যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ ঠেকাতে বাংলাদেশী যুবকের নামে বিমানবন্দরে ‘বেঞ্চ ওয়ারেন্ট’
- প্রকাশের সময় : ১২:৫৭:১১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৩ মে ২০২৪
- / ১৮৭ বার পঠিত
নিউইয়র্ক : যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ ঠেকাতে বাংলাদেশী এক যুবকের নামে আদালতের জারি করা ‘বেঞ্চ ওয়ারেন্ট’ পাঠিয়ে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষকে সতর্ক করা হয়েছে। গৌরব সাঞ্জারী নামের ওই যুবক যুক্তরাষ্ট্রের যে কোন বিমানবন্দর দিয়ে প্রবেশের চেষ্টা করলে তাকে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করার নির্দেশ দেওয়া হয় উক্ত আদেশে। যুক্তরাষ্ট্রের নিউজার্সীর ক্যামডেন সুপরিয়র আদালত থেকে ২০২৩ সালের ১৬ নভেম্বর গৌরব সাঞ্জারীর বিরুদ্ধে ৮টি গ্রেপ্তারী পরোয়ানা জারি করা হয়।
নিউজার্সীর রাজ্যের ক্যামডেন কাউন্টির প্রসিকিউটর গ্রেস সি. ম্যাকওলে জানান, আদালতের জারি করা ৮টি গ্রেপ্তারী পরোয়ানার পলাতক আসামী গৌরব সাঞ্জারীকে ধরতে যুক্তরাষ্ট্রের বড় বড় বিমানবন্দরের কর্তৃপক্ষদেরকে অবহিত করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের চেষ্টা করলে তাকে সেখানেই গ্রেপ্তার করে আদালতে হাজির করা হবে। এব্যাপারে সর্বত্র সতর্কতা জারি করা হয়েছে। নিউজার্সীর বার্লিন টাউনশীপ পুলিশ ডিপার্টমেন্টের গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান লেফটেন্যান্ট এড গ্রামলি জানান, গৌরব সাঞ্জারী তার অধিনস্ত এলাকা ওয়েস্ট বার্লিনে স্ত্রীর সাথে বসবাস করতেন। দেশে পালিয়ে যাবার আগে বেশ কয়েকবার পারিবারিক অশান্তির সৃষ্টি করে স্ত্রীর ওপর চড়াও হয়ে কয়েক দফায় তাকে মারধর করেন। ২০২২ সালের ২৪ জুলাই কনিকাকে বেদম মারধর করেন। গলা চেপে ধরে শ্বাসরোধ করে হত্যার চেষ্টা করেন। পরিবারের সদস্যরা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। তার এসব কর্মকান্ডের জন্য নিউজার্সির বার্লিন টাউনশীপ পুলিশের কাছে বেশ কয়েকটি অভিযোগ রয়েছে। সর্বশেষ ঘটনার পর পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। দুইদিন পর গৌরব সাঞ্জারি জেল থেকে জামিন নিয়ে বের হন।
গৌরবের স্ত্রী কনিকা মজুমদার বলেন, গৌরব সাঞ্জারী চট্টগ্রামের জুবলি রোডের বাসিন্দা শিবু শীলের ছেলে। যুক্তরাষ্ট্রে পুনরায় গ্রেপ্তারের ভয়ে নিউইয়র্কে কিছুদিন আত্মগোপনে থাকার পর প্রায় ১ বছর আগে তিনি বাংলাদেশে পালিয়ে যান। সেখান থেকেই আমাকে ও আমার পরিবারের সদস্যদের প্রাণনাশের অব্যাহত হুমকি দিচ্ছেন। এছাড়াও আমাদের পরিবারের বিরুদ্ধে গণমাধ্যমে যৌন হয়রানির ভূয়া অভিযোগ করছেন গৌরব। কনিকা মজুমদার বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রে যৌন হয়রানি নিষিদ্ধ। এছাড়াও যুক্তরাষ্ট্রে থাকাকালীন সময়ে সে কখনই পুলিশ, তার আইনজীবি, আদালত কিংবা আমাকেও কিছুই জানায়নি।’ তিনি বলেন, ‘পাইলস অপারেশনের এক্স-রে ও কোলনোস্কোপির ছবি দেখিয়ে বাংলাদেশের গণমাধ্যমে যৌন হয়রানি বলে বেড়াচ্ছেন। এসব করে গৌরব আমাকে এবং আমার পরিবারকে হেয় প্রতিপন্নই করেননি, কলঙ্কিতও করেছেন।’ তার এসব বক্তব্য সম্পূর্ণ কাল্পনিক, বাস্তবের সঙ্গে এর কোনো মিল নেই বলে দাবি করেন তিনি।
২০১৮ সালের নভেম্বর আমেরিকায় ফেরার পথে কুয়েত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নিউইয়র্কগামী একটি ট্রানজিট (সংযোগ) বিমানে গৌরব-কনিকার দেখা হয়। ওই সময় বোর্ডিং লাইনে গৌরব ও তার মা ছবি শীলের সঙ্গে পরিচয় হয়েছিল কনিকা মজুমদারের। এরপর ২০১৯ সালের ১৩ নভেম্বর গৌরব-কনিকার বিয়ে হয়। নিয়ম অনুসারে, কনিকার স্বামী গৌরব সাঞ্জারির অভিবাসন ভিসা নিয়ে আমেরিকায় চলে আসেন। বিয়ের পর কিছুদিন দাম্পত্য জীবন ভালই চলছিল। গৌরবের গ্রিন কার্ড পাওয়ার পর থেকেই সংসারে কলহ শুরু হয়। গৌরবের স্ত্রীর নাম কনিকা মজুমদারের দেশের বাড়ি নোয়াখালী জেলার চরজাবেরের হাজীপুরে।এ ব্যাপারে জানতে গৌরব সাঞ্জারিকে ফোন দিলে তিনি রিসিভ করেননি। মেসেজ দিলেও কোনো রিপ্লাই দেননি। -বাংলা প্রেস।