নিউইয়র্ক ০৯:৫৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

নিউইয়র্কে বাংলাদেশ কনস্যুলেট কর্মকর্তার সাথে আ.লীগ নেতাদের সাক্ষাত : চাঞ্চ্যলের সৃষ্টি

হককথা ডেস্ক
  • প্রকাশের সময় : ০৪:২৫:১৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৪ অগাস্ট ২০২৪
  • / ১২৭ বার পঠিত

নিউইয়র্কে বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল কার্যালয়ের শীর্ষ কর্মকর্তার সাথে সাক্ষাৎ করেছেন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা। কনসাল জেনারেল মোহাম্মদ নাজমুল হুদার সাথে তাদের হঠাৎ একান্ত স্বাক্ষাত নিয়ে ব্যাপক চাঞ্চ্যলের সৃষ্টি হয়েছে কমিউনিটিতে। এরই মধ্যে কনস্যুলেট কার্যালয়ের সামনে সদ্য ক্ষমতা থেকে পতন হওয়া যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের নেতাদের অবস্থানের একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। জানা গেছে, কোন অ্যাপয়েন্টমেন্ট ছাড়াই আওয়ামী লীগ নেতাদের সেখানে একত্রে উপস্থিত হওয়া এবং কনসাল জেনারেলের সাথে বৈঠক নিয়ে প্রবাসী বাংলাদেশীদের মধ্যে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নিউইয়র্ক সময় সোমবার (১২ আগষ্ট) দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে সিটির এস্টোরিয়ার নর্থদান বুলেবার্ডে অবস্থিত বাংলাদেশ কনস্যুলেট কার্যালয়ে কনসাল জেনারেল নাজমুল হুদার সাথে অ্যাপয়েন্টমেন্ট ছাড়াই স্বাক্ষাত করেন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি ড. মাসুদুল হাসানের নেতৃত্বে ৬/৭ জনের একটি দল। এ সময় কনস্যুলেট কার্যালয়ের কর্মকর্তার সাথে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের নেতাদের একান্ত স্বাক্ষাতের বিষয়টি নিয়ে সেবা নিতে আসা প্রবাসী বাংলাদেশীদের মধ্যে কৌতুহল দেখা দেয়। এ স্বাক্ষাত চলাকালে কনস্যুলেট কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের মাঝে বেশ উদ্বেগ লক্ষ্য করা যায়। এ সময় ডা. মাসুদুল হাসানের সাথে ছিলেন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের অন্যতম উপদেষ্টা, বাকসু’র সাবেক জিএস ড. প্রদীপ কর, যুত্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ নেতা হাজী এনাম, মোহাম্মদ আলী সিদ্দিকীসহ আরো ৬ নেতা।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাংলাদেশ কনস্যুলেট কার্যালয়ে সেবা নিতে আসা এক প্রবাসী বাংলাদেশী জানান, আমার পাসপোর্ট সংক্রান্ত কারণে পূর্বনির্ধারিত অ্যাপয়েন্টমেন্ট ছিলো সোমবার (১২ আগষ্ট) দুপুরে। আমি সহ আরো বেশ কয়েকজন কনস্যুলেট কার্যালয়ের ভিতরে অপেক্ষমান অবস্থায় বসা ছিলাম। বেলা সাড়ে ১২ টার দিকে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজন নেতা কনস্যুলেট কার্যালয়ে ঢুকে সরাসরি কনস্যুলেট কর্মকর্তার রুমের দিকে প্রবেশ করেন। এরপর কনস্যুলেট কার্যালয়ের কয়েকজন কর্মকর্তা বেশ উদগ্রীব অবস্থায় ছুটোছুটি করতে থাকেন। বিষয়টি আমাদের কাছে বেশ সন্দেহের সৃষ্টি করে। কিছু সময় পর তারা আবার বের হয়ে চলে যান।

এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি ডা. মাসুদুল হাসানের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, কনস্যুলেট কার্যালয় থেকে বঙ্গবন্ধু’র ছবি অপসারণের কারণ জানার জন্য আমরা সেখানে গিয়েছিলাম। ৩/৪ দিন আগে কিছু লোক কনস্যুলেট কার্যালয়ে ঢুকে জোরপূর্বক বঙ্গবন্ধু’র ছবি নামিয়ে ফেলে। এ ব্যাপারে কর্তৃপক্ষ কোন পুলিশ রিপোর্ট করেছেন কিনা এবং বঙ্গবন্ধু’র ছবি অপসারণে কোন প্রজ্ঞাপন পেয়েছেন কিনা জানতে চেয়েছি দায়িত্বরত কর্মকর্তার কাছে। কারণ কোন প্রজ্ঞাপন ছাড়া বঙ্গবন্ধু’র ছবি নামিয়ে ফেলা ঠিক নয়। এছাড়াও ১৫ আগষ্ট বঙ্গবন্ধু’র মৃত্যুবার্ষিকী পালন বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের কোন নির্দেশনা আছে কিনা।

