‘সরকারী টাকায় ইসলামিক ফাউন্ডেশন চললেও, ঐক্য পরিষদ চলে সুদের টাকায়’
- প্রকাশের সময় : ০৫:০৬:৫৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩ অক্টোবর ২০১৫
- / ১০৯২ বার পঠিত
নিউইয়র্ক: বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রীষ্টান ঐক্য পরিষদের সেক্রেটারী জেনারেল এডভোকেট রানা দাস গুপ্ত বলেছেন, সরকারী টাকায় ইসলামিক ফাউন্ডেশন চললেও, হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রীষ্টান ঐক্য পরিষদ চলে ট্রাস্ট বা সুদের টাকায়। তিনি বলেন, দেশে যেভাবে সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতন-নিপীড়ন চলছে তাতে ঐক্যের বিকল্প নেই। তিনি সকল মতভেদ ভুলে সবাইকে ঐক্য পরিষদের পতাকাতলে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান। বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রীষ্টান ঐক্য পরিষদ, ইউএসএ’র একাংশের সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি উপরোক্ত কথা বলেন।
এদিকে দ্বিধা বিভক্ত বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রীষ্টান ঐক্য পরিষদ ইউএসএ-এর পৃথক পৃথক সম্মেলন গত ১৯-২০ সেপ্টেম্বর যথাক্রমে শনিবার ও রোববার নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিত হয়। শনিবার একাংশের সম্মেলন হয় নিউইয়র্কের লাগোর্ডিয়া কোর্টইয়ার্ড ম্যারিয়ট হোটেলে। রোববার অপরাংশের সম্মেলন হয় জ্যাকসন হাইটস্থ খাবার বাড়ীর চাংপাই রেষ্টুরেন্টে।
কোর্টইয়ার্ড ম্যারিয়ট হোটেলে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রীষ্টান ঐক্য পরিষদ ইউএসএ’র দিনব্যাপী সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের আহ্বায়ক এটর্নী অশোক কর্মকার। এই সম্মেলনের উদ্বোধন করেন ঐক্য পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির প্রেসিডিয়াম সদস্য বাবু কানুতোষ মজুমদার। সম্মেলন পরিচালনা করেন সদস্য সচিব স্বপন দাস। সম্মেলনে নিউইয়র্কসহ যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অঞ্চলের হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রীষ্টান ধর্মাবলম্বিরা অংশ নেন।
অপরদিকে ‘ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র চাই, সব ধর্মের সমান অধিকার চাই’ এই শ্লোগান নিয়ে জ্যাকসন হাইটসে অনুষ্ঠিত হিন্দু বৌদ্ধ খ্রীষ্টান ঐক্য পরিষদ (আমেরিকা)-এর সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন ড. জিতেন রায়। সভা পরিচালনা করেন প্রদীপ দাস। বক্তব্য রাখেন ড. দ্বিজেন ভট্টাচার্য, গৌরাঙ্গ কুন্ডু, প্রবীর রায়, ডা. টমাস দুলু রায়, নির্মল পাল, রনবীর গোমেজ, শ্যামল চক্রবর্র্তী, দিলিপ নাথ, ধ্রুব চক্রবর্তী প্রমুখ।
সম্মেলনে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রীষ্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রানা দাস গুপ্ত উপস্থিত না হওয়ায় কিছুটা সময় বিতর্কের সৃষ্টি হয়। বিশেষ করে ঐক্য পরিষদ বিভক্ত হওয়ার ঘটনায় অনেকেই ক্ষুব্ধু প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করায় উত্তপ্ত পরিবেশ বিরাজ করে সম্মেলন স্থলে। উপস্থিত কয়েকজনের প্রশ্নবানে জর্জরিত হন আয়োজক সহ ঐক্য পরিষদের নেতৃবৃন্দ। এ সময় রোববার অনুষ্ঠিত হিন্দু বৌদ্ধ খ্রীষ্টান পরিষদের অপরাংশের সম্মেলনেরও সমালোচনা করা হয়। তবে সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে সংগঠনকে আরো শক্তিশালী করার উপর গুরুত্বারোপ করেন। সভায় বক্তারা বলেন, আমাদের সংগঠনেই ঐক্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। আজকের সম্মেলনে সকল সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি রয়েছেন। বক্তাদের কেউ কেউ কেন্দ্র মনোনীত এটর্নী অশোক কর্মকারের কর্মকান্ডের সমালোচনা করে বলেন, তিনি ঐক্যের পরিবর্তে অনৈক্য সৃষ্টি করেছেন। ২১ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটির মাত্র ছয় জন সদস্যের স্বাক্ষরে গঠনতন্ত্র পাস করানো হয়েছে।
বক্তারা বলেন, ঐক্য পরিষদ কোন রাজনৈতিক সংগঠন নয়, মানবাধিকার সংগঠন। মাইনরিটি কমিউনিটির স্বার্থ সংরক্ষণই ঐক্য পরিষদের কাজ। কিন্তু আমাদের না জানিয়ে কেন্দ্র আহ্বায়ক কমিটি গঠন করে। যাদের নিয়ে কমিটি হয়েছে তারা অন্দোলন বুঝেন না, কিভাবে সংগঠন করতে হয় তা জানেন না। কেউ কেউ ক্ষোভের সাথে বলেন, আমরা ২৫ বছর ধরে ঐক্য পরিষদের সাথে জড়িত। পাহাড় কেটে মসৃণ পথ সুপ্রশস্থ করেছি। নতুনরাই এই পথে চলবেন, কিন্তু আমাদের বাদ দিয়ে চলবেন, তা হবে না।
ঐক্য পরিষদের এই অংশের সম্মেলনে সংগঠনের নব নির্বাচিত সভাপতি হিসেবে বিদ্যুৎ দাস, ডা. টমাস দুলু রায় ও রনবীর বড়–য়াকে পরিচয় করিয়ে দেয়া হয়। এছাড়াও সাধারন সম্পাদক হিসেবে রয়েছেন প্রদীপ দাস। (সাপ্তাহিক বাংলা পত্রিকা)