নিউইয়র্ক ০৯:১৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২০ নভেম্বর ২০২৫, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

নিউইয়র্ক থেকে আরজ মতাদর্শ ছড়িয়ে দেওয়ার প্রত্যয়

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০৭:২৭:৫২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ জানুয়ারী ২০২৪
  • / ২২৩ বার পঠিত

দার্শনিক আরজ আলী মাতুব্বরের ১২৩ তম জন্মবার্ষিকী নিউইয়র্কে উদযাপিত হয়েছে। অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারীরা আরজ আলী মাতব্বরের মতাদর্শ বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দেওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন। গত ১৭ ডিসেম্বর রাতে জ্যাকসন হাইটসে ওপেন আইজ আয়োজিত এ অংশগ্রহণমূলক আলোচনায় বাঙালী জনসমাজের প্রায় অর্ধশত মুক্তমনা ব্যক্তিবর্গ অংশগ্রহণ করেন।কমিউনিটি অ্যাকটিভিষ্ট মুজাহিদ আনসারীর সভাপতিত্বে এবং সাংবাদিক ও নাট্যকর তোফাজ্জল লিটনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন এ আয়োজনের সংগঠক সঞ্জীবন কুমার সরকার। তিনি বলেন, ২০১৮ সাল থেকে নিউইয়র্কে আরজ আলী মাতুব্বরের জন্ম উৎসব উদযাপিত হয়ে আসছে। বৈরী আবহাওয়া উপেক্ষা করে আজ যারা এখানে এসেছেন, তাদের পক্ষেই সম্ভব আরজ আলী মাতুব্বরের মতাদর্শ বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দেওয়া।

অনুষ্ঠানে সাপ্তাহিক বাঙালী সম্পাদক কৌশিক আহমেদ বলেন, তিনি সক্রেটিসের মতো প্রশ্ন করেছিলেন আমি কে? আমি কেন? আত্মার সঙ্গে আমার দেহের সম্পর্ক কি? পরকাল বলে কি কিছু আছে? নিজেকে জানার জন্যই তার এসব প্রশ্ন। তিনি সত্যের সন্ধানে সারাটি জীবন অতিবাহিত করেছেন। যে সত্য জেনেছেন তা জীবনে ধারণ করে সবার মাধ্যে ছড়িয়ে দিতে চেয়েছেন। তিনি আরো বলেন, সত্য সার্বজনীন নয়। সত্য আপেক্ষিক, সত্যের চেহারা সবার কাছে একরকম নয়। তবে আমাদের প্রশ্ন করতে হবে, আমাদের প্রশ্নের উত্তর খুঁজে বের করতে হবে, উত্তর খোঁজাই সত্য সন্ধান।

অনুষ্ঠানে গবেষক জুয়েল মালিক বলেন, বাংলাদেশের বাঙালীর এক জীবনধর্মী দার্শনিক আকর কথা বলে গেছেন। সত্যের সন্ধান করেছেন। প্রশ্ন করতে উদ্বুদ্ধ করেছেন। মৃত্যুকে গীতকে মিথকে একপাশে ঠেলে দিয়ে বিজ্ঞানমনস্কতার জয় গান গেয়েছেন। আজ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার যুগে বাস করে বিজ্ঞানের সকল সুবিধা গ্রহণ করে চেতনায় মধ্যযুগীয় বিশ্বাস ও মূল্যবোধ ধারণ করে আমরা গুজামিল ও সমঝোতা করে পদে পদে বিপদ ডেকে আনছি। আরজ আলী মাতব্বর গণিতকে বিজ্ঞানকে বিবর্তন কে প্রাধান্য দিয়েছেন আজ তার সৎ কর্মঠ চিন্তাশীল বিজ্ঞানমনস্ক এই চিন্তক প্রকৃতি ধারণ করে গড়ে ওঠা মন মননের চর্চা করেছেন যা আজ আমরা করতে বিব্রত হই তাই আসুন আরোজিও চেতনায় দীপ্ত হয়ে প্রশ্ন করতে শিখি বিজ্ঞানকে মেনে নিই মিত এবং গল্পকে তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিয়ে বাস্তব জীবনে প্রকৃতির জ্ঞান ধারণ করি।

