নিউইয়র্কে আলোচনা, খতমে কুরআন এবং দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত
- প্রকাশের সময় : ০৫:০২:০৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২০
- / ৬২ বার পঠিত
রশীদ আহমদ: হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ এর আমীর, দারুল উলূম মঈনুল ইসলাম হাটহাজারী মাদরাসার মহাপরিচালক, শায়খুল ইসলাম সাইয়্যিদ হোসাইন আহমদ মাদানী (রহ:)-এর অন্যতম খলিফা, প্রবীণ আলেম মরহুম আল্লামা শাহ আহমদ শফী (রহ:)-এর জীবন ও কর্ম নিয়ে নিউইয়র্কে আলোচনা, খতমে কুরআন এবং দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত ২০ সেপ্টেম্বর শনিবার বাদ মাগরিব মাদানী একাডেমী অফ নিউইয়র্কের উদ্যোগ আয়োজিত দোয়া মাহফিলে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক মাওলানা মুহিব্বুর রহমান।
দারুল উলূম নিউইয়র্কের মুহাদ্দিস মাওলানা আজিজুর রহমান ঘোগারকুলীর সাবলীল উপস্থাপনায় সংগঠনের অস্থায়ী অফিসে অনুষ্ঠিত মাহফিলের শুরুতে কালামে হাকীম থেকে তেলাওয়াত করেন হাফেজ আবু তাহের। আল্লামা শাহ আহমদ শফী (রহ:)-এর জীবন ও কর্ম আলোচনায় টেলিকনফারেন্স প্রধান অতিথির আলোচনা রাখেন জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের প্রেসিডেন্ট আল্লামা শায়খ আরশাদ মাদানী হাফিজাহুল্লাহ।
তিনি বাংলাদেশের সর্বজন শ্রদ্ধেয় আলেম, হেফাজতে ইসলামের আমির আল্লামা আহমদ শফীর ইন্তেকালে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করে বলেন আল্লামা শফীর হৃদয়বিদারক ইন্তেকালের সংবাদ আমাকে বিমর্ষিত ও আহত করেছে। তিনি হযরত শায়খুল ইসলাম মাদানী (রহ:) যোগ্য শাগরেদ, খলিফা, মুজায ও আমাদের সকলের প্রিয় ছিলেন। মাদানী পরিবারের সাথে তাঁর সম্পর্ক, হৃদ্যতা ও ভালোবাসা ছিল পঞ্চাশ বছরেরও অধিক সময়ের। আল্লাহ পাক তাঁর দ্বারা দ্বীনের অনেক বড় বড় কাজ নিয়েছেন।
মাওলানা আরশাদ মাদানী আরো বলেন, বাংলাদেশে তাঁর ছাত্র, ভক্ত অনুরক্তের সংখ্যা অগণন। ১৯৪৬ সনে দারুল উলূম দেওবন্দ থেকে ফারেগ হন। তারপর তিনি তাঁর গোটা জীবন ইসলামের প্রচার-প্রসার, দরস-তাদরিস, হাদিস, ফিকহ, বাইয়াত, সুলুক, ইসলাহ ও তাজকিয়ার জন্য ওয়াকফ করে দিয়েছিলেন। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড’ বেফাক ও ‘হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ’ এর চেয়ারম্যান হওয়ার সুবাধে তিনি বাংলাদেশের রাজনীতি, শিক্ষা ও সমাজ গঠনে যোগ্য নেতৃত্বের আসন অলংকৃত করেছেন। বার্ধক্য ও অসুস্থতার কারণে কখনো তিনি তাঁর আদর্শ ও মিশন থেকে পশ্চাদপসরণ করেননি। জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণেও তিনি মসনদে হাদিসে বুখারী শরীফের দরস দিয়েছেন!
তিনি বলেন, আল্লামা শফী (রহ:) বাংলা ও উর্দুতে একাধিক গ্রন্থ রচনা করেছেন। তিনি ছিলেন দেশ ও জাতির কল্যান ও মঙ্গলে সদা নিবেদিত একজন আলেমে দ্বীন। ইখলাস, লিল্লাহিয়্যাত ও সাদাসিধে জীবন যাপন ছিল তাঁর অনন্য বৈশিষ্ট্য। বাবার মৃত্যু নিঃসন্দেহে সন্তানদের জন্য বিরাট বেদনাদায়ক ও শোকের। তবে আল্লাহ পাকের ইচ্ছা আমাদের সবার থেকে উর্ধ্বে। তাঁর ফায়সালার উপর সকলের ধৈর্য্য ধারণ করা আবশ্যক। এ জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে পুরষ্কারের অঙ্গীকার রয়েছে।
মাহফিলে পাকিস্তানের সাবেক প্রধান বিচারপতি আল্লামা ত্বকী উসমানী হাফিজাহুল্লাহর একটি বক্তব্য রেকর্ডিং করে শুনান মাওলানা ইয়ামীন হোসাইন।
মাহফিলে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে অংশগ্রহণ করেন দারুল উলূম নিউইয়র্কের শায়খুল হাদীস মাওলানা আবদুর রহীম, আল মনসুরের মুফতী মুহাম্মদ আবদুল্লাহ,বিশিষ্ট ব্যবসায়ী বদরুল হক ও মসজিদ আল আমানের সাবেক সভাপতি শামছুদ্দীন সুনাই। অন্যান্যের মধ্যে আলোচনায় অংশ নেন দারুল উলূম নিউইয়র্কের সাবেক প্রিন্সিপাল মাওলানা ইয়ামীন হোসাইন, জামেয়া ইসলামিয়া মসজিদ অফ উডহ্যাভেনের ইমাম ও খতীব মাওলানা শায়খ আসআ’দ আহমদ, জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টারের জামেয়া কুরআনিয়া মাদরাসার প্রিন্সিপাল হাফেজ মাওলানা মোজাহিদুল ইসলাম, ম্যানহাটনের আস সাফা ইসলামিক সেন্টারের ইমাম ও খতীব মাওলানা রফিক আহমদ রেফাহী, আমেরিকান মুসলিম সেন্টারের সভাপতি হাফেজ রফিকুল ইসলাম, দারুস সালাম মসজিদ ইমাম ও খতীব মাওলানা আবদুল মুকিত, আস সাফা ইসলামিক সেন্টারের জেনারেল সেক্রেটারী মুফতী লুৎফুর রহমান ক্বাসিমী, দারুল কুরআন ও সুন্নাহ’র মুহাদ্দিস মাওলানা হাম্মাদ আহমদ গাজীনগরী, জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টারের জামেয়া কুরআনিয়া মাদরাসার ওস্তাদ হাফেজ মাওলানা আহমদ আবু সুফিয়ান, লেখক-গবেষক রশীদ জামীল, আল ফুরকান জামে মসজিদের ইমাম ও খতীব মাওলানা আবদুল হালিম ও মাওলানা শাহেদ আহমদ।
এছাড়াও দোয় মাহফিলে অনেক উলামায়ে কেরাম ও সাধারণ মুসল্লিয়ান উপস্থিত ছিলেন। আল্লামা শাহ আহমদ শফী রাহিমাহুল্লাহ-এর মাগফিরাত কামনা করে দোয়া পরিচালনা করেন মাওলানা আবদুর রহীম।