নিউইয়র্ক ০১:৪৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

রাজনৈতিক কোন্দল এবং অর্থনৈতিক কেলেঙ্কারিতে চারখন্ড ‘সন্দ্বীপ এসোসিয়েশন’

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০৪:৫০:৩১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২২ ডিসেম্বর ২০১৪
  • / ১২৭০ বার পঠিত

নিউইয়র্ক: উত্তর আমেরিকায় প্রতিষ্ঠিত প্রবাসী বাংলাদেশীদের প্রথম আমব্রেলা খ্যাত সংগঠন হচ্ছে ‘বাংলাদেশ সোসাইটি’। প্রবাসী বাংলাদেশীদের স্বার্থ রক্ষায় এ প্রতিষ্ঠানের জন্ম। বলা হয়ে থাকে অভিবাসীদের দেশ যুক্তরাষ্ট্র। যেখানে শুধু বাংলাদেশ নয়; বিভিন্ন দেশ-জাতি ও গোষ্ঠির বসবাস আমেরিকাতে। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস। প্রবাসেও দেখা মেলে বাংলাদেশীদের মতানৈক্য এবং নোংরা রাজনীতির খেলা। বিশ্বের বেশীর ভাগ দেশই প্রবাসে জাতি-ধর্ম ও বর্ণ নির্বিশেষে দেশের বৃহত্তর স্বার্থে ঐক্যবদ্ধ অবস্থান নেয়। ব্যতিক্রম হচ্ছে বাংলাদেশ। এমনিতেই রাজনৈতিক মতবিরোধে দ্বিধাবিভক্ত জাতি। এরমধ্যে কেন্দ্রীয়কে পেছেনে ফেলে আঞ্চলিক সংগঠনের বিস্তার বাড়ছে দিনকে দিন। দক্ষিন এশিয়ার মাণচিত্রের বুকে ৫৬ হাজার বর্গমাইলের একটুকরো ভূখন্ডের নাম স্বাধীন বাংলাদেশ। আয়াতনের দিক থেকে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক রাজ্য থেকে মাত্র ৪ বর্গমাইলের বড়। জনবহুল ছোট্ট এই দেশটির লোকসংখ্যা প্রায় ২০ কোটির মতো। এর মধ্য থেকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে অসংখ্য প্রবাসী বাংলাদেশী। বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে লোকের বসবাস। আর এসব প্রবাসীরাই হচ্ছেন দেশের অর্থনীতির চালিকা শক্তি ও বৈদেশীক মুদ্রার জোগান দাতা। কর্মব্যস্ত প্রবাসী বাংলাদেশীরা মনের খোরাক এবং বিনোদনের গড়ে বিভিন্ন দেশে গড়ে তোলেন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন। পিছিয়ে নেই রাজনীতিক সংগঠনের দ্বৈরাত্ব। যা অব্যাহত আছে যুক্তরাষ্ট্র তথা উত্তর আমেরিকাতেও।
প্রবাসী বাংলাদেশী ও পাঠকদের জন্য বিভিন্ন সময়ে নিউইয়র্কে গড়ে উঠা, সামাজিক, রাজনীতিক ও আঞ্চলিক সংগঠনের চালচিত্র নিয়ে ধারাবাহিক প্রতিবদেন প্রকাশের উদ্যোগ নেয়। গেল পর্ব ছিল ক্যাবিদের সংগঠন নিয়ে। প্রথম পর্বে উঠে আসে এসব সংগঠনের শুরুটা ভালো হলেও শেষ পরিণতি ভয়াবহ। ব্যক্তি স্বার্থ, আধিপত্য বিস্তার, পদ-পদবি, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ইস্যু। যার ফলে বাংলাদেশ সোসাইটি থেকে শুরু করে বিভাগীয়, জেলা-উপজেলা, ইউনিয়ন তথা গ্রাম পর্যায়ের একই নামের বিভিন্ন সংগঠন গড়ে উঠেছে উত্তর আমেরিকাতে।  বাংলা পত্রিকার সরেজমিনে উঠে আসে এসব সংগঠনের ভাঙ্গা-গড়ার চালচিত্র।