অনুষ্ঠানের অংশগ্রহণমূলক আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন সংগঠক ও রাজনীতিবিদ জাকির হোসেন বাচ্চু, সাংবাদিক আমানউদ্দৌলা, মাহমুদ মেনন, সাগর লোহানি, ইব্রাহিম চৌধুরী খোকন, মাহবুব রহমান, আইন ও সালিশ কেন্দ্রের সাবেক নির্বাহী পরিচালক নূর খান লিটন, ব্লগার শুভ ডি কষ্টা ও বেঙ্গলি ক্লাবের সভাপতি দিনেশ চন্দ্র মজুমদার। আবৃত্তি করেন ক্লারা রোজারিও।দীলিপ কুমার মোদক বলেন, বিশ্বাস কখনও উত্তর দেয় না, বরং প্রশ্ন করাকে বন্ধ করে দেয়। যুক্তি ও বাস্তবতার আলোকে জীবনকে জানা ও চেনাই ছিলো তাঁর দর্শনের মূল প্রতিপাদ্য। যা আমাদের আজকের সমাজের জন্য খুবই অপরিহার্য।

তানভীর কায়সার বলেন, আরো জওয়ালি মাতব্বরের অসংখ্য গুণাবলী রয়েছে সেই বিষয়ে শুধু আলোচনা না করে আমাদের উচিত তার মতাদর্শ ছড়িয়ে দেওয়া এবং সেই অনুযায়ী সংকল্প গ্রহণ করা। তার জীবনে ধারণ করা অসাম্প্রদায়িকতা যদি আমরা গ্রহণ করতে পারি তাহলে আমাদের মুক্তি অভিসম্ভাব্য। তবে কোন নির্দিষ্টের ধর্মের অনুসারীর পক্ষে পূর্ণ অসাম্প্রদায়িক হওয়া সম্ভব নয়। -প্রেস বিজ্ঞপ্তি।

Tag :

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

নিউইয়র্ক থেকে আরজ মতাদর্শ ছড়িয়ে দেওয়ার প্রত্যয়

প্রকাশের সময় : ০৭:২৭:৫২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ জানুয়ারী ২০২৪

দার্শনিক আরজ আলী মাতুব্বরের ১২৩ তম জন্মবার্ষিকী নিউইয়র্কে উদযাপিত হয়েছে। অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারীরা আরজ আলী মাতব্বরের মতাদর্শ বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দেওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন। গত ১৭ ডিসেম্বর রাতে জ্যাকসন হাইটসে ওপেন আইজ আয়োজিত এ অংশগ্রহণমূলক আলোচনায় বাঙালী জনসমাজের প্রায় অর্ধশত মুক্তমনা ব্যক্তিবর্গ অংশগ্রহণ করেন।কমিউনিটি অ্যাকটিভিষ্ট মুজাহিদ আনসারীর সভাপতিত্বে এবং সাংবাদিক ও নাট্যকর তোফাজ্জল লিটনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন এ আয়োজনের সংগঠক সঞ্জীবন কুমার সরকার। তিনি বলেন, ২০১৮ সাল থেকে নিউইয়র্কে আরজ আলী মাতুব্বরের জন্ম উৎসব উদযাপিত হয়ে আসছে। বৈরী আবহাওয়া উপেক্ষা করে আজ যারা এখানে এসেছেন, তাদের পক্ষেই সম্ভব আরজ আলী মাতুব্বরের মতাদর্শ বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দেওয়া।

