নিউইয়র্ক ০৭:৫৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১০ মে ২০২৫, ২৭ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

মওলানার কথা

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০৩:০৪:৩৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ৮ মার্চ ২০২১
  • / ১৬৬ বার পঠিত

হককথা ডেস্ক: দক্ষিণের বড় বারান্দায় একটা নিচু চৌকিতে মওলানা সাহেব নামাজ সেরে বসেছিলেন। মহিলারা একপাশে একটু আড়াল করে বসলেন, আর সব ছেলেমেয়েরা পরম কৌতূহল নিয়ে ওঁর সামনে গোল হয়ে দাঁড়াল। শিরিন ও তার দুই ভাই অগাধ বিস্ময়ভরা চোখ তুলে ওঁকে দেখতে লাগলো। মওলানা সাহেব হেসে হেসে উর্দুতে ওদের নাম জিজ্ঞেস করলেন, ‘দেহাত’ (গ্রামের বাড়ি) কোথায়, কীভাবে ওরা যায় জানতে চইলেন। এভাবে জড়তা কেটে গেল। সহজ কথ্য উর্দুতে উনি কথা বলছিলেন। বোহরাদের সম্প্রদায় কী ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে তাও বললেন। আরও বললেন, চলমান আন্দোলন ঘাতক সামরিক জান্তার বিরুদ্ধে, কোনো সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে নয়। যদি এ দেশকে আপন ভেবে সৎ ব্যবসা চালিয়ে যাও তবে বাঙালীরাও তোমাদের আপন করে নেবে, বাঙালীরা অসাম্প্রদায়িক, (উনি একটি উর্দু শব্দ ব্যবহার করেছিলেন) ছিল এবং থাকবে।
এরপর মওলানা সাহেব নারীর ভূমিকা নিয়ে কিছু কথা বললেন, যা সকলের মনকেই ছুঁয়ে গেল। বললেন, তোমরা মেয়েরাই সভ্যতার দূত। যুগে যুগে দেশে দেশে তোমরাই আন্তর্জাতিকতার বাহক। তোমাদের স্নেহ ভালোবাসা দিয়ে তোমরা পৃথিবীর যেখানেই যাও সেখানেই নীড় তৈরি কর, কোনো জাতপাত ভেদ, কোনো সাম্প্রদায়িকতা, কোনো জাতীয়তাবাদী সংকীর্ণতা তোমাদের স্পর্শ করে না। তাই বোম্বাই জন্মে তোমরা রেঙ্গুনে ঘর বাঁধতে পারো, ঢাকায় জন্মে পারো মাদ্রাজে ঘর বাঁধতে। কি, ঠিক বলেছি না? তোমাদের যদি বোম্বাই, দুবাই বা করাচিতে মা-বাপ বিয়ে দিয়ে দেয় তোমরা সেখানেই চলে যাবে আর সেটাই নিজের ঘর বলে গ্রহণ করবে, তাই না? মেয়েরা মাথা নেড়ে সায় দিল। মায়েরা সায় দিল আরও আন্তরিকভাবে, ‘হা, সহি বাত।’
[ফেলে আসা রাজনৈতিক মঞ্চের আত্মকথন-জায়নাব আখতার]
বিশ্বের সকল নারীর প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা।
কপি: ভাসানী পরিষদ, কুষ্টিয়া
ছবি: লাইলি উদ্দিন।

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

মওলানার কথা

প্রকাশের সময় : ০৩:০৪:৩৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ৮ মার্চ ২০২১

হককথা ডেস্ক: দক্ষিণের বড় বারান্দায় একটা নিচু চৌকিতে মওলানা সাহেব নামাজ সেরে বসেছিলেন। মহিলারা একপাশে একটু আড়াল করে বসলেন, আর সব ছেলেমেয়েরা পরম কৌতূহল নিয়ে ওঁর সামনে গোল হয়ে দাঁড়াল। শিরিন ও তার দুই ভাই অগাধ বিস্ময়ভরা চোখ তুলে ওঁকে দেখতে লাগলো। মওলানা সাহেব হেসে হেসে উর্দুতে ওদের নাম জিজ্ঞেস করলেন, ‘দেহাত’ (গ্রামের বাড়ি) কোথায়, কীভাবে ওরা যায় জানতে চইলেন। এভাবে জড়তা কেটে গেল। সহজ কথ্য উর্দুতে উনি কথা বলছিলেন। বোহরাদের সম্প্রদায় কী ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে তাও বললেন। আরও বললেন, চলমান আন্দোলন ঘাতক সামরিক জান্তার বিরুদ্ধে, কোনো সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে নয়। যদি এ দেশকে আপন ভেবে সৎ ব্যবসা চালিয়ে যাও তবে বাঙালীরাও তোমাদের আপন করে নেবে, বাঙালীরা অসাম্প্রদায়িক, (উনি একটি উর্দু শব্দ ব্যবহার করেছিলেন) ছিল এবং থাকবে।
এরপর মওলানা সাহেব নারীর ভূমিকা নিয়ে কিছু কথা বললেন, যা সকলের মনকেই ছুঁয়ে গেল। বললেন, তোমরা মেয়েরাই সভ্যতার দূত। যুগে যুগে দেশে দেশে তোমরাই আন্তর্জাতিকতার বাহক। তোমাদের স্নেহ ভালোবাসা দিয়ে তোমরা পৃথিবীর যেখানেই যাও সেখানেই নীড় তৈরি কর, কোনো জাতপাত ভেদ, কোনো সাম্প্রদায়িকতা, কোনো জাতীয়তাবাদী সংকীর্ণতা তোমাদের স্পর্শ করে না। তাই বোম্বাই জন্মে তোমরা রেঙ্গুনে ঘর বাঁধতে পারো, ঢাকায় জন্মে পারো মাদ্রাজে ঘর বাঁধতে। কি, ঠিক বলেছি না? তোমাদের যদি বোম্বাই, দুবাই বা করাচিতে মা-বাপ বিয়ে দিয়ে দেয় তোমরা সেখানেই চলে যাবে আর সেটাই নিজের ঘর বলে গ্রহণ করবে, তাই না? মেয়েরা মাথা নেড়ে সায় দিল। মায়েরা সায় দিল আরও আন্তরিকভাবে, ‘হা, সহি বাত।’
[ফেলে আসা রাজনৈতিক মঞ্চের আত্মকথন-জায়নাব আখতার]
বিশ্বের সকল নারীর প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা।
কপি: ভাসানী পরিষদ, কুষ্টিয়া
ছবি: লাইলি উদ্দিন।