এবারের পর্বে সরেজমিন প্রতিবেদনে উঠে আসে বৃহত্তর চট্টগ্রাম জেলার (থানা) উপজেলা সন্দ্বীপে’র ব্যানারে উত্তর আমেরিকার নিউইয়র্কে গড়ে উঠে একাধিক সংগঠন। শুরুটা যদিও সামাজিক দায়বদ্ধতা এবং সন্দ্বীপ বাসিন্দাদের স্বার্থরক্ষায় ব্রত নিয়ে নিয়ে। বিভিন্ন সুত্র নিশ্চিত করে ১৯৮৭ সালের দিকে মারা যান সন্দ্বীপের বাসিন্দা ও প্রবাসী মানিক মিয়া। তার লাশ দেশে পাঠানোকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠে ‘সন্দ্বীপ এসোসিয়েশন’। সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন হাজী শফিকুল আলম যিনি পরবর্তীতে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি বর্তমানে দলটির উপদেষ্টা। সংগঠনের বিধিমালায় ছিলো দলমত-নির্বিশেষে দেশে ও প্রবাসে বৃহত্তর চট্টগ্রামের দ্বীপ ভূমি সন্দ্বীপের বাসিন্দাদের সুখে-দু:খে কাজ করা। তাছাড়াও কেউ বিপদে পড়লে কিংবা কেউ মারা গেলে এসোসিয়েশন তাদের সহযোগিতা করা। গরীব মেধাবী শিক্ষার্থীদের স্কলারশীপ’সহ সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে সম্পৃক্ত থাকা। কিন্তু বিধি বাম। যে লক্ষ্য নিয়ে সন্দ্বীপ বাসিন্দারা গড়েছেন তাদের প্রাণের এই সংগঠন; কয়েক বছর না যেতেই নিউইয়র্ক প্রবাসীদের স্বপ্ন ভেঙ্গে গঠন হয় আরেকটি সংগঠন। একটি থেকে আরেকটির জন্ম নেয়ার অন্যতম কারণ হচ্ছে, রাজনৈতিক মতপার্থক্য, অর্থনৈতিক কেলেঙ্কারি’সহ আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে।
মাত্র দু’বছরের মাথায় ১৯৮৯ সালে সন্দ্বীপ বাসির প্রথম সংগঠন  ‘সন্দ্বীপ এসোসিয়েশন’ -এর অনুমতিক্রমেই প্রতিষ্ঠা লাভ করে ‘সন্দ্বীপ আডুকেশন এন্ড কালচারাল সোসাইটি’। প্রধান সংগঠন এসোসিয়েশন থেকে একটু ভিন্ন নীতিমালায় গঠিত কালাচারাল সোসাইটির অন্যতম কার্যপ্রনালী ছিল দেশের গরীব ও মেধাবী ছেলে-মেয়েদের বৃত্তি প্রদান, এছাড়াও উত্তর আমেরিকায় বসবাসরত আমেরিকান-বাংলাদেশী তথা সন্দীপ এলাকার মেধাবীদের নিয়ে সেমিনার সিম্পোজিয়াম এন্ড কালচালারাল অনুষ্ঠান আয়োজন করা। এই প্রতিষ্ঠানটি দু’বছরের না যেতেই একই নামে গঠন হয় আরেকটি কালচারাল সোসাইটি। এডুকেশন এন্ড কালচার সোসাইটি গঠিত হওয়ার পর ১৯৯১ সালে ট্রাস্টিবোর্ড গঠনকে ঘিরে মূলত ভাঙ্গনের সৃষ্টি হয়। কালচারাল সোসাইটির প্রথম সভাপতি ছিলেন আব্বাস উদ্দিন দুলাল এবং সেক্রেটারির দায়িত্ব পালন করেছিলেন আবুল কাশেম।
সুত্রে জানা যায়, ২০০২ সালের দিকে ‘সন্দ্বীপ এসোসিয়েশনে’র তৎকালিন কর্মকর্তা ও ট্রেজার মোহাম্মদ মোস্তফা ৯০ হাজার ডলার কেলেঙ্কারিকে ঘিরে সন্দীপ এসোসিয়েশন ভেঙ্গে গঠন হয় ‘সন্দ্বীপ সোসাইটি’। এছাড়াও বিভক্তির আরো প্রধান কারণ হচ্ছে রাজনৈতিক মতাদর্শ। সংগঠনের সাথে সংশ্লিষ্ট বেশ কয়েকজনের সাথে কথা হয় বাংলা পত্রিকার। সেখান থেকে জানা যায়, এসোসিয়েশনের শুরুটা সামাজিক ও সাংস্কৃতিক দায়বদ্ধতা নিয়ে হলেও পরবর্তীতে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পালাবদলে প্রভাব পড়ে প্রবাসে। সন্দ্বীপ এসোসিয়েশনের ব্যানারে জাতীয় দিবস’সহ নানা আয়োজন উদযাপনকে ঘিরে সৃষ্ট জটিলতায় বিভক্তিতে জড়িয়ে কার্যনির্বাহি কমিটির নেতারা। এরপর থেকেই আলাদা হয়ে যায় সংগঠনটি।
এ বিষয়ে কথা হয় ‘সন্দ্বীপ এসোসিয়েশন’-এর প্রতিষ্ঠাকালিন সদস্য শামসুদ্দিন আজাদের। বর্তমানে যিনি যুক্তরাষ্ট্র শাখা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি। সন্দ্বীপ একটি থানা/উপজেলা হয়েও একই দুটি কালচারাল সংগঠন এবং এসোসিয়েশন ও সোসাইটি’সহ মোট চারটি সংগঠনের প্রয়োজনীয়তা কতটুকু? জবাবে তিনি জানান, ‘আসলে আপনার প্রশ্নের যৌক্তিকতা রয়েছে। আমরা ৮৭ সালের দিয়ে যে লক্ষ্য নিয়ে ‘সন্দ্বীপ এসোসিয়েশন’ গঠন করি সময়ের পথ-পরিক্রমায় সেখান থেকে সরে যাই। মুক্তিযুদ্ধের চেতানায় বিশ্বাসীরা সন্দ্বীপ বাসীর সংগঠনকে এখনো আকড়ে রেখেছে। যারা দেশের মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী তারাই সোসাইটি গঠন করেছে’।
