২-৪ সেপ্টেম্বর ওয়াশিংটনে ফোবানা আর নিউইয়র্কে বাংলাদেশ সম্মেলনের প্রস্তুতি সম্পন্ন
- প্রকাশের সময় : ০৭:২০:৪১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ অগাস্ট ২০১৬
- / ৬৪৬ বার পঠিত
নিউইয়র্ক: যুক্তরাষ্ট্রের লেবার ডে উইকেন্ড ঘিরে আগামী ২-৪ সেপ্টেম্বর ওয়াশিংটন ও নিউইয়র্ক ষ্টেটে ফোবানা ও বাংলাদেশ কনভেনশন নামে পৃথক পৃথক অনুষ্ঠানের আয়োজনের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। এই সম্মেলনগুলোর মধ্যে ওয়াশিংটন ডিসিতেই হচ্ছে দু’টি অনুষ্ঠান। বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অব গ্রেটার ওয়াশিংটন ডিসির উদ্যোগে ওয়াশিংটনে অনুষ্ঠিত হতে যাচেছ ফেডারেশন অব বাংলাদেশী এসোসিয়েশন ইন নর্থ আমেরিকা (ফোবানা)-এর ৩০তম আসর। আর বাংলাদেশী আমেরিকান কালচারাল অর্গানাইজেশন (বাকোডিসি)-এর উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ কালচারাল নাইট। অপরদিকে ইন্টারফেইথ হারমনি এন্ড ওয়ার্ল্ড পিস-এর আয়োজনে নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ সম্মেলন-২০১৬।
ফোবানা বাংলাদেশ সম্মেলনের আদলে নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিতব্য বাংলাদেশ সম্মেলন হবে জ্যাকসন হাইটস্থ বেল্লোজিলো মিলনায়তনে। এই সম্মেলনের কো-হোস্ট হচ্ছে: বাংলাদেশ কনভেনশন নর্থ আমেরিকা। এই সম্মেলনের কনভেনর হচ্ছেন আলমগীর খান আলম, প্রেসিডেন্ট শাহীন কবীর আর মেম্বার সেক্রেটারী আসাদুল ইসলাম আসাদ। সম্মেলনের অনুষ্ঠানমালার মধ্যে থাকবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, সেমিনার, ট্যালেন্ট শো, ফ্যাশন শো, কাব্য জলসা আর রকমারী স্টল প্রভৃতি।
বাংলাদেশ এসোশিয়ন অব গ্রেটার ওয়াশিংটন ডিসির উদ্যোগে ওয়াশিংটনে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ফোবানার ৩০তম আসর। অন্যদিকে বাংলাদেশী আমেরিকান কালচারাল অর্গানাইজেশন (বাকোডিসি) এর উদ্যোগে ৩-৪ সেপ্টেম্বর ক্রিষ্টাল সিটির হলিডে ইন-এ অনুষ্ঠিত হতে যাচেছ ‘বাংলাদেশ কালচারাল নাইট’। ওয়াশিংটন ডিসিতে ওয়াকিং দুরত্বে দু’টি অনুষ্ঠান নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখ দিয়েছে ওয়াশিংটন ডিসি’র বাংলাদেশী কমিউনিটিতে।
উল্লেখ্য, ১৯৮৭ সালে প্রতিষ্ঠার কয়েক বছর পর থেকে ফোবানা দ্বিধা-বিভক্ত। মূলত: কমিউনিটি নেতৃবৃন্দের ব্যক্তিগত ইগো, নেতৃত্বের কোন্দল, রাজনৈতিক চিন্তা-ধারার প্রতিফলন প্রভৃতি কারণে ফোবানা বিভক্ত হয়ে পড়ে। যার ধারাবাহিকতায় প্রতিবছর দেখা যাচ্ছে ‘ফোবানা বনাম বাংলাদেশ কনভেনশন’। সেই বিভক্তির সাথে যোগ হয়েছে ‘বাংলাদেশ কালচারাল নাইট’। উত্তর আমেরিকার সচেতন প্রবাসীদের মতে এই দ্বিধা-বিভক্তির ফলে বিভক্ত হয়ে পড়েছেন বাংলাদেশী-আমেরিকান কমিউনিটি, হারিয়ে ফেলেছে এক সময়ের আলোচিত ‘ফোবানা’ তার আসল চরিত্র। তবে দীর্ঘ কয়েক বছর পর এবার ‘আইনগত’ কারণে ফোবানা’র ব্যানারে একটিই সম্মেলন হচ্ছে ওয়াশিংটনে। কেননা, আইনগতভাবে ফোবানা রেজিষ্টার্ড হওয়ার ফলে ফোবানা নামে অন্য কোন সংগঠন আর সম্মেলন করতে পারবে না বলে জানা গেছে। ফোবানা’র বর্তমান প্রেক্ষাপটে ইতিপূর্বে ফোবানা সম্মেলনে নেতৃত্বদানকারী বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যের সাবেক কর্মকর্তাদের মধ্যে অনেকেই ‘নিরব’ দর্শকের ভূমিকা পালন করছেন। অনেকে এই সম্মেলনের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন।
