নিউইয়র্ক ০১:৩০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৩০ জুন ২০২৫, ১৫ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

শুভ জন্মদিন আনোয়ার হোসেন মঞ্জু

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ১২:১৮:১৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১০ ফেব্রুয়ারী ২০২১
  • / ২৩২ বার পঠিত

জনি হক: একজন জনমানসের নেতা। একজন দেশপ্রেমিক। ভালোবাসেন বাংলার মানুষকে। অদম্য সৈনিকের মতো দেশকে দিয়েছেন অনেক কিছু। হাসি ফুটিয়েছেন মানুষের মুখে, তাদের সুখে-দুঃখে পাশে দাঁড়িয়েছেন। সাধারণ মানুষকে আপন করে হয়ে উঠেছেন কৃতী পুরুষ। তিনি আনোয়ার হোসেন মঞ্জু। আশাবাদী একজন মানুষ। বাংলাদেশের সাফল্যের গল্প বলতে ভালোবাসেন। বাংলাদেশী হিসেবে গর্ববোধ করেন। ৯ ফেব্রæয়ারী তাঁর ৭৭তম জন্মদিন।
জাতীয় জীবনে সফল রাজনীতিক ও সংবাদপত্রের অভিভাবকদের মধ্যে আনোয়ার হোসেন মঞ্জু অন্যতম। দৈনিক ইত্তেফাক, মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু, মানিক মিয়া ও আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর আদর্শিক অবস্থান যেন একই সুতোয় গাঁথা। বাবা প্রখ্যাত সাংবাদিক তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া সাহসী সাংবাদিকতার পথিকৃৎ। দেশের অন্যতম প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী সংবাদপত্র দৈনিক ইত্তেফাকের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক ছিলেন মানিক মিয়া। মা মজিদা বেগম ছিলেন নারী জাগরণের এক মহিয়সী।
আনোয়ার হোসেন মঞ্জু বাবার হাত ধরে শিখেছেন সাংবাদিকতা। যদিও শৈশবে হতে চেয়েছিলেন স্থপতি। বাবার গ্রেফতার হওয়া এবং পাকিস্তানী সামরিক শাসক কর্তৃক দৈনিক ইত্তেফাক বন্ধ করে দেওয়ায় প্রতিবাদী মন গড়ে ওঠে। এরপরই বাবার পথ অনুসরণ করে হয়ে গেছেন সাংবাদিক।
আনোয়ার হোসেন মঞ্জু সক্রিয়ভাবে ছাত্র রাজনীতি করতেন। তার ছাত্র রাজনীতির জীবন বেশ বর্ণাঢ্য। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টাইলিশ ছাত্রনেতা ছিলেন। তখন নিজে গাড়ি ড্রাইভ করতেন নিয়মিত। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ফজলুল হক হলের ছাত্র ছিলেন।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সহ অন্যান্যদের মাঝে আনোয়ার হোসেন মঞ্জু
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রিয়পাত্র ছিলেন আনোয়ার হোসেন মঞ্জু। ১৯৬৯ সালে শেখ মুজিবুর রহমানের বিরুদ্ধে আনা আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার বিরুদ্ধে আন্দোলনের পুরোভাগে ছিলেন তিনি। বঙ্গবন্ধুর ছয় দফা আন্দোলন ও ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানে সক্রিয় ভূমিকা রেখেছেন।
বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার সঙ্গে আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর সম্পর্ক ভাইবোনের মতো। শেখ হাসিনার ঐকমত্যের সরকারের মন্ত্রিসভায় যোগাযোগমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে বঙ্গবন্ধু সেতুর সফল সমাপ্তিসহ সারাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থায় যুগান্তকারী ভূমিকা রাখেন আনোয়ার হোসেন মঞ্জু। অসংখ্য ছোট-বড় সেতু, বিভাগ ও জেলা শহর ভিত্তিক হাইওয়ে রাস্তা, পৌরসভা-উপজেলা ভিত্তিক রাস্তা নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণের মাধ্যমে সফল যোগাযোগমন্ত্রী হিসেবে সর্বস্তরে সমাদৃত হয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন, তত্বাবধায়ক সরকার প্রধান বিচারপতি শাহাবুদ্দীন আহমেদ ও শেখ হাসিনার সাথে আনোয়ার হোসেন মঞ্জু
বাংলাদেশ সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে পাঁচবার মন্ত্রী ও একবার মন্ত্রী পদমর্যাদায় প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা হিসেবে সাফল্যের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেন আনোয়ার হোসেন মঞ্জু। জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে ৭৪০ মেগাওয়াট থেকে ২৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধিসহ খনিজ সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার ও উত্তোলন নিশ্চিত করেন। এরশাদ সরকারের যোগাযোগ মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে রেলওয়ে ও সড়কপথে যোগাযোগ ব্যবস্থা চালু করেন। বিরোধী দলীয় নেতাদের সঙ্গে আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর সুসম্পর্ক আছে। রাষ্ট্রনায়কদের জীবনী পড়েন। বর্ণিল রাজনৈতিক জীবনে অনেক বিশ্বনেতার সঙ্গে তার সখ্যতা গড়ে উঠেছে। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন, জর্জ ডবিøউ বুশ, ভারতের প্রয়াত রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জি, প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী, নরেন্দ্র মোদি প্রমুখ।
সপরিবারে আনোয়ার হোসেন মঞ্জু
আনোয়ার হোসেন মঞ্জু প্রকৃতিপ্রেমী একজন মানুষ। প্রকৃতির সবুজে ডানা মেলতে ইচ্ছে করে তার। বাগান করতে ভালো লাগে। ২০১৫ সালে প্যারিসে জলবায়ু পরিবর্তন সম্মেলনে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেন এবং জাতিসংঘে ডসয়ে এ বিষয়ে স্বাক্ষর রেখেছেন। ঘরের পোষা প্রাণীকে তিনি ভাবেন পরিবারের একজন। ভারতে বাঘ রক্ষার কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন তিনি।
আনোয়ার হোসেন মঞ্জু ক্রীড়াপ্রেমী মনের মানুষ। দয়াগঞ্জে ইয়াং সার্কেল নামে ক্রিকেট ক্লাব ছিল, কলেজ পর্যন্ত ক্রিকেট খেলেছেন। রবীন্দ্রসংগীত শুনতে ভালো লাগে। গল্প করতে আর আড্ডা দিতে ভালো লাগে। লং ড্রাইভে যেতে ভালো লাগে।

