নিউইয়র্ক সিটি ও স্টেট `Above and Beyond Award-2025' এ সম্মানিত
৫০ জন নারীর মধ্যে একমাত্র বাংলাদেশী নারী ফারিহা হাবিব

- প্রকাশের সময় : ০৩:১৪:১৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৯ মার্চ ২০২৫
- / ৪৭ বার পঠিত
নিউইয়র্ক (ইউএনএ): বাংলাদেশের খুলনার সন্তান লায়ন ফারিহা হাবিব। একজন বাংলাদেশী-আমেরিকান। বসবাস নিউইয়র্ক সিটির জ্যামাইকা। উদীয়মান নারী উদ্যোক্তা হিসেবে এবার জয় করলেন ‘Above and Beyond Award-2025’ সম্মাননা। ‘সিটি এন্ড ষ্টেট নিউইয়র্ক’ নামক একটি প্রতিষ্ঠান এই অ্যাওয়ার্ডের প্রবর্তক। ফারিহার সাথে নিউইয়র্কের অন্যান্য কমিউনিটির আরো ৪৯জন সম্মানজনক এবার এই অ্যাওয়ার্ড লাভ করলেন। অর্থাৎ আমেরিকান ৫০জন নারী উদ্যোক্তাদের মধ্যে ফারিহা হাবিব একমাত্র বাংলাদেশী নারী হিসেবে এই সম্মাননা অর্জন করলেন। মূলত: উদ্যোক্তা নেতৃত্ব, মানবিক কর্মকান্ড এবং সমাজসেবায় অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তাঁকে এই মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কারে ভূষিত করা হয়েছে। এছাড়াও Entrepreneur Honoree হিসেবে তাঁকে নিউইয়র্ক সিটিতে একজন সফল উদ্যোক্তা হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করা হয়েছে, যা তাঁর কৃতিত্বের আরেকটি অনন্য সংযোজন। খবর ইউএনএ’র।
বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) সন্ধ্যায় ম্যানহাটানের ‘দ্যা প্রিন্স জর্জ বলরুম’-এ আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে আয়োজকরা ফারিহা হাবিবের হাতে অ্যাওয়ার্ডটি তুলে দেন। উৎসবমুখর পরিবেশে হলভর্তি দুই শতাধিক মানুষের করতালির মধ্যে ফারিহা হাবিব তার অ্যাওয়ার্ড গ্রহণ করেন। এসময় তার বাবা ইঞ্জিনিয়ার আবিদ হাবিব সহ তার পরিবারের কয়েকজন সদস্য বলরুমে উপস্থিত ছিলেন। অ্যাওয়ার্ড প্রদান উপলক্ষে প্রকাশিত ‘সিটি এন্ড ষ্টেট নিউইয়র্ক’-এর ইংরেজী ম্যাগাজিনে ফারিহার ছবি সহ সংক্ষিপ্ত পরিচিতি তুলে ধরা হয়।
অ্যাওয়ার্ড প্রাপ্তির পর ফারিহা হাবিব বার্তা সংস্থা ইউএনএ প্রতিনিধির কাছে তাৎক্ষনিক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, এমন সম্মানজনক অ্যাওয়ার্ড পাওয়ায় তিনি গর্বিত এবং এই অর্জন তার দায়িত্বকে আরো বাড়িয়ে দিলো। তিনি নারীর কল্যাণে দেশ ও প্রবাসে আরো ভূমিকা রাখারও প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
পেশাগতভাবে ফারিহা হাবিব যুক্তরাষ্ট্রের টেলিকম খাতের অন্যতম প্রতিষ্ঠানে H&H Telecom Construction Inc. এর প্রেসিডেন্ট। তাঁর দক্ষতা, নেতৃত্ব ও দূরদর্শিতার মাধ্যমে তিনি এই খাতে এক শক্তিশালী অবস্থান তৈরি করেছেন। তাঁর সমাজসেবামূলক কাজের মধ্যে উল্লেখযোগ্য উদ্যোগ ‘লায়ন ফারিহা ওমেন ডেভেলপমেন্ট সেন্টার’। যার চেয়ারপার্সন তিনি। বাংলাদেশে ও খুলনা জেলার পায়গ্রাম কসবা ফুলতালায় এই সেন্টার প্রতিষ্ঠিত। নারী ক্ষমতায়নের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত এই প্রতিষ্ঠান। যেখানে প্রতি বছর ২৪০ জন নারীকে ছয় মাসব্যাপী বিনামূল্যে কম্পিউটার প্রশিক্ষণ এবং ৬০ জন নারীকে তিন মাসব্যাপী সেলাই প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়। এই কেন্দ্রের মাধ্যমে বহু নারী আত্মনির্ভরশীল হয়ে উঠেছেন এবং অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন বলে জানান ফারিহা হাবিব।
এছাড়াও, ফারিহা হাবিব আন্তর্জাতিক পর্যায়েও তাঁর কর্মদক্ষতা ও মানবিক কাজের স্বীকৃতি অর্জন করেছেন। তিনি ‘ইউনাইটেড ষ্টেটস-ইউনাইটেড ন্যাশনস এসোসিয়েশন (ইউএস-ইউএনএ)-এর এক্সিকিউটিভ ওপারেসন্স কমিটি মেম্বার হিসেবে কাজ করছেন এবং ইউএস ইলেকশন কমিশন -এ একজন স্বেচ্ছাসেবক হিসেবেও যুক্ত রয়েছেন।
ব্যক্তিগত জীবনে পরিশ্রমী, দূরদর্শী ও মানবিক গুণসম্পন্ন এই তরুণ নেত্রী শুধু বাংলাদেশী কমিউনিটির নয়, বরং নিউইয়র্ক শহরের অন্যতম উদীয়মান নেতৃত্বের প্রতীক হয়ে উঠেছেন। তাঁর এই অর্জন প্রবাসী বাংলাদেশী কমিউনিটির জন্য এক অনন্য গর্বের বিষয় বলে মনে করছেন সচেতন প্রবাসীরা।
ফারিহা হাবিব এখন শুধুমাত্র একটি নাম নয়, বরং নারী নেতৃত্ব, সামাজিক দায়বদ্ধতা ও উদ্যোক্তা সফলতার এক অনুপ্রেরণামূলক প্রতীক।