এটাতো প্রবাসীদের নিয়ে গঠিত একটি সংগঠন। এখানে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে-বিপক্ষের শক্তির কথা আসছে কেন? এমন প্রশ্নের জবাবে শামসুদ্দিন আজাদ বলেন, ‘দেখুন আমাদের গঠনতন্ত্রে ছিল জাতীয় দিবস, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস’সহ বিভিন্ন উৎসব আমরা এসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে এখানে পালন করবো। কিন্তু বিরোধী মতে বিশ্বাসী বিএনপি-জামায়াত পন্থিরা তা করতে দেয় নি। আমাদের কথাই ছিল দল-মতের উর্ধ্বে উঠে এসব জাতীয় দিবস গুলো আমরা পালন করবো। তা না হওয়া এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে কেন্দ্র করেই আরেকটি নতুন সংগঠন সন্দ্বীপ সোসাইটির জন্ম। যা সম্পূর্ণ রাজনৈতিক কারনে হয়েছে বলে আমি মনে করি’।
এ বিষয়ে কথা হয় সন্দ্বীপ সোসাইটির সাথে সম্পৃক্ত এবং যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি’র সাবেক যুগ্ম-সম্পাদক হেলাল উদ্দিনের সাথে। আলাপকালে তিনি জানান, ‘আমাদের সন্দ্বীপ এসোসিয়েশন ভেঙ্গে সোসাইটি গড়ার অন্যতম কারণ হচ্ছে এসোসিয়েশনে’র তৎকালিন কর্মকর্তা ও ট্রেজার মোহাম্মদ মোস্তফা ৯০ হাজার ডলার কেলেঙ্কারিকে ঘিরে। তখনকার সভাপতি নজরুল ইসলাম মোহাম্মদ মোস্তফার বিরুদ্ধে অর্থ-আতœসাতের মামলা করেন। তারপর থেকেই দ্বিধা-বিভক্তি হয়ে পড়ে কার্যর্বিাহী কমিটি। ‘সন্দীপ এসোসিয়েশন’ ভেঙ্গে গঠন হয় ‘সন্দ্বীপ সোসাইটি’।
তিনি আরো জানান, ‘ধরে নিতে পারেন, এসোসিশেন শুরু থেকে হলেও মূলত আওয়ামী ঘরানার লোকেরা সেটার দায়িত্ব পালন করছেন। আর সোসাইটির দায়িত্বে আছেন বিএনপি-জামায়াত’সহ উধারপন্থিরা। আমরা রাজনীতি করলেও উধারনীতির কারনে বাংলাদেশ সোসাইটির নির্বাচনে নির্বাচন পরিচালনা কমিটির দায়িত্ব পালন করেছি। এছাড়াও আমাদের সন্দ্বীপ বাসির জন্য ‘সন্দ্বীপ আডুকেশন এন্ড কালচারাল সোসাইটি’ গঠন করেছি। যার প্রথম প্রতিষ্ঠাতা সেক্রেটারি ও সাবেক সভাপতির দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক ও সাংষ্কৃতিক সংগঠনের সাথে জড়িত রয়েছি’।
আপনি বলতে পারেন, ‘আমাদের কারচারাল সোসাইটি ১৯৮৯ সালের ‘ইন্টার রেভিনিউ সার্ভিস- আইআরএস’ এবং নিই ইয়র্ক স্টেট কর্তৃক ৫০১ (সি৩) ধারায় নিবন্ধিত ও রেজিস্টার প্রাপ্ত। সে দিক থেকে একই নামে দ্বিতীয়টার রেজিস্ট্রেশন থাকার কথা নয়। এখন বলতে পারেন সন্দ্বীপ এসোসিয়েশন ও সব শেষে গঠিত কালচারাল সোসাইটি চলছে আওয়ামী লীগ মতাদর্শে। আর অন্যদিকে সন্দ্বীপ সোসাইটি ও কালচারাল সোসাইটি চলছে উধারপন্থি সব রাজনৈতিক দলের মতাদর্শের ভিত্তিতে’।