 

আনোয়ার হোসেন মঞ্জু ও তাসমিমা হোসেন

১৯৭০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত অবস্থায় তাসমিমা হোসেনের সঙ্গে বিয়ের বন্ধনে জড়ান আনোয়ার হোসেন মঞ্জু। তাসমিমা হোসেন বর্তমানে দৈনিক ইত্তেফাক ও পাক্ষিক অনন্যার সম্পাদক। আনোয়ার হোসেন মঞ্জু ও তাসমিমা হোসেন দম্পতির ঘর আলো করেছে চার কন্যাসন্তান। তারা হলেন সীমা হোসেন, তারিন হোসেন, মানিজে হোসেন ও আনুশে হোসেন যুক্তরাষ্ট্রের ঐতিহ্যবাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেছেন। তারিন হোসেন বর্তমানে দৈনিক ইত্তেফাকের প্রকাশক। নাতি-নাতনিদের সঙ্গে সময় কাটাতে ভালোবাসেন আনোয়ার হোসেন মঞ্জু। কার্টুন দেখা উপভোগ করেন, নিজেও কার্টুন আঁকেন। চকোলেট পছন্দ করেন। কাচ্চি বিরিয়ানি ও তেহারি খাওয়া উপভোগ করেন।
আনোয়ার হোসেন মঞ্জু নারী শিক্ষায় অপরিসীম ভূমিকা রেখেছেন। পিরোজপুরে মায়ের নামে প্রতিষ্ঠা করেছেন মজিদা বেগম মহিলা কলেজ। বাংলাদেশের রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংবাদিকতার জগতে আনোয়ার হোসেন মঞ্জু একটি উল্লেখযোগ্য নাম। বর্ণাঢ্য জীবনকে উপজীব্য করে বলা যায়— তিনি একজন রেনেসাঁ ব্যক্তিত্ব।

 

