নিউইয়র্ক ০১:২১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

যুক্তরাষ্ট্র আ.লীগ পরিবারে নানা প্রশ্ন

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০৯:৩০:৫১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৫ নভেম্বর ২০১৪
  • / ১১৫৮ বার পঠিত

জাতীয় চার নেতা স্মরণে ৩ নভেম্বর আয়োজিত যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভায় জাতিসংঘের বাংলাদেশ মিশনে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ড. একেএম মোমেনের উপস্থিতি নিয়ে দলীয় পরিবারে নানা প্রশ্ন উঠেছে। অতি সম্প্রতি রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিউইয়র্ক সফরকালীন সময়ে রাষ্ট্রতির সম্বর্ধণা বাতিল ও সেন্ট্রাল পার্কের অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী যোগদান বাতিল হওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে ড. মোমেনের সাথে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃত্বে চরম টানাপোড়ন দেখা দেয়। ঘটনাচক্রে মুখোমুখী অবস্থানে চলে যান ড. মোমেন আর আওয়ামী লীগ সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান। উঠে অভিযোগ পাল্টা অভিযোগ। এই প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ মিশনের অনুষ্ঠানে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দের আর আওয়ামী লীগের অনুষ্ঠানে মিশন প্রধানের যোগদান আওয়ামী পরিবার তথা কমিউনিটিতে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
কয়েক মাস আগে রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ নিউইয়র্ক সফলকালীন সময়ে লাগোর্ডিয়া ম্যারিয়ট হোটেলে আয়োজিত সম্বর্ধণা সভা বাতিল হলে সেই হোটেলে তাৎক্ষনিক প্রতিক্রিয়ায় যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের নেতৃবন্দ এজন্য স্থায়ী প্রতিনিধি ড. মোমেনকেই দায়ী করেন। সেই সময় যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদুর রহমান সাজ্জাদ সাংবাদিক ও দলীয় নেতা-কর্মীদের উপস্থিতিতে ড. মোমেনের পদত্যাগ দাবী করেছিলেন। সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদুর রহমানের এই দাবী সংশোধন করে সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান বলেছিলেন, আমরা তার পদত্যাগ চাই না। তবে রাষ্ট্রপতির সম্বর্ধনা বাতিল হওয়ার জন্য তাকে (ড. মোমেন) দায়ী করতে চাই।
পরবর্তীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিউইয়র্ক সফরকালীন সময়ে সৃষ্ট বিভিন্ন জটিলতার পেছনে ড. মোমেনের হাত রয়েছে বলে আওয়ামী পরিবারের অনেকেই মনে করেন। বিশেষ করে সেন্টাল পার্কের অনুষ্ঠানে যোগদান করতে না পারার ঘটনায় বাংলাদেশ মিশন ও যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের মধ্যে দূরত্ব সৃষ্টি হয়েছিলো। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী নিউইয়র্ক ত্যাগের পর ড. মোমেন সাজ্জাদুর রহমান সাজ্জাদকে সস্ত্রীক তার সরকারী বাসভবনে নিমন্ত্রন জানিয়ে আপ্যায়িত করিয়েছিলেন। তার পর থেইে ড. মোমেনের সাথে সাজ্জাদের সম্পর্কের উন্নতি ঘটে বলে বিশ্বস্থ সূত্রে জানা গেছে। অতি সম্প্রতি ক্লাব সনমে আয়োজিত সিলেট জেলা পরিষদের প্রশাসক ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুস জহির চৌধুরী সুফিয়ানের সম্মানে আয়োজিত সম্বর্ধনা সভায় ড. মোমেনের উপস্থিতিতেই সাজ্জাদুর রহমান সাজ্জাদ তার (ড. মোমেন) ভূয়সী প্রশংসা করেন। তা দেখে সভায় উপস্থিত অনেকেই চমকে যান। কেউ কেউ এই ঘটনাকে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের জন্য শুভ সংবাদ বলে মন্তব্য করেন।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ আয়োজিত জাতীয় চার নেতার স্মরণ সভায় ড. একেএম মোমেনের বক্তব্য অনেকের মনে নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। ঐ সভায় ড. মোমেন বলেন, জাতীয় চার নেতা ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে নিহত হওয়ার আগের দিন অর্থাৎ ১৯৭৫ সালের ২ নভেম্বর তিনি বঙ্গবভনে ছিলেন। ড. মোমেনের এই বক্তব্যে আওয়ামী পরিবারের কেউ কেউ বলেন, ইতিহাসেন কালো অধ্যায়ের স্বাক্ষী হয়ে ড. মোমেন আর কি জানেন তা জাতিকে জানানো উচিৎ।
যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের অনুষ্ঠানে ড. মোমেনের যোগদানে আওয়ামী পরিবারে বিরাট অংশ সন্তোষ প্রকাশ করলেও একাধিক নেতা-কর্মীর মনে নানা সন্দেহ সৃষ্টি করেছে বলে পরিচয়কে জানিয়েছেন। তাদের প্রশ্ন জাতিসংঘের নিযুক্ত সরকারী কর্মকর্তার দলীয় অনুষ্ঠানে যোগদান প্রটোকল সম্মত কিনা?
উল্লেখ্য, জাতিসংঘের বাংলাদেশ মিশনের স্থায়ী প্রতিনিধি হিসেবে যোগদানের পূর্বে ড. একে আব্দুল মোমেন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের অন্যতম উপদেষ্টার ছিলেন। (সাপ্তাহিক পরিচয়)