অনুষ্ঠানে সাপ্তাহিক বাঙালী সম্পাদক কৌশিক আহমেদ বলেন, তিনি সক্রেটিসের মতো প্রশ্ন করেছিলেন আমি কে? আমি কেন? আত্মার সঙ্গে আমার দেহের সম্পর্ক কি? পরকাল বলে কি কিছু আছে? নিজেকে জানার জন্যই তার এসব প্রশ্ন। তিনি সত্যের সন্ধানে সারাটি জীবন অতিবাহিত করেছেন। যে সত্য জেনেছেন তা জীবনে ধারণ করে সবার মাধ্যে ছড়িয়ে দিতে চেয়েছেন। তিনি আরো বলেন, সত্য সার্বজনীন নয়। সত্য আপেক্ষিক, সত্যের চেহারা সবার কাছে একরকম নয়। তবে আমাদের প্রশ্ন করতে হবে, আমাদের প্রশ্নের উত্তর খুঁজে বের করতে হবে, উত্তর খোঁজাই সত্য সন্ধান।

অনুষ্ঠানে গবেষক জুয়েল মালিক বলেন, বাংলাদেশের বাঙালীর এক জীবনধর্মী দার্শনিক আকর কথা বলে গেছেন। সত্যের সন্ধান করেছেন। প্রশ্ন করতে উদ্বুদ্ধ করেছেন। মৃত্যুকে গীতকে মিথকে একপাশে ঠেলে দিয়ে বিজ্ঞানমনস্কতার জয় গান গেয়েছেন। আজ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার যুগে বাস করে বিজ্ঞানের সকল সুবিধা গ্রহণ করে চেতনায় মধ্যযুগীয় বিশ্বাস ও মূল্যবোধ ধারণ করে আমরা গুজামিল ও সমঝোতা করে পদে পদে বিপদ ডেকে আনছি। আরজ আলী মাতব্বর গণিতকে বিজ্ঞানকে বিবর্তন কে প্রাধান্য দিয়েছেন আজ তার সৎ কর্মঠ চিন্তাশীল বিজ্ঞানমনস্ক এই চিন্তক প্রকৃতি ধারণ করে গড়ে ওঠা মন মননের চর্চা করেছেন যা আজ আমরা করতে বিব্রত হই তাই আসুন আরোজিও চেতনায় দীপ্ত হয়ে প্রশ্ন করতে শিখি বিজ্ঞানকে মেনে নিই মিত এবং গল্পকে তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিয়ে বাস্তব জীবনে প্রকৃতির জ্ঞান ধারণ করি।

অনুষ্ঠানের অংশগ্রহণমূলক আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন সংগঠক ও রাজনীতিবিদ জাকির হোসেন বাচ্চু, সাংবাদিক আমানউদ্দৌলা, মাহমুদ মেনন, সাগর লোহানি, ইব্রাহিম চৌধুরী খোকন, মাহবুব রহমান, আইন ও সালিশ কেন্দ্রের সাবেক নির্বাহী পরিচালক নূর খান লিটন, ব্লগার শুভ ডি কষ্টা ও বেঙ্গলি ক্লাবের সভাপতি দিনেশ চন্দ্র মজুমদার। আবৃত্তি করেন ক্লারা রোজারিও।দীলিপ কুমার মোদক বলেন, বিশ্বাস কখনও উত্তর দেয় না, বরং প্রশ্ন করাকে বন্ধ করে দেয়। যুক্তি ও বাস্তবতার আলোকে জীবনকে জানা ও চেনাই ছিলো তাঁর দর্শনের মূল প্রতিপাদ্য। যা আমাদের আজকের সমাজের জন্য খুবই অপরিহার্য।

তানভীর কায়সার বলেন, আরো জওয়ালি মাতব্বরের অসংখ্য গুণাবলী রয়েছে সেই বিষয়ে শুধু আলোচনা না করে আমাদের উচিত তার মতাদর্শ ছড়িয়ে দেওয়া এবং সেই অনুযায়ী সংকল্প গ্রহণ করা। তার জীবনে ধারণ করা অসাম্প্রদায়িকতা যদি আমরা গ্রহণ করতে পারি তাহলে আমাদের মুক্তি অভিসম্ভাব্য। তবে কোন নির্দিষ্টের ধর্মের অনুসারীর পক্ষে পূর্ণ অসাম্প্রদায়িক হওয়া সম্ভব নয়। -প্রেস বিজ্ঞপ্তি।