তারুণ্যে আনোয়ার হোসেন মঞ্জু
একনজরে আনোয়ার হোসেন মঞ্জু
* ১৯৪৪ সালের ৯ ফেব্রæয়ারী পিরোজপুর জেলাধীন ভান্ডারিয়া উপজেলার পূর্ব ভান্ডারিয়ার একটি সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।
* বাবা তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া, মা মজিদা বেগম
* ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভূগোল বিভাগে অনার্স শেষ করেন।
* ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক হল ছাত্র সংসদের পরপর দুইবার সহ-সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।
* যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডি.সির জর্জটাউন ইউনিভার্সিটিতে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ে এম.এস ডিগ্রী গ্রহণ করেন।
* ১৯৬৯ সালে পেশাজীবী সাংবাদিক হিসেবে দৈনিক ইত্তেফাকে যোগ দেন।
* ১৯৭২ সাল থেকে বহু বছর দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকার সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
* বর্তমানে ইত্তেফাক গ্রæপ অব পাবলিকেশন্স লিমিটেডের চেয়ারম্যান।
* ১৯৮০ সালে জাতীয় প্রেসক্লাবের নির্বাচিত সভাপতি হন।
* কাউন্সিল অব এডিটরস-এর চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেছেন।
* ১৯৮৬, ১৯৮৮, ১৯৯১, ১৯৯৬, ২০০১, ২০১৪ ও ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়লাভ করেন।
* বর্তমানে পিরোজপুর জেলার ভান্ডারিয়া, কাউখালী ও ইন্দুরকানি উপজেলা নিয়ে গঠিত পিরোজপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য।
* ১৯৮৫ থেকে ১৯৮৮ পর্যন্ত জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রী ছিলেন।
* ১৯৮৮ থেকে ১৯৯০ পর্যন্ত এবং ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত যোগাযোগ মন্ত্রী ছিলেন।
* ২০১৩ সালের শেষে মন্ত্রীমর্যাদায় প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা হন।
* ২০১৪ থেকে ২০১৮ সালের ২ জানুয়ারী পর্যন্ত পরিবেশ, বন ও জলবায়ু বিষয়ক মন্ত্রী ছিলেন।
* ২০১৮ সালের ৩ জানুয়ারী থেকে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকালীন পর্যন্ত পানিসম্পদ মন্ত্রী ছিলেন।
* বর্তমানে জাতীয় পার্টি-জেপি’র চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
* এজিস হোল্ডিংস গ্রæপের প্রতিষ্ঠাতা এবং মাস্ট প্যাকেজিং লিমিটেড ও জেনিথ প্যাকেজিং লিমিটেডের চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জু। (দৈনিক ইত্তেফাক)

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

শুভ জন্মদিন আনোয়ার হোসেন মঞ্জু

প্রকাশের সময় : ১২:১৮:১৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১০ ফেব্রুয়ারী ২০২১