এব্যাপারে ডা. মাসুদুল হাসান জানান, কনস্যুলেটে ভাংচুরের আশংকায় বিক্ষুব্ধ প্রবাসীদের দাবীর মুখে কনস্যুলেট অফিস থেকে বঙ্গবন্ধুর ছবি নামানোর সময় কোন বাধা দেওয়া সম্ভব হয়নি। তবে সরকারের সিদ্ধানের ফলে আগেই শেখ হাসিনার ছবি সরানো হয়েছিলো। কনস্যুলেট কার্যালয়ে কর্মকর্তার সাথে স্বাক্ষাতের জন্য পূর্বনির্ধারিত অ্যাপয়েন্টমেন্ট ছিলো কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, না আমরা অ্যাপয়েন্টমেন্ট ছাড়াই গিয়েছি। উনি (কর্মকর্তা) আমার পূর্ব পরিচিত এবং আগেও আমি যেকোন সময় অ্যাপয়েন্টমেন্ট ছাড়াই গিয়েছি সেখানে।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ছাত্র-জনতার গণ অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর গত ৮ আগষ্ট মঙ্গলবার ২০/২৫ জন বিক্ষুব্ধ প্রবাসী বাংলাদেশী নিউইয়র্কের বাংলাদেশ কনস্যুলেট কার্যালয়ে প্রবেশ করে কনসাল জেনারেলের অফিসের দেয়ালে টানানো বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি নামিয়ে ফেলতে বাধ্য করেন। এব্যাপারে কনাসাল জেনালের নাজমুল হুদা সোমবার রাতে টাইম টেলিভিশনের লাইভ ‘টাইম এক্সক্লুসিভ অনুষ্ঠানে’ ভার্চ্যুয়ালী যোগ দিয়ে বলেন, আজ (সোমবার) দুপুরে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা আমার অফিসে সাক্ষাত করতে আসলে আমি তাদের সাথে বসে তাদের কথা শুনি। এসময় তারা বঙ্গবন্ধুর ছবি নামালো এবং ১৫ আগষ্টের সরকারী নির্দেশনা নিয়ে কথা বলেন। কনসাল জেনালের আরো বলেন, এদিন বিকেলে শাহ শহীদুল হকের নেতৃত্বে ওয়ার্ল্ড হিউম্যান রাইটস-এর একদল প্রতিনিধি আমার সাথে সাক্ষাৎ করেন এবং একটি স্মারকলিপি প্রদান করেন। (সূত্র: বাংলা পত্রিকা)

Tag :

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

নিউইয়র্কে বাংলাদেশ কনস্যুলেট কর্মকর্তার সাথে আ.লীগ নেতাদের সাক্ষাত : চাঞ্চ্যলের সৃষ্টি

প্রকাশের সময় : ০৪:২৫:১৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৪ অগাস্ট ২০২৪

নিউইয়র্কে বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল কার্যালয়ের শীর্ষ কর্মকর্তার সাথে সাক্ষাৎ করেছেন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা। কনসাল জেনারেল মোহাম্মদ নাজমুল হুদার সাথে তাদের হঠাৎ একান্ত স্বাক্ষাত নিয়ে ব্যাপক চাঞ্চ্যলের সৃষ্টি হয়েছে কমিউনিটিতে। এরই মধ্যে কনস্যুলেট কার্যালয়ের সামনে সদ্য ক্ষমতা থেকে পতন হওয়া যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের নেতাদের অবস্থানের একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। জানা গেছে, কোন অ্যাপয়েন্টমেন্ট ছাড়াই আওয়ামী লীগ নেতাদের সেখানে একত্রে উপস্থিত হওয়া এবং কনসাল জেনারেলের সাথে বৈঠক নিয়ে প্রবাসী বাংলাদেশীদের মধ্যে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নিউইয়র্ক সময় সোমবার (১২ আগষ্ট) দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে সিটির এস্টোরিয়ার নর্থদান বুলেবার্ডে অবস্থিত বাংলাদেশ কনস্যুলেট কার্যালয়ে কনসাল জেনারেল নাজমুল হুদার সাথে অ্যাপয়েন্টমেন্ট ছাড়াই স্বাক্ষাত করেন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি ড. মাসুদুল হাসানের নেতৃত্বে ৬/৭ জনের একটি দল। এ সময় কনস্যুলেট কার্যালয়ের কর্মকর্তার সাথে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের নেতাদের একান্ত স্বাক্ষাতের বিষয়টি নিয়ে সেবা নিতে আসা প্রবাসী বাংলাদেশীদের মধ্যে কৌতুহল দেখা দেয়। এ স্বাক্ষাত চলাকালে কনস্যুলেট কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের মাঝে বেশ উদ্বেগ লক্ষ্য করা যায়। এ সময় ডা. মাসুদুল হাসানের সাথে ছিলেন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের অন্যতম উপদেষ্টা, বাকসু’র সাবেক জিএস ড. প্রদীপ কর, যুত্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ নেতা হাজী এনাম, মোহাম্মদ আলী সিদ্দিকীসহ আরো ৬ নেতা।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাংলাদেশ কনস্যুলেট কার্যালয়ে সেবা নিতে আসা এক প্রবাসী বাংলাদেশী জানান, আমার পাসপোর্ট সংক্রান্ত কারণে পূর্বনির্ধারিত অ্যাপয়েন্টমেন্ট ছিলো সোমবার (১২ আগষ্ট) দুপুরে। আমি সহ আরো বেশ কয়েকজন কনস্যুলেট কার্যালয়ের ভিতরে অপেক্ষমান অবস্থায় বসা ছিলাম। বেলা সাড়ে ১২ টার দিকে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজন নেতা কনস্যুলেট কার্যালয়ে ঢুকে সরাসরি কনস্যুলেট কর্মকর্তার রুমের দিকে প্রবেশ করেন। এরপর কনস্যুলেট কার্যালয়ের কয়েকজন কর্মকর্তা বেশ উদগ্রীব অবস্থায় ছুটোছুটি করতে থাকেন। বিষয়টি আমাদের কাছে বেশ সন্দেহের সৃষ্টি করে। কিছু সময় পর তারা আবার বের হয়ে চলে যান।

এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি ডা. মাসুদুল হাসানের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, কনস্যুলেট কার্যালয় থেকে বঙ্গবন্ধু’র ছবি অপসারণের কারণ জানার জন্য আমরা সেখানে গিয়েছিলাম। ৩/৪ দিন আগে কিছু লোক কনস্যুলেট কার্যালয়ে ঢুকে জোরপূর্বক বঙ্গবন্ধু’র ছবি নামিয়ে ফেলে। এ ব্যাপারে কর্তৃপক্ষ কোন পুলিশ রিপোর্ট করেছেন কিনা এবং বঙ্গবন্ধু’র ছবি অপসারণে কোন প্রজ্ঞাপন পেয়েছেন কিনা জানতে চেয়েছি দায়িত্বরত কর্মকর্তার কাছে। কারণ কোন প্রজ্ঞাপন ছাড়া বঙ্গবন্ধু’র ছবি নামিয়ে ফেলা ঠিক নয়। এছাড়াও ১৫ আগষ্ট বঙ্গবন্ধু’র মৃত্যুবার্ষিকী পালন বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের কোন নির্দেশনা আছে কিনা।

এব্যাপারে ডা. মাসুদুল হাসান জানান, কনস্যুলেটে ভাংচুরের আশংকায় বিক্ষুব্ধ প্রবাসীদের দাবীর মুখে কনস্যুলেট অফিস থেকে বঙ্গবন্ধুর ছবি নামানোর সময় কোন বাধা দেওয়া সম্ভব হয়নি। তবে সরকারের সিদ্ধানের ফলে আগেই শেখ হাসিনার ছবি সরানো হয়েছিলো। কনস্যুলেট কার্যালয়ে কর্মকর্তার সাথে স্বাক্ষাতের জন্য পূর্বনির্ধারিত অ্যাপয়েন্টমেন্ট ছিলো কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, না আমরা অ্যাপয়েন্টমেন্ট ছাড়াই গিয়েছি। উনি (কর্মকর্তা) আমার পূর্ব পরিচিত এবং আগেও আমি যেকোন সময় অ্যাপয়েন্টমেন্ট ছাড়াই গিয়েছি সেখানে।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ছাত্র-জনতার গণ অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর গত ৮ আগষ্ট মঙ্গলবার ২০/২৫ জন বিক্ষুব্ধ প্রবাসী বাংলাদেশী নিউইয়র্কের বাংলাদেশ কনস্যুলেট কার্যালয়ে প্রবেশ করে কনসাল জেনারেলের অফিসের দেয়ালে টানানো বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি নামিয়ে ফেলতে বাধ্য করেন। এব্যাপারে কনাসাল জেনালের নাজমুল হুদা সোমবার রাতে টাইম টেলিভিশনের লাইভ ‘টাইম এক্সক্লুসিভ অনুষ্ঠানে’ ভার্চ্যুয়ালী যোগ দিয়ে বলেন, আজ (সোমবার) দুপুরে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা আমার অফিসে সাক্ষাত করতে আসলে আমি তাদের সাথে বসে তাদের কথা শুনি। এসময় তারা বঙ্গবন্ধুর ছবি নামালো এবং ১৫ আগষ্টের সরকারী নির্দেশনা নিয়ে কথা বলেন। কনসাল জেনালের আরো বলেন, এদিন বিকেলে শাহ শহীদুল হকের নেতৃত্বে ওয়ার্ল্ড হিউম্যান রাইটস-এর একদল প্রতিনিধি আমার সাথে সাক্ষাৎ করেন এবং একটি স্মারকলিপি প্রদান করেন। (সূত্র: বাংলা পত্রিকা)