এ বিষয়ে বাংলা পত্রিকার সাথে কথা হয় সন্দ্বীপ এসোসিয়েশনের বর্তমান সভাপতি মজিবুল মাওলানা’র সাথে। তিনি জানান, ‘আসলে আমাদের সন্দ্বীপবাসির সংগঠন ভালো ভাবেই চলছ। আমরা সামাজিক কার্যকলাপে সম্পৃক্ত। আমাদের এসোসিয়েশনের সাথে কারো কনো মতবিরোধ নেই। সোসাইটর তাদের মত করে কাজ করছে আমরা আমাদের মম করে কাজ করছি। উভয়ে আমাদের সন্দ্বীপের উন্নয়নে, আর্থিক, সামাজিক কর্মকান্ডে সমপৃক্ত। কোন ধরণের ঝামেলায় আমরা বিশ্বাসী নই। এটা ফ্রিডম স্পিসের কান্ট্রি। এখানে সবার মতপ্রকাশের স্বাধীনতা আছে। এর বাইরে আমি কোন রকম মন্তব্য করতে চাইছি না’।
অনেকে বলেছেন রাজনৈতিক মতপার্থক্যের জেরে দ্বিধাবিভক্তি অন্যতম কারণ। এমন বিষয়ে মুজিবল মাওলানা এড়িয়ে গিয়ে বলেন, ‘১৯৮১ সালের অক্টোবরের ৮ তারিখ ইংল্যান্ড থেকে জাহাজে করে আমি এখানে পাড়ি জমাই। এসোসিয়েশনের প্রতিষ্ঠাকালিন থেকেই সম্পৃক্ত। আপনি আমাদের কিংবা সোসাইটির অনুষ্ঠানে গেলেই বুঝতে পারবেন কেন এই বিভক্তি। আমরা কোন বিতর্কে জড়াতে চাই না। আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা। প্রবাসে এসেও এরপর সামাজিক কর্মকান্ডে নিয়োজিত আছি। এখানকার বাংলাদেশ মুসলিম সেন্টারের ভাইস-প্রেসিডেন্ট এর দায়িত্বে পালন করছি’।
সন্দ্বীপের ইতিহাস: সন্দ্বীপ একটি ইংরেজী শব্দ। সন্দ্বীপ নামকরণ নিয়ে বিভিন্ন জনের কাছে বিভিন্ন মতামত শোনা যায়। কারও কারও মতে ১২ আওলিয়ারা চট্টগ্রাম যাত্রার সময় এই দ্বীপটি জনমানুষহীন অবস্থায় আবিস্কার করেন এবং নামকরণ করেন শুন্যদ্বীপ যা পরবর্তীতে ‘‘সন্দ্বীপে’’ রূপ নেয়। ইতিহাসবেত্তা বেভারিজের মতে ‘চন্দ্র দেবতা সোম এর নামানুসারে এই এলাকার নাম সোম দ্বীপ হয়েছিল’। যা পরবর্তীতে সন্দ্বীপে রূপ নেয়। কেউ ে কেউ দ্বীপের উর্বরতা ও প্রাচুর্য্যরে কারণে দ্বীপটিকে স্বর্ণদ্বীপ আখ্যা প্রদান করেন। উক্ত স্বর্ণদ্বীপ হতে সন্দ্বীপ নামের উৎপত্তি হয়েছে বলেও ধারণা করা হয়। দ্বীপের নামকরণের আরেকটি মত হচ্ছে পাশ্চাত্য ইউরোপীয় জাতিগণ বাংলাদেশে আগমনের সময় দুর থেকে দেখে এই দ্বীপকে বালির স্তুপ বা তাদের ভাষায় স্যান্ড-হীপ নামে অভিহিত করেন এবং তা থেকে বর্তমান নামের উতপত্তি।
বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্ব উপকূলে বঙ্গোপসাগরে অবস্থিত চট্টগ্রাম জেলার অন্তর্গত একটি দ্বীপ উপজেলা। এটি মেঘনা নদীর মোহনায় অবস্থিত। এটি বাংলাদেশের অত্যন্ত  প্রাচীন একটি দ্বীপ। ছোট জাহাজ ও স্টিমারই সন্দ্বীপ ও অন্যান অঞ্চলের মধ্যে যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম। ১৯৫৪ সালের পূর্ব পর্যন্ত সন্দ্বীপ নোয়াখালী জেলার অন্তর্ভুক্ত থাকলেও পরবর্তিতে একে চট্টগ্রাম জেলার আওতায় নিয়ে আনা হয়। প্রাচীন এই দ্বিপটির আয়াতন হচ্ছে ৭৬২.৪২ বর্গ কিলোমিটার। সন্দ্বীপ উপজেলায় রয়েছে ১টি পৌরসভা ও ১৫টি ইউনিয়ন।
চট্টগ্রাম উপকূল ও সন্দ্বীপের মাঝখানে সন্দ্বীপ চ্যানেল অবস্থিত। সন্দ্বীপ  থেকে চট্টগ্রামের সীতাকুন্ড উপকূলের দূরত্ব প্রায় দশ মাইল। নোয়াখালীর মূল ভূখন্ড সন্দ্বীপ থেকে প্রায় ১২ মাইল পশ্চিমে অবস্থিত। সন্দ্বীপের প্রায় বিশ মাইল পশ্চিমে হাতিয়া দ্বীপের অবস্থান। সন্দ্বীপ সীমানা হচ্ছে উত্তরে বামনী নদী এবং পশ্চিমে মেঘনা নদী ও তারও পশ্চিমে হাতিয়া দ্বীপ, পূর্বে সন্দ্বীপ চ্যানেল এবং চ্যানেলের পূর্ব পাড়ে চট্টগ্রাম এবং দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর। (সাপ্তাহিক বাংলা পত্রিকা)