জনি হক: একজন জনমানসের নেতা। একজন দেশপ্রেমিক। ভালোবাসেন বাংলার মানুষকে। অদম্য সৈনিকের মতো দেশকে দিয়েছেন অনেক কিছু। হাসি ফুটিয়েছেন মানুষের মুখে, তাদের সুখে-দুঃখে পাশে দাঁড়িয়েছেন। সাধারণ মানুষকে আপন করে হয়ে উঠেছেন কৃতী পুরুষ। তিনি আনোয়ার হোসেন মঞ্জু। আশাবাদী একজন মানুষ। বাংলাদেশের সাফল্যের গল্প বলতে ভালোবাসেন। বাংলাদেশী হিসেবে গর্ববোধ করেন। ৯ ফেব্রæয়ারী তাঁর ৭৭তম জন্মদিন।
জাতীয় জীবনে সফল রাজনীতিক ও সংবাদপত্রের অভিভাবকদের মধ্যে আনোয়ার হোসেন মঞ্জু অন্যতম। দৈনিক ইত্তেফাক, মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু, মানিক মিয়া ও আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর আদর্শিক অবস্থান যেন একই সুতোয় গাঁথা। বাবা প্রখ্যাত সাংবাদিক তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া সাহসী সাংবাদিকতার পথিকৃৎ। দেশের অন্যতম প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী সংবাদপত্র দৈনিক ইত্তেফাকের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক ছিলেন মানিক মিয়া। মা মজিদা বেগম ছিলেন নারী জাগরণের এক মহিয়সী।
আনোয়ার হোসেন মঞ্জু বাবার হাত ধরে শিখেছেন সাংবাদিকতা। যদিও শৈশবে হতে চেয়েছিলেন স্থপতি। বাবার গ্রেফতার হওয়া এবং পাকিস্তানী সামরিক শাসক কর্তৃক দৈনিক ইত্তেফাক বন্ধ করে দেওয়ায় প্রতিবাদী মন গড়ে ওঠে। এরপরই বাবার পথ অনুসরণ করে হয়ে গেছেন সাংবাদিক।
আনোয়ার হোসেন মঞ্জু সক্রিয়ভাবে ছাত্র রাজনীতি করতেন। তার ছাত্র রাজনীতির জীবন বেশ বর্ণাঢ্য। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টাইলিশ ছাত্রনেতা ছিলেন। তখন নিজে গাড়ি ড্রাইভ করতেন নিয়মিত। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ফজলুল হক হলের ছাত্র ছিলেন।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সহ অন্যান্যদের মাঝে আনোয়ার হোসেন মঞ্জু
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রিয়পাত্র ছিলেন আনোয়ার হোসেন মঞ্জু। ১৯৬৯ সালে শেখ মুজিবুর রহমানের বিরুদ্ধে আনা আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার বিরুদ্ধে আন্দোলনের পুরোভাগে ছিলেন তিনি। বঙ্গবন্ধুর ছয় দফা আন্দোলন ও ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানে সক্রিয় ভূমিকা রেখেছেন।
বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার সঙ্গে আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর সম্পর্ক ভাইবোনের মতো। শেখ হাসিনার ঐকমত্যের সরকারের মন্ত্রিসভায় যোগাযোগমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে বঙ্গবন্ধু সেতুর সফল সমাপ্তিসহ সারাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থায় যুগান্তকারী ভূমিকা রাখেন আনোয়ার হোসেন মঞ্জু। অসংখ্য ছোট-বড় সেতু, বিভাগ ও জেলা শহর ভিত্তিক হাইওয়ে রাস্তা, পৌরসভা-উপজেলা ভিত্তিক রাস্তা নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণের মাধ্যমে সফল যোগাযোগমন্ত্রী হিসেবে সর্বস্তরে সমাদৃত হয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন, তত্বাবধায়ক সরকার প্রধান বিচারপতি শাহাবুদ্দীন আহমেদ ও শেখ হাসিনার সাথে আনোয়ার হোসেন মঞ্জু
বাংলাদেশ সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে পাঁচবার মন্ত্রী ও একবার মন্ত্রী পদমর্যাদায় প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা হিসেবে সাফল্যের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেন আনোয়ার হোসেন মঞ্জু। জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে ৭৪০ মেগাওয়াট থেকে ২৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধিসহ খনিজ সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার ও উত্তোলন নিশ্চিত করেন। এরশাদ সরকারের যোগাযোগ মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে রেলওয়ে ও সড়কপথে যোগাযোগ ব্যবস্থা চালু করেন। বিরোধী দলীয় নেতাদের সঙ্গে আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর সুসম্পর্ক আছে। রাষ্ট্রনায়কদের জীবনী পড়েন। বর্ণিল রাজনৈতিক জীবনে অনেক বিশ্বনেতার সঙ্গে তার সখ্যতা গড়ে উঠেছে। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন, জর্জ ডবিøউ বুশ, ভারতের প্রয়াত রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জি, প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী, নরেন্দ্র মোদি প্রমুখ।
সপরিবারে আনোয়ার হোসেন মঞ্জু
আনোয়ার হোসেন মঞ্জু প্রকৃতিপ্রেমী একজন মানুষ। প্রকৃতির সবুজে ডানা মেলতে ইচ্ছে করে তার। বাগান করতে ভালো লাগে। ২০১৫ সালে প্যারিসে জলবায়ু পরিবর্তন সম্মেলনে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেন এবং জাতিসংঘে ডসয়ে এ বিষয়ে স্বাক্ষর রেখেছেন। ঘরের পোষা প্রাণীকে তিনি ভাবেন পরিবারের একজন। ভারতে বাঘ রক্ষার কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন তিনি।
আনোয়ার হোসেন মঞ্জু ক্রীড়াপ্রেমী মনের মানুষ। দয়াগঞ্জে ইয়াং সার্কেল নামে ক্রিকেট ক্লাব ছিল, কলেজ পর্যন্ত ক্রিকেট খেলেছেন। রবীন্দ্রসংগীত শুনতে ভালো লাগে। গল্প করতে আর আড্ডা দিতে ভালো লাগে। লং ড্রাইভে যেতে ভালো লাগে।

 