Tag :

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

About Author Information

যুক্তরাষ্ট্র আ.লীগ পরিবারে নানা প্রশ্ন

প্রকাশের সময় : ০৯:৩০:৫১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৫ নভেম্বর ২০১৪

জাতীয় চার নেতা স্মরণে ৩ নভেম্বর আয়োজিত যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভায় জাতিসংঘের বাংলাদেশ মিশনে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ড. একেএম মোমেনের উপস্থিতি নিয়ে দলীয় পরিবারে নানা প্রশ্ন উঠেছে। অতি সম্প্রতি রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিউইয়র্ক সফরকালীন সময়ে রাষ্ট্রতির সম্বর্ধণা বাতিল ও সেন্ট্রাল পার্কের অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী যোগদান বাতিল হওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে ড. মোমেনের সাথে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃত্বে চরম টানাপোড়ন দেখা দেয়। ঘটনাচক্রে মুখোমুখী অবস্থানে চলে যান ড. মোমেন আর আওয়ামী লীগ সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান। উঠে অভিযোগ পাল্টা অভিযোগ। এই প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ মিশনের অনুষ্ঠানে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দের আর আওয়ামী লীগের অনুষ্ঠানে মিশন প্রধানের যোগদান আওয়ামী পরিবার তথা কমিউনিটিতে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
কয়েক মাস আগে রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ নিউইয়র্ক সফলকালীন সময়ে লাগোর্ডিয়া ম্যারিয়ট হোটেলে আয়োজিত সম্বর্ধণা সভা বাতিল হলে সেই হোটেলে তাৎক্ষনিক প্রতিক্রিয়ায় যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের নেতৃবন্দ এজন্য স্থায়ী প্রতিনিধি ড. মোমেনকেই দায়ী করেন। সেই সময় যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদুর রহমান সাজ্জাদ সাংবাদিক ও দলীয় নেতা-কর্মীদের উপস্থিতিতে ড. মোমেনের পদত্যাগ দাবী করেছিলেন। সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদুর রহমানের এই দাবী সংশোধন করে সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান বলেছিলেন, আমরা তার পদত্যাগ চাই না। তবে রাষ্ট্রপতির সম্বর্ধনা বাতিল হওয়ার জন্য তাকে (ড. মোমেন) দায়ী করতে চাই।
পরবর্তীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিউইয়র্ক সফরকালীন সময়ে সৃষ্ট বিভিন্ন জটিলতার পেছনে ড. মোমেনের হাত রয়েছে বলে আওয়ামী পরিবারের অনেকেই মনে করেন। বিশেষ করে সেন্টাল পার্কের অনুষ্ঠানে যোগদান করতে না পারার ঘটনায় বাংলাদেশ মিশন ও যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের মধ্যে দূরত্ব সৃষ্টি হয়েছিলো। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী নিউইয়র্ক ত্যাগের পর ড. মোমেন সাজ্জাদুর রহমান সাজ্জাদকে সস্ত্রীক তার সরকারী বাসভবনে নিমন্ত্রন জানিয়ে আপ্যায়িত করিয়েছিলেন। তার পর থেইে ড. মোমেনের সাথে সাজ্জাদের সম্পর্কের উন্নতি ঘটে বলে বিশ্বস্থ সূত্রে জানা গেছে। অতি সম্প্রতি ক্লাব সনমে আয়োজিত সিলেট জেলা পরিষদের প্রশাসক ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুস জহির চৌধুরী সুফিয়ানের সম্মানে আয়োজিত সম্বর্ধনা সভায় ড. মোমেনের উপস্থিতিতেই সাজ্জাদুর রহমান সাজ্জাদ তার (ড. মোমেন) ভূয়সী প্রশংসা করেন। তা দেখে সভায় উপস্থিত অনেকেই চমকে যান। কেউ কেউ এই ঘটনাকে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের জন্য শুভ সংবাদ বলে মন্তব্য করেন।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ আয়োজিত জাতীয় চার নেতার স্মরণ সভায় ড. একেএম মোমেনের বক্তব্য অনেকের মনে নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। ঐ সভায় ড. মোমেন বলেন, জাতীয় চার নেতা ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে নিহত হওয়ার আগের দিন অর্থাৎ ১৯৭৫ সালের ২ নভেম্বর তিনি বঙ্গবভনে ছিলেন। ড. মোমেনের এই বক্তব্যে আওয়ামী পরিবারের কেউ কেউ বলেন, ইতিহাসেন কালো অধ্যায়ের স্বাক্ষী হয়ে ড. মোমেন আর কি জানেন তা জাতিকে জানানো উচিৎ।
যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের অনুষ্ঠানে ড. মোমেনের যোগদানে আওয়ামী পরিবারে বিরাট অংশ সন্তোষ প্রকাশ করলেও একাধিক নেতা-কর্মীর মনে নানা সন্দেহ সৃষ্টি করেছে বলে পরিচয়কে জানিয়েছেন। তাদের প্রশ্ন জাতিসংঘের নিযুক্ত সরকারী কর্মকর্তার দলীয় অনুষ্ঠানে যোগদান প্রটোকল সম্মত কিনা?
উল্লেখ্য, জাতিসংঘের বাংলাদেশ মিশনের স্থায়ী প্রতিনিধি হিসেবে যোগদানের পূর্বে ড. একে আব্দুল মোমেন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের অন্যতম উপদেষ্টার ছিলেন। (সাপ্তাহিক পরিচয়)