Tag :

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

About Author Information

রাজনৈতিক কোন্দল এবং অর্থনৈতিক কেলেঙ্কারিতে চারখন্ড ‘সন্দ্বীপ এসোসিয়েশন’

প্রকাশের সময় : ০৪:৫০:৩১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২২ ডিসেম্বর ২০১৪

নিউইয়র্ক: উত্তর আমেরিকায় প্রতিষ্ঠিত প্রবাসী বাংলাদেশীদের প্রথম আমব্রেলা খ্যাত সংগঠন হচ্ছে ‘বাংলাদেশ সোসাইটি’। প্রবাসী বাংলাদেশীদের স্বার্থ রক্ষায় এ প্রতিষ্ঠানের জন্ম। বলা হয়ে থাকে অভিবাসীদের দেশ যুক্তরাষ্ট্র। যেখানে শুধু বাংলাদেশ নয়; বিভিন্ন দেশ-জাতি ও গোষ্ঠির বসবাস আমেরিকাতে। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস। প্রবাসেও দেখা মেলে বাংলাদেশীদের মতানৈক্য এবং নোংরা রাজনীতির খেলা। বিশ্বের বেশীর ভাগ দেশই প্রবাসে জাতি-ধর্ম ও বর্ণ নির্বিশেষে দেশের বৃহত্তর স্বার্থে ঐক্যবদ্ধ অবস্থান নেয়। ব্যতিক্রম হচ্ছে বাংলাদেশ। এমনিতেই রাজনৈতিক মতবিরোধে দ্বিধাবিভক্ত জাতি। এরমধ্যে কেন্দ্রীয়কে পেছেনে ফেলে আঞ্চলিক সংগঠনের বিস্তার বাড়ছে দিনকে দিন। দক্ষিন এশিয়ার মাণচিত্রের বুকে ৫৬ হাজার বর্গমাইলের একটুকরো ভূখন্ডের নাম স্বাধীন বাংলাদেশ। আয়াতনের দিক থেকে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক রাজ্য থেকে মাত্র ৪ বর্গমাইলের বড়। জনবহুল ছোট্ট এই দেশটির লোকসংখ্যা প্রায় ২০ কোটির মতো। এর মধ্য থেকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে অসংখ্য প্রবাসী বাংলাদেশী। বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে লোকের বসবাস। আর এসব প্রবাসীরাই হচ্ছেন দেশের অর্থনীতির চালিকা শক্তি ও বৈদেশীক মুদ্রার জোগান দাতা। কর্মব্যস্ত প্রবাসী বাংলাদেশীরা মনের খোরাক এবং বিনোদনের গড়ে বিভিন্ন দেশে গড়ে তোলেন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন। পিছিয়ে নেই রাজনীতিক সংগঠনের দ্বৈরাত্ব। যা অব্যাহত আছে যুক্তরাষ্ট্র তথা উত্তর আমেরিকাতেও।
প্রবাসী বাংলাদেশী ও পাঠকদের জন্য বিভিন্ন সময়ে নিউইয়র্কে গড়ে উঠা, সামাজিক, রাজনীতিক ও আঞ্চলিক সংগঠনের চালচিত্র নিয়ে ধারাবাহিক প্রতিবদেন প্রকাশের উদ্যোগ নেয়। গেল পর্ব ছিল ক্যাবিদের সংগঠন নিয়ে। প্রথম পর্বে উঠে আসে এসব সংগঠনের শুরুটা ভালো হলেও শেষ পরিণতি ভয়াবহ। ব্যক্তি স্বার্থ, আধিপত্য বিস্তার, পদ-পদবি, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ইস্যু। যার ফলে বাংলাদেশ সোসাইটি থেকে শুরু করে বিভাগীয়, জেলা-উপজেলা, ইউনিয়ন তথা গ্রাম পর্যায়ের একই নামের বিভিন্ন সংগঠন গড়ে উঠেছে উত্তর আমেরিকাতে।  বাংলা পত্রিকার সরেজমিনে উঠে আসে এসব সংগঠনের ভাঙ্গা-গড়ার চালচিত্র।