এদিকে ফোবানা ও বাংলাদেশ সম্মেলনকে কেন্দ্র করে সংশ্লিষ্ট শহরগুলোতে বসবাসকারী প্রবাসী বাংলাদেশীদের মধ্যে উৎসাহ-উদ্দীপনা লক্ষ্য করা গেলেও কমিউনিটির কোন কোন মহলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা গেছে। এসব সম্মেলনের আয়োজন, আয়োজকদের গ্রহণযোগ্যতা, অনুষ্ঠানের মান প্রভৃতি বিষয়েই প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। এদিকে সম্মেলনগুলোর আমন্ত্রিত শিল্পীরা ইতিমধ্যেই যুক্তরাষ্ট্র আসতে শুরু করেছেন। অনেকে পথে রয়েছেন।
ওয়াশিংটন থেকে থেকে প্রাপ্ত খবরে জানা গেছে, ওয়াশিংটনে অনুষ্ঠিতব্য ৩০তম ফোবানা সম্মেলনে মুলধারার নেতৃবৃন্দের মধ্যে উল্লেখযোগ্যরা হলেন, কংগ্রেসম্যান ক্রিস ভ্যালেন, কংগ্রেসম্যান জন ডিলানী, কংগ্রেসম্যান পদপ্রাথী লুটানেন্ট গভর্নর এন্থনী ব্রাউন, মেরিল্যান্ড স্টেট সিনেটর জেইমি রাসকিন, মেরিল্যান্ড স্টেট সিনেটর সুসান লী, মেরিল্যান্ড স্টেট ডেলিগেট ক্যাথলীন ডুমিয়াস, মেরিল্যান্ড স্টেট ডেলিগেট ডেভিড ফ্রেইজার, মেরিল্যান্ড স্টেট ডেলিগেট ডেভিড মুন, ডেমোক্রেট নেতা ইভেট লুইস, ও চার্লস কনর। এছাড়াও যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনের ভাই রজার ক্লিনটন সম্মেলনে যোগ দেয়ার কথা রয়েছে। ফোবানা সম্মেলনে ভার্জিন আইল্যান্ড সুন্দরী নিকোল স্মীথ অংশগ্রহন করবেন বলেও মোহাম্মদ আলমগীর জানিয়েছেন।
এছাড়াও গণ প্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু এবং গণপুর্ত মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশারফ হোসেনেরে এই সম্মেলনে যোগ দেয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে আয়োজকরা জানান। তারা জানান, সম্মেলনে নৃত্যশিল্পী হিসাবে যোগ দিতে ইতিমধ্যেই বাংলাদেশ থেকে ওয়াশিংটনে এসে পৌঁছেছেন বাংলাদেশের বিশিষ্ট নৃত্যৃশিল্পী ওয়ার্দা রিহ্যাব ও তার দল। সম্মেলনের টিকেট অনলাইনেও বিক্রয় শুরু হয়েছে। তিনদিনের ভিভিআইপি ২৫০, প্রতিদিন ভিভিআইপি ১০০, তিন দিনের ভিআইপি ১২৫, প্রতিদিনের জন্য ৫০, এবং সাধারণ তিনদিনের জন্য ৫০ এবং প্রতিদিনের জন্য ২০ ডলার মুল্যে সংগ্রহ করা যাবে।
সম্মেলন উপলক্ষে প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ও গণ প্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সহ প্রায় অর্ধ ডজন গভর্ণর সিনেটর শুভেচ্ছা বাণী দিয়েছেন। উল্লেখযোগ্য মুলধারার নেতৃবৃন্দের মধ্যে রয়েছেন ভার্জিনিয়া রাজ্যেল সিনেটর মার্ক ওয়ার্নার, গভর্ণর টেরী ম্যাকলফি, ভার্জিনিয়া, ফ্লোরিডা রাজ্যেও সিনেটর বিল নেলসন, সিনেটর মার্ক রুবিও, ফ্লোরিডা, আর্লিংটন, ভার্জিনিয়া চীফ অব পুলিশ প্রমুখ। বরাবরের মতো এবারের সম্মেলনেও বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য তুলে ধরা হবে। সম্মেলন উপলক্ষ্যে প্রথমবারের মত ফোবানা বাংলাদেশ প্যারেডের আয়োজন করা হয়েছে। এই প্যারেডের মধ্য দিয়ে বাংলা আর বাঙালীর ইতিহাস ঐতিহ্য তুলে ধরা হবে।