আনোয়ার হোসেন মঞ্জু ও তাসমিমা হোসেন

১৯৭০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত অবস্থায় তাসমিমা হোসেনের সঙ্গে বিয়ের বন্ধনে জড়ান আনোয়ার হোসেন মঞ্জু। তাসমিমা হোসেন বর্তমানে দৈনিক ইত্তেফাক ও পাক্ষিক অনন্যার সম্পাদক। আনোয়ার হোসেন মঞ্জু ও তাসমিমা হোসেন দম্পতির ঘর আলো করেছে চার কন্যাসন্তান। তারা হলেন সীমা হোসেন, তারিন হোসেন, মানিজে হোসেন ও আনুশে হোসেন যুক্তরাষ্ট্রের ঐতিহ্যবাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেছেন। তারিন হোসেন বর্তমানে দৈনিক ইত্তেফাকের প্রকাশক। নাতি-নাতনিদের সঙ্গে সময় কাটাতে ভালোবাসেন আনোয়ার হোসেন মঞ্জু। কার্টুন দেখা উপভোগ করেন, নিজেও কার্টুন আঁকেন। চকোলেট পছন্দ করেন। কাচ্চি বিরিয়ানি ও তেহারি খাওয়া উপভোগ করেন।
আনোয়ার হোসেন মঞ্জু নারী শিক্ষায় অপরিসীম ভূমিকা রেখেছেন। পিরোজপুরে মায়ের নামে প্রতিষ্ঠা করেছেন মজিদা বেগম মহিলা কলেজ। বাংলাদেশের রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংবাদিকতার জগতে আনোয়ার হোসেন মঞ্জু একটি উল্লেখযোগ্য নাম। বর্ণাঢ্য জীবনকে উপজীব্য করে বলা যায়— তিনি একজন রেনেসাঁ ব্যক্তিত্ব।

 

তারুণ্যে আনোয়ার হোসেন মঞ্জু
একনজরে আনোয়ার হোসেন মঞ্জু
* ১৯৪৪ সালের ৯ ফেব্রæয়ারী পিরোজপুর জেলাধীন ভান্ডারিয়া উপজেলার পূর্ব ভান্ডারিয়ার একটি সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।
* বাবা তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া, মা মজিদা বেগম
* ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভূগোল বিভাগে অনার্স শেষ করেন।
* ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক হল ছাত্র সংসদের পরপর দুইবার সহ-সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।
* যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডি.সির জর্জটাউন ইউনিভার্সিটিতে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ে এম.এস ডিগ্রী গ্রহণ করেন।
* ১৯৬৯ সালে পেশাজীবী সাংবাদিক হিসেবে দৈনিক ইত্তেফাকে যোগ দেন।
* ১৯৭২ সাল থেকে বহু বছর দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকার সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
* বর্তমানে ইত্তেফাক গ্রæপ অব পাবলিকেশন্স লিমিটেডের চেয়ারম্যান।
* ১৯৮০ সালে জাতীয় প্রেসক্লাবের নির্বাচিত সভাপতি হন।
* কাউন্সিল অব এডিটরস-এর চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেছেন।
* ১৯৮৬, ১৯৮৮, ১৯৯১, ১৯৯৬, ২০০১, ২০১৪ ও ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়লাভ করেন।
* বর্তমানে পিরোজপুর জেলার ভান্ডারিয়া, কাউখালী ও ইন্দুরকানি উপজেলা নিয়ে গঠিত পিরোজপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য।
* ১৯৮৫ থেকে ১৯৮৮ পর্যন্ত জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রী ছিলেন।
* ১৯৮৮ থেকে ১৯৯০ পর্যন্ত এবং ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত যোগাযোগ মন্ত্রী ছিলেন।
* ২০১৩ সালের শেষে মন্ত্রীমর্যাদায় প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা হন।
* ২০১৪ থেকে ২০১৮ সালের ২ জানুয়ারী পর্যন্ত পরিবেশ, বন ও জলবায়ু বিষয়ক মন্ত্রী ছিলেন।
* ২০১৮ সালের ৩ জানুয়ারী থেকে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকালীন পর্যন্ত পানিসম্পদ মন্ত্রী ছিলেন।
* বর্তমানে জাতীয় পার্টি-জেপি’র চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
* এজিস হোল্ডিংস গ্রæপের প্রতিষ্ঠাতা এবং মাস্ট প্যাকেজিং লিমিটেড ও জেনিথ প্যাকেজিং লিমিটেডের চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জু। (দৈনিক ইত্তেফাক)