এবারের পর্বে সরেজমিন প্রতিবেদনে উঠে আসে বৃহত্তর চট্টগ্রাম জেলার (থানা) উপজেলা সন্দ্বীপে’র ব্যানারে উত্তর আমেরিকার নিউইয়র্কে গড়ে উঠে একাধিক সংগঠন। শুরুটা যদিও সামাজিক দায়বদ্ধতা এবং সন্দ্বীপ বাসিন্দাদের স্বার্থরক্ষায় ব্রত নিয়ে নিয়ে। বিভিন্ন সুত্র নিশ্চিত করে ১৯৮৭ সালের দিকে মারা যান সন্দ্বীপের বাসিন্দা ও প্রবাসী মানিক মিয়া। তার লাশ দেশে পাঠানোকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠে ‘সন্দ্বীপ এসোসিয়েশন’। সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন হাজী শফিকুল আলম যিনি পরবর্তীতে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি বর্তমানে দলটির উপদেষ্টা। সংগঠনের বিধিমালায় ছিলো দলমত-নির্বিশেষে দেশে ও প্রবাসে বৃহত্তর চট্টগ্রামের দ্বীপ ভূমি সন্দ্বীপের বাসিন্দাদের সুখে-দু:খে কাজ করা। তাছাড়াও কেউ বিপদে পড়লে কিংবা কেউ মারা গেলে এসোসিয়েশন তাদের সহযোগিতা করা। গরীব মেধাবী শিক্ষার্থীদের স্কলারশীপ’সহ সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে সম্পৃক্ত থাকা। কিন্তু বিধি বাম। যে লক্ষ্য নিয়ে সন্দ্বীপ বাসিন্দারা গড়েছেন তাদের প্রাণের এই সংগঠন; কয়েক বছর না যেতেই নিউইয়র্ক প্রবাসীদের স্বপ্ন ভেঙ্গে গঠন হয় আরেকটি সংগঠন। একটি থেকে আরেকটির জন্ম নেয়ার অন্যতম কারণ হচ্ছে, রাজনৈতিক মতপার্থক্য, অর্থনৈতিক কেলেঙ্কারি’সহ আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে।
মাত্র দু’বছরের মাথায় ১৯৮৯ সালে সন্দ্বীপ বাসির প্রথম সংগঠন  ‘সন্দ্বীপ এসোসিয়েশন’ -এর অনুমতিক্রমেই প্রতিষ্ঠা লাভ করে ‘সন্দ্বীপ আডুকেশন এন্ড কালচারাল সোসাইটি’। প্রধান সংগঠন এসোসিয়েশন থেকে একটু ভিন্ন নীতিমালায় গঠিত কালাচারাল সোসাইটির অন্যতম কার্যপ্রনালী ছিল দেশের গরীব ও মেধাবী ছেলে-মেয়েদের বৃত্তি প্রদান, এছাড়াও উত্তর আমেরিকায় বসবাসরত আমেরিকান-বাংলাদেশী তথা সন্দীপ এলাকার মেধাবীদের নিয়ে সেমিনার সিম্পোজিয়াম এন্ড কালচালারাল অনুষ্ঠান আয়োজন করা। এই প্রতিষ্ঠানটি দু’বছরের না যেতেই একই নামে গঠন হয় আরেকটি কালচারাল সোসাইটি। এডুকেশন এন্ড কালচার সোসাইটি গঠিত হওয়ার পর ১৯৯১ সালে ট্রাস্টিবোর্ড গঠনকে ঘিরে মূলত ভাঙ্গনের সৃষ্টি হয়। কালচারাল সোসাইটির প্রথম সভাপতি ছিলেন আব্বাস উদ্দিন দুলাল এবং সেক্রেটারির দায়িত্ব পালন করেছিলেন আবুল কাশেম।
সুত্রে জানা যায়, ২০০২ সালের দিকে ‘সন্দ্বীপ এসোসিয়েশনে’র তৎকালিন কর্মকর্তা ও ট্রেজার মোহাম্মদ মোস্তফা ৯০ হাজার ডলার কেলেঙ্কারিকে ঘিরে সন্দীপ এসোসিয়েশন ভেঙ্গে গঠন হয় ‘সন্দ্বীপ সোসাইটি’। এছাড়াও বিভক্তির আরো প্রধান কারণ হচ্ছে রাজনৈতিক মতাদর্শ। সংগঠনের সাথে সংশ্লিষ্ট বেশ কয়েকজনের সাথে কথা হয় বাংলা পত্রিকার। সেখান থেকে জানা যায়, এসোসিয়েশনের শুরুটা সামাজিক ও সাংস্কৃতিক দায়বদ্ধতা নিয়ে হলেও পরবর্তীতে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পালাবদলে প্রভাব পড়ে প্রবাসে। সন্দ্বীপ এসোসিয়েশনের ব্যানারে জাতীয় দিবস’সহ নানা আয়োজন উদযাপনকে ঘিরে সৃষ্ট জটিলতায় বিভক্তিতে জড়িয়ে কার্যনির্বাহি কমিটির নেতারা। এরপর থেকেই আলাদা হয়ে যায় সংগঠনটি।
এ বিষয়ে কথা হয় ‘সন্দ্বীপ এসোসিয়েশন’-এর প্রতিষ্ঠাকালিন সদস্য শামসুদ্দিন আজাদের। বর্তমানে যিনি যুক্তরাষ্ট্র শাখা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি। সন্দ্বীপ একটি থানা/উপজেলা হয়েও একই দুটি কালচারাল সংগঠন এবং এসোসিয়েশন ও সোসাইটি’সহ মোট চারটি সংগঠনের প্রয়োজনীয়তা কতটুকু? জবাবে তিনি জানান, ‘আসলে আপনার প্রশ্নের যৌক্তিকতা রয়েছে। আমরা ৮৭ সালের দিয়ে যে লক্ষ্য নিয়ে ‘সন্দ্বীপ এসোসিয়েশন’ গঠন করি সময়ের পথ-পরিক্রমায় সেখান থেকে সরে যাই। মুক্তিযুদ্ধের চেতানায় বিশ্বাসীরা সন্দ্বীপ বাসীর সংগঠনকে এখনো আকড়ে রেখেছে। যারা দেশের মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী তারাই সোসাইটি গঠন করেছে’।
