দিয়েই গাজা ভূখণ্ডে ত্রাণ ও সহায়তাসামগ্রী পাঠানো হয় । সূত্র : আজকের পত্রিকা