হককথা ডেস্ক: নিউ ইয়র্কে অবস্থানরত অবৈধরা ১৬ ডিসেম্বর সোমবার থেকে ড্রাইভার লাইসেন্স এর সুবিধা নিতে পারবেন। অবৈধদের ড্রাইভিং লাইসেন্স দেয়ার বিরুদ্ধে কোর্টে আনীত মামলা গত শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) খারিজ হওয়ায় এখন থেকে ডাইভিং লাইলেন্স পেতে আর কোন আইনী বাঁধা থাকলো না । এরিক এবং রেনসেলার কাউন্টি ক্লার্ক মাইকেল কারনস ও ফ্রাংক মেরোলা এর বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন। এর ফলে যুক্তরাষ্ট্রে নিউইয়র্ক হচ্ছে ১৩তম স্টেট যেখানে অবৈধরাও ড্রাইভার লাইসেন্স নিতে পারবেন।
ব্রঙ্কসের বাংলাদেশী অধ্যুষিত পার্কচেস্টার এলাকা থেকে নির্বাচিত সিনেটর লুইস সিপুলভেদা কর্তৃক আনীত গ্রীন লাইট বিল পাশ হওয়ার পর গভর্নর এন্ড্রু কুমো তাতে স্বাক্ষর করেন। এরপর তা কোর্টে চ্যালেঞ্জ করা হলেও বিষয়টি কোর্ট খারিজ করে দিয়েছে। এখন থেকে ড্রাইভার লাইলেন্সের জন্য যে কেউ আবেদন করতে পারবেন। এজন্য কোন সোস্যাল সিকিউরিটি নাম্বার লাগবে না।
নিউইয়র্কে ড্রাইভার লাইসেন্স এর আবেদন করতে যে কেউ তার পাসপোর্ট এবং নিজ দেশের ড্রাইভার লাইসেন্সকে আইডি হিসেবে ব্যবহার করতে পারবেন। তবে এটি কোনভাবেই দুই বছরের বেশী সময়ের জন্য মেয়াদোত্তীর্ণ হতে পারবে না।
নিউইয়র্ক স্টেট ইমিগ্র্যাশন কোয়ালিশনের প্রধান স্টিভ চো বলেছেন, দীর্ঘ ১৮ বছরের প্রতীক্ষার পর নিউ ইয়র্কের বাসিন্দরা লাইসেন্স পাচ্ছেন। এটা আমাদের সকলের জন্যই আনন্দের খবর। এজন্য তিনি লুইস সিপুলভেদা সহ অন্য আইন প্রণেতাদের ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, এটা আমাদের রোড নিরাপত্তা ও নিউ ইয়র্ক স্টেটের অর্থনীতিকে আরো চাঙ্গা করতে সাহায্য করবে।
স্টেট সিনেটর লুইস সিপুলভেদা বলেছেন, এর ফলে এখন নিউইয়র্কে ন্যায় বিচার এবং নাগরিক সুবিধা ও সমতা প্রতিষ্ঠা হলো। আমরা আশা করবো এর ফলে প্রতিটি কমিউনিটির সাথে আমাদের সম্পর্কের বন্ধন আরো জোরদার হবে।
এরিক কাউন্টি ক্লার্ক মাইকেল কারনস বলেছেন, সেপ্টেম্বর ১১ এর সন্ত্রাসী হামলার পর অবৈধদের জন্য ড্রাইভিং লাইসেন্স বন্ধ করার বিধান হয়েছিল। যাতে কেউ আমাদের চোখের আড়ালে ফেডারেল ভবণ বা প্লেনে আর প্রবেশ করতে না পারে।
এসোসিয়েটেড প্রেস এপির মতে এর ফলে আগামী তিন বছরে নিউইয়র্কে ২ লাখ ৬৫ হাজার অবৈধ ড্রাইভিং লাইসেন্স সুবিধা নিতে পারবে। এর অর্ধেকেরও বেশীর অবস্থান হচ্ছে নিউ ইয়র্ক সিটিতে।
এদিকে নিউইয়র্ক স্টেট ডিপার্টমেন্ট অব মটর ভেহিক্যাল বলেছে, আবেদনকারীদের আবেদন ও কাগজপত্র পরীক্ষা নিরীক্ষার জন্য তারা ইতোমধ্যেই তাদের কর্মীদের প্রশিক্ষন দিয়েছে।
স্টেট ডিএমভি কর্মকর্তারা বলেছেন, আবেদনকারীদের অবশ্যই তাদের দেশীয় ড্রাইভিং লাইসেন্স এবং পাসপোর্টের কপি আবেদনের সাথে দিতে হবে।
ডিএমভি মুখপাত্র লিসা কুমজান বলেছেন, নিউ ইয়র্ক স্টেট যে আইন পাশ করেছে তা ডিএমভির প্রতিটি ক্লার্ককে মানতে হবে। এক্ষেত্রে কোন অফিসের কেউ যদি নিজের ইচ্ছা অনিচ্ছা নিয়ে এর ব্যত্যয় করতে চান তাহলে সেটা কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য হবে না। এক্ষেত্রে কেউ আইন না মানলে তাকে ডিএমভির চাকুরী ছেড়ে দেয়া উচিৎ।
আনডকুমেন্টেডদের ড্রাইভিং লাইসেন্স পেতে করণীয়
নিউইয়র্ক স্টেটের কাগজপত্রহীন (আনডকুমেন্টেড) ইমিগ্রেন্টরা বহুল আকাঙ্খীত ড্রাইভিং লাইসেন্স পেতে যাচ্ছেন। গ্রিনলাইট এনওয়াই নামের এই বিলটি নিউইয়র্ক এসেম্বলী ও সিনেটে পাশ হয়। এরপর গভর্ণর এন্ড্র কোমো স্বাক্ষর করে বিলটিকে আইনে পরিণত করেন। এর ফলে নিউইয়র্কে বসবাসরত কাগজপত্রহীন হাজার হাজার বাংলাদেশীসহ নিউইয়র্ক স্টেটের কয়েক লাখ অধিবাসী নিউইর্য়ক স্টেটের ড্রাইভিং লাইসেন্স নিয়ে গাড়ী চালানোর সুযোগ পাবেন। এই লাইসেন্স নিতে হলে প্রথমে মটোর ভ্যাহিকেল অফিসে গিয়ে এম.সি.কিউ পরীক্ষা দিয়ে পাশ করে লার্নাস পারমিট নিতে হবে। তারপর ফাইভ আওয়ার্স প্রি-লাইসেন্সিং কোর্স কমপ্লেসন সার্টিফিকেট (যে কোন ড্রাইভিং স্কুল থেকে ক্লাসরুম ট্রেনিং) নিতে হবে। সবশেষে রোড টেস্টের মাধ্যমে পাশ করে ড্রাইভিং লাইসেন্স নিতে হবে।
কম্পিউটারের মাধ্যমে এম.সি.কিউ পরীক্ষা দিতে যাওয়ার পূর্বে ড্রাইভার্স ম্যানুয়াল অথবা নির্ধারিত প্রশ্নমালা পড়ে যাওয়া আবশ্যক বলে জানিয়েছেন পপুলার ড্রাইভিং স্কুলের প্রেসিডেন্ট আব্দুর রহিম হাওলাদার। এ ব্যাপারে আরো জানতে হলে তিনি ৯১৭-৩০১-২০৬৩ এই নম্বরে যোগাযোগ করার অনুরোধ জানিয়েছেন।(বাংলা পত্রিকা)