এটাতো প্রবাসীদের নিয়ে গঠিত একটি সংগঠন। এখানে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে-বিপক্ষের শক্তির কথা আসছে কেন? এমন প্রশ্নের জবাবে শামসুদ্দিন আজাদ বলেন, ‘দেখুন আমাদের গঠনতন্ত্রে ছিল জাতীয় দিবস, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস’সহ বিভিন্ন উৎসব আমরা এসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে এখানে পালন করবো। কিন্তু বিরোধী মতে বিশ্বাসী বিএনপি-জামায়াত পন্থিরা তা করতে দেয় নি। আমাদের কথাই ছিল দল-মতের উর্ধ্বে উঠে এসব জাতীয় দিবস গুলো আমরা পালন করবো। তা না হওয়া এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে কেন্দ্র করেই আরেকটি নতুন সংগঠন সন্দ্বীপ সোসাইটির জন্ম। যা সম্পূর্ণ রাজনৈতিক কারনে হয়েছে বলে আমি মনে করি’।
এ বিষয়ে কথা হয় সন্দ্বীপ সোসাইটির সাথে সম্পৃক্ত এবং যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি’র সাবেক যুগ্ম-সম্পাদক হেলাল উদ্দিনের সাথে। আলাপকালে তিনি জানান, ‘আমাদের সন্দ্বীপ এসোসিয়েশন ভেঙ্গে সোসাইটি গড়ার অন্যতম কারণ হচ্ছে এসোসিয়েশনে’র তৎকালিন কর্মকর্তা ও ট্রেজার মোহাম্মদ মোস্তফা ৯০ হাজার ডলার কেলেঙ্কারিকে ঘিরে। তখনকার সভাপতি নজরুল ইসলাম মোহাম্মদ মোস্তফার বিরুদ্ধে অর্থ-আতœসাতের মামলা করেন। তারপর থেকেই দ্বিধা-বিভক্তি হয়ে পড়ে কার্যর্বিাহী কমিটি। ‘সন্দীপ এসোসিয়েশন’ ভেঙ্গে গঠন হয় ‘সন্দ্বীপ সোসাইটি’।
তিনি আরো জানান, ‘ধরে নিতে পারেন, এসোসিশেন শুরু থেকে হলেও মূলত আওয়ামী ঘরানার লোকেরা সেটার দায়িত্ব পালন করছেন। আর সোসাইটির দায়িত্বে আছেন বিএনপি-জামায়াত’সহ উধারপন্থিরা। আমরা রাজনীতি করলেও উধারনীতির কারনে বাংলাদেশ সোসাইটির নির্বাচনে নির্বাচন পরিচালনা কমিটির দায়িত্ব পালন করেছি। এছাড়াও আমাদের সন্দ্বীপ বাসির জন্য ‘সন্দ্বীপ আডুকেশন এন্ড কালচারাল সোসাইটি’ গঠন করেছি। যার প্রথম প্রতিষ্ঠাতা সেক্রেটারি ও সাবেক সভাপতির দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক ও সাংষ্কৃতিক সংগঠনের সাথে জড়িত রয়েছি’।
আপনি বলতে পারেন, ‘আমাদের কারচারাল সোসাইটি ১৯৮৯ সালের ‘ইন্টার রেভিনিউ সার্ভিস- আইআরএস’ এবং নিই ইয়র্ক স্টেট কর্তৃক ৫০১ (সি৩) ধারায় নিবন্ধিত ও রেজিস্টার প্রাপ্ত। সে দিক থেকে একই নামে দ্বিতীয়টার রেজিস্ট্রেশন থাকার কথা নয়। এখন বলতে পারেন সন্দ্বীপ এসোসিয়েশন ও সব শেষে গঠিত কালচারাল সোসাইটি চলছে আওয়ামী লীগ মতাদর্শে। আর অন্যদিকে সন্দ্বীপ সোসাইটি ও কালচারাল সোসাইটি চলছে উধারপন্থি সব রাজনৈতিক দলের মতাদর্শের ভিত্তিতে’।
এ বিষয়ে বাংলা পত্রিকার সাথে কথা হয় সন্দ্বীপ এসোসিয়েশনের বর্তমান সভাপতি মজিবুল মাওলানা’র সাথে। তিনি জানান, ‘আসলে আমাদের সন্দ্বীপবাসির সংগঠন ভালো ভাবেই চলছ। আমরা সামাজিক কার্যকলাপে সম্পৃক্ত। আমাদের এসোসিয়েশনের সাথে কারো কনো মতবিরোধ নেই। সোসাইটর তাদের মত করে কাজ করছে আমরা আমাদের মম করে কাজ করছি। উভয়ে আমাদের সন্দ্বীপের উন্নয়নে, আর্থিক, সামাজিক কর্মকান্ডে সমপৃক্ত। কোন ধরণের ঝামেলায় আমরা বিশ্বাসী নই। এটা ফ্রিডম স্পিসের কান্ট্রি। এখানে সবার মতপ্রকাশের স্বাধীনতা আছে। এর বাইরে আমি কোন রকম মন্তব্য করতে চাইছি না’।
অনেকে বলেছেন রাজনৈতিক মতপার্থক্যের জেরে দ্বিধাবিভক্তি অন্যতম কারণ। এমন বিষয়ে মুজিবল মাওলানা এড়িয়ে গিয়ে বলেন, ‘১৯৮১ সালের অক্টোবরের ৮ তারিখ ইংল্যান্ড থেকে জাহাজে করে আমি এখানে পাড়ি জমাই। এসোসিয়েশনের প্রতিষ্ঠাকালিন থেকেই সম্পৃক্ত। আপনি আমাদের কিংবা সোসাইটির অনুষ্ঠানে গেলেই বুঝতে পারবেন কেন এই বিভক্তি। আমরা কোন বিতর্কে জড়াতে চাই না। আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা। প্রবাসে এসেও এরপর সামাজিক কর্মকান্ডে নিয়োজিত আছি। এখানকার বাংলাদেশ মুসলিম সেন্টারের ভাইস-প্রেসিডেন্ট এর দায়িত্বে পালন করছি’।
সন্দ্বীপের ইতিহাস: সন্দ্বীপ একটি ইংরেজী শব্দ। সন্দ্বীপ নামকরণ নিয়ে বিভিন্ন জনের কাছে বিভিন্ন মতামত শোনা যায়। কারও কারও মতে ১২ আওলিয়ারা চট্টগ্রাম যাত্রার সময় এই দ্বীপটি জনমানুষহীন অবস্থায় আবিস্কার করেন এবং নামকরণ করেন শুন্যদ্বীপ যা পরবর্তীতে ‘‘সন্দ্বীপে’’ রূপ নেয়। ইতিহাসবেত্তা বেভারিজের মতে ‘চন্দ্র দেবতা সোম এর নামানুসারে এই এলাকার নাম সোম দ্বীপ হয়েছিল’। যা পরবর্তীতে সন্দ্বীপে রূপ নেয়। কেউ ে কেউ দ্বীপের উর্বরতা ও প্রাচুর্য্যরে কারণে দ্বীপটিকে স্বর্ণদ্বীপ আখ্যা প্রদান করেন। উক্ত স্বর্ণদ্বীপ হতে সন্দ্বীপ নামের উৎপত্তি হয়েছে বলেও ধারণা করা হয়। দ্বীপের নামকরণের আরেকটি মত হচ্ছে পাশ্চাত্য ইউরোপীয় জাতিগণ বাংলাদেশে আগমনের সময় দুর থেকে দেখে এই দ্বীপকে বালির স্তুপ বা তাদের ভাষায় স্যান্ড-হীপ নামে অভিহিত করেন এবং তা থেকে বর্তমান নামের উতপত্তি।
বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্ব উপকূলে বঙ্গোপসাগরে অবস্থিত চট্টগ্রাম জেলার অন্তর্গত একটি দ্বীপ উপজেলা। এটি মেঘনা নদীর মোহনায় অবস্থিত। এটি বাংলাদেশের অত্যন্ত  প্রাচীন একটি দ্বীপ। ছোট জাহাজ ও স্টিমারই সন্দ্বীপ ও অন্যান অঞ্চলের মধ্যে যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম। ১৯৫৪ সালের পূর্ব পর্যন্ত সন্দ্বীপ নোয়াখালী জেলার অন্তর্ভুক্ত থাকলেও পরবর্তিতে একে চট্টগ্রাম জেলার আওতায় নিয়ে আনা হয়। প্রাচীন এই দ্বিপটির আয়াতন হচ্ছে ৭৬২.৪২ বর্গ কিলোমিটার। সন্দ্বীপ উপজেলায় রয়েছে ১টি পৌরসভা ও ১৫টি ইউনিয়ন।
চট্টগ্রাম উপকূল ও সন্দ্বীপের মাঝখানে সন্দ্বীপ চ্যানেল অবস্থিত। সন্দ্বীপ  থেকে চট্টগ্রামের সীতাকুন্ড উপকূলের দূরত্ব প্রায় দশ মাইল। নোয়াখালীর মূল ভূখন্ড সন্দ্বীপ থেকে প্রায় ১২ মাইল পশ্চিমে অবস্থিত। সন্দ্বীপের প্রায় বিশ মাইল পশ্চিমে হাতিয়া দ্বীপের অবস্থান। সন্দ্বীপ সীমানা হচ্ছে উত্তরে বামনী নদী এবং পশ্চিমে মেঘনা নদী ও তারও পশ্চিমে হাতিয়া দ্বীপ, পূর্বে সন্দ্বীপ চ্যানেল এবং চ্যানেলের পূর্ব পাড়ে চট্টগ্রাম এবং দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর। (সাপ্তাহিক বাংলা